তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা
মূল ভবনের নবম তলায় উঠে পাশের ভবনে যেতে হয়। সেই ভবন থেকে স্টিলের সেতু পেরিয়ে যেতে হয় রাস্তার অপর পাশের আরেকটি ভবনে। সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের এভাবেই এক ভবন থেকে অন্য ভবনে ছোটাছুটির এই দৃশ্য প্রতিদিন চোখে পড়ে রাজধানীর অন্যতম নামীদামি বেসরকারি হাসপাতাল স্কয়ারে।
শুধু এই হাসপাতালই নয়, ল্যাবএইড, আনোয়ার খান মডার্ন, বিআরবি, শমরিতা, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড, গ্রিন লাইফ, পপুলার, সেন্ট্রাল, ইবনে সিনা, বাংলাদেশ আই হাসপাতালসহ ঢাকার ১১টি নামীদামি হাসপাতালে কার্যক্রম চলছে পাশাপাশি একাধিক ভবনকে যুক্ত করে।
অভিযোগ উঠেছে, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের (বিএনবিসি) তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো হাসপাতাল সম্প্রসারণ করে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। একটি ভবনে হাসপাতালের অনুমোদন নিয়ে একের পর এক ভবন যুক্ত করা হচ্ছে তার সঙ্গে। কখনো স্টিল স্ট্রাকচারের সেতু আবার কখনো আরসিসি ঢালাই দিয়ে যুক্ত করা হচ্ছে ভবন। বিপজ্জনক এসব সংযোগের ক্ষেত্রে অনুমোদন নেওয়া হচ্ছে না রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের। এসব কারণে হাসপাতালগুলোকে এরই মধ্যে নোটিশও দিয়েছে রাজউক। গত ৩০ এপ্রিল চিঠি পাঠানো হয়েছে স্কয়ার হাসপাতালকে।
এ বিষয়ে স্কয়ার হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রকৌশল) মাশফিকুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা নিয়মনীতির বাইরে কিছু করি না। ইউনিয়ন কোম্পানির ভবনের সঙ্গে যে সংযোগ রয়েছে, তা অনুমোদনের বিষয়ে তারাই কাজ করছে।’
নগরবিদ ও অগ্নিনিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্ত করা এসব ভবনে ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ডের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে রোগীদের উদ্ধার করার ক্ষেত্রে ভয়াবহ সমস্যা দেখা দেবে।
নগরবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব এ বিষয়ে বলেন, ‘একটি ভবনকে যখন হাসপাতালের প্রয়োজনে কাজে লাগানো হবে, তখন অবশ্যই বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে ভবনগুলো সেতু বানিয়ে যুক্ত করেছে, সেগুলোর ব্যবহারে যে পরিবর্তন এসেছে, তারও অনুমোদন নিতে হবে। সম্প্রসারিত এসব ভবনে ওপিডি, ওটি, সিসিও, আইসিও, কেবিন ও ওয়ার্ড করা হচ্ছে। ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ডের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে রোগীদের উদ্ধার করার ক্ষেত্রে ভয়াবহ সমস্যা দেখা দেবে। তাই এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় পপুলার হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে মোট ছয়টি ভবন ঘিরে। এর মধ্যে পাঁচটি ভবন পাশাপাশি। তিনটি ভবনের মধ্যে রয়েছে আন্তসংযোগ। ১ ও ২ নম্বর ভবনকে তৃতীয় তলায় স্টিলের সেতু বসিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। সাড়ে তিন থেকে চার ফুট চওড়া এ সংযোগ পথ দিয়ে একসঙ্গে দুজন চলাফেরাও কঠিন। এসব কারণে চলতি বছরের ২৫ জুন পপুলার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে রাজউক।
জানতে চাইলে পপুলার হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা অচিন্ত কুমার নাগ বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালের ভবনে এমন সংযোগ রয়েছে। তবে রাজউক থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে কি না বা অনুমোদনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না তা বলতে পারছি না।’
ধানমন্ডি ৪ নম্বর রোডের ১ ও ২ নম্বর প্লটে চলছে ল্যাবএইড হাসপাতালের কার্যক্রম। এ হাসপাতালের উল্টো দিকে কনকর্ড কনসোর্টিয়াম নামের ভবনটিতেও কার্যক্রম চালাচ্ছে হাসপাতালটি। ওই ভবনে যাওয়ার জন্য রাস্তার ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে একটি সংযোগ সেতু। এসব কারণে রাজউক ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি চিঠিও দিয়েছে ল্যাবএইডকে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীমের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়ে একজন ফোন ধরেন। এরপর বিস্তারিত শুনে এ বিষয়ে ডা. এ এম শামীমের সঙ্গে আলোচনা করে জানাবেন জানিয়ে ফোন রেখে দেন। কিছুক্ষণ পর ফোন করে আরিফ নামের একজন বলেন, ‘স্যার এখন ব্যস্ত, পরে আপনাকে ফোন করবেন।’
বেশ কয়েক বছর আগে ৭৮ সাতমসজিদ রোড ঠিকানায় যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ আই হাসপাতাল। এখন পাশের একটি বড় ভবনকেও হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করছে কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে দেখা যায়, পুরোনো ভবনের ৮ তলার সঙ্গে বড় আকারের স্টিলের সেতু দিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে নতুন ভবনটিকে। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এই হাসপাতালে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে রাজউক। তখন মুচলেকা দিয়ে পার পায় কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ আই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম হায়দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার জানামতে, অনুমোদন আছে। এরপরও কোনো জটিলতা থাকলে ভবনমালিক তা জানেন। আমরা ভবনটি ভাড়া নিয়েছি।’
এদিকে রাজধানীর গ্রিন রোডের বিআরবি হাসপাতালের তিনতলায় গিয়ে দেখা যায় একই ধরনের সংযোগ। ১২ ফুট চওড়া ৩০ ফুট লম্বা একটি স্টিল স্ট্রাকচারের সেতু বসিয়ে যুক্ত করা হয়েছে পাশাপাশি দুটি ভবনকে। বিআরবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংশোধিত নকশা পাসের আবেদন করলে এ ধরনের ত্রুটিবিচ্যুতির কারণে তা নাকচ করে দিয়েছে রাজউক।
এ বিষয়ে বিআরবি হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত জানা নেই বলে এড়িয়ে যান।
পান্থপথের শমরিতা হাতপাতালেরও একই অবস্থা। এ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পেছনের একটি ভবনের সঙ্গে মূল ভবনকে যুক্ত করেছে তিনতলা ও ছয়তলায় দুটি সেতুর মাধ্যমে। এ নিয়ে কথা বলতে শমরিতা হাসপাতালের পরিচালক ডা. হারুন উর রশীদের ব্যক্তিগত ফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোডের ইবনে সিনা হাসপাতালেও রয়েছে পাশের ভবনের তিনটি সংযোগ। নিচতলার পুরো দেয়াল কেটে সংযোগ বসানোর পর তৃতীয় ও পঞ্চম তলায় আরসিসি ব্রিজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইবনে সিনা হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিল্ডিং কোড মেনে কার্যক্রম চালাচ্ছি। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।’
গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে দক্ষিণ অংশের মূল ভবনের সঙ্গে উত্তরের আরেকটি ভবনের সংযোগ ঘটেছে তৃতীয় ও পঞ্চম তলায় আরসিসি সেতু বসিয়ে। এ নিয়ে কথা বলতে সেন্ট্রাল হাসপাতালের দাপ্তরিক নম্বরে ফোন করলে পরিচয় শুনে এক ব্যক্তি বলেন, ‘কাউকে কথা বলার জন্য পাওয়া যাচ্ছে না।’
সেতু সংযোগের ঘটনা ঘটেছে গ্রিন লাইফ হাসপাতালেও। সেখানে তৃতীয় তলায় স্টিলের সংযোগ সেতু বসানো হয়েছে। এ বিষয়ে গ্রিন লাইফ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মাইনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এসব বিষয় নিয়ে রাজউকে আবেদন করেছি। এখনো কোনো উত্তর আসেনি।’
মিরপুর রোডের আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল ও বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও মূল ভবনের সঙ্গে অন্য আরেকটি ভবনের সংযোগ দিয়েছে। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে রাজউক। জানতে চাইলে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের ব্যবস্থাপক নিয়াজ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো তথ্য আমার জানা নেই।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮-এ বলা হয়েছে, ইমারত নির্মাণ যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, সে উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ইমারত ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ আবাসিক বাড়ির জন্য ইমারত নির্মাণের অনুমতি নিলে ওই ভবনকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। ইমারতের মেঝের যেকোনো অবস্থান থেকে অনধিক ২৫ মিটারের মধ্যে জরুরি নির্গমন পথ থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয়সংখ্যক অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র বা অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা থাকতে হবে। কিন্তু একের পর এক ভবন সংযুক্ত করে কার্যক্রম চালানো এসব হাসপাতালে মানা হচ্ছে না এই বিধিমালা।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ব্রি জে আলী আহমেদ খান (অব) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনুমোদন ছাড়াই ভবন যুক্ত করা হচ্ছে; বিষয়টি খুব জটিল। হাসপাতাল করতে হলে সম্পূর্ণ কমপ্লায়েন্স থাকতে হবে। যেখানে ভবনে সংযোগ দিয়ে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, সেখানে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে রোগী বের করবে কীভাবে? আইসিইউ বা অপারেশন রুমে থাকা রোগী এসব সংযোগ দিয়ে বের করতে পারবে না।’
যেসব হাসপাতাল নিজেরা ইচ্ছামাফিক ভবন যুক্ত করছে, তারা পুরো হাসপাতাল ব্যবহারেই অনুমোদিত নকশা মানছে না। সিঁড়ি, লবি ব্যবহার করছে অন্য কাজে। এ কারণে এখন পর্যন্ত যাঁরা নকশা সংশোধনের আবেদন করেছেন, রাজউক তাঁদের সংশোধিত নকশায় অনুমোদন দিতে পারছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আনিছুর রহমান মিঞা নিজ দপ্তরে বলেন, ‘আসলে এসব বিষয় নিয়ে আমাদের মাঠপর্যায়ের লোকজন কাজ করেন। তাঁরা টেকনিক্যাল বিষয়টা ভালো বলতে পারবেন।’
পরে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও মুখপাত্র মো. আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে রাজউক থেকে এখনো কাউকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কারণ, হাসপাতালগুলো যেসব রাস্তার ওপর দিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করছে, সে রাস্তার মালিক সিটি করপোরেশন। আবার সংযোগ ব্রিজের অংশটুকু কোন প্লটের সঙ্গে যুক্ত হবে, তাও বিবেচনার বিষয়। এসব স্ট্রাকচারাল ভেটিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত করতে হবে। এ ধরনের সংযোগের ক্ষেত্রে ভবন নির্মাণের সময়ই প্রকৌশলগত দিক নিশ্চিত করতে হবে। পুরোনো ভবনগুলোতে এভাবে ব্রিজ করে সংযোগ দেওয়া নানা দিক দিয়ে হাসপাতালগুলোর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। রাজউক এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিবে।’
নামীদামি হাসপাতালগুলোর এভাবে কার্যক্রম চালানোর বিষয়ে কথা হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেশ কয়েকটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো করে সম্প্রসারণ করেছে বলে শুনেছি; কিন্তু ফাইল না দেখে বিস্তারিত বলতে পারছি না।’
মূল ভবনের নবম তলায় উঠে পাশের ভবনে যেতে হয়। সেই ভবন থেকে স্টিলের সেতু পেরিয়ে যেতে হয় রাস্তার অপর পাশের আরেকটি ভবনে। সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের এভাবেই এক ভবন থেকে অন্য ভবনে ছোটাছুটির এই দৃশ্য প্রতিদিন চোখে পড়ে রাজধানীর অন্যতম নামীদামি বেসরকারি হাসপাতাল স্কয়ারে।
শুধু এই হাসপাতালই নয়, ল্যাবএইড, আনোয়ার খান মডার্ন, বিআরবি, শমরিতা, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড, গ্রিন লাইফ, পপুলার, সেন্ট্রাল, ইবনে সিনা, বাংলাদেশ আই হাসপাতালসহ ঢাকার ১১টি নামীদামি হাসপাতালে কার্যক্রম চলছে পাশাপাশি একাধিক ভবনকে যুক্ত করে।
অভিযোগ উঠেছে, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের (বিএনবিসি) তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো হাসপাতাল সম্প্রসারণ করে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। একটি ভবনে হাসপাতালের অনুমোদন নিয়ে একের পর এক ভবন যুক্ত করা হচ্ছে তার সঙ্গে। কখনো স্টিল স্ট্রাকচারের সেতু আবার কখনো আরসিসি ঢালাই দিয়ে যুক্ত করা হচ্ছে ভবন। বিপজ্জনক এসব সংযোগের ক্ষেত্রে অনুমোদন নেওয়া হচ্ছে না রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের। এসব কারণে হাসপাতালগুলোকে এরই মধ্যে নোটিশও দিয়েছে রাজউক। গত ৩০ এপ্রিল চিঠি পাঠানো হয়েছে স্কয়ার হাসপাতালকে।
এ বিষয়ে স্কয়ার হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রকৌশল) মাশফিকুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা নিয়মনীতির বাইরে কিছু করি না। ইউনিয়ন কোম্পানির ভবনের সঙ্গে যে সংযোগ রয়েছে, তা অনুমোদনের বিষয়ে তারাই কাজ করছে।’
নগরবিদ ও অগ্নিনিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্ত করা এসব ভবনে ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ডের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে রোগীদের উদ্ধার করার ক্ষেত্রে ভয়াবহ সমস্যা দেখা দেবে।
নগরবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব এ বিষয়ে বলেন, ‘একটি ভবনকে যখন হাসপাতালের প্রয়োজনে কাজে লাগানো হবে, তখন অবশ্যই বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে ভবনগুলো সেতু বানিয়ে যুক্ত করেছে, সেগুলোর ব্যবহারে যে পরিবর্তন এসেছে, তারও অনুমোদন নিতে হবে। সম্প্রসারিত এসব ভবনে ওপিডি, ওটি, সিসিও, আইসিও, কেবিন ও ওয়ার্ড করা হচ্ছে। ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ডের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে রোগীদের উদ্ধার করার ক্ষেত্রে ভয়াবহ সমস্যা দেখা দেবে। তাই এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় পপুলার হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে মোট ছয়টি ভবন ঘিরে। এর মধ্যে পাঁচটি ভবন পাশাপাশি। তিনটি ভবনের মধ্যে রয়েছে আন্তসংযোগ। ১ ও ২ নম্বর ভবনকে তৃতীয় তলায় স্টিলের সেতু বসিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। সাড়ে তিন থেকে চার ফুট চওড়া এ সংযোগ পথ দিয়ে একসঙ্গে দুজন চলাফেরাও কঠিন। এসব কারণে চলতি বছরের ২৫ জুন পপুলার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে রাজউক।
জানতে চাইলে পপুলার হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা অচিন্ত কুমার নাগ বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালের ভবনে এমন সংযোগ রয়েছে। তবে রাজউক থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে কি না বা অনুমোদনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না তা বলতে পারছি না।’
ধানমন্ডি ৪ নম্বর রোডের ১ ও ২ নম্বর প্লটে চলছে ল্যাবএইড হাসপাতালের কার্যক্রম। এ হাসপাতালের উল্টো দিকে কনকর্ড কনসোর্টিয়াম নামের ভবনটিতেও কার্যক্রম চালাচ্ছে হাসপাতালটি। ওই ভবনে যাওয়ার জন্য রাস্তার ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে একটি সংযোগ সেতু। এসব কারণে রাজউক ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি চিঠিও দিয়েছে ল্যাবএইডকে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীমের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়ে একজন ফোন ধরেন। এরপর বিস্তারিত শুনে এ বিষয়ে ডা. এ এম শামীমের সঙ্গে আলোচনা করে জানাবেন জানিয়ে ফোন রেখে দেন। কিছুক্ষণ পর ফোন করে আরিফ নামের একজন বলেন, ‘স্যার এখন ব্যস্ত, পরে আপনাকে ফোন করবেন।’
বেশ কয়েক বছর আগে ৭৮ সাতমসজিদ রোড ঠিকানায় যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ আই হাসপাতাল। এখন পাশের একটি বড় ভবনকেও হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করছে কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে দেখা যায়, পুরোনো ভবনের ৮ তলার সঙ্গে বড় আকারের স্টিলের সেতু দিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে নতুন ভবনটিকে। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এই হাসপাতালে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে রাজউক। তখন মুচলেকা দিয়ে পার পায় কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ আই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম হায়দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার জানামতে, অনুমোদন আছে। এরপরও কোনো জটিলতা থাকলে ভবনমালিক তা জানেন। আমরা ভবনটি ভাড়া নিয়েছি।’
এদিকে রাজধানীর গ্রিন রোডের বিআরবি হাসপাতালের তিনতলায় গিয়ে দেখা যায় একই ধরনের সংযোগ। ১২ ফুট চওড়া ৩০ ফুট লম্বা একটি স্টিল স্ট্রাকচারের সেতু বসিয়ে যুক্ত করা হয়েছে পাশাপাশি দুটি ভবনকে। বিআরবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংশোধিত নকশা পাসের আবেদন করলে এ ধরনের ত্রুটিবিচ্যুতির কারণে তা নাকচ করে দিয়েছে রাজউক।
এ বিষয়ে বিআরবি হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত জানা নেই বলে এড়িয়ে যান।
পান্থপথের শমরিতা হাতপাতালেরও একই অবস্থা। এ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পেছনের একটি ভবনের সঙ্গে মূল ভবনকে যুক্ত করেছে তিনতলা ও ছয়তলায় দুটি সেতুর মাধ্যমে। এ নিয়ে কথা বলতে শমরিতা হাসপাতালের পরিচালক ডা. হারুন উর রশীদের ব্যক্তিগত ফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোডের ইবনে সিনা হাসপাতালেও রয়েছে পাশের ভবনের তিনটি সংযোগ। নিচতলার পুরো দেয়াল কেটে সংযোগ বসানোর পর তৃতীয় ও পঞ্চম তলায় আরসিসি ব্রিজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইবনে সিনা হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিল্ডিং কোড মেনে কার্যক্রম চালাচ্ছি। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।’
গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে দক্ষিণ অংশের মূল ভবনের সঙ্গে উত্তরের আরেকটি ভবনের সংযোগ ঘটেছে তৃতীয় ও পঞ্চম তলায় আরসিসি সেতু বসিয়ে। এ নিয়ে কথা বলতে সেন্ট্রাল হাসপাতালের দাপ্তরিক নম্বরে ফোন করলে পরিচয় শুনে এক ব্যক্তি বলেন, ‘কাউকে কথা বলার জন্য পাওয়া যাচ্ছে না।’
সেতু সংযোগের ঘটনা ঘটেছে গ্রিন লাইফ হাসপাতালেও। সেখানে তৃতীয় তলায় স্টিলের সংযোগ সেতু বসানো হয়েছে। এ বিষয়ে গ্রিন লাইফ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মাইনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এসব বিষয় নিয়ে রাজউকে আবেদন করেছি। এখনো কোনো উত্তর আসেনি।’
মিরপুর রোডের আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল ও বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও মূল ভবনের সঙ্গে অন্য আরেকটি ভবনের সংযোগ দিয়েছে। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে রাজউক। জানতে চাইলে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের ব্যবস্থাপক নিয়াজ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো তথ্য আমার জানা নেই।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮-এ বলা হয়েছে, ইমারত নির্মাণ যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, সে উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ইমারত ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ আবাসিক বাড়ির জন্য ইমারত নির্মাণের অনুমতি নিলে ওই ভবনকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। ইমারতের মেঝের যেকোনো অবস্থান থেকে অনধিক ২৫ মিটারের মধ্যে জরুরি নির্গমন পথ থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয়সংখ্যক অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র বা অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা থাকতে হবে। কিন্তু একের পর এক ভবন সংযুক্ত করে কার্যক্রম চালানো এসব হাসপাতালে মানা হচ্ছে না এই বিধিমালা।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ব্রি জে আলী আহমেদ খান (অব) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনুমোদন ছাড়াই ভবন যুক্ত করা হচ্ছে; বিষয়টি খুব জটিল। হাসপাতাল করতে হলে সম্পূর্ণ কমপ্লায়েন্স থাকতে হবে। যেখানে ভবনে সংযোগ দিয়ে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, সেখানে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে রোগী বের করবে কীভাবে? আইসিইউ বা অপারেশন রুমে থাকা রোগী এসব সংযোগ দিয়ে বের করতে পারবে না।’
যেসব হাসপাতাল নিজেরা ইচ্ছামাফিক ভবন যুক্ত করছে, তারা পুরো হাসপাতাল ব্যবহারেই অনুমোদিত নকশা মানছে না। সিঁড়ি, লবি ব্যবহার করছে অন্য কাজে। এ কারণে এখন পর্যন্ত যাঁরা নকশা সংশোধনের আবেদন করেছেন, রাজউক তাঁদের সংশোধিত নকশায় অনুমোদন দিতে পারছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আনিছুর রহমান মিঞা নিজ দপ্তরে বলেন, ‘আসলে এসব বিষয় নিয়ে আমাদের মাঠপর্যায়ের লোকজন কাজ করেন। তাঁরা টেকনিক্যাল বিষয়টা ভালো বলতে পারবেন।’
পরে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও মুখপাত্র মো. আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে রাজউক থেকে এখনো কাউকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কারণ, হাসপাতালগুলো যেসব রাস্তার ওপর দিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করছে, সে রাস্তার মালিক সিটি করপোরেশন। আবার সংযোগ ব্রিজের অংশটুকু কোন প্লটের সঙ্গে যুক্ত হবে, তাও বিবেচনার বিষয়। এসব স্ট্রাকচারাল ভেটিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত করতে হবে। এ ধরনের সংযোগের ক্ষেত্রে ভবন নির্মাণের সময়ই প্রকৌশলগত দিক নিশ্চিত করতে হবে। পুরোনো ভবনগুলোতে এভাবে ব্রিজ করে সংযোগ দেওয়া নানা দিক দিয়ে হাসপাতালগুলোর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। রাজউক এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিবে।’
নামীদামি হাসপাতালগুলোর এভাবে কার্যক্রম চালানোর বিষয়ে কথা হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেশ কয়েকটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো করে সম্প্রসারণ করেছে বলে শুনেছি; কিন্তু ফাইল না দেখে বিস্তারিত বলতে পারছি না।’
তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা
মূল ভবনের নবম তলায় উঠে পাশের ভবনে যেতে হয়। সেই ভবন থেকে স্টিলের সেতু পেরিয়ে যেতে হয় রাস্তার অপর পাশের আরেকটি ভবনে। সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের এভাবেই এক ভবন থেকে অন্য ভবনে ছোটাছুটির এই দৃশ্য প্রতিদিন চোখে পড়ে রাজধানীর অন্যতম নামীদামি বেসরকারি হাসপাতাল স্কয়ারে।
শুধু এই হাসপাতালই নয়, ল্যাবএইড, আনোয়ার খান মডার্ন, বিআরবি, শমরিতা, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড, গ্রিন লাইফ, পপুলার, সেন্ট্রাল, ইবনে সিনা, বাংলাদেশ আই হাসপাতালসহ ঢাকার ১১টি নামীদামি হাসপাতালে কার্যক্রম চলছে পাশাপাশি একাধিক ভবনকে যুক্ত করে।
অভিযোগ উঠেছে, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের (বিএনবিসি) তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো হাসপাতাল সম্প্রসারণ করে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। একটি ভবনে হাসপাতালের অনুমোদন নিয়ে একের পর এক ভবন যুক্ত করা হচ্ছে তার সঙ্গে। কখনো স্টিল স্ট্রাকচারের সেতু আবার কখনো আরসিসি ঢালাই দিয়ে যুক্ত করা হচ্ছে ভবন। বিপজ্জনক এসব সংযোগের ক্ষেত্রে অনুমোদন নেওয়া হচ্ছে না রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের। এসব কারণে হাসপাতালগুলোকে এরই মধ্যে নোটিশও দিয়েছে রাজউক। গত ৩০ এপ্রিল চিঠি পাঠানো হয়েছে স্কয়ার হাসপাতালকে।
এ বিষয়ে স্কয়ার হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রকৌশল) মাশফিকুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা নিয়মনীতির বাইরে কিছু করি না। ইউনিয়ন কোম্পানির ভবনের সঙ্গে যে সংযোগ রয়েছে, তা অনুমোদনের বিষয়ে তারাই কাজ করছে।’
নগরবিদ ও অগ্নিনিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্ত করা এসব ভবনে ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ডের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে রোগীদের উদ্ধার করার ক্ষেত্রে ভয়াবহ সমস্যা দেখা দেবে।
নগরবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব এ বিষয়ে বলেন, ‘একটি ভবনকে যখন হাসপাতালের প্রয়োজনে কাজে লাগানো হবে, তখন অবশ্যই বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে ভবনগুলো সেতু বানিয়ে যুক্ত করেছে, সেগুলোর ব্যবহারে যে পরিবর্তন এসেছে, তারও অনুমোদন নিতে হবে। সম্প্রসারিত এসব ভবনে ওপিডি, ওটি, সিসিও, আইসিও, কেবিন ও ওয়ার্ড করা হচ্ছে। ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ডের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে রোগীদের উদ্ধার করার ক্ষেত্রে ভয়াবহ সমস্যা দেখা দেবে। তাই এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় পপুলার হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে মোট ছয়টি ভবন ঘিরে। এর মধ্যে পাঁচটি ভবন পাশাপাশি। তিনটি ভবনের মধ্যে রয়েছে আন্তসংযোগ। ১ ও ২ নম্বর ভবনকে তৃতীয় তলায় স্টিলের সেতু বসিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। সাড়ে তিন থেকে চার ফুট চওড়া এ সংযোগ পথ দিয়ে একসঙ্গে দুজন চলাফেরাও কঠিন। এসব কারণে চলতি বছরের ২৫ জুন পপুলার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে রাজউক।
জানতে চাইলে পপুলার হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা অচিন্ত কুমার নাগ বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালের ভবনে এমন সংযোগ রয়েছে। তবে রাজউক থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে কি না বা অনুমোদনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না তা বলতে পারছি না।’
ধানমন্ডি ৪ নম্বর রোডের ১ ও ২ নম্বর প্লটে চলছে ল্যাবএইড হাসপাতালের কার্যক্রম। এ হাসপাতালের উল্টো দিকে কনকর্ড কনসোর্টিয়াম নামের ভবনটিতেও কার্যক্রম চালাচ্ছে হাসপাতালটি। ওই ভবনে যাওয়ার জন্য রাস্তার ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে একটি সংযোগ সেতু। এসব কারণে রাজউক ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি চিঠিও দিয়েছে ল্যাবএইডকে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীমের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়ে একজন ফোন ধরেন। এরপর বিস্তারিত শুনে এ বিষয়ে ডা. এ এম শামীমের সঙ্গে আলোচনা করে জানাবেন জানিয়ে ফোন রেখে দেন। কিছুক্ষণ পর ফোন করে আরিফ নামের একজন বলেন, ‘স্যার এখন ব্যস্ত, পরে আপনাকে ফোন করবেন।’
বেশ কয়েক বছর আগে ৭৮ সাতমসজিদ রোড ঠিকানায় যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ আই হাসপাতাল। এখন পাশের একটি বড় ভবনকেও হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করছে কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে দেখা যায়, পুরোনো ভবনের ৮ তলার সঙ্গে বড় আকারের স্টিলের সেতু দিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে নতুন ভবনটিকে। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এই হাসপাতালে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে রাজউক। তখন মুচলেকা দিয়ে পার পায় কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ আই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম হায়দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার জানামতে, অনুমোদন আছে। এরপরও কোনো জটিলতা থাকলে ভবনমালিক তা জানেন। আমরা ভবনটি ভাড়া নিয়েছি।’
এদিকে রাজধানীর গ্রিন রোডের বিআরবি হাসপাতালের তিনতলায় গিয়ে দেখা যায় একই ধরনের সংযোগ। ১২ ফুট চওড়া ৩০ ফুট লম্বা একটি স্টিল স্ট্রাকচারের সেতু বসিয়ে যুক্ত করা হয়েছে পাশাপাশি দুটি ভবনকে। বিআরবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংশোধিত নকশা পাসের আবেদন করলে এ ধরনের ত্রুটিবিচ্যুতির কারণে তা নাকচ করে দিয়েছে রাজউক।
এ বিষয়ে বিআরবি হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত জানা নেই বলে এড়িয়ে যান।
পান্থপথের শমরিতা হাতপাতালেরও একই অবস্থা। এ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পেছনের একটি ভবনের সঙ্গে মূল ভবনকে যুক্ত করেছে তিনতলা ও ছয়তলায় দুটি সেতুর মাধ্যমে। এ নিয়ে কথা বলতে শমরিতা হাসপাতালের পরিচালক ডা. হারুন উর রশীদের ব্যক্তিগত ফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোডের ইবনে সিনা হাসপাতালেও রয়েছে পাশের ভবনের তিনটি সংযোগ। নিচতলার পুরো দেয়াল কেটে সংযোগ বসানোর পর তৃতীয় ও পঞ্চম তলায় আরসিসি ব্রিজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইবনে সিনা হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিল্ডিং কোড মেনে কার্যক্রম চালাচ্ছি। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।’
গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে দক্ষিণ অংশের মূল ভবনের সঙ্গে উত্তরের আরেকটি ভবনের সংযোগ ঘটেছে তৃতীয় ও পঞ্চম তলায় আরসিসি সেতু বসিয়ে। এ নিয়ে কথা বলতে সেন্ট্রাল হাসপাতালের দাপ্তরিক নম্বরে ফোন করলে পরিচয় শুনে এক ব্যক্তি বলেন, ‘কাউকে কথা বলার জন্য পাওয়া যাচ্ছে না।’
সেতু সংযোগের ঘটনা ঘটেছে গ্রিন লাইফ হাসপাতালেও। সেখানে তৃতীয় তলায় স্টিলের সংযোগ সেতু বসানো হয়েছে। এ বিষয়ে গ্রিন লাইফ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মাইনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এসব বিষয় নিয়ে রাজউকে আবেদন করেছি। এখনো কোনো উত্তর আসেনি।’
মিরপুর রোডের আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল ও বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও মূল ভবনের সঙ্গে অন্য আরেকটি ভবনের সংযোগ দিয়েছে। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে রাজউক। জানতে চাইলে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের ব্যবস্থাপক নিয়াজ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো তথ্য আমার জানা নেই।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮-এ বলা হয়েছে, ইমারত নির্মাণ যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, সে উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ইমারত ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ আবাসিক বাড়ির জন্য ইমারত নির্মাণের অনুমতি নিলে ওই ভবনকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। ইমারতের মেঝের যেকোনো অবস্থান থেকে অনধিক ২৫ মিটারের মধ্যে জরুরি নির্গমন পথ থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয়সংখ্যক অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র বা অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা থাকতে হবে। কিন্তু একের পর এক ভবন সংযুক্ত করে কার্যক্রম চালানো এসব হাসপাতালে মানা হচ্ছে না এই বিধিমালা।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ব্রি জে আলী আহমেদ খান (অব) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনুমোদন ছাড়াই ভবন যুক্ত করা হচ্ছে; বিষয়টি খুব জটিল। হাসপাতাল করতে হলে সম্পূর্ণ কমপ্লায়েন্স থাকতে হবে। যেখানে ভবনে সংযোগ দিয়ে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, সেখানে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে রোগী বের করবে কীভাবে? আইসিইউ বা অপারেশন রুমে থাকা রোগী এসব সংযোগ দিয়ে বের করতে পারবে না।’
যেসব হাসপাতাল নিজেরা ইচ্ছামাফিক ভবন যুক্ত করছে, তারা পুরো হাসপাতাল ব্যবহারেই অনুমোদিত নকশা মানছে না। সিঁড়ি, লবি ব্যবহার করছে অন্য কাজে। এ কারণে এখন পর্যন্ত যাঁরা নকশা সংশোধনের আবেদন করেছেন, রাজউক তাঁদের সংশোধিত নকশায় অনুমোদন দিতে পারছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আনিছুর রহমান মিঞা নিজ দপ্তরে বলেন, ‘আসলে এসব বিষয় নিয়ে আমাদের মাঠপর্যায়ের লোকজন কাজ করেন। তাঁরা টেকনিক্যাল বিষয়টা ভালো বলতে পারবেন।’
পরে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও মুখপাত্র মো. আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে রাজউক থেকে এখনো কাউকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কারণ, হাসপাতালগুলো যেসব রাস্তার ওপর দিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করছে, সে রাস্তার মালিক সিটি করপোরেশন। আবার সংযোগ ব্রিজের অংশটুকু কোন প্লটের সঙ্গে যুক্ত হবে, তাও বিবেচনার বিষয়। এসব স্ট্রাকচারাল ভেটিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত করতে হবে। এ ধরনের সংযোগের ক্ষেত্রে ভবন নির্মাণের সময়ই প্রকৌশলগত দিক নিশ্চিত করতে হবে। পুরোনো ভবনগুলোতে এভাবে ব্রিজ করে সংযোগ দেওয়া নানা দিক দিয়ে হাসপাতালগুলোর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। রাজউক এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিবে।’
নামীদামি হাসপাতালগুলোর এভাবে কার্যক্রম চালানোর বিষয়ে কথা হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেশ কয়েকটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো করে সম্প্রসারণ করেছে বলে শুনেছি; কিন্তু ফাইল না দেখে বিস্তারিত বলতে পারছি না।’
মূল ভবনের নবম তলায় উঠে পাশের ভবনে যেতে হয়। সেই ভবন থেকে স্টিলের সেতু পেরিয়ে যেতে হয় রাস্তার অপর পাশের আরেকটি ভবনে। সেবা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের এভাবেই এক ভবন থেকে অন্য ভবনে ছোটাছুটির এই দৃশ্য প্রতিদিন চোখে পড়ে রাজধানীর অন্যতম নামীদামি বেসরকারি হাসপাতাল স্কয়ারে।
শুধু এই হাসপাতালই নয়, ল্যাবএইড, আনোয়ার খান মডার্ন, বিআরবি, শমরিতা, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড, গ্রিন লাইফ, পপুলার, সেন্ট্রাল, ইবনে সিনা, বাংলাদেশ আই হাসপাতালসহ ঢাকার ১১টি নামীদামি হাসপাতালে কার্যক্রম চলছে পাশাপাশি একাধিক ভবনকে যুক্ত করে।
অভিযোগ উঠেছে, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডের (বিএনবিসি) তোয়াক্কা না করে ইচ্ছেমতো হাসপাতাল সম্প্রসারণ করে যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। একটি ভবনে হাসপাতালের অনুমোদন নিয়ে একের পর এক ভবন যুক্ত করা হচ্ছে তার সঙ্গে। কখনো স্টিল স্ট্রাকচারের সেতু আবার কখনো আরসিসি ঢালাই দিয়ে যুক্ত করা হচ্ছে ভবন। বিপজ্জনক এসব সংযোগের ক্ষেত্রে অনুমোদন নেওয়া হচ্ছে না রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সিটি করপোরেশন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের। এসব কারণে হাসপাতালগুলোকে এরই মধ্যে নোটিশও দিয়েছে রাজউক। গত ৩০ এপ্রিল চিঠি পাঠানো হয়েছে স্কয়ার হাসপাতালকে।
এ বিষয়ে স্কয়ার হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রকৌশল) মাশফিকুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা নিয়মনীতির বাইরে কিছু করি না। ইউনিয়ন কোম্পানির ভবনের সঙ্গে যে সংযোগ রয়েছে, তা অনুমোদনের বিষয়ে তারাই কাজ করছে।’
নগরবিদ ও অগ্নিনিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যুক্ত করা এসব ভবনে ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ডের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে রোগীদের উদ্ধার করার ক্ষেত্রে ভয়াবহ সমস্যা দেখা দেবে।
নগরবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব এ বিষয়ে বলেন, ‘একটি ভবনকে যখন হাসপাতালের প্রয়োজনে কাজে লাগানো হবে, তখন অবশ্যই বিল্ডিং কোড অনুসরণ করতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে ভবনগুলো সেতু বানিয়ে যুক্ত করেছে, সেগুলোর ব্যবহারে যে পরিবর্তন এসেছে, তারও অনুমোদন নিতে হবে। সম্প্রসারিত এসব ভবনে ওপিডি, ওটি, সিসিও, আইসিও, কেবিন ও ওয়ার্ড করা হচ্ছে। ভূমিকম্প বা অগ্নিকাণ্ডের মতো কোনো ঘটনা ঘটলে রোগীদের উদ্ধার করার ক্ষেত্রে ভয়াবহ সমস্যা দেখা দেবে। তাই এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’
অনুসন্ধানে দেখা যায়, রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় পপুলার হাসপাতালের কার্যক্রম চলছে মোট ছয়টি ভবন ঘিরে। এর মধ্যে পাঁচটি ভবন পাশাপাশি। তিনটি ভবনের মধ্যে রয়েছে আন্তসংযোগ। ১ ও ২ নম্বর ভবনকে তৃতীয় তলায় স্টিলের সেতু বসিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। সাড়ে তিন থেকে চার ফুট চওড়া এ সংযোগ পথ দিয়ে একসঙ্গে দুজন চলাফেরাও কঠিন। এসব কারণে চলতি বছরের ২৫ জুন পপুলার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে রাজউক।
জানতে চাইলে পপুলার হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা অচিন্ত কুমার নাগ বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালের ভবনে এমন সংযোগ রয়েছে। তবে রাজউক থেকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে কি না বা অনুমোদনের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না তা বলতে পারছি না।’
ধানমন্ডি ৪ নম্বর রোডের ১ ও ২ নম্বর প্লটে চলছে ল্যাবএইড হাসপাতালের কার্যক্রম। এ হাসপাতালের উল্টো দিকে কনকর্ড কনসোর্টিয়াম নামের ভবনটিতেও কার্যক্রম চালাচ্ছে হাসপাতালটি। ওই ভবনে যাওয়ার জন্য রাস্তার ওপর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে একটি সংযোগ সেতু। এসব কারণে রাজউক ২০১২ সালের ২৬ জানুয়ারি চিঠিও দিয়েছে ল্যাবএইডকে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীমের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয়ে একজন ফোন ধরেন। এরপর বিস্তারিত শুনে এ বিষয়ে ডা. এ এম শামীমের সঙ্গে আলোচনা করে জানাবেন জানিয়ে ফোন রেখে দেন। কিছুক্ষণ পর ফোন করে আরিফ নামের একজন বলেন, ‘স্যার এখন ব্যস্ত, পরে আপনাকে ফোন করবেন।’
বেশ কয়েক বছর আগে ৭৮ সাতমসজিদ রোড ঠিকানায় যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ আই হাসপাতাল। এখন পাশের একটি বড় ভবনকেও হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করছে কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে দেখা যায়, পুরোনো ভবনের ৮ তলার সঙ্গে বড় আকারের স্টিলের সেতু দিয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে নতুন ভবনটিকে। গত বছরের ১২ ডিসেম্বর এই হাসপাতালে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে রাজউক। তখন মুচলেকা দিয়ে পার পায় কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ আই হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম হায়দার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার জানামতে, অনুমোদন আছে। এরপরও কোনো জটিলতা থাকলে ভবনমালিক তা জানেন। আমরা ভবনটি ভাড়া নিয়েছি।’
এদিকে রাজধানীর গ্রিন রোডের বিআরবি হাসপাতালের তিনতলায় গিয়ে দেখা যায় একই ধরনের সংযোগ। ১২ ফুট চওড়া ৩০ ফুট লম্বা একটি স্টিল স্ট্রাকচারের সেতু বসিয়ে যুক্ত করা হয়েছে পাশাপাশি দুটি ভবনকে। বিআরবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সংশোধিত নকশা পাসের আবেদন করলে এ ধরনের ত্রুটিবিচ্যুতির কারণে তা নাকচ করে দিয়েছে রাজউক।
এ বিষয়ে বিআরবি হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত জানা নেই বলে এড়িয়ে যান।
পান্থপথের শমরিতা হাতপাতালেরও একই অবস্থা। এ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পেছনের একটি ভবনের সঙ্গে মূল ভবনকে যুক্ত করেছে তিনতলা ও ছয়তলায় দুটি সেতুর মাধ্যমে। এ নিয়ে কথা বলতে শমরিতা হাসপাতালের পরিচালক ডা. হারুন উর রশীদের ব্যক্তিগত ফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
ধানমন্ডি সাতমসজিদ রোডের ইবনে সিনা হাসপাতালেও রয়েছে পাশের ভবনের তিনটি সংযোগ। নিচতলার পুরো দেয়াল কেটে সংযোগ বসানোর পর তৃতীয় ও পঞ্চম তলায় আরসিসি ব্রিজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ইবনে সিনা হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিল্ডিং কোড মেনে কার্যক্রম চালাচ্ছি। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।’
গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে দক্ষিণ অংশের মূল ভবনের সঙ্গে উত্তরের আরেকটি ভবনের সংযোগ ঘটেছে তৃতীয় ও পঞ্চম তলায় আরসিসি সেতু বসিয়ে। এ নিয়ে কথা বলতে সেন্ট্রাল হাসপাতালের দাপ্তরিক নম্বরে ফোন করলে পরিচয় শুনে এক ব্যক্তি বলেন, ‘কাউকে কথা বলার জন্য পাওয়া যাচ্ছে না।’
সেতু সংযোগের ঘটনা ঘটেছে গ্রিন লাইফ হাসপাতালেও। সেখানে তৃতীয় তলায় স্টিলের সংযোগ সেতু বসানো হয়েছে। এ বিষয়ে গ্রিন লাইফ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মাইনুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা এসব বিষয় নিয়ে রাজউকে আবেদন করেছি। এখনো কোনো উত্তর আসেনি।’
মিরপুর রোডের আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল ও বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও মূল ভবনের সঙ্গে অন্য আরেকটি ভবনের সংযোগ দিয়েছে। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে রাজউক। জানতে চাইলে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের ব্যবস্থাপক নিয়াজ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো তথ্য আমার জানা নেই।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮-এ বলা হয়েছে, ইমারত নির্মাণ যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, সে উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ইমারত ব্যবহার করা যাবে না। অর্থাৎ আবাসিক বাড়ির জন্য ইমারত নির্মাণের অনুমতি নিলে ওই ভবনকে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। ইমারতের মেঝের যেকোনো অবস্থান থেকে অনধিক ২৫ মিটারের মধ্যে জরুরি নির্গমন পথ থাকতে হবে।
প্রয়োজনীয়সংখ্যক অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র বা অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থা থাকতে হবে। কিন্তু একের পর এক ভবন সংযুক্ত করে কার্যক্রম চালানো এসব হাসপাতালে মানা হচ্ছে না এই বিধিমালা।
এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ব্রি জে আলী আহমেদ খান (অব) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনুমোদন ছাড়াই ভবন যুক্ত করা হচ্ছে; বিষয়টি খুব জটিল। হাসপাতাল করতে হলে সম্পূর্ণ কমপ্লায়েন্স থাকতে হবে। যেখানে ভবনে সংযোগ দিয়ে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে, সেখানে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে রোগী বের করবে কীভাবে? আইসিইউ বা অপারেশন রুমে থাকা রোগী এসব সংযোগ দিয়ে বের করতে পারবে না।’
যেসব হাসপাতাল নিজেরা ইচ্ছামাফিক ভবন যুক্ত করছে, তারা পুরো হাসপাতাল ব্যবহারেই অনুমোদিত নকশা মানছে না। সিঁড়ি, লবি ব্যবহার করছে অন্য কাজে। এ কারণে এখন পর্যন্ত যাঁরা নকশা সংশোধনের আবেদন করেছেন, রাজউক তাঁদের সংশোধিত নকশায় অনুমোদন দিতে পারছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আনিছুর রহমান মিঞা নিজ দপ্তরে বলেন, ‘আসলে এসব বিষয় নিয়ে আমাদের মাঠপর্যায়ের লোকজন কাজ করেন। তাঁরা টেকনিক্যাল বিষয়টা ভালো বলতে পারবেন।’
পরে রাজউকের প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও মুখপাত্র মো. আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে রাজউক থেকে এখনো কাউকে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। কারণ, হাসপাতালগুলো যেসব রাস্তার ওপর দিয়ে ব্রিজ নির্মাণ করছে, সে রাস্তার মালিক সিটি করপোরেশন। আবার সংযোগ ব্রিজের অংশটুকু কোন প্লটের সঙ্গে যুক্ত হবে, তাও বিবেচনার বিষয়। এসব স্ট্রাকচারাল ভেটিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত করতে হবে। এ ধরনের সংযোগের ক্ষেত্রে ভবন নির্মাণের সময়ই প্রকৌশলগত দিক নিশ্চিত করতে হবে। পুরোনো ভবনগুলোতে এভাবে ব্রিজ করে সংযোগ দেওয়া নানা দিক দিয়ে হাসপাতালগুলোর ঝুঁকি বাড়িয়েছে। রাজউক এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নিবে।’
নামীদামি হাসপাতালগুলোর এভাবে কার্যক্রম চালানোর বিষয়ে কথা হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেশ কয়েকটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের মতো করে সম্প্রসারণ করেছে বলে শুনেছি; কিন্তু ফাইল না দেখে বিস্তারিত বলতে পারছি না।’
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
শুধু এই হাসপাতালই নয়, ল্যাবএইড, আনোয়ার খান মডার্ন, বিআরবি, শমরিতা, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড, গ্রিন লাইফ, পপুলার, সেন্ট্রাল, ইবনে সিনা, বাংলাদেশ আই হাসপাতালসহ ঢাকার ১১টি নামীদামি হাসপাতালে কার্যক্রম চলছে পাশাপাশি একাধিক ভবনকে যুক্ত করে।
১৮ আগস্ট ২০২৩‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
শুধু এই হাসপাতালই নয়, ল্যাবএইড, আনোয়ার খান মডার্ন, বিআরবি, শমরিতা, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড, গ্রিন লাইফ, পপুলার, সেন্ট্রাল, ইবনে সিনা, বাংলাদেশ আই হাসপাতালসহ ঢাকার ১১টি নামীদামি হাসপাতালে কার্যক্রম চলছে পাশাপাশি একাধিক ভবনকে যুক্ত করে।
১৮ আগস্ট ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
শুধু এই হাসপাতালই নয়, ল্যাবএইড, আনোয়ার খান মডার্ন, বিআরবি, শমরিতা, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড, গ্রিন লাইফ, পপুলার, সেন্ট্রাল, ইবনে সিনা, বাংলাদেশ আই হাসপাতালসহ ঢাকার ১১টি নামীদামি হাসপাতালে কার্যক্রম চলছে পাশাপাশি একাধিক ভবনকে যুক্ত করে।
১৮ আগস্ট ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
শুধু এই হাসপাতালই নয়, ল্যাবএইড, আনোয়ার খান মডার্ন, বিআরবি, শমরিতা, বাংলাদেশ স্পেশালাইজড, গ্রিন লাইফ, পপুলার, সেন্ট্রাল, ইবনে সিনা, বাংলাদেশ আই হাসপাতালসহ ঢাকার ১১টি নামীদামি হাসপাতালে কার্যক্রম চলছে পাশাপাশি একাধিক ভবনকে যুক্ত করে।
১৮ আগস্ট ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৬ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫