Ajker Patrika

নগরীতে ঈদের কেনাকাটা

শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ
আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২২, ১৫: ৩৩
Thumbnail image

করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন ব্যবসায় মন্দা যাওয়ার পর স্বস্তি ফিরেছে রংপুরের ব্যবসায়ীদের মধ্যে। জমে উঠেছে ঈদের বাজার। বিপণিবিতানগুলোতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লেগে আছে ক্রেতার উপচে পড়া ভিড়। বিক্রি বাড়ায় ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটলেও অতিরিক্ত দামের কারণে ক্রেতাদের মুখ মলিন।

গতকাল শুক্রবার নগরীর বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেছে, দলে দলে লোকজন কেনাকাটার জন্য এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরছেন। অধিকাংশ দোকানেই অপেক্ষা করার পর ক্রেতাদের পোশাক দেখাচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে চড়া দামের কারণে পছন্দ হলেও তা না কিনে ফিরছেন অনেকে। ঈদে লোকসমাগম বাড়ায় যানজটও বেড়েছে নগরীতে।

জাহাজ কোম্পানি মোড়ে কথা হয় মমিনপুর গ্রামের আজগার আলীর সঙ্গে। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তিনি নতুন কাপড় কিনতে এসেছেন। সকাল গড়িয়ে দুপুর ১২টা বাজলেও তিনি পরিবারের কারও জন্য পোশাক কিনতে পারেননি।

আজগার বলেন, ‘পছন্দ হয়, কিন্তু দামে বনে না। আগে যে প্যান্ট ৬০০ টাকায় কিনছি, তা আজ ১ হাজার ২০০ টাকা চাচ্ছে। ৩০০ টাকার টি-শার্ট ৬০০ টাকা। পরিবারের জন্য যে বাজেট নির্ধারণ করেছি, এখানে এসে দেখি তা দিয়ে অর্ধেক কেনাকাটাও হবে না।’

ছয় মাসের ভাগনির জন্য শখ করে শপিংমল রয়েলিটিতে ঢুকেছিলেন বামনদীঘি গ্রামের আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘কাপড়ের দাম দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকা। এ অবস্থা সব শপিংমলের। রংপুরে এবার নিত্যপণ্যের সঙ্গে পোশাকের দামও দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।’

নগরীর জনতা গার্মেন্টসের সামনে কথা হয় শাহিপাড়া এলাকার গৃহবধূ রুমা আক্তারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শহরের সবখানে একদর। কোনো দামাদামি নাই। ২০০ টাকা দামের কাপড়ে ৮০০ টাকার সিল লাগিয়ে রাখছে। ক্রেতাদের এক প্রকার জিম্মি করে ব্যবসা করছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা। বাধ্য হয়ে সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ভোক্তা অধিকারের লোকজনের নিয়মিত এগুলো তদারকি করা দরকার।’

সালেক মার্কেটে আসা জায়গীর এলাকার নুর ইসলাম বলেন, ‘গেঞ্জি, থ্রি-পিস, জামা, শাড়ি, প্যান্ট, টি-শার্ট, শার্ট সবকিছুর দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে। দুই মাস আগেও যে শাড়ির দাম ছিল দেড় হাজার, তা এখন চাচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা। ছয়জনের জন্য টাকা নিয়ে এলেও সারা দিন ঘুরে সেই টাকায় তিনজনের কাপড় কিনতে পেরেছি। করোনাকালীন লোকসান ব্যবসায়ীরা পোশাকের দ্বিগুণ দাম ধরে তুলছেন। সরকারি লোকজন যদি এ ব্যাপারে মনিটরিং করত, তাহলে অনন্ত ন্যায্য দামে আমরা পোশাক কিনতে পারতাম।’

সামাজিক সংগঠন মানব কল্যাণ ঘরের সদস্য আজহারুল ইসলাম জানান, খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থান ও শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার হলেও কোনো কারণ ছাড়াই প্রতিনিয়ত এগুলোর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত এক বছরে এই মৌলিক জিনিসগুলোর দাম যে হারে দ্বিগুণ হয়েছে, সে অনুয়ায়ী আয় বাড়েনি। ঊর্ধ্বমুখী দরে মানুষ তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষেরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। ঈদের কাপড়ের বাজার চড়া। নিম্ন আয়ের মানুষ যেখানে খাবার জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে, সেখানে দ্বিগুণ দামে তারা কীভাবে পোশাক কিনবে? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এসব খেয়াল রাখা দরকার।

দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, ঢাকাসহ বিভিন্ন পাইকারি মোকাম থেকে পোশাক এবার বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যার কারণে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রেজাউল ইসলাম মিলন বলেন, ‘দেশে এখন বড় ধরনের কোনো মহামারি নেই। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও সন্তোষজনক। সবদিক বিবেচনায় বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ব্যবসা ভালোই হবে বলে আশা করি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঋণের ১৩০০ কোটির এক টাকাও দেননি হলিডে ইনের মালিক

নারীদের খেলায় আর নাক গলাবে না, দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে ক্ষমা চাইল ভাঙচুরকারীরা

ইতালি নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় ফরিদপুরের ২ জনকে গুলি করে হত্যা

গণ–সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলেন বিএনপি নেতা

হেফাজতে যুবদল নেতার মৃত্যু, সেনা ক্যাম্প কমান্ডারকে প্রত্যাহার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত