Ajker Patrika

বাজার তদারক করবে প্রশাসন

বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান
আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২২, ০৯: ২৮
Thumbnail image

বান্দরবানে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে তোড়জোড় শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। টিসিবির পাশাপাশি রমজানে কোনো অবস্থাতেই পণ্যের দাম বেশি নেওয়া যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। দর নিয়ন্ত্রণে গত বৃহস্পতিবার বাজার মনিটরিং-সংক্রান্ত সভা করেছে প্রশাসন।

এদিকে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), ভোক্তা অধিকার সংস্থাসহ কিছু প্রতিষ্ঠান রমজানে পণ্যের দাম মানুষের নাগালে রাখার আহ্বান জানিয়েছে। এতে সুর মিলিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা। তবে সাধারণ মানুষ বলছেন, শেষ পর্যন্ত এসব কথার কথায় থেকে যায়, রমজানে বিক্রেতারা সব পণ্যের দামই ইচ্ছেমতো আদায় করেন।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য ‘সহনীয় পর্যায়ে রাখার’ লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজির সভাপতিত্বে সভায় বাজার মালিক সমিতি, দোকান মালিক সমিতি, মুদিদোকান মালিক সমিতি ও ক্যাব প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, ‘আসন্ন রমজানে কোনোভাবেই পণ্যের অতিরিক্ত দাম আদায় করা যাবে না। ব্যবসায়ী নেতা ও প্রশাসন মিলে পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেবেন। সেই মূল্যেই বিক্রি করতে হবে। কেউ নির্ধারিত মূল্যের বেশি আদায় করলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

জেলা প্রশাসক জানান, রমজানে দাম সহনীয় রাখতে প্রশাসন বাজার মনিটরিং (পর্যবেক্ষণ) করবে। এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। ভেজাল, যাতে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য কেউ বিক্রি করতে না পারে, এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করে দেন জেলা প্রশাসক।

এর আগে বুধবার বিকেলে ক্যাবের আয়োজনে ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হয়। এতে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গোলামুর রহমান সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরেন।

ক্যাবের জেলা সভাপতি ও বান্দরবান প্রেসক্লাবের সভাপতি মনিরুল ইসলাম মনু বলেন, ‘রমজানে বাজারে যাতে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রি না হয়, বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে ক্যাব। এ ছাড়া প্রশাসনকে সহায়তা করা হবে।’

এদিকে বান্দরবান বাজার মুদি ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দাশ বলেন, নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রি না করার জন্য সমিতির পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়।

এদিকে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি বেশ কয়েক ধরনের পণ্যের চাহিদা বাড়ে। এর মধ্যে ছোলা, খেজুর, পুদিনা ও ধনেপাতা, লেবু, চিড়া, চিনি, পেঁয়াজ, কলা, ডাল, বেগুন অন্যতম। সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ীরা রমজানে বেপরোয়া ওঠেন।

বান্দরবান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন পণ্যের দাম আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। সাপ্তাহিক হাটবার বুধ ও বৃহস্পতিবার বান্দরবান বাজারে পণ্যের জোগান বেশি দেখা গেছে। তবে প্রায় সব পণ্যের দামই আগের তুলনায় বেশি আদায় করা হচ্ছে বলে ক্রেতারা জানিয়েছেন।

বাজারে আসা চাকরিজীবী সাইফুল ইসলাম ও নুরে আলম, ফার্নিচার ব্যবসায়ী আবু তাহের, দিনমজুর আবু হানিফসহ কয়েকজন বলেন, প্রশাসনের অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত যখন বের হয়, তখন ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম কিছুটা কমিয়ে দেন। তাঁরা চলে গেলে দাম বাড়িয়ে আদায় করা হয়। সাধারণ মানুষ ব্যবসায়ীদের কাছে অসহায়-জিম্মি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় টিসিবির মাধ্যমে তেল, চিনি, পেঁয়াজ, ডাল ও খেজুরসহ মোট ৫টি পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া কার্ডের মাধ্যমে ১০ টাকা কেজির চাল এবং ওএসএমের মাধ্যমে ৩০ টাকা দরে চাল ও ১৮ টাকা দরে আটা বিক্রি কার্যক্রম চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত