Ajker Patrika

নেত্রকোনায় ৯২১ বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৬: ৩০
নেত্রকোনায় ৯২১ বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার

একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কাল সোমবার। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বীর শহীদদের স্মরণে দিবসটি নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালিত হবে। ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ সারা দেশে শহীদ বেদিতে ফুল দিতে ঢল নামবে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের। কিন্তু নেত্রকোনার ১০ উপজেলার ৯২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই কোনো শহীদ মিনার।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনার ১০ উপজেলার ৯২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার নেই। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণই করা হয়নি। ১০ উপজেলায় মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ১ হাজার ৩১৫ টি। এর মধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ৩৯৪ টিতে। বাকি ৯২১ টিতে শহীদ মিনার নেই।

জেলার খালিয়াজুরীর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, ওই উপজেলার ছয় ইউনিয়নে প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৩ টি। এর মধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ১২ টিতে। বাঘাটিয়া, আদমপুর, কাদিরপুর, গছিখাই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৫১ টিতেই কোনো শহীদ মিনার নেই। জেলার অন্য ৯টি উপজেলার চিত্র একই রকম।

বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকার কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিদ্যালয়গুলোয় শহীদ মিনার নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় না। তবে কোনো কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে বরাদ্দ বা দাতাদের অনুদান সংগ্রহ করে কিংবা বিদ্যালয়ের মেরামত ও আনুষঙ্গিক খাতের (স্লিপ) টাকা বাঁচিয়ে মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।

তবে বেশিরভাগ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে তা করা সম্ভব হয় নাই।

এদিকে শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে এরই মধ্যে তিনটি ডিজাইন চূড়ান্ত করে পাঠানো হয়েছে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছে। কিন্তু কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।

শুধু অর্থ সংকটের কারণেই অনেক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই এমনটি নিশ্চিত হওয়া গেছে শহীদ মিনার না থাকা কয়েকটি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা প্রতিটি বিদ্যালয়েই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস পালনের নির্দেশনা দিয়ে থাকি।

‘ওই দিন বিদ্যালয়গুলোয় একুশে ফেব্রুয়ারির ইতিহাস ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি আবৃত্তি, রচনা প্রতিযোগিতা, দেশাত্মবোধক গানসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের আয়োজন করা হয়।’ তিনি আরও বলেন, যেসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই, সেসব বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী মিনার তৈরি করে বা কাছের কোনো শহীদ মিনারে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

জেলা প্রেসক্লাবের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ ও একুশের চেতনায় উজ্জীবিত করতে প্রতিটি বিদ্যালয়েই শহীদ মিনারসহ এ ধরনের স্মারক থাকা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।’

জনউদ্যাগের ফেলো শ্যামলেন্দু পাল বলেন, ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় ভবন নির্মাণ করে থাকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রকল্প তৈরির সময় তারা বিদ্যালয় ভবনের সঙ্গে একটি করে শহীদ মিনারও যুক্ত করতে পারে। এর জন্য খুব বেশি টাকা লাগে না।’

এ ব্যাপারে নেত্রকোনার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ কুমার কুন্ডু বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোর নির্মাণকাজ এলজিইডির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হলেও অর্থ বরাদ্দ দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

‘তাই অধিদপ্তর যদি ভবনের সঙ্গে একটি করে শহীদ মিনারও নির্মাণ করতে বলে এবং প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয় তাহলে এটা নির্মাণ সম্ভব। কিন্তু সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিএনপি আমলের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মিলনকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিল ইমিগ্রেশন পুলিশ

মনগড়া সংস্কার প্রস্তাব জাতির জীবনে দীর্ঘ মেয়াদে অকল্যাণ ডেকে নিয়ে আসতে পারে, বিএনপির হুঁশিয়ারি

রাজধানীতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যশোরের বিএনপি নেতা নিহত

‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে আ.লীগ কর্মীরা নিরাপদে থাকবে’

সোনার দাম আরও কমে দুই লাখের ঘরে

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ