Ajker Patrika

নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ধারণক্ষমতার ছয় গুণ রোগী

সাবিত আল হাসান, নারায়ণগঞ্জ
আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২২, ১১: ০১
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ধারণক্ষমতার ছয় গুণ রোগী

নারায়ণগঞ্জের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের (ভিক্টোরিয়া) ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর শয্যা আছে ২০টি। সেই ২০টি বিছানার বিপরীতে গত শনিবার এই হাসপাতালে ভর্তি ছিল ১৩০ জন রোগী। ১ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ডায়রিয়া ইউনিটে ১ হাজার ৭৩০ জন ভর্তি হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে ধারণক্ষমতার চেয়ে ছয় গুণ বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের রোগীরাই নারায়ণগঞ্জের ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। বাড়তি খরচের চিন্তায় সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলেও ওষুধ কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকেই। হাসপাতাল থেকে রোগীদের স্যালাইন দেওয়া হলেও প্রয়োজনীয় ওষুধ দোকান থেকে কিনে নিতে হচ্ছে রোগীদের। অনেকটা বাধ্য হয়েই বাড়তি অর্থ খরচ করে বাইরে থেকে ওষুধ কিনছে তারা।

জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, ওয়ার্ডের ভেতরে ও বাইরে রোগীর সিরিয়াল বাড়ছে। একজন বেড থেকে উঠতেই আরেকজন রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে। ওয়ার্ডের ভেতরে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাইরের বেডে চলছে রোগীদের চিকিৎসাসেবা। যেসব রোগীর স্যালাইনের বাইরে অন্য ওষুধের প্রয়োজন, তাদের দেওয়া হচ্ছে ব্যবস্থাপত্র। হাসপাতাল থেকে ওষুধ দেওয়া হয় না বললেই চলে।

বন্দর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে আসা আশিক বলেন, ‘ওয়ার্ডের ভেতরে কোনো বেড খালি নেই। বাইরেই চিকিৎসাসেবা চলছে। হাসপাতালে আসার পর নার্সরা একটা স্যালাইন দিয়েছে। স্যালাইনের সঙ্গে ব্যবস্থাপত্রে লেখা ওষুধগুলো বাইরে থেকে কিনে আনতে বলছে। ৪০০ টাকার ওষুধ কিনলাম। ভেবেছিলাম, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সঙ্গে ওষুধও পাব। কিন্তু এখন সব ওষুধ দোকান থেকেই কিনে আনতে হলো।’

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডায়রিয়া বিভাগের একজন নার্স বলেন, ‘ডায়রিয়ার রোগী দিন দিন বাড়ছে। বর্তমানে হাসপাতালে রোগীকে আমরা স্যালাইন দিচ্ছি। কিন্তু ওরস্যালাইন কিংবা অন্য ইনজেকশন বা ওষুধ প্রয়োজন হলে তা রোগীকে বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হবে। হাসপাতালে এসব ওষুধের সাপ্লাই থাকলেও প্রয়োজনের তুলনায় কম। এখন একজন রোগীকে ওষুধ দিলে বাকিরাও ওষুধ দাবি করবে। তখন না দিতে পারলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে।’

এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. এস কে ফরহাদ বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। তাপমাত্রা দিন দিন বাড়ছে। অধিক তাপমাত্রায় খাবারে দ্রুত জীবাণু জন্ম নেয়। এ ছাড়া রাস্তার খাবার ও লেবুর শরবত সবাই একসঙ্গে খাচ্ছে এবং রোগটি ছড়াচ্ছে।

এ ছাড়া এই চিকিৎসক মনে করেন, গত দুই বছর মানুষ নানা ধরনের স্বাস্থ্যবিধির মধ্যে ছিল। হাত পরিষ্কারের প্রবণতা অনেক বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন সচেতনতা কমে গেছে।

হাসপাতাল থেকে ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এস কে ফরহাদ বলেন, হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্যালাইন রয়েছে। রোগীর প্রয়োজন হলে স্যালাইন দেওয়া হবে। বাইরে থেকে কেনার জন্য ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার কথা নয়। এ ছাড়া নিয়ম অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ছাড়া প্রয়োজনীয় অন্যান্য ওষুধ হাসপাতাল থেকেই রোগীদের দেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত