Ajker Patrika

ছয় দিনে ব্যবস্থা ১৩০০ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে

আজাদুল আদনান, ঢাকা
আপডেট : ০১ জুন ২০২২, ১৪: ৩৬
ছয় দিনে ব্যবস্থা ১৩০০ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে

বন্দর নগরী চট্টগ্রাম জেলার দুই-তৃতীয়াংশ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংকের সরকারি অনুমোদন নেই। এখানে ৬০০-এর কাছাকাছি বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান থাকলেও অনুমোদন আছে মাত্র ২০০টির।

ঢাকার অদূরে সাভার ও আশুলিয়ায় বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দেড় শতাধিক। অনুমোদন আছে মাত্র ৪০টির। আরও অর্ধশত প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। চলমান অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ও ব্লাড ব্যাংক বন্ধের অভিযানে এই দুটি অঞ্চলের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বাকি শখানেক প্রতিষ্ঠান এখনো বহালতবিয়তে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

শুধু চট্টগ্রাম ও সাভার নয়, সারা দেশে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কয়েক হাজার বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু সঠিক পরিসংখ্যান না থাকায় ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তাই নিবন্ধনের আওতায় আনতে চলছে সাঁড়াশি অভিযান। গত ২৬ মে অভিযানে নামার পর গতকাল পর্যন্ত দেশের নানা প্রান্তের ১ হাজার ৩৩৪ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পেরেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। জরিমানা করা হয়েছে অন্তত ৫০০ প্রতিষ্ঠানকে। এসব প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম বৈধ কাগজপত্রের পাশাপাশি নেই সরকারি অনুমোদন। এ রকম অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অন্তত ৫ হাজার বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে চলমান এই অভিযানের ফলাফল খুব বেশি স্থায়ী হবে না। তা মানুষের মধ্যে প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদেরা। এ জন্য স্থায়ী সমাধানে অধিদপ্তরের সক্ষমতা ও প্রস্তুতি বাড়াতে হবে বলে মনে করেন তাঁরা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ৩০৭টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। নিবন্ধনের আওতায় এসেছে ১০ হাজার ৯২২টি। এর মধ্যে হাসপাতাল ও ক্লিনিক ৩ হাজার ৭১৭টি, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ৭ হাজার ৪৩টি এবং ব্লাড ব্যাংক ১৬২টি।

অভিযান শুরুর পর গত পাঁচ দিনে অনলাইনে ১ হাজারের বেশি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন ও নবায়নের জন্য আবেদন করেছে। অভিযান শুরুর আগে আবেদন করলেও ত্রুটি থাকায় এখনো ঝুলে আছে ২ হাজার ৮৩২টি। এর মধ্যে ২ হাজার ১৬টি পরিদর্শনের অপেক্ষায় রয়েছে। আগামী সাত দিনের এরপর পৃষ্ঠা ২ কলাম ৪

মধ্যে সশরীরে জেলা সিভিল সার্জন ও স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের পরিদর্শন করে এসব বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অধিদপ্তরের ক্লিনিক শাখার প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. জাবেদ বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, তারা যাতে আবার অনিয়ম করতে না পারে, সে জন্য নিয়মিত তদারকি চালানো হবে। যেহেতু কী পরিমাণ অবৈধ প্রতিষ্ঠান রয়েছে তা জানা নেই, তাই সতর্ক থাকতে হবে যাতে লাইসেন্স ছাড়া কেউ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান খুলতে না পারে।

অধিদপ্তরের সাবেক রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ মনে করেন, উদ্যোগ ভালো হলেও তা স্বল্পকালীন। এটি যদি সচেতনতা ও সতর্ক করার জন্য হয়, তাহলে ঠিক আছে। আর যদি মান উন্নয়নের জন্য হয়, তাহলে স্থায়ীভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। এটা করার জন্য অধিদপ্তরের সেই সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

বে-নজির আহমেদ বলেন, এর আগে এমন উদ্যোগ নেওয়া হলেও ফল আসেনি। এবারও হয়তো সেদিকেই যাবে। অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা এড়াতে অধিদপ্তরকে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। সেই তহবিলের বরাদ্দও বাড়াতে হবে। নতুবা এসব উদ্যোগের প্রভাব জনসাধারণের মাঝে খুব একটা পড়বে না। অন্যদিকে বন্ধ করে দেওয়া কোনো প্রতিষ্ঠান সব শর্ত পূরণ করতে না পারা পর্যন্ত অনুমোদন না দিতে আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখা) অধ্যাপক ডা. বেলাল হোসেন।

এই সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত