রাহুল শর্মা, ঢাকা

শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে এ বছর নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। কিন্তু নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, যথাযথ প্রস্তুতি না থাকা এবং ‘তাড়াহুড়ো’ করায় শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে এ উদ্যোগ। সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বই। মাঝপথে এসে সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সব বইয়ের। এতে গচ্চা যাচ্ছে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ। শিক্ষকদের দেওয়া প্রশিক্ষণ নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। পাশাপাশি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির মূল্যায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব এখনো কাটেনি। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।
শিক্ষাবিদেরা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হোঁচট খাওয়ার জন্য দায়ী জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অদূরদর্শিতা ও অযোগ্যতা। তাদের মতে, যথাযথ প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়া অবলম্বন না করায় শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে উদ্যোগটি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা, বাড়ছে তাদের শিখন ঘাটতি।
চলতি বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হয়েছে। আগামী বছর থেকে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।
প্রত্যাহার করা দুটি বই না পড়েই পরের শ্রেণিতে উঠবে শিক্ষার্থীরা। এতে দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে শিক্ষণ ঘাটতিতে পড়বে বলে মত শিক্ষাবিদদের।
এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, বিতর্কের মুখে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ৭৮ লাখ বই প্রত্যাহার করায় গচ্চা গেছে সরকারের অন্তত ২৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ফের বই সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ায় বেশ কিছু টাকা খরচ হচ্ছে। তবে এনসিটিবির এক কর্মকর্তার দাবি, বই প্রত্যাহার ও সংশোধনে আরও বেশি টাকা খরচ হয়েছে। তিনি বলেন, বইয়ের সংখ্যা এবং খরচের প্রকৃত তথ্য নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লুকোচুরি করছেন, যাতে কেউ প্রকৃত ক্ষতির চিত্র জানতে না পারে।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রণীত পাঠ্যপুস্তকে (ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণি) যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল, তা সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজ চলছে। ঈদের পর সংশোধনীগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে।
অপরিপক্ব সিদ্ধান্তে হোঁচট
অপরিপক্ব সিদ্ধান্তের কারণেই নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হোঁচট খেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, কারিকুলাম তৈরি করতে যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়েছে, তা অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবসম্মত ছিল না। যাঁরা এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন, বিভিন্ন সময় তাঁদের অপরিপক্ব সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে। এ জন্য শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন।
শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, এ ধারা বজায় থাকলে বিশেষ করে যুক্তিযুক্ত সমালোচনা অগ্রাহ্য করতে থাকলে ভবিষ্যতে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সমস্যা আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সরকারের উচিত দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া।
শিখন ঘাটতি বাড়বে
এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, প্রত্যাহার হওয়া দুই বই না পড়েই পরের শ্রেণিতে উঠবে শিক্ষার্থীরা। এতে দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে শিক্ষণ ঘাটতিতে পড়বে বলে মত শিক্ষাবিদদের। তবে এ শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইটি পড়ার সুযোগ না থাকলেও ‘অনুশীলনী পাঠ’ থেকে শিক্ষার্থীরা পড়তে পারবে। তিনি আরও বলেন, ‘এবারের বইগুলো অ্যাকটিভিটি বেজড। ফলে বই দুটি প্রত্যাহার করলেও শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হবে না।
এখনো সংশোধন হয়নি পাঠ্যবই
নতুন শিক্ষাক্রমের বইয়ে নানা ভুল ও অসংগতি নিয়ে বিতর্ক উঠলে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ পাঠ্যপুস্তক দুটি প্রত্যাহার করে এনসিটিবি। এ ছাড়া ওই দিন আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুশীলনী পাঠ’ এবং ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’—এই তিন বইয়েও কিছু অধ্যায় সংশোধন করা হবে। কিন্তু পরে হঠাৎ করেই ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সব বই সংশোধনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সংশোধনী দিতে পারেনি এনসিটিবি।
মূল্যায়নপদ্ধতি, প্রশিক্ষণের মান নিয়ে প্রশ্ন-ধোঁয়াশা
জানা যায়, চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও মূল্যায়নের সমন্বিত কাঠামো তৈরি করতে পারেনি এনসিটিবি। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন সংরক্ষণের জন্য একটি অ্যাপ তৈরির কথা থাকলেও তা করা হয়নি। এরই মধ্যে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করে পরীক্ষাও নিয়েছে। যদিও নতুন শিক্ষাক্রমে গতানুগতিক পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল না। পরে পরীক্ষা না নিতে নির্দেশনা জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর।
এনসিটিবি সূত্রমতে, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের পাঁচ দিনব্যাপী অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তবে প্রশিক্ষণের মান নিয়ে শিক্ষকেরা সন্তুষ্ট নন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তত ১৫ জন শিক্ষক জানান, নতুন শিক্ষাক্রমের অনলাইনে প্রশিক্ষণের মান সন্তোষজনক ছিল না। ফলে অনেক বিষয় তাঁদের কাছে পরিষ্কার নয়। এতে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ক্লাস পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়বে।
ক্লাস রুটিনে পরিবর্তন আসছে
জানা যায়, নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হওয়ার প্রায় চার মাসের মাথায় ক্লাস রুটিনে পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে এনসিটিবি। বিষয়টি ঈদের পর মাঠপর্যায়ে জানানো হবে।
মাউশির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘চার মাস পর ক্লাস রুটিন পরিবর্তনের উদ্যোগ এনসিটিবির খামখেয়ালিপনা ছাড়া আর কিছুই নয়। মূলত অতি উৎসাহীদের পরামর্শে তাড়াহুড়ো করে বাস্তবায়ন করা হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম; যার ফল এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
নোট-গাইডে বাজার সয়লাব
মুখস্থনির্ভরতা কমিয়ে শিক্ষাকে আনন্দময় করারই নতুন শিক্ষাক্রমের অন্যতম উদ্দেশ্য। এর রূপরেখায় বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে বুঝে শিখবে এবং সৃজনশীল হয়ে উঠবে। শিক্ষার্থীদের কোনো নোট-গাইড ও কোচিংয়ের প্রয়োজন হবে না। কিন্তু ভেস্তে যেতে বসেছে এ উদ্দেশ্য। কারণ, ইতিমধ্যে ‘সহায়ক বই’ নামের গাইড বইয়ে সয়লাব হয়ে গেছে বাজার। রাজধানীর একাধিক বইয়ের বাজার ঘুরে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা অবশ্য জানান, কৌশলে নতুন শিক্ষাক্রমকে বিতর্কিত করতে সহায়ক বইয়ের নামে গাইড বই বাজারে ছাড়ছে অসাধু পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতারা। বিষয়টি একাধিক গোপন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন, এগুলো নোট-গাইড নয়, সহায়ক বই। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে বইগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা দীর্ঘদিন ধরে এসব সহায়ক বইয়ের অপেক্ষায় ছিলেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতেই এগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।

শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে এ বছর নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। কিন্তু নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, যথাযথ প্রস্তুতি না থাকা এবং ‘তাড়াহুড়ো’ করায় শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে এ উদ্যোগ। সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বই। মাঝপথে এসে সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সব বইয়ের। এতে গচ্চা যাচ্ছে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ। শিক্ষকদের দেওয়া প্রশিক্ষণ নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। পাশাপাশি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির মূল্যায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব এখনো কাটেনি। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।
শিক্ষাবিদেরা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হোঁচট খাওয়ার জন্য দায়ী জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অদূরদর্শিতা ও অযোগ্যতা। তাদের মতে, যথাযথ প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়া অবলম্বন না করায় শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে উদ্যোগটি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা, বাড়ছে তাদের শিখন ঘাটতি।
চলতি বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হয়েছে। আগামী বছর থেকে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।
প্রত্যাহার করা দুটি বই না পড়েই পরের শ্রেণিতে উঠবে শিক্ষার্থীরা। এতে দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে শিক্ষণ ঘাটতিতে পড়বে বলে মত শিক্ষাবিদদের।
এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, বিতর্কের মুখে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ৭৮ লাখ বই প্রত্যাহার করায় গচ্চা গেছে সরকারের অন্তত ২৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ফের বই সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ায় বেশ কিছু টাকা খরচ হচ্ছে। তবে এনসিটিবির এক কর্মকর্তার দাবি, বই প্রত্যাহার ও সংশোধনে আরও বেশি টাকা খরচ হয়েছে। তিনি বলেন, বইয়ের সংখ্যা এবং খরচের প্রকৃত তথ্য নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লুকোচুরি করছেন, যাতে কেউ প্রকৃত ক্ষতির চিত্র জানতে না পারে।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রণীত পাঠ্যপুস্তকে (ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণি) যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল, তা সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজ চলছে। ঈদের পর সংশোধনীগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে।
অপরিপক্ব সিদ্ধান্তে হোঁচট
অপরিপক্ব সিদ্ধান্তের কারণেই নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হোঁচট খেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, কারিকুলাম তৈরি করতে যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়েছে, তা অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবসম্মত ছিল না। যাঁরা এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন, বিভিন্ন সময় তাঁদের অপরিপক্ব সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে। এ জন্য শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন।
শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, এ ধারা বজায় থাকলে বিশেষ করে যুক্তিযুক্ত সমালোচনা অগ্রাহ্য করতে থাকলে ভবিষ্যতে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সমস্যা আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সরকারের উচিত দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া।
শিখন ঘাটতি বাড়বে
এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, প্রত্যাহার হওয়া দুই বই না পড়েই পরের শ্রেণিতে উঠবে শিক্ষার্থীরা। এতে দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে শিক্ষণ ঘাটতিতে পড়বে বলে মত শিক্ষাবিদদের। তবে এ শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইটি পড়ার সুযোগ না থাকলেও ‘অনুশীলনী পাঠ’ থেকে শিক্ষার্থীরা পড়তে পারবে। তিনি আরও বলেন, ‘এবারের বইগুলো অ্যাকটিভিটি বেজড। ফলে বই দুটি প্রত্যাহার করলেও শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হবে না।
এখনো সংশোধন হয়নি পাঠ্যবই
নতুন শিক্ষাক্রমের বইয়ে নানা ভুল ও অসংগতি নিয়ে বিতর্ক উঠলে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ পাঠ্যপুস্তক দুটি প্রত্যাহার করে এনসিটিবি। এ ছাড়া ওই দিন আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুশীলনী পাঠ’ এবং ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’—এই তিন বইয়েও কিছু অধ্যায় সংশোধন করা হবে। কিন্তু পরে হঠাৎ করেই ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সব বই সংশোধনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সংশোধনী দিতে পারেনি এনসিটিবি।
মূল্যায়নপদ্ধতি, প্রশিক্ষণের মান নিয়ে প্রশ্ন-ধোঁয়াশা
জানা যায়, চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও মূল্যায়নের সমন্বিত কাঠামো তৈরি করতে পারেনি এনসিটিবি। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন সংরক্ষণের জন্য একটি অ্যাপ তৈরির কথা থাকলেও তা করা হয়নি। এরই মধ্যে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করে পরীক্ষাও নিয়েছে। যদিও নতুন শিক্ষাক্রমে গতানুগতিক পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল না। পরে পরীক্ষা না নিতে নির্দেশনা জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর।
এনসিটিবি সূত্রমতে, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের পাঁচ দিনব্যাপী অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তবে প্রশিক্ষণের মান নিয়ে শিক্ষকেরা সন্তুষ্ট নন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তত ১৫ জন শিক্ষক জানান, নতুন শিক্ষাক্রমের অনলাইনে প্রশিক্ষণের মান সন্তোষজনক ছিল না। ফলে অনেক বিষয় তাঁদের কাছে পরিষ্কার নয়। এতে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ক্লাস পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়বে।
ক্লাস রুটিনে পরিবর্তন আসছে
জানা যায়, নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হওয়ার প্রায় চার মাসের মাথায় ক্লাস রুটিনে পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে এনসিটিবি। বিষয়টি ঈদের পর মাঠপর্যায়ে জানানো হবে।
মাউশির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘চার মাস পর ক্লাস রুটিন পরিবর্তনের উদ্যোগ এনসিটিবির খামখেয়ালিপনা ছাড়া আর কিছুই নয়। মূলত অতি উৎসাহীদের পরামর্শে তাড়াহুড়ো করে বাস্তবায়ন করা হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম; যার ফল এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
নোট-গাইডে বাজার সয়লাব
মুখস্থনির্ভরতা কমিয়ে শিক্ষাকে আনন্দময় করারই নতুন শিক্ষাক্রমের অন্যতম উদ্দেশ্য। এর রূপরেখায় বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে বুঝে শিখবে এবং সৃজনশীল হয়ে উঠবে। শিক্ষার্থীদের কোনো নোট-গাইড ও কোচিংয়ের প্রয়োজন হবে না। কিন্তু ভেস্তে যেতে বসেছে এ উদ্দেশ্য। কারণ, ইতিমধ্যে ‘সহায়ক বই’ নামের গাইড বইয়ে সয়লাব হয়ে গেছে বাজার। রাজধানীর একাধিক বইয়ের বাজার ঘুরে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা অবশ্য জানান, কৌশলে নতুন শিক্ষাক্রমকে বিতর্কিত করতে সহায়ক বইয়ের নামে গাইড বই বাজারে ছাড়ছে অসাধু পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতারা। বিষয়টি একাধিক গোপন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন, এগুলো নোট-গাইড নয়, সহায়ক বই। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে বইগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা দীর্ঘদিন ধরে এসব সহায়ক বইয়ের অপেক্ষায় ছিলেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতেই এগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।
রাহুল শর্মা, ঢাকা

শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে এ বছর নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। কিন্তু নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, যথাযথ প্রস্তুতি না থাকা এবং ‘তাড়াহুড়ো’ করায় শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে এ উদ্যোগ। সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বই। মাঝপথে এসে সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সব বইয়ের। এতে গচ্চা যাচ্ছে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ। শিক্ষকদের দেওয়া প্রশিক্ষণ নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। পাশাপাশি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির মূল্যায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব এখনো কাটেনি। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।
শিক্ষাবিদেরা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হোঁচট খাওয়ার জন্য দায়ী জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অদূরদর্শিতা ও অযোগ্যতা। তাদের মতে, যথাযথ প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়া অবলম্বন না করায় শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে উদ্যোগটি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা, বাড়ছে তাদের শিখন ঘাটতি।
চলতি বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হয়েছে। আগামী বছর থেকে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।
প্রত্যাহার করা দুটি বই না পড়েই পরের শ্রেণিতে উঠবে শিক্ষার্থীরা। এতে দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে শিক্ষণ ঘাটতিতে পড়বে বলে মত শিক্ষাবিদদের।
এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, বিতর্কের মুখে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ৭৮ লাখ বই প্রত্যাহার করায় গচ্চা গেছে সরকারের অন্তত ২৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ফের বই সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ায় বেশ কিছু টাকা খরচ হচ্ছে। তবে এনসিটিবির এক কর্মকর্তার দাবি, বই প্রত্যাহার ও সংশোধনে আরও বেশি টাকা খরচ হয়েছে। তিনি বলেন, বইয়ের সংখ্যা এবং খরচের প্রকৃত তথ্য নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লুকোচুরি করছেন, যাতে কেউ প্রকৃত ক্ষতির চিত্র জানতে না পারে।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রণীত পাঠ্যপুস্তকে (ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণি) যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল, তা সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজ চলছে। ঈদের পর সংশোধনীগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে।
অপরিপক্ব সিদ্ধান্তে হোঁচট
অপরিপক্ব সিদ্ধান্তের কারণেই নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হোঁচট খেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, কারিকুলাম তৈরি করতে যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়েছে, তা অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবসম্মত ছিল না। যাঁরা এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন, বিভিন্ন সময় তাঁদের অপরিপক্ব সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে। এ জন্য শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন।
শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, এ ধারা বজায় থাকলে বিশেষ করে যুক্তিযুক্ত সমালোচনা অগ্রাহ্য করতে থাকলে ভবিষ্যতে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সমস্যা আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সরকারের উচিত দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া।
শিখন ঘাটতি বাড়বে
এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, প্রত্যাহার হওয়া দুই বই না পড়েই পরের শ্রেণিতে উঠবে শিক্ষার্থীরা। এতে দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে শিক্ষণ ঘাটতিতে পড়বে বলে মত শিক্ষাবিদদের। তবে এ শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইটি পড়ার সুযোগ না থাকলেও ‘অনুশীলনী পাঠ’ থেকে শিক্ষার্থীরা পড়তে পারবে। তিনি আরও বলেন, ‘এবারের বইগুলো অ্যাকটিভিটি বেজড। ফলে বই দুটি প্রত্যাহার করলেও শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হবে না।
এখনো সংশোধন হয়নি পাঠ্যবই
নতুন শিক্ষাক্রমের বইয়ে নানা ভুল ও অসংগতি নিয়ে বিতর্ক উঠলে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ পাঠ্যপুস্তক দুটি প্রত্যাহার করে এনসিটিবি। এ ছাড়া ওই দিন আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুশীলনী পাঠ’ এবং ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’—এই তিন বইয়েও কিছু অধ্যায় সংশোধন করা হবে। কিন্তু পরে হঠাৎ করেই ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সব বই সংশোধনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সংশোধনী দিতে পারেনি এনসিটিবি।
মূল্যায়নপদ্ধতি, প্রশিক্ষণের মান নিয়ে প্রশ্ন-ধোঁয়াশা
জানা যায়, চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও মূল্যায়নের সমন্বিত কাঠামো তৈরি করতে পারেনি এনসিটিবি। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন সংরক্ষণের জন্য একটি অ্যাপ তৈরির কথা থাকলেও তা করা হয়নি। এরই মধ্যে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করে পরীক্ষাও নিয়েছে। যদিও নতুন শিক্ষাক্রমে গতানুগতিক পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল না। পরে পরীক্ষা না নিতে নির্দেশনা জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর।
এনসিটিবি সূত্রমতে, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের পাঁচ দিনব্যাপী অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তবে প্রশিক্ষণের মান নিয়ে শিক্ষকেরা সন্তুষ্ট নন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তত ১৫ জন শিক্ষক জানান, নতুন শিক্ষাক্রমের অনলাইনে প্রশিক্ষণের মান সন্তোষজনক ছিল না। ফলে অনেক বিষয় তাঁদের কাছে পরিষ্কার নয়। এতে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ক্লাস পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়বে।
ক্লাস রুটিনে পরিবর্তন আসছে
জানা যায়, নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হওয়ার প্রায় চার মাসের মাথায় ক্লাস রুটিনে পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে এনসিটিবি। বিষয়টি ঈদের পর মাঠপর্যায়ে জানানো হবে।
মাউশির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘চার মাস পর ক্লাস রুটিন পরিবর্তনের উদ্যোগ এনসিটিবির খামখেয়ালিপনা ছাড়া আর কিছুই নয়। মূলত অতি উৎসাহীদের পরামর্শে তাড়াহুড়ো করে বাস্তবায়ন করা হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম; যার ফল এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
নোট-গাইডে বাজার সয়লাব
মুখস্থনির্ভরতা কমিয়ে শিক্ষাকে আনন্দময় করারই নতুন শিক্ষাক্রমের অন্যতম উদ্দেশ্য। এর রূপরেখায় বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে বুঝে শিখবে এবং সৃজনশীল হয়ে উঠবে। শিক্ষার্থীদের কোনো নোট-গাইড ও কোচিংয়ের প্রয়োজন হবে না। কিন্তু ভেস্তে যেতে বসেছে এ উদ্দেশ্য। কারণ, ইতিমধ্যে ‘সহায়ক বই’ নামের গাইড বইয়ে সয়লাব হয়ে গেছে বাজার। রাজধানীর একাধিক বইয়ের বাজার ঘুরে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা অবশ্য জানান, কৌশলে নতুন শিক্ষাক্রমকে বিতর্কিত করতে সহায়ক বইয়ের নামে গাইড বই বাজারে ছাড়ছে অসাধু পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতারা। বিষয়টি একাধিক গোপন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন, এগুলো নোট-গাইড নয়, সহায়ক বই। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে বইগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা দীর্ঘদিন ধরে এসব সহায়ক বইয়ের অপেক্ষায় ছিলেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতেই এগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।

শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে এ বছর নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। কিন্তু নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, যথাযথ প্রস্তুতি না থাকা এবং ‘তাড়াহুড়ো’ করায় শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে এ উদ্যোগ। সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বই। মাঝপথে এসে সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সব বইয়ের। এতে গচ্চা যাচ্ছে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ। শিক্ষকদের দেওয়া প্রশিক্ষণ নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। পাশাপাশি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির মূল্যায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব এখনো কাটেনি। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও অভিভাবকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে হতাশা।
শিক্ষাবিদেরা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হোঁচট খাওয়ার জন্য দায়ী জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অদূরদর্শিতা ও অযোগ্যতা। তাদের মতে, যথাযথ প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়া অবলম্বন না করায় শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে উদ্যোগটি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা, বাড়ছে তাদের শিখন ঘাটতি।
চলতি বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান শুরু হয়েছে। আগামী বছর থেকে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে।
প্রত্যাহার করা দুটি বই না পড়েই পরের শ্রেণিতে উঠবে শিক্ষার্থীরা। এতে দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে শিক্ষণ ঘাটতিতে পড়বে বলে মত শিক্ষাবিদদের।
এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, বিতর্কের মুখে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ৭৮ লাখ বই প্রত্যাহার করায় গচ্চা গেছে সরকারের অন্তত ২৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ফের বই সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ায় বেশ কিছু টাকা খরচ হচ্ছে। তবে এনসিটিবির এক কর্মকর্তার দাবি, বই প্রত্যাহার ও সংশোধনে আরও বেশি টাকা খরচ হয়েছে। তিনি বলেন, বইয়ের সংখ্যা এবং খরচের প্রকৃত তথ্য নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লুকোচুরি করছেন, যাতে কেউ প্রকৃত ক্ষতির চিত্র জানতে না পারে।
সার্বিক বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রণীত পাঠ্যপুস্তকে (ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণি) যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি ছিল, তা সংশোধন ও পরিমার্জনের কাজ চলছে। ঈদের পর সংশোধনীগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে।
অপরিপক্ব সিদ্ধান্তে হোঁচট
অপরিপক্ব সিদ্ধান্তের কারণেই নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন হোঁচট খেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এস এম হাফিজুর রহমান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, কারিকুলাম তৈরি করতে যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়েছে, তা অনেক ক্ষেত্রেই বাস্তবসম্মত ছিল না। যাঁরা এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন, বিভিন্ন সময় তাঁদের অপরিপক্ব সিদ্ধান্ত নিতে দেখা গেছে। এ জন্য শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে নতুন শিক্ষাক্রমের বাস্তবায়ন।
শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জানিয়ে এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, এ ধারা বজায় থাকলে বিশেষ করে যুক্তিযুক্ত সমালোচনা অগ্রাহ্য করতে থাকলে ভবিষ্যতে শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের সমস্যা আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সরকারের উচিত দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া।
শিখন ঘাটতি বাড়বে
এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়, প্রত্যাহার হওয়া দুই বই না পড়েই পরের শ্রেণিতে উঠবে শিক্ষার্থীরা। এতে দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে শিক্ষণ ঘাটতিতে পড়বে বলে মত শিক্ষাবিদদের। তবে এ শঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ বইটি পড়ার সুযোগ না থাকলেও ‘অনুশীলনী পাঠ’ থেকে শিক্ষার্থীরা পড়তে পারবে। তিনি আরও বলেন, ‘এবারের বইগুলো অ্যাকটিভিটি বেজড। ফলে বই দুটি প্রত্যাহার করলেও শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হবে না।
এখনো সংশোধন হয়নি পাঠ্যবই
নতুন শিক্ষাক্রমের বইয়ে নানা ভুল ও অসংগতি নিয়ে বিতর্ক উঠলে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’ পাঠ্যপুস্তক দুটি প্রত্যাহার করে এনসিটিবি। এ ছাড়া ওই দিন আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুশীলনী পাঠ’ এবং ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ের ‘অনুসন্ধানী পাঠ’—এই তিন বইয়েও কিছু অধ্যায় সংশোধন করা হবে। কিন্তু পরে হঠাৎ করেই ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির সব বই সংশোধনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো সংশোধনী দিতে পারেনি এনসিটিবি।
মূল্যায়নপদ্ধতি, প্রশিক্ষণের মান নিয়ে প্রশ্ন-ধোঁয়াশা
জানা যায়, চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রায় চার মাস পেরিয়ে গেলেও মূল্যায়নের সমন্বিত কাঠামো তৈরি করতে পারেনি এনসিটিবি। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন সংরক্ষণের জন্য একটি অ্যাপ তৈরির কথা থাকলেও তা করা হয়নি। এরই মধ্যে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করে পরীক্ষাও নিয়েছে। যদিও নতুন শিক্ষাক্রমে গতানুগতিক পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল না। পরে পরীক্ষা না নিতে নির্দেশনা জারি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর।
এনসিটিবি সূত্রমতে, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের পাঁচ দিনব্যাপী অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তবে প্রশিক্ষণের মান নিয়ে শিক্ষকেরা সন্তুষ্ট নন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তত ১৫ জন শিক্ষক জানান, নতুন শিক্ষাক্রমের অনলাইনে প্রশিক্ষণের মান সন্তোষজনক ছিল না। ফলে অনেক বিষয় তাঁদের কাছে পরিষ্কার নয়। এতে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী ক্লাস পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়বে।
ক্লাস রুটিনে পরিবর্তন আসছে
জানা যায়, নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হওয়ার প্রায় চার মাসের মাথায় ক্লাস রুটিনে পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে এনসিটিবি। বিষয়টি ঈদের পর মাঠপর্যায়ে জানানো হবে।
মাউশির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘চার মাস পর ক্লাস রুটিন পরিবর্তনের উদ্যোগ এনসিটিবির খামখেয়ালিপনা ছাড়া আর কিছুই নয়। মূলত অতি উৎসাহীদের পরামর্শে তাড়াহুড়ো করে বাস্তবায়ন করা হয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম; যার ফল এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
নোট-গাইডে বাজার সয়লাব
মুখস্থনির্ভরতা কমিয়ে শিক্ষাকে আনন্দময় করারই নতুন শিক্ষাক্রমের অন্যতম উদ্দেশ্য। এর রূপরেখায় বলা হয়েছিল, শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে বুঝে শিখবে এবং সৃজনশীল হয়ে উঠবে। শিক্ষার্থীদের কোনো নোট-গাইড ও কোচিংয়ের প্রয়োজন হবে না। কিন্তু ভেস্তে যেতে বসেছে এ উদ্দেশ্য। কারণ, ইতিমধ্যে ‘সহায়ক বই’ নামের গাইড বইয়ে সয়লাব হয়ে গেছে বাজার। রাজধানীর একাধিক বইয়ের বাজার ঘুরে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা অবশ্য জানান, কৌশলে নতুন শিক্ষাক্রমকে বিতর্কিত করতে সহায়ক বইয়ের নামে গাইড বই বাজারে ছাড়ছে অসাধু পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতারা। বিষয়টি একাধিক গোপন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহসভাপতি শ্যামল পাল বলেন, এগুলো নোট-গাইড নয়, সহায়ক বই। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে বইগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা দীর্ঘদিন ধরে এসব সহায়ক বইয়ের অপেক্ষায় ছিলেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতেই এগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে এ বছর নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। কিন্তু নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, যথাযথ প্রস্তুতি না থাকা এবং ‘তাড়াহুড়ো’ করায় শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে এ উদ্যোগ। সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বই। মাঝপথে এসে সংশোধনের
২০ এপ্রিল ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে এ বছর নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। কিন্তু নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, যথাযথ প্রস্তুতি না থাকা এবং ‘তাড়াহুড়ো’ করায় শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে এ উদ্যোগ। সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বই। মাঝপথে এসে সংশোধনের
২০ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে এ বছর নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। কিন্তু নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, যথাযথ প্রস্তুতি না থাকা এবং ‘তাড়াহুড়ো’ করায় শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে এ উদ্যোগ। সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বই। মাঝপথে এসে সংশোধনের
২০ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

শিক্ষাব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে এ বছর নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। কিন্তু নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, যথাযথ প্রস্তুতি না থাকা এবং ‘তাড়াহুড়ো’ করায় শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে এ উদ্যোগ। সমালোচনা ও বিতর্কের মুখে এরই মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বই। মাঝপথে এসে সংশোধনের
২০ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫