Ajker Patrika

বেহাল ডিজিটাল ল্যাব আইসিটি শিক্ষা ব্যাহত

আরিফুল হক তারেক, মুলাদী
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৩১
বেহাল ডিজিটাল ল্যাব আইসিটি শিক্ষা ব্যাহত

মুলাদী উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ডিজিটাল ল্যাব অচল হয়ে পড়েছে। ফলে গ্রামের শিক্ষার্থীদের আইসিটি শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। নিম্নমানের ল্যাপটপ, করোনাকালে প্রতিষ্ঠান বন্ধ, ইন্টারনেট সংযোগ না থাকা, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ল্যাবগুলো অচল হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মুলাদী উপজেলায় ৭টি কলেজ, ৩৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২০টি মাদ্রাসা ও একটি কারিগরি কলেজ রয়েছে। এর মধ্যে ২টি কলেজ, ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১টি মাদ্রাসা উপজেলা সদরে। উপজেলা সদর এবং বাইরে মিলিয়ে মাত্র ৫টি মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানে ও ৩টি কলেজে সরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব রয়েছে। এগুলো স্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর। এর বাইরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করেন।

চরকালেখান আদর্শ কলেজের আইসিটি শিক্ষক আনিচুর রহমান জানান, কলেজে ২০১৬ সালে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। শুরুতেই শিক্ষার্থীদের ব্যাচ করে অফিস প্রোগ্রাম এবং ব্যবহারিক ক্লাস করানো হতো। ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় শিক্ষার্থীদের মৌলিক বিষয় ছাড়া প্রকৃত ডিজিটাল শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি। নিম্নমানের ল্যাপটপ সরবরাহ করায় দুই বছরের মধ্যে ১৭টি ল্যাপটপের মধ্যে ৮টি অচল হয়ে যায়। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠা কয়েকবার সার্ভিসিং করে দিয়েছিল। সার্ভিসিংয়ের ২-১ মাসের মধ্যেই আবার অচল হয়ে গেছে।

আইসিটি শিক্ষক আরও বলেন, যেসব ল্যাপটপ সচল আছে তাও ধীরগতিতে চলছে। করোনা পরিস্থিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কম্পিউটার ল্যাব কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে ল্যাপটপগুলো নিয়মিত বিদ্যুৎ-সংযোগ (চার্জ) এবং চালু করা হয়েছিল। কিন্তু নিম্নমানের যন্ত্রাংশের ল্যাপটপ বেশি দিন সচল থাকে না।

চরকালেখান আদর্শ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আল আরাফাত জানায়, করোনায় শ্রেণি কার্যক্রম ও কলেজের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব বন্ধ থাকায় তেমন কিছুই শিখতে পারেনি। কলেজের কার্যক্রম শুরু হলেও ডিজিটাল ল্যাবে ল্যাপটপ দিয়ে কোনো কিছু শেখা যাচ্ছে না। কিছু ল্যাপটপ চালু হতেই ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে।

নাজিরপুর প্রগতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জসিম উদ্দীন বলেন, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ওই প্রতিষ্ঠানে একটি সিপিইউ এবং ১২টি মনিটর দিয়ে ২০১২ সালে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করেছিল। এক বছরের মধ্যেই সার্ভার পিসিটি অচল হওয়ায় ল্যাব বন্ধ হয়ে গেছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও লাভ হয়নি।

প্যাদারহাট ওয়াহেদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহসান, ৮ম শ্রেণির পুরো বছর করোনায় বন্ধ ছিল। কম্পিউটার ল্যাব অচল হয়ে যাওয়ায় হাতেকলমে শিক্ষা থেকে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, করোনায় দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেক ল্যাবে সমস্যা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ল্যাব সচল করার পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ল্যাপটপ ও ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনকারীদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় অচল ল্যাপটপ সচল করা যাচ্ছে না। অন্য কোনো কোম্পানির সঙ্গে নতুন চুক্তি করে ল্যাবগুলো সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত