Ajker Patrika

উত্তরের খামারে গলদা

পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি  
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮: ১৩
উত্তরের খামারে গলদা

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে উত্তর-পশ্চিম মৎস্য সম্প্রসারণ ও বীজ উৎপাদন কেন্দ্রের ভঙ্গুর অবস্থা আর নেই। একসময় অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় খামারটি মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছিল।

এখন আগের অবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। এসেছে গলদা চিংড়ি উৎপাদনে সাফল্য, যা বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব।

এছাড়া খামারটিতে রয়েছে মাছের পোনা উৎপাদনের জন্য ৪৬টি পুকুর, প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স ও আবাসিক ভবন। এখানে কার্পজাতীয় রুই, কাতলা, সিলভার, বিগ হেড, গ্রাসকার্প, কালবাউশ, বাটা ও দেশীয় প্রজাতির শিং, মাগুর, কই, গুলসা ট্যাংরা ও পাবদার পোনা উৎপাদন হয়।

রংপুর জেলার ৫৮ উপজেলা, কুড়িগ্রাম ও রংপুর সদরের শুঠিবাড়ী ও দিনাজপুরের বীরগঞ্জে চিংড়ি চাষ সম্প্রসারিত হয়েছে। পার্বতীপুরের মতো তারাও চিংড়ি চাষ করে চাষিদের মধ্যে পোনা বিতরণ করেছে।

এই প্রথম জাতীয় মৎস্য সপ্তাহে পার্বতীপুর উত্তর-পশ্চিম মৎস্যবীজ উৎপাদন খামার থেকে জেলার ১১টি উপজেলায় প্রায় ৫ মেট্রিক টন পোনা সরবরাহ করা হয়েছে।

পার্বতীপুর উত্তর-পশ্চিম মৎস্য সম্প্রসারণ ও বীজ উৎপাদন খামারের ব্যবস্থাপক মো. মুসা কালিমুল্লা জানান, এটি আদর্শ খামারে পরিণত করা সম্ভব। এ খামারে গলদা চিংড়ি নয়, যেন সাদা সোনা উৎপাদন হচ্ছে। এখানে দেশীয় প্রজাতির শিং, মাগুর, কই, গুলসা ট্যাংরা, পাবদা ও রুই, কাতলা, সিলভার কার্প, বিগ হেড, গ্রাসকার্প, কালবাউশ, বাটাজাতীয় মাছের পোনা উৎপাদন শুরু হয়েছে।

তিনি বলেন, একসময় ধারণা করা হয়েছিল, এ অঞ্চলের মাটি ও পানি চিংড়ি চাষের উপযুক্ত নয়। কিন্তু খামারে সফল গলদা চিংড়ির বীজ উৎপাদন এ অঞ্চলে চিংড়ি চাষের সম্ভাবনাকে অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০২১ সালের জুন কর্মপরিকল্পনায় এই খামারে সাড়ে চার লাখ গলদা চিংড়ি পোনা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। গলদা চিংড়ির পিএল উৎপাদনের ক্ষেত্রে জীবনচক্রের শুরুতে ব্রাউন ওয়াটার বা লোনাপানির দরকার হয়।

এ ক্ষেত্রে কক্সবাজারের পেকুয়া থেকে ব্রাউন ওয়াটার বা লোনাপানি সংগ্রহ করে স্বাদু বা মিঠাপানির সঙ্গে খাপ খাওয়ায়ে পিএল উৎপাদন করা হয়। উৎপাদনের ক্ষেত্রে বরগুনার আমতলীর পায়রা নদী থেকে গলদা চিংড়ির মা মাছ সংগ্রহ করে আনা হয়। মা মাছ থেকে লাভা সংগ্রহ করে ২৮-৩৫ দিনের মধ্যে পিএল উৎপাদন করা হয়।

দিনাজপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মুক্তাদির খান বলেন, এ অঞ্চলে দেশীয় মাছগুলো প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এ মুহূর্তে খামারে চাষি পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মশালা করা হচ্ছে। এ ছাড়া খামারে কাগজে-কলমে যে লোকবল থাকার কথা তা এখানে নেই। তারপরও স্বল্প লোকবল নিয়ে খামারের কাজ সুচারুভাবে করে যাওয়ার চেষ্টা করছেন খামার ব্যবস্থাপক।

রংপুর বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সাইনার আলম জানান, খামারটি মাছ চাষের ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছে। অব্যবস্থাপনায় খামারটি মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। তবে এখন সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। কারণ সব কর্মকর্তা, কর্মচারী দলবদ্ধভাবে কাজ করছেন। এ খামার থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ চাষি মাছের পোনা নিয়ে চাষ করছেন।

পার্বতীপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ মো. হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, দীর্ঘদিনের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনায় খামারটি পতিত ছিল। বর্তমানে আগের অবস্থার চেয়ে খামারের আমূল পরিবর্তন ঘটেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত