Ajker Patrika

রক্ত পরিসঞ্চালনের বিধি না মানায় ঝুঁকিতে রোগীরা

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি
রক্ত পরিসঞ্চালনের বিধি না মানায় ঝুঁকিতে রোগীরা

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে রক্ত পরিসঞ্চালনে মানা হচ্ছে না সরকারি বিধিনিষেধ। একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে রক্ত দিতে নির্ধারিত বাধ্যতামূলক পাঁচটি পরীক্ষাও করানো হচ্ছে না। মাত্র দুটি পরীক্ষা করেই নেওয়া হচ্ছে রক্ত। রোগী ও তার স্বজন, রক্তদাতা, হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের অসচেতনতায় উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে রক্তগ্রহীতার জীবন।

বিভিন্ন রোগের অপারেশন, গর্ভকালীন অস্ত্রোপচার, দুর্ঘটনা, রক্তশূন্যতা ও থ্যালাসেমিয়া রোগীরা সাধারণত রক্ত গ্রহণ করেন। নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন অমান্য করলে জরিমানা ও সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসা-সংশ্লিষ্টদের অধিকাংশই এই আইন সম্পর্কে অবগত নন। উপজেলার কোথাও আইনটি প্রয়োগের নজিরও খুঁজে পাওয়া যায়নি। নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন আইন, ২০০২ বাস্তবায়নে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের তৎপরতা এই অবস্থা থেকে কিছুটা হলেও রেহাই দেবে—এমনটাই ভাবনা চিকিৎসাসংশ্লিষ্টদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই উপজেলায় নিবন্ধিত ৯টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ৩টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। ৫০ শয্যার একটি সরকারি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ২টি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ৭টি ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণকেন্দ্র রয়েছে। এগুলোতে গড়ে প্রতিদিন তিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা নেন। এখানে ৫টি স্বেচ্ছাসেবী ব্লাড ব্যাংকের প্রায় দুই হাজার দাতা নিয়মিত বিনামূল্যে রক্ত দেন। তাঁদের কাছ থেকে গড়ে প্রতিদিন ১২-১৫ জন রোগী রক্ত গ্রহণ করেন। এ ছাড়া স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীরা তো রয়েছেনই। প্রতি মাসে গড় রক্তগ্রহীতা রোগীর সংখ্যা ৩৬০-৪০০ জন।

স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী, কাউকে রক্ত দেওয়ার আগে দাতাকে গ্রুপ নির্ণয় ও ক্রস ম্যাচিংয়ের পাশাপাশি সিফিলিস (ভিডিআরএল, টিপিএইচএ), হেপাটাইটিস বি (এইচবিএসএজি), হেপাটাইটিস-সি (এইচসিভি), এন্টি এইচআইভি (এইডস) ও ম্যালেরিয়া (এমপি টেস্ট) পরীক্ষা করাতে হয়। কিন্তু রায়পুরের কোথাও সব কটি পরীক্ষা করা হয় না। কাউকে শুধু ক্রস ম্যাচিং, আবার কোথাও হেপাটাইটিস-বি ও হেপাটাইসি-সি পরীক্ষা করেই রক্ত পরিসঞ্চালন করা হয়।
রায়পুর ব্লাড ডোনেট কাবের পরিচালক মীর মাসুদ বলেন, ‘আমরা চাই প্রতি ব্যাগ রক্ত পরিসঞ্চালনে সরকারি বিধান প্রতিপালিত হোক। যেহেতু রোগীরা বিনা মূল্যে রক্ত পাচ্ছেন, তাই তাঁদের উচিত পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করে রক্ত গ্রহণ করা।’

লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন আহাম্মদ কবীর বলেন, রক্তগ্রহীতার উচিত সব কটি পরীক্ষা করিয়ে রক্তের মান নিশ্চিত হয়ে তারপর রক্ত নেওয়া।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত