Ajker Patrika

মূল্যবৃদ্ধি ও রাজবুদ্ধি

বিরস
আপডেট : ০১ জুন ২০২২, ১০: ০২
মূল্যবৃদ্ধি ও রাজবুদ্ধি

বাজারের এক হোটেলে এক দোকানমালিক প্রতিটি পরোটা বিক্রি করতেন পাঁচ টাকা দরে। হঠাৎ আটার দাম বেড়ে যাওয়ায় দোকানদার বিপদে পড়লেন। পাঁচ টাকায় পরোটা বেচে তাঁর পোষায় না। আবার পরোটার দামও বাড়াতে পারছিলেন না। কারণ, ওই দেশে রাজার অনুমতি ছাড়া কোনো জিনিসের দাম বাড়ানো ছিল দণ্ডনীয় অপরাধ।

নিরুপায় দোকানদার একদিন রাজার সঙ্গে দেখা করে বললেন, ‘মহারাজ, পরোটা বিক্রির আয় দিয়ে আমার সংসার চলে। কিন্তু পাঁচ টাকায় পরোটা বিক্রি করলে আমার লোকসান হয়। আমি তাই পরোটার দাম বাড়িয়ে ১০ টাকা করতে চাই।’

রাজা বললেন, ‘তুমি তোমার পরোটার দাম ১০ টাকা নয়, ৩০ টাকা করে দাও।’

দোকানদার বললেন, ‘মহারাজ, এক লাফে এত দাম বাড়ালে রাজ্যবাসীর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেবে।’

রাজা বললেন, ‘সে চিন্তা তোমাকে করতে হবে না, তুমি তোমার ফায়দার চিন্তা করো, তুমি এখন থেকে ৩০ টাকা করে পরোটা বেচবে।’

রাজার কথায় পরদিন থেকেই তাঁর পরোটার দাম বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হলো।

শহরজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হলো। প্রতিবাদী মানুষ রাজার কাছে ছুটে গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে বলল, ‘মহারাজ, ও তো জনগণের ওপর অত্যাচার শুরু করেছে, ৫ টাকার পরোটা ৩০ টাকায় বিক্রি করছে।’

রাজা সিপাইকে আদেশ দিলেন, ‘এই মুহূর্তে ওই মুনাফালোভী ব্যবসায়ীকে রাজদরবারে ধরে নিয়ে এসো।’

ওই ব্যক্তি রাজদরবারে উপস্থিত হওয়ামাত্র রাজা হুংকার দিয়ে উঠলেন, ‘তোর এত বড় সাহস, আমার রাজ্যে বাস করে তুই পরোটার দাম এত বাড়িয়ে মানুষকে উপোস করিয়ে মেরে ফেলতে চাস? কাল থেকে তুই পরোটা আধা দামে বিক্রি করবি, নইলে আমি তোকে শূলে চড়াব।’

রাজার আদেশ শুনেই প্রজারা ‘জয়, মহারাজের জয়’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত করে তুলল।

রাজার আদেশে ৫ টাকার পরোটা ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রজারা খুশি, ব্যবসায়ী খুশি। একেই বলে রাজবুদ্ধি!

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ: এই ঘটনা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। বাস্তব কোনো ঘটনার সঙ্গে এর কোনো মিল খোঁজার চেষ্টা না করাই উত্তম।

খ. বিদ্যুৎ বিভাগের সামনে এক ব্যক্তি চা, পাউরুটি, কলা বিক্রি করছিলেন। এক কর্মকর্তা চা খেতে গিয়ে ঝুলিয়ে রাখা কলা দেখে কলার দাম জানতে চাইলেন। বিক্রেতা উত্তর দিলেন, কী কাজে ব্যবহার হবে, তার ওপর নির্ভর করছে কলার দাম।

বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা একটু ক্ষুব্ধ হয়ে বললেন, ‘অ্যাই মিয়া, তুমি আমার সঙ্গে রসিকতা করো? কলার দাম আবার ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে নাকি? এটা তো সবাই খায়!’

বিক্রেতা আবার বলেন, ‘না স্যার, কলারও বহুবিধ ব্যবহার আছে এবং সেই মোতাবেক দামেও তারতম্য আছে?’

-যেমন?

-কোনো ধর্মীয় কাজে ব্যবহার করলে প্রতি কলা দুই টাকা। রোগীর জন্য কিনলে তিন টাকা আর আপনি খাওয়ার জন্য কিনলে পাঁচ টাকা।

কর্মকর্তা রেগে বললেন, ‘দূর মিয়া, একই কলার আবার এমন আলাদা আলাদা দাম হয় নাকি?’

কলা বিক্রেতা নিরুত্তেজ কণ্ঠেই বললেন, ‘কেন হবে না স্যার? একই বিদ্যুতের যদি বাসাবাড়িতে এক মূল্য, দোকানের জন্য অন্য মূল্য আবার কারখানায় নিলে আরেক দাম হতে পারে, তাহলে কলার দাম আলাদা আলাদা হলে অসুবিধা কোথায়?’

গ. শিবরাম চক্রবর্তী একবার গামছা পরে কুয়া থেকে জল তুলছিলেন। এমন সময় এক ভদ্রমহিলা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বললেন, ‘সে কী মশাই, আপনি এত বড় বংশের ছেলে, আপনার বাবা এত বড় একজন লোক, আর আপনি কিনা এভাবে গামছা পরে জল তুলছেন? শিবরামের জবাব: বংশ তুললেন, বাপ তুললেন, তাতেও হলো না, শেষে কিনা গামছা তুলে অপমান করলেন?

ঘ. শিবরাম চক্রবর্তীকে একবার একজন প্রশ্ন করলেন, ‘আপনার স্ত্রীকে যদি ভূতে ধরে আপনি কী করবেন?’

শিবরাম ঠান্ডা গলায় আস্তে করে বললেন, ‘আমি আর কী করব? ভুল যখন ভূতের, তখন ভূতই বুঝবে কাকে ধরেছে!’

ঙ. স্কুলের শিক্ষক এক ছাত্রকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘গ্রাম আর শহরে তফাত কী?’

ছাত্র: গ্রামের মানুষ গরু পালন করে আর শহরের মানুষ কুকুর পালন করে। গ্রামে অশিক্ষিত লোক গরু চরায় আর শহরে শিক্ষিত লোক কুকুর চরায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত