Ajker Patrika

মাদ্রাসা থেকে না ছাড়ায় বেঁচে গেল ছোট ছেলে

চৌগাছা প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ মে ২০২২, ১৬: ২৪
Thumbnail image

যশোর সদরে বিদ্যুতায়িত ও গলায় গামছা পেঁচিয়ে ১৪ বছর বয়সী ছেলে রুহুল আমিনকে হত্যা করেন নুরুল ইসলাম। বড় ছেলে রুহুল আমিনের মৃত্যু নিশ্চিত করেই বাড়ির পাশের হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আট বছর বয়সী ছোট ছেলে আলামিনকেও হত্যার জন্য আনতে যান, কিন্তু অনেক রাত হওয়ায় মাদ্রাসার শিক্ষক ‘নেশাগ্রস্ত’ বাবার হাতে ছেলেকে না দেওয়ায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় আলামিন।

সদরের ফতেপুর ইউনিয়নের পূর্ব চাঁদপাড়া গ্রামে নির্মমভাবে ছেলেকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার বাবা নুরুল ইসলামের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য উঠে এসেছে। গত সোমবার যশোরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুঞ্জুরুল ইসলামের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন নূরুল ইসলাম। পরে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত রোববার গভীর রাতে যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের পূর্ব চাঁদপাড়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত রুহুল আমিনের মা শান্তনা বেগম জানান, পারিবারিক কলহের জের এবং দুই ছেলের নামে থাকা সম্পত্তির দলিল ও এক লাখ টাকা ফেরত নেওয়ার জন্য নিজ সন্তানকে হত্যা করেন নুরুল ইসলাম। সোমবার দুপুরে চাঁদপাড়া জামে মসজিদে রুহুলের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এদিন সন্ধ্যায় স্বামী নুরুলকে আসামি করে মামলা করেন স্ত্রী শান্তনা বেগম।

রুহুল আমিনের মা শান্তনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী নেশাগ্রস্ত। নেশার টাকা জোগাড়ের জন্য তিনি জমি-গাছ বিক্রি করতেন। পরিবারের সম্পত্তি বিক্রির নেশায় এখন শুধু বসতবাড়ির ৬ শতক জমি ছাড়া কিছু নেই। জমিগুলো বাঁচাতে ভাশুরদের সঙ্গে কথা বলে বসতবাড়ির সেই জমিটুকু দুই ছেলের নামে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছি। সেই ক্ষোভেই স্বামী বিভিন্ন সময়ে আমাকে ও দুই ছেলেকে হত্যার চেষ্টা করেন। একাধিকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে আমাদের ওপর নির্যাতন শুরু করেন। শনিবারও আমাকে মারধর করেন। বিকেলে এই নির্যাতন থেকে আমাকে বাঁচাতে বড় ছেলে রুহুল আমিন আমাকে বাবার বাড়িতে পৌঁছে দেন। স্বামী নুরুল মনে করতেন, আমার ছেলেদের মারতে পারলে সম্পত্তির মালিক আবার তিনি হবেন।’

কান্নাজড়িত কণ্ঠে শান্তা বেগম বলেন, ‘ঘটনার দিন বড় ছেলে রুহুল আমিন নিজ ঘরে একা ঘুমিয়ে থাকার সময়ে তার বাবা নুরুল ছেলের বাঁ পায়ে বৈদ্যুতিক তার পেঁচিয়ে ইলেকট্রিক শক দেয়। পরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করেন।’

শান্তনা বেগম আরও বলেন, ‘ইট্টু জমির জন্যি আমার সোনা বাচ্চারে মেরে দিল, ও বাপ না, পাষণ্ড! আমি এখন কনে পাব আমার সোনারে। আমি এই হত্যার বিচার চাই। ওর মতো জঘন্য বাপের এই সমাজে বেঁচে থাকার দরকার নেই! ওর ফাঁসি চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত