Ajker Patrika

সিটি নির্বাচন: প্রতীক পেয়েই মাঠে জোর প্রচারে প্রার্থীরা

ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা প্রতিনিধি
Thumbnail image

ময়মনসিংহ ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গতকাল শুক্রবার প্রতীক বরাদ্দের পরই আনুষ্ঠানিক প্রচারে নেমে পড়েছেন প্রার্থীরা। মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীরাও নানাভাবে ভোটারদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা শুরু করেছেন। আগামী ৯ মার্চ এই দুই সিটিতে ভোট গ্রহণ হবে।

গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ময়মনসিংহ সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করে নির্বাচন কমিশন। নগরীর টাউন হল তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রতীক নিতে আসেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। প্রথম দিকে পাঁচজন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হয়।

নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে এবার আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক ছাড়া দ্বিতীয়বারের মতো ময়মনসিংহ সিটির ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন মেয়র প্রার্থী। বিএনপি নির্বাচনে না আসায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতীক পেয়েছেন আওয়ামী লীগের চার নেতা। জাতীয় পার্টি মনোনীত জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম স্বপন মন্ডল পেয়েছেন লাঙ্গল প্রতীক।

ময়মনসিংহ সিটির সদ্য সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু পেয়েছেন দেয়ালঘড়ি প্রতীক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম ঘোড়া, শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সাদেক খান মিল্কী টজু হাতি এবং কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য কৃষিবিদ ড. রেজাউল হক পেয়েছেন হরিণ প্রতীক।

প্রতীক পেয়ে মো. ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘ঘড়ি উন্নয়নের প্রতীক। উন্নয়নের অসমাপ্ত কাজ করতে নগরবাসী আবারও ঘড়ি প্রতীকে আস্থা রাখবে। বিগত পাঁচ বছরে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে শতভাগ উন্নয়ন করা সম্ভব হয়নি। সাধারণ মানুষ আমার প্রতি তাদের সমর্থন দিলে চলমান উন্নয়ন কাজ ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারব।’

হাতি প্রতীক পাওয়া সাদেক খান মিল্কী টজু বলেন, ‘নগরের মানুষ আকাশ দেখতে চায়, পরিচ্ছন্ন নগরীতে বসবাস করতে চায়, যানজট সমস্যার নিরসন চায়। তাই তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আমি প্রার্থী হয়েছি। মানুষ পরিবর্তনের লক্ষ্যে হাতি প্রতীকেই আস্থা রাখবে।’

ঘোড়া প্রতীক নিয়ে প্রচারণার মাঠে নামা এহতেশামুল আলম বলেন, ‘প্রতীক হাতে পেয়েই মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি। আমার পক্ষে সাধারণ মানুষের বেশ সাড়া রয়েছে। কারণ, বিগত সময়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি। মানুষকে সুন্দর স্মার্ট শহর উপহার দিতেই আমার প্রার্থী হওয়া।’

ময়মনসিংহ নগরীতে গণসংযোগ করেন দেয়ালঘড়ি প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু। ছবি: আজকের পত্রিকা প্রতীক পেয়ে মেয়র প্রার্থীদের পাশাপাশি প্রচারণায় নেমেছেন সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল মুনসুর বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ লাউ প্রতীক পেয়েছি। আমি একজন সাংস্কৃতিক কর্মী, সকলের পরিচিত মানুষ। প্রার্থী হওয়ার মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানবিক সুস্থ সমাজ গঠন করা। আমার স্লোগান হচ্ছে প্রত্যেক ভোটার হবে কাউন্সিলর।’

৪, ৫ এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী শাম্মি আক্তার মিতু বলেন, ‘বিগত পাঁচ বছরও ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলাম। নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি। আবারও সুযোগ পেলে নিজের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে চাই।’

কুমিল্লায় উপনির্বাচন
আওয়ামী লীগ নেতা মেয়র প্রার্থী তাহসিন বাহার সূচী বাস প্রতীক এবং নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম পেয়েছেন হাতি প্রতীক। অন্যদিকে বিএনপির বহিষ্কৃত দুই নেতা সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু টেবিল ঘড়ি এবং নিজাম উদ্দিন কায়সার পেয়েছেন ঘোড়া প্রতীক। সাক্কু ও কায়সার গত নির্বাচনেও একই প্রতীকে লড়াই করেছেন।

প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে শুরু হয়েছে প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা। মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু নগরীর নবাববাড়ী জামে মসজিদে নামাজ পড়ে মুসল্লিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। পরে দারোগাবাড়ী মাজার ও কালিয়াজুরি আইন উদ্দিন শাহ মাজার জিয়ারত শেষে গণসংযোগ করেন তিনি। সাক্কু বলেন, ‘সামনে যাতে নির্বাচনের সুষ্ঠ পরিবেশ থাকে, তা প্রত্যাশা করি। নির্বাচন সুষ্ঠু হোক; জনগণ যেন ভোট দিয়ে তাদের প্রার্থী নির্বাচন করতে পারে।’

মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেয়র প্রার্থী তাহসিন বাহার নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পুলিশ লাইন থেকে কান্দিরপাড় এলাকায় গণসংযোগ করেন। পরে ১৭ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক করেন। তিনি বলেন, ‘আমার প্রতীক বাস। আমি বিশ্বাস করি, এ বাস কুমিল্লার উন্নয়নের বাস। আমি এর চালক। কুমিল্লার উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আমার বাবা সংসদ সদস্য বাহার ও আমি সবসময় কাজ করে আসছি। আশা করি, এ উন্নয়নের যাত্রাকে আরও এগিয়ে নিতে নগরবাসীর দোয়া ও সমর্থন পাব।’

ঘোড়া প্রতীক পেয়ে নিজাম উদ্দিন কায়সার নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নুরপুর মসজিদে নামাজ আদায় করে গণসংযোগ শুরু করেন। পরে বিকেলে জাঙ্গালিয়া রয়েল বাস কাউন্টার থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত গণসংযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘ভোটের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। দমন-নিপীড়ন, হুমকি-ধমকি তো আছেই। তারপরও আমি আশাবাদী। কুমিল্লার মানুষ জিম্মিদশা থেকে মুক্তি চায়।’

হাতি প্রতীকের নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম নগরীর কান্দিরপাড় জামে মসজিদে নামাজ পড়ে সেখান থেকে গণসংযোগ শুরু করেন। পরে নগরীর পাথুরিয়া পাড়া, চকবাজার এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি। তানিম বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। সবার সমান অধিকার নিশ্চিত হলে ভোটাররা ভোটদানে উদ্বুদ্ধ হবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত