Ajker Patrika

দালাল চক্রের ১৯ সদস্য গ্রেপ্তার

কক্সবাজার প্রতিনিধি
দালাল চক্রের ১৯ সদস্য গ্রেপ্তার

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ধরে কক্সবাজারে ঢুকতেই বাস টার্মিনাল। সেখান থেকে একটি সড়ক সোজা চলে গেছে শহরের হোটেল-মোটেল জোনে। আরেকটি সড়ক ধরে একটু গেলেই কলাতলীর ডলফিন মোড়। সেখান থেকে সমুদ্রসৈকতের ঢেউয়ের গর্জন শোনা যায়। দীর্ঘদিন এসব এলাকায় বাস বা ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে নামার পর দালালদের খপ্পরে পড়ে হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হন পর্যটকেরা। এ অভিযোগে দালাল চক্রের ১৯ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার ও ১৪টি ইজিবাইক (টমটম) জব্দ করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের একটি দল পর্যটকবেশে অভিযান চালিয়ে লাগেজ টানাটানি ও হয়রানির সময় তাদের গ্রেপ্তার করে।

হোটেলমালিকেরা জানান, কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের প্রধান সড়কের দুই পাশ এবং অলিগলিতে চার শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্ট রয়েছে। ভোরে বেশির ভাগ পর্যটকবাহী বাস কলাতলীর ডলফিন মোড়, সুগন্ধা, লাবণী ও আশপাশের এলাকায় দাঁড়ায়। এসব এলাকায় গাড়ি থেকে পর্যটক নামামাত্রই ঘিরে ধরে দালালেরা। তারা পর্যটকদের কম মূল্যে থাকা-খাওয়া ও ঘোরানোর ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে আসছে।

গতকালের অভিযানে গ্রেপ্তারেরা হলেন জাফর আলম (৩৮), মো. আবদুল্লাহ (১৮), মো. ইব্রাহীম (৩৭), ইসমাইল (২৪) নুরুল আলম (২৬), চাঁদ মিয়া (১৯), নজু আলম (৩৫), রুবেল (২৬), জুয়েল মিয়া (৩২), সাদেকুর (২৬), সৈয়দ নূর (৩০), সহিদ, (২৫), সৈয়দ আলম (৩৬), মো. হোসেন (৪৭) রবিউল হাসান (২০) ও মো. ইমরান (২১)।

গ্রেপ্তারেরা ট্যুরিস্ট পুলিশকে জানিয়েছে, হোটেল-মোটেল জোনে ৮-১০টি দালাল চক্র রয়েছে। এ চক্রে ১০০ জনেরও বেশি সদস্য আছে। তারা ভোর থেকে শহরে গাড়ি ঢোকার অপেক্ষায় থাকে। কেউ টমটম, কেউ রিকশা বা কেউ মোড়ের দোকান ও হোটেলের আশপাশে অবস্থান নেয়। বিভিন্ন হোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্টের সঙ্গে তাদের চুক্তি রয়েছে। পর্যটকদের চাহিদামতো রুমের ব্যবস্থা করে দিতে পারলেই তারা ৩০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত কমিশন পেয়ে থাকে। শুষ্ক মৌসুমে এই কমিশন আরও বাড়ে।

পর্যটকদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গাড়ি থেকে নামতেই ঘিরে ধরে ইজিবাইক ও অটোরিকশার চালকেরা। নানা বাহানায় তারা পর্যটকদের হয়রানি করে।

পর্যটনসংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কিছু হোটেল ও গেস্টহাউসের ব্যবস্থাপক ও কর্মচারীর সঙ্গে দালাল ও প্রতারকচক্রের যোগসাজশ রয়েছে। তারা কক্ষ ভাড়া দেওয়ার জন্য দালাল চক্র ব্যবহার করে। এসব চক্রে ইদানীং অপরাধী ঢুকে পড়ায়, হয়রানিতে পড়েছে পর্যটকেরা।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, ‘একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় টমটম ও অটোরিকশা নিয়ে পর্যটকদের হয়রানি করে আসছে। চক্রটি পর্যটকদের কম ভাড়ায় রুমের ব্যবস্থা করার কথা বলে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া, মালামাল ছিনতাই, ইভ টিজিং, খারাপ আচরণ করা, এমনকি ধর্ষণের মতো ঘটনায় জড়িত।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এই চক্রের সঙ্গে কারা জড়িত, তা চিহ্নিত করা হয়েছে। পর্যটকেরা যাতে অবকাশে এসে হয়রানির শিকার না হন, তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের তরফ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ‘হোটেল-মোটেল জোন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে একশ্রেণির দালাল ও প্রতারক চক্র সক্রিয় রয়েছে। এ চক্রের কারণে পর্যটকেরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি আমরা অভিযোগ করে আসছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টেলিগ্রামে সংগঠিত হচ্ছে আ.লীগ, হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে টাকা নিচ্ছেন ওবায়দুল কাদের

আগামী ১১ দিন নৈরাজ্যের আশঙ্কা, ঠেকাতে এসপিদের এসবির চিঠি

প্রাথমিকে পাঠদান: বাইরের ২০ কাজের চাপে শিক্ষক

প্রেস কাউন্সিলের সদস্য হলেন মাহফুজ আনাম, নূরুল কবীরসহ ১২ জন

‘চাঁদা না পেয়ে’ ১০ দোকানে তালা, জামায়াত নেতা ও বিএনপির কর্মীসহ গ্রেপ্তার ৪

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত