Ajker Patrika

গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য

রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ নভেম্বর ২০২১, ১৮: ০২
গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে নির্বাচনী সহিংসতার মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নের ঘনশ্যামপুর গ্রাম।

গত ১১ নভেম্বর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নেকমরদ ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফলাফলে বিজয়ী হন রাজেন্দ্র নাথ। এই ফলাফল মেনে না নিয়ে পরাজিত প্রার্থী মতিউর রহমান পুনরায় ভোট গণনার দাবি জানান। কিন্তু প্রিসাইডিং কর্মকর্তা তাঁর দাবি মেনে নেননি। এতে প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের অবরুদ্ধ ও প্রশাসনের গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন মতিউরের কর্মী সমর্থকেরা।

ওই ঘটনায় সহিংসতার অভিযোগ এনে ভোটের পরের দিন শুক্রবার সকালে উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কনিষ্ঠ হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও ওই কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হেলালউদ্দিন বাদী হয়ে পরাজিত ইউপি সদস্যকে প্রধান আসামি করে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩৫০ জনকে আসামি করে রাণীশংকৈল থানায় মামলা করেন।

মামলার কারণে গ্রেপ্তার আতঙ্কে রয়েছেন নেকমরদ ইউনিয়নের ঘনশ্যামপুর গ্রামের ময়মনসিংহ পাড়া, টাঙ্গাইল পাড়া ও জোতপাড়া এলাকার পুরুষেরা। এসব গ্রামে এখন থমথমে অবস্থা। গ্রেপ্তারের ভয়ে কোনো পুরুষ বাড়িতে থাকছেন না।

মামলার পর গত ১৪ নভেম্বর মধ্যরাতে ঘনশ্যামপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে আবুল হোসেন, শাহ আলম, আব্দুল হালিম ও মো. হানিফকে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে ঠাকুরগাঁও আদালতে তোলে পুলিশ। আদালত তাঁদের জামিন না মুঞ্জর করে কারাগারে পাঠান।

সরেজমিনে টাঙ্গাইলপাড়া এলাকায় গেলে কথা বলার মতো কোনো পুরুষ পাওয়া যায়নি। তবে এ প্রতিবেদককে দেখে কয়েকজন নারী এসে জানান, গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষেরা বাড়িতে থাকছেন না। এ ছাড়া দিনের বেলা অপরিচিত কেউ লোক পাড়াতে ঘোরাঘুরি দেখলেই পুরুষেরা লুকিয়ে পড়ছেন।

পার্শ্ববর্তী জোতপাড়ায় যেতে রাস্তার পাশে ধান কাটা শ্রমিকদের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাওয়ার চেষ্টা করা হলে এ প্রতিবেদকের কাছেও তাঁরা আসতে সাহস পায়নি, কমপক্ষে ১০ গজ দূরে দাঁড়িয়ে কথা বলেছেন। তাঁদের মধ্যে আ. কাদের বলেন, ‘পুলিশ মাঝেমধ্যেই এ গ্রামে আসছে। আমরা তাদের দেখে লুকিয়ে যাই। আর রাতে বাইরে থাকি। ইতিমধ্যে যাদের গ্রেপ্তার করেছে তাঁদের মধ্যে দুজন বয়স্ক মানুষ। একজনের অপারেশন করা। তাঁরা কোনো হট্টগোলে নেই তাও তাঁদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।’

কাদের আরও বলেন, ‘পুলিশের নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের নিশ্চয়তা চাই।’

টাঙ্গাইলপাড়ার আম্বিয়া বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী মাছ ধরে সংসার চালায়। ভোটের দিন মারামারির সময় আমরা যাইনি। পরে শুনেছি সবার নামে মামলা হয়েছে। এখন আমার স্বামী গ্রেপ্তারের ভয়ে বাসায় থাকে না।’

জোতপাড়ার রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘কয়েকজনের ধরে নিয়ে গেছে। এই ভয়ে বাসায় কেউ থাকে না।’

এ বিষয়ে মামলার বাদী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হেলাল উদ্দীনের বক্তব্য নিতে চাইলে তিনি বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

রাণীশংকৈল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম জাহিদ ইকবাল জানান, মামলার পর ইতিমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত করা হবে। নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত