মিজানুর রহমান, কাউনিয়া
বৃষ্টি আর উজানের ঢলে কাউনিয়ায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদীর তীরে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। তীরবর্তী গ্রামগুলোর বাসিন্দারা ভাঙন-আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। নদীগর্ভে শেষ আশ্রয়টুকু হারানোর শঙ্কায় থাকা লোকজনের দাবি—ত্রাণ নয়, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে তাঁদের ভাঙন থেকে রক্ষা করা হোক।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নের ১৪ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার ভিটা হারানোর হুমকিতে রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বালাপাড়ার গোপিডাঙ্গা, গদাই, পাঞ্চরভাঙ্গা, তালুকশাহাবাজ ও টুষমারা এবং টেপামধুপুরের চরগনাই ও চরহয়বৎ খাঁ গ্রাম।
ভাঙনকবলিত নিজপাড়া এলাকায় কথা হয় বিনেশ্বর চন্দ্রের সঙ্গে। নদীর তীরে দাঁড়িয়ে করুণ সুরে তিনি বলেন, ‘আর কতবার বাড়িঘর সরামো! নদী তো সময় দেয় না। বর্ষা শুরু হওয়ার আগত পূবাল বাতাসে পানির ঢেউয়ে জমি, ঘরবাড়ি, বাপ-দাদার ভিটা সউগ ভাংগি যাবার নাইগছে। এবার নদীভাঙনে বসতবাড়ি শ্যাষ করি ফ্যালাইলবে। হামরা বউ-ছাওয়াক নিয়া কোন যাম? এই চিন্তায় রাইতত ঘুম ধরে না।’
একই এলাকার আরেক বাসিন্দা শিমুল চন্দ্র চারবার নদীতে ভিটা হারিয়েছেন। এখন থাকেন রাস্তার ওপর। সেখানেও প্রতিদিন নদীর ঢেউয়ে ভাঙন চলছে। এবার আশ্রয় হারালে কোথায় যাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন বলে জানান তিনি।
তালুকশাহাবাজ গ্রামের রাজেন্দ্র চন্দ্র বলেন, ‘গত বছর হামার এলাকার সবার বাড়িঘর, আবাদি জমি সইগ তিস্তা নদী গিলি খাইছে। মানসের জমিত বৌ-ছাওয়াপোয়াক নিয়া আশ্রয় নিয়া আছি। এবার শেষ পর্যন্ত মাথা গুঁজি থাকার সম্বলটাও নদীত চলি যাইবে।’
গত বছর ভাঙনের শিকার পুষনাথ চন্দ্র জানান, এবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। তীরবর্তী এলাকার ঘরে ঘরে বিরাজ করছে আতঙ্ক। তাঁর প্রশ্ন—আর কত ঘরবাড়ি সরাবেন? সরিয়ে যাবেনইবা কোথায়? তাঁদের বাপ-দাদার ভিটা সব নদীত চলে গেছে। অবস্থাপন্ন গৃহস্থ থেকে তাঁদের এখন পথের ফকির হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। ভাঙনের চিন্তায় রাতে চোখে ঘুম আসে না। বাড়ি সরানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়।
ভাঙনে বসতবাড়ি হারানো কেচয়ুনী বলেন, তাঁরা ত্রাণ চান না। সরকার যেন নদীতে বাঁধ দিয়ে দেয়। বাঁধ না থাকায় নদী তাঁদের সবকিছু শেষ করে দিতে চলেছে।
দুই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর তিস্তার করাল গ্রাসে পাঁচ গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবারের বসতভিটা এবং কয়েক শ একর আবাদি জমি, বাঁশঝাড়, গাছপালা, স্থাপনা ও রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, জরুরি ভিত্তিতে নদী শাসন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। তাহলে অনেকের ভিটেমাটি ও আবাদি জমি নদীর করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাবে।
বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, বর্ষা শুরুর আগেই এবার তিস্তায় যেভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে, তাতে তাঁর এলাকার প্রায় হাজার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।
আনছার আলী বলেন, গত বছর বাঁশ পুঁতে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে এগুলো সাময়িক। বেড়িবাঁধ ছাড়া ভাঙন রোধের কোনো বিকল্প নাই।
তিস্তার ভাঙন রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান জানান, দুই ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার তীরবর্তী গ্রাম রয়েছে। প্রতিবছরই তীরের গ্রাম ভাঙছে। ভাঙনরোধে গ্রামবাসী একটি ক্রস বাঁধের আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
মোস্তাফিজার রহমান বলেন, সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য চুক্তি করেছে। এটি শুধু কাগজে সীমাবদ্ধ না রেখে নিজ অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা দরকার। তা না হলে উপজেলার ১৪টি গ্রামের অনেক অংশ মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, কাউনিয়াসহ পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তার তীরবর্তী গ্রামগুলোর ভাঙনরোধে একটি প্রকল্প ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন পেলে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আহসান হাবিব জানান, কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তীরবর্তী গ্রামগুলোর আংশিক এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের আর কোনো আতঙ্ক থাকবে না।
বৃষ্টি আর উজানের ঢলে কাউনিয়ায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদীর তীরে ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। তীরবর্তী গ্রামগুলোর বাসিন্দারা ভাঙন-আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। নদীগর্ভে শেষ আশ্রয়টুকু হারানোর শঙ্কায় থাকা লোকজনের দাবি—ত্রাণ নয়, তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে তাঁদের ভাঙন থেকে রক্ষা করা হোক।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নের ১৪ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার পরিবার ভিটা হারানোর হুমকিতে রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে বালাপাড়ার গোপিডাঙ্গা, গদাই, পাঞ্চরভাঙ্গা, তালুকশাহাবাজ ও টুষমারা এবং টেপামধুপুরের চরগনাই ও চরহয়বৎ খাঁ গ্রাম।
ভাঙনকবলিত নিজপাড়া এলাকায় কথা হয় বিনেশ্বর চন্দ্রের সঙ্গে। নদীর তীরে দাঁড়িয়ে করুণ সুরে তিনি বলেন, ‘আর কতবার বাড়িঘর সরামো! নদী তো সময় দেয় না। বর্ষা শুরু হওয়ার আগত পূবাল বাতাসে পানির ঢেউয়ে জমি, ঘরবাড়ি, বাপ-দাদার ভিটা সউগ ভাংগি যাবার নাইগছে। এবার নদীভাঙনে বসতবাড়ি শ্যাষ করি ফ্যালাইলবে। হামরা বউ-ছাওয়াক নিয়া কোন যাম? এই চিন্তায় রাইতত ঘুম ধরে না।’
একই এলাকার আরেক বাসিন্দা শিমুল চন্দ্র চারবার নদীতে ভিটা হারিয়েছেন। এখন থাকেন রাস্তার ওপর। সেখানেও প্রতিদিন নদীর ঢেউয়ে ভাঙন চলছে। এবার আশ্রয় হারালে কোথায় যাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন বলে জানান তিনি।
তালুকশাহাবাজ গ্রামের রাজেন্দ্র চন্দ্র বলেন, ‘গত বছর হামার এলাকার সবার বাড়িঘর, আবাদি জমি সইগ তিস্তা নদী গিলি খাইছে। মানসের জমিত বৌ-ছাওয়াপোয়াক নিয়া আশ্রয় নিয়া আছি। এবার শেষ পর্যন্ত মাথা গুঁজি থাকার সম্বলটাও নদীত চলি যাইবে।’
গত বছর ভাঙনের শিকার পুষনাথ চন্দ্র জানান, এবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। তীরবর্তী এলাকার ঘরে ঘরে বিরাজ করছে আতঙ্ক। তাঁর প্রশ্ন—আর কত ঘরবাড়ি সরাবেন? সরিয়ে যাবেনইবা কোথায়? তাঁদের বাপ-দাদার ভিটা সব নদীত চলে গেছে। অবস্থাপন্ন গৃহস্থ থেকে তাঁদের এখন পথের ফকির হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়েছে। ভাঙনের চিন্তায় রাতে চোখে ঘুম আসে না। বাড়ি সরানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়।
ভাঙনে বসতবাড়ি হারানো কেচয়ুনী বলেন, তাঁরা ত্রাণ চান না। সরকার যেন নদীতে বাঁধ দিয়ে দেয়। বাঁধ না থাকায় নদী তাঁদের সবকিছু শেষ করে দিতে চলেছে।
দুই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর তিস্তার করাল গ্রাসে পাঁচ গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবারের বসতভিটা এবং কয়েক শ একর আবাদি জমি, বাঁশঝাড়, গাছপালা, স্থাপনা ও রাস্তা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, জরুরি ভিত্তিতে নদী শাসন ও বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা প্রয়োজন। তাহলে অনেকের ভিটেমাটি ও আবাদি জমি নদীর করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাবে।
বালাপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আনছার আলী জানান, বর্ষা শুরুর আগেই এবার তিস্তায় যেভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে, তাতে তাঁর এলাকার প্রায় হাজার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে।
আনছার আলী বলেন, গত বছর বাঁশ পুঁতে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে এগুলো সাময়িক। বেড়িবাঁধ ছাড়া ভাঙন রোধের কোনো বিকল্প নাই।
তিস্তার ভাঙন রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান জানান, দুই ইউনিয়নে প্রায় সাড়ে ৭ কিলোমিটার তীরবর্তী গ্রাম রয়েছে। প্রতিবছরই তীরের গ্রাম ভাঙছে। ভাঙনরোধে গ্রামবাসী একটি ক্রস বাঁধের আবেদন করেছেন। কিন্তু এখনো কোনো ফল পাওয়া যায়নি।
মোস্তাফিজার রহমান বলেন, সরকার তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য চুক্তি করেছে। এটি শুধু কাগজে সীমাবদ্ধ না রেখে নিজ অর্থায়নে বাস্তবায়ন করা দরকার। তা না হলে উপজেলার ১৪টি গ্রামের অনেক অংশ মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, কাউনিয়াসহ পীরগাছা ও গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তার তীরবর্তী গ্রামগুলোর ভাঙনরোধে একটি প্রকল্প ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার অপেক্ষায় রয়েছে। প্রকল্প অনুমোদন পেলে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আহসান হাবিব জানান, কয়েক দিন ধরে বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে তীরবর্তী গ্রামগুলোর আংশিক এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের আর কোনো আতঙ্ক থাকবে না।
সৈয়দ মুজতবা আলীর ‘দেশে বিদেশে’ বইয়ের হরফুন মৌলা বা সকল কাজের কাজী আবদুর রহমানের বলা একটি বাক্য—‘ইনহাস্ত ওয়াতানাম’—‘এই আমার জন্মভূমি’। সে কথা বলার সময় আফগানি আবদুর রহমানের চোখেমুখে যে অম্লান দ্যুতি ছড়িয়ে পড়েছিল, সে কথা দিব্যি অনুভব করে নেওয়া যায়...
২০ ঘণ্টা আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৮ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪