Ajker Patrika

আনোয়ারুল হত্যায় সাইদুল জড়িত, খুনিদের টাকা দেওয়ার কথা ছিল তাঁরও: কামালের জবানবন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৫ জুন ২০২৪, ১৫: ৫১
Thumbnail image

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম হত্যাকাণ্ডে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ ওরফে গ্যাস বাবু। জবানবন্দিতে তিনি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।

এমপি আনোয়ারুল অপহরণ ও গুমের মামলায় গ্রেপ্তার কাজী কামাল গতকাল ঢাকার মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে জবানবন্দি দেন। ৯ জুন গ্রেপ্তারের পর তিনি সাত দিনের রিমান্ডে ছিলেন। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজী কামালের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দি শেষে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

তদন্তসংশ্লিষ্ট ও আদালত সূত্র জানায়, কাজী কামাল ওরফে গ্যাস বাবু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন, এমপি আনোয়ারুলকে হত্যার পরিকল্পনার সময় ও হত্যার পর মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে তাঁর একাধিকবার বৈঠক হয়। বৈঠকে হত্যার জন্য করা চুক্তির টাকার একটি অংশ সাইদুল করিম মিন্টুর কাছ থেকে নিয়ে হত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়াকে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। এ জন্য এমপি খুনের পর আমানুল্লাহর সঙ্গে তাঁর (কামাল) একাধিকবার মোবাইলে কথা হয় এবং সাক্ষাৎ হয়। কিন্তু টাকা নিয়ে দেওয়ার আগেই গ্রেপ্তার হন আমানুল্লাহ।

তদন্তসংশ্লিষ্ট ডিবি কর্মকর্তাদের ভাষ্যমতে, এমপি আনোয়ারুলকে হত্যার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আক্তারুজ্জামান শাহীন পাঁচ কোটি টাকায় খুনি ভাড়া করেছিলেন। কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনসে শাহীনের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে গত ১৩ মে এমপি আনোয়ারুল খুন হন।

কাজী কামাল জবানবন্দিতে বলেন, এই মামলার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন। ব্যবসাসংক্রান্ত দ্বন্দ্বের কারণে এই খুনের পরিকল্পনা হয়। শাহীন পরিকল্পনা করলেও স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার সহযোগিতা চান। আনোয়ারুল আজীম বারবার এমপি হওয়ায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু মনে মনে ক্ষিপ্ত ছিলেন। তাই মিন্টু তাঁকে (কাজী কামাল) নিয়ে আক্তারুজ্জামান শাহীনের ডাকে সাড়া দেন। শাহীন এমপি আনোয়ারুলকে শেষ করে দিতে পারলে সেখানে মিন্টুর এমপি হওয়ার স্বপ্নপূরণ হবে।

জবানবন্দিতে কাজী কামাল আরও বলেন, এমপিকে কলকাতায় খুন করার পর আমানুল্লাহ ১৫ মে ঢাকায় ফিরে ১৬ মে তাঁর (কাজী কামাল) সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে একাধিকবার কথা বলেন। ১৭ মে ফরিদপুরের ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাশে আমানুল্লাহর গাড়িতে তাঁর সঙ্গে তিনি বৈঠক করেন। তখন আমানুল্লাহ তাঁর মোবাইলে এমপি আনোয়ারুলের মরদেহের ছবি দেন। খুনের জন্য চুক্তির টাকার একটি অংশ কবে পাবেন, জানতে চান আমানুল্লাহ। তিনি (কাজী কামাল) ওই টাকা সাইদুল করিম মিন্টুর কাছ থেকে নিয়ে ২৪ মে তাঁকে দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু তার আগেই গ্রেপ্তার হন আমানুল্লাহ। আমানুল্লাহর কাছ থেকে এমপির মরদেহের ছবি পাওয়ার পর তিনি চলে যান সাইদুল করিম মিন্টুর কাছে। মিন্টু তাঁর (কাজী কামাল) মোবাইল থেকে ছবি নিজের মোবাইলে না নিয়ে তাঁর তিনটি মোবাইলই নিয়ে নেন। মিন্টু পরে জানান, ওই তিন মোবাইল হারিয়ে গেছে এবং তাঁকে থানায় জিডি করার পরামর্শ দেন।

ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় এমপি আনোয়ারুলের মেয়ের করা অপহরণ ও গুমের মামলায় এর আগে আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁরা কারাগারে রয়েছেন।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, খুলনা অঞ্চলের চরমপন্থী নেতা আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়ার জবানবন্দিতে কাজী কামাল ওরফে গ্যাস বাবুর নাম আসে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

বিয়ে করলেন সারজিস আলম

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়ছে শ্রীলঙ্কা, ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ কোথায় দেখবেন

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

সাবেক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কারে ধাক্কা, জাবিতে ১২ বাস আটকে ক্ষতিপূরণ আদায় ছাত্রদলের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত