Ajker Patrika

মজুরি পেতে আর কত অপেক্ষা

ঘাটাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ এপ্রিল ২০২২, ১৪: ৫২
মজুরি পেতে আর কত অপেক্ষা

ঘাটাইল উপজেলায় গত ফেব্রুয়ারিতে কাজ শেষ হলেও ৪ ইউনিয়নের ৩৪৪ জন শ্রমিক এখনো কোনো মজুরি পাননি। তাঁরা সরকারের অতি দরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য ৪০ দিনের কর্মসূচির শ্রমিক। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলছেন, প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে মজুরির টাকা পেতে দেরি হচ্ছে।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারের অতি দরিদ্রদের কর্মসৃজন প্রকল্পের (৪০ দিনের কর্মসূচি) আওতায় ঘাটাইলে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এবারের কর্মসূচিতে শ্রমিকপ্রতি দৈনিক বরাদ্দ ছিল ৪০০ টাকা।
সেই হিসাবে মোট শ্রমিকের সংখ্যা দাঁড়ায় ১ হাজার ১৬৫। বরাদ্দের বিপরীতে উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ৪১টি প্রকল্প নেয় কর্তৃপক্ষ। সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক এ বছরের জানুয়ারি মাসে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে শেষ হয় ফেব্রুয়ারিতে। আর এবারই প্রথম মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতিতে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে সরাসরি শ্রমিকের কাছে মজুরি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়।

আরও জানা গেছে, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টিতে শ্রমিকেরা তাঁদের আংশিক মজুরি পেয়েছেন। কিন্তু দেউলাবাড়ি, ঘাটাইল, সাগরদীঘি ও লক্ষিন্দর ইউনিয়নের ৩৪৪ জন শ্রমিক তাঁদের মজুরি এখনো পাননি। ঈদের আগে মজুরির টাকা না পেলে ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবেন এসব শ্রমিক। মজুরি না পাওয়া শ্রমিকের মধ্যে রয়েছে দেউলাবাড়ি ইউনিয়নে ৮৭ জন, ঘাটাইল ইউনিয়নে ৫১, সাগরদীঘি ইউনিয়নে ৮২ এবং লক্ষিন্দর ইউনিয়নে ১২৪ জন। টাকার হিসাবে যা ৫৫ লাখ ৪ হাজার টাকা।

লক্ষিন্দর ইউনিয়নের দুলালিয়া গ্রামের শ্রমিক জামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দুই মাস অইলো কাম শেষ অইছে। এহনও টেহার (টাকা) কোন খবর নাই।’ একই গ্রামের রোকেয়া বেগম বলেন, ‘শরীর বালা না। টেহা পয়সার খুব দরকার। আমাগো কষ্টের কথা কারে কমু। চেয়ারম্যান-মেম্বরের কাছে গেলে কয় মোবাইলে টেহা আইবো। বারে বারে মোবাইল দেহি, টেহা আর আহে না। টেহা না পাইলে ঈদটাই মাটি অবো।’ বানেছা বেগম বলেন, ‘কাম করছি দুই মাস অইলো। এহনো টেহা পাই নাই।’

এদিকে লক্ষিন্দর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য বাহাদুর মিয়া বলেন, ‘শ্রমিকেরা শুধু হাত দিয়ে মারতেই আসেন না, আর সব করে।’ সাগরদীঘি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হেকমত সিকদার জানান, শ্রমিকেরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে বসে থাকেন টাকার জন্য। শ্রমিকের ধারণা, তিনি টাকা আটকিয়ে রেখেছেন। তাই বাধ্য হয়ে কিছু কিছু শ্রমিককে নিজের পকেট থেকে টাকা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, আগে শ্রমিকেরা ব্যাংকের মাধ্যমে মজুরির টাকা পেতেন। এ বছর তাঁরা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি মজুরির টাকা পাচ্ছেন। তবে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে মজুরির টাকা পেতে দেরি হচ্ছে। বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিষয়টির সমাধান হবে বলে মনে করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত