মৃত্যুঞ্জয় রায়

এ বছরের ৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন ‘কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস ২৮’ সংক্ষেপে ‘কপ২৮’। সম্মেলনে এবার অংশ নিয়েছেন ১৯৮টি দেশের শীর্ষ নেতারাসহ প্রায় ৭০ হাজার অংশগ্রহণকারী, যার মধ্যে ১৪০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরাও রয়েছেন। অতীতের যেকোনো সময়ে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনের চেয়ে এটি বড় সম্মেলন। তাই এই সম্মেলন ঘিরে সারা বিশ্বের নেতাদের কাছে বিশ্বের মানুষের ছিল অনেক প্রত্যাশা। বাংলাদেশের মানুষেরও প্রত্যাশা—বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত বিপন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে সপ্তম অবস্থানে থাকায় এই সম্মেলনে এ দেশের প্রতিনিধিরা কার্যকর ভূমিকা পালন করে এ দেশসহ সারা পৃথিবীর জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন, জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল ও প্রযুক্তি সহায়তাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করবেন।
সম্মেলনে যাওয়ার আগে ঢাকায় ৩১টি সংগঠন যৌথভাবে ‘কপ২৮ জলবায়ু সম্মেলন: সরকার ও নাগরিক সমাজের অভিমত’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে। সেই সেমিনারে পূর্বের জলবায়ু সম্মেলনে প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হার প্রাক্শিল্পযুগের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘটা ক্ষয়ক্ষতি বা লস অ্যান্ড ড্যামেজের জন্য পৃথক তহবিল গঠনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ধনী দেশগুলোর সম্মত হওয়া। জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দলের কাছে বক্তারা কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন।
সুপারিশগুলো ছিল:
১. কার্বন নিঃসারণকারী বড় দেশগুলোকে ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য নিঃসারণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করতে হবে এবং সে বিষয়ে তাদের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে;
২. একটি আলাদা লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিল গঠন করতে হবে;
৩. জলবায়ু অর্থায়নের একটি নতুন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা হবে অনুদাননির্ভর, ঋণনির্ভর নয় এবং
৪. জলবায়ু পরিবর্তনে অতি বিপদাপন্ন দেশগুলোকে রক্ষায় বিশেষ সহায়তা দিতে হবে।
কপ২৮ সম্মেলনে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনায় বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছেন। এসব দাবির মধ্যেই স্পষ্ট করা হয়েছে কপ২৮ সম্মেলন থেকে বাংলাদেশের প্রত্যাশা।
দাবিগুলো ছিল: ১. প্যারিস চুক্তির ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সীমাবদ্ধ রাখতে ২০৩০ সালের জন্য কার্বন নিঃসারণ হ্রাসের প্রতিশ্রুতির উচ্চাকাঙ্ক্ষা সাত গুণ বেশি হওয়া দরকার। এ বিষয়ে প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তির লক্ষ্য পূরণের দিকে সম্মিলিতভাবে কোথায় কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে এবং কোথায় হয়নি, তা খতিয়ে দেখতে হবে। কার্যক্রমের অগ্রগতির মূল্যায়নসহ ভবিষ্যতের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও বৈশ্বিক মজুত থেকে সুনির্দিষ্ট মাইলফলকসহ স্পষ্ট পদক্ষেপ দেখতে চায় বাংলাদেশ; ২. প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশকে উন্নত দেশগুলোর প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করতে হবে। সবুজ জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ), স্বল্পোন্নত দেশের তহবিল (এলডিসিএফ), অভিযোজন তহবিল (এএফ) এবং জিইএফ ট্রাস্ট তহবিলকে পর্যাপ্ত অর্থসংস্থান দিয়ে শক্তিশালী করতে হবে এবং সেই তহবিলের প্রবেশাধিকার দ্রুত ও সহজ করতে হবে; ৩. প্যারিস চুক্তির সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেখে অভিযোজন ও প্রশমন এবং অনুদানভিত্তিক অর্থায়নের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ ৫০: ৫০ বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের প্রস্তাব হলো, এনএপি বা জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অভিযোজন তহবিল দ্বিগুণ করা দরকার। কপ-২৬ সম্মেলনে ২০১৯-২০১৫ সময়ের জন্য উন্নত দেশগুলোকে যে ‘কল টু ডাবল অ্যাডাপটেশন ফাইন্যান্স’-এর পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছিল, তার অধীনে পর্যাপ্ত অর্থসহায়তা প্রদান করতে হবে। কপ২৮ সম্মেলনে নেতারা অভিযোজন তহবিলের জন্য ১৬৯ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৩০০ মিলিয়ন ডলারের প্রায় অর্ধেক।
সম্মেলনের প্রথম দিনেই ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিলের বিষয়টি দীর্ঘ আলোচনা ও প্রতীক্ষার পর অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হয়েছে। এই তহবিলে সংযুক্ত আরব আমিরাত ১০০ মিলিয়ন ডলার, জার্মানি ১০০ মিলিয়ন ডলার, ব্রিটেন ৫১ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্র ১৭.৫ মিলিয়ন ডলার ও জাপান ১০ মিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সম্মেলনের প্রথম পাঁচ দিনে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ৮৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বছরে বাংলাদেশের ক্ষতি ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের জন্য ৪০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে এডিবি।
এই বরাদ্দ সবুজ জলবায়ু তহবিলে থাকবে। তবে খুশির খবর শোনালেও এই অর্থের কতটুকু অনুদান আর কতটুকু ঋণ হিসেবে আসবে, তা পরিষ্কার নয়। এমনকি দেশভিত্তিক চাহিদার তুলনায় তা কতটুকু পর্যাপ্ত, সেই বিভাজনও স্পষ্ট নয়। জলবায়ু তহবিলের নামে অনেক ঋণ আসছে, তা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ঋণের ফাঁদ তৈরি করছে কি? যদি বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে ঋণ গ্রহণ নিয়ে জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনের কাজগুলো করতে হয়, তাহলে তা বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া রয়েছে এসব অর্থপ্রাপ্তির অনিশচয়তাও। কেননা, আগের প্রতিশ্রুত অর্থের সবটুকুই এখনো বাংলাদেশ পায়নি। তাই এবারের প্রতিশ্রুত অর্থের কতটুকু পাওয়া যাবে, সেই অনিশ্চয়তাও রয়েছে। কেননা, যারা যতটুকু অর্থসহায়তার আশ্বাস দেয়, তারাই সে কথা পরে রাখে না। সম্মেলন শেষে চলেছে এ নিয়ে দরকষাকষি এবং কোন খাতে কতটুকু অর্থ ব্যয় করতে হবে তার আলোচনা। প্রতিটি দেশেরই এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্টি পরিকল্পনা রয়েছে বা থাকে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নে এই অর্থ খরচ করা হয়। কাজেই অনিশ্চয়তা থাকলে সেই সব কাজের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয় না।
প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন ও কপ২৮ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি কাঠামোগত আইনি ব্যবস্থা থাকা দরকার। অনেক চুক্তিতে অনেক দেশ সই করে, কিন্তু বাস্তবে তা মানার ব্যাপারে তাদের সেরূপ কোনো গরজ দেখা যায় না। মানলে ভালো, কিন্তু না মানলে তার কারণে যেসব ক্ষতি হয়, সেই সব ক্ষতিপূরণ কীভাবে হবে বা আদৌ সেই ক্ষতি পোষানোর কোনো সুযোগ আছে কি না, যারা চুক্তি ভঙ্গ করল তাদের তাতে কী হবে, সেই সব বিষয়ে কোনো স্পষ্ট উল্লেখ চুক্তিতে থাকে না। তাই এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও ক্ষতিসাধনকারী উভয়েরই ভূমিকার একটি আইনগত বিষয়ের বাধ্যবাধকতা থাকা দরকার। জাতিসংঘ এ বিষয়ে না ভাবলে আর ভাববে কে? কে কাকে সাজা দেবে আর ক্ষতি সহায়তা দেবে?
তবে সব প্রত্যাশা ছাপিয়ে বাংলাদেশের জন্য এই সম্মেলন থেকে জলবায়ু অভিযোজন তহবিলের আশ্বাস ছাড়াও অর্জিত হয়েছে আরও একটি অনন্য সাফল্য। জলবায়ুসংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অটল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন, সে জন্য তাঁকে প্রদান করা হয়েছে ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘জিসিএ লোকাল অ্যাডাপ্টেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড’। জলবায়ু অভিযোজন কৌশল নিয়ে বাংলাদেশে যত কাজ হয়েছে, অন্য দেশে সে রকম হয়নি। এসব অর্জন আমাদের আনন্দিত ও উৎসাহিত করে। দিন শেষে আমরা দেখতে চাই, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন হ্রাসের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা অর্জিত হয়েছে।

এ বছরের ৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন ‘কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস ২৮’ সংক্ষেপে ‘কপ২৮’। সম্মেলনে এবার অংশ নিয়েছেন ১৯৮টি দেশের শীর্ষ নেতারাসহ প্রায় ৭০ হাজার অংশগ্রহণকারী, যার মধ্যে ১৪০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরাও রয়েছেন। অতীতের যেকোনো সময়ে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনের চেয়ে এটি বড় সম্মেলন। তাই এই সম্মেলন ঘিরে সারা বিশ্বের নেতাদের কাছে বিশ্বের মানুষের ছিল অনেক প্রত্যাশা। বাংলাদেশের মানুষেরও প্রত্যাশা—বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত বিপন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে সপ্তম অবস্থানে থাকায় এই সম্মেলনে এ দেশের প্রতিনিধিরা কার্যকর ভূমিকা পালন করে এ দেশসহ সারা পৃথিবীর জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন, জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল ও প্রযুক্তি সহায়তাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করবেন।
সম্মেলনে যাওয়ার আগে ঢাকায় ৩১টি সংগঠন যৌথভাবে ‘কপ২৮ জলবায়ু সম্মেলন: সরকার ও নাগরিক সমাজের অভিমত’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে। সেই সেমিনারে পূর্বের জলবায়ু সম্মেলনে প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হার প্রাক্শিল্পযুগের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘটা ক্ষয়ক্ষতি বা লস অ্যান্ড ড্যামেজের জন্য পৃথক তহবিল গঠনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ধনী দেশগুলোর সম্মত হওয়া। জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দলের কাছে বক্তারা কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন।
সুপারিশগুলো ছিল:
১. কার্বন নিঃসারণকারী বড় দেশগুলোকে ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য নিঃসারণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করতে হবে এবং সে বিষয়ে তাদের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে;
২. একটি আলাদা লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিল গঠন করতে হবে;
৩. জলবায়ু অর্থায়নের একটি নতুন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা হবে অনুদাননির্ভর, ঋণনির্ভর নয় এবং
৪. জলবায়ু পরিবর্তনে অতি বিপদাপন্ন দেশগুলোকে রক্ষায় বিশেষ সহায়তা দিতে হবে।
কপ২৮ সম্মেলনে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনায় বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছেন। এসব দাবির মধ্যেই স্পষ্ট করা হয়েছে কপ২৮ সম্মেলন থেকে বাংলাদেশের প্রত্যাশা।
দাবিগুলো ছিল: ১. প্যারিস চুক্তির ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সীমাবদ্ধ রাখতে ২০৩০ সালের জন্য কার্বন নিঃসারণ হ্রাসের প্রতিশ্রুতির উচ্চাকাঙ্ক্ষা সাত গুণ বেশি হওয়া দরকার। এ বিষয়ে প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তির লক্ষ্য পূরণের দিকে সম্মিলিতভাবে কোথায় কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে এবং কোথায় হয়নি, তা খতিয়ে দেখতে হবে। কার্যক্রমের অগ্রগতির মূল্যায়নসহ ভবিষ্যতের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও বৈশ্বিক মজুত থেকে সুনির্দিষ্ট মাইলফলকসহ স্পষ্ট পদক্ষেপ দেখতে চায় বাংলাদেশ; ২. প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশকে উন্নত দেশগুলোর প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করতে হবে। সবুজ জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ), স্বল্পোন্নত দেশের তহবিল (এলডিসিএফ), অভিযোজন তহবিল (এএফ) এবং জিইএফ ট্রাস্ট তহবিলকে পর্যাপ্ত অর্থসংস্থান দিয়ে শক্তিশালী করতে হবে এবং সেই তহবিলের প্রবেশাধিকার দ্রুত ও সহজ করতে হবে; ৩. প্যারিস চুক্তির সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেখে অভিযোজন ও প্রশমন এবং অনুদানভিত্তিক অর্থায়নের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ ৫০: ৫০ বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের প্রস্তাব হলো, এনএপি বা জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অভিযোজন তহবিল দ্বিগুণ করা দরকার। কপ-২৬ সম্মেলনে ২০১৯-২০১৫ সময়ের জন্য উন্নত দেশগুলোকে যে ‘কল টু ডাবল অ্যাডাপটেশন ফাইন্যান্স’-এর পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছিল, তার অধীনে পর্যাপ্ত অর্থসহায়তা প্রদান করতে হবে। কপ২৮ সম্মেলনে নেতারা অভিযোজন তহবিলের জন্য ১৬৯ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৩০০ মিলিয়ন ডলারের প্রায় অর্ধেক।
সম্মেলনের প্রথম দিনেই ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিলের বিষয়টি দীর্ঘ আলোচনা ও প্রতীক্ষার পর অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হয়েছে। এই তহবিলে সংযুক্ত আরব আমিরাত ১০০ মিলিয়ন ডলার, জার্মানি ১০০ মিলিয়ন ডলার, ব্রিটেন ৫১ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্র ১৭.৫ মিলিয়ন ডলার ও জাপান ১০ মিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সম্মেলনের প্রথম পাঁচ দিনে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ৮৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বছরে বাংলাদেশের ক্ষতি ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের জন্য ৪০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে এডিবি।
এই বরাদ্দ সবুজ জলবায়ু তহবিলে থাকবে। তবে খুশির খবর শোনালেও এই অর্থের কতটুকু অনুদান আর কতটুকু ঋণ হিসেবে আসবে, তা পরিষ্কার নয়। এমনকি দেশভিত্তিক চাহিদার তুলনায় তা কতটুকু পর্যাপ্ত, সেই বিভাজনও স্পষ্ট নয়। জলবায়ু তহবিলের নামে অনেক ঋণ আসছে, তা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ঋণের ফাঁদ তৈরি করছে কি? যদি বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে ঋণ গ্রহণ নিয়ে জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনের কাজগুলো করতে হয়, তাহলে তা বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া রয়েছে এসব অর্থপ্রাপ্তির অনিশচয়তাও। কেননা, আগের প্রতিশ্রুত অর্থের সবটুকুই এখনো বাংলাদেশ পায়নি। তাই এবারের প্রতিশ্রুত অর্থের কতটুকু পাওয়া যাবে, সেই অনিশ্চয়তাও রয়েছে। কেননা, যারা যতটুকু অর্থসহায়তার আশ্বাস দেয়, তারাই সে কথা পরে রাখে না। সম্মেলন শেষে চলেছে এ নিয়ে দরকষাকষি এবং কোন খাতে কতটুকু অর্থ ব্যয় করতে হবে তার আলোচনা। প্রতিটি দেশেরই এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্টি পরিকল্পনা রয়েছে বা থাকে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নে এই অর্থ খরচ করা হয়। কাজেই অনিশ্চয়তা থাকলে সেই সব কাজের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয় না।
প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন ও কপ২৮ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি কাঠামোগত আইনি ব্যবস্থা থাকা দরকার। অনেক চুক্তিতে অনেক দেশ সই করে, কিন্তু বাস্তবে তা মানার ব্যাপারে তাদের সেরূপ কোনো গরজ দেখা যায় না। মানলে ভালো, কিন্তু না মানলে তার কারণে যেসব ক্ষতি হয়, সেই সব ক্ষতিপূরণ কীভাবে হবে বা আদৌ সেই ক্ষতি পোষানোর কোনো সুযোগ আছে কি না, যারা চুক্তি ভঙ্গ করল তাদের তাতে কী হবে, সেই সব বিষয়ে কোনো স্পষ্ট উল্লেখ চুক্তিতে থাকে না। তাই এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও ক্ষতিসাধনকারী উভয়েরই ভূমিকার একটি আইনগত বিষয়ের বাধ্যবাধকতা থাকা দরকার। জাতিসংঘ এ বিষয়ে না ভাবলে আর ভাববে কে? কে কাকে সাজা দেবে আর ক্ষতি সহায়তা দেবে?
তবে সব প্রত্যাশা ছাপিয়ে বাংলাদেশের জন্য এই সম্মেলন থেকে জলবায়ু অভিযোজন তহবিলের আশ্বাস ছাড়াও অর্জিত হয়েছে আরও একটি অনন্য সাফল্য। জলবায়ুসংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অটল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন, সে জন্য তাঁকে প্রদান করা হয়েছে ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘জিসিএ লোকাল অ্যাডাপ্টেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড’। জলবায়ু অভিযোজন কৌশল নিয়ে বাংলাদেশে যত কাজ হয়েছে, অন্য দেশে সে রকম হয়নি। এসব অর্জন আমাদের আনন্দিত ও উৎসাহিত করে। দিন শেষে আমরা দেখতে চাই, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন হ্রাসের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা অর্জিত হয়েছে।
মৃত্যুঞ্জয় রায়

এ বছরের ৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন ‘কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস ২৮’ সংক্ষেপে ‘কপ২৮’। সম্মেলনে এবার অংশ নিয়েছেন ১৯৮টি দেশের শীর্ষ নেতারাসহ প্রায় ৭০ হাজার অংশগ্রহণকারী, যার মধ্যে ১৪০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরাও রয়েছেন। অতীতের যেকোনো সময়ে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনের চেয়ে এটি বড় সম্মেলন। তাই এই সম্মেলন ঘিরে সারা বিশ্বের নেতাদের কাছে বিশ্বের মানুষের ছিল অনেক প্রত্যাশা। বাংলাদেশের মানুষেরও প্রত্যাশা—বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত বিপন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে সপ্তম অবস্থানে থাকায় এই সম্মেলনে এ দেশের প্রতিনিধিরা কার্যকর ভূমিকা পালন করে এ দেশসহ সারা পৃথিবীর জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন, জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল ও প্রযুক্তি সহায়তাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করবেন।
সম্মেলনে যাওয়ার আগে ঢাকায় ৩১টি সংগঠন যৌথভাবে ‘কপ২৮ জলবায়ু সম্মেলন: সরকার ও নাগরিক সমাজের অভিমত’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে। সেই সেমিনারে পূর্বের জলবায়ু সম্মেলনে প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হার প্রাক্শিল্পযুগের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘটা ক্ষয়ক্ষতি বা লস অ্যান্ড ড্যামেজের জন্য পৃথক তহবিল গঠনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ধনী দেশগুলোর সম্মত হওয়া। জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দলের কাছে বক্তারা কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন।
সুপারিশগুলো ছিল:
১. কার্বন নিঃসারণকারী বড় দেশগুলোকে ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য নিঃসারণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করতে হবে এবং সে বিষয়ে তাদের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে;
২. একটি আলাদা লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিল গঠন করতে হবে;
৩. জলবায়ু অর্থায়নের একটি নতুন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা হবে অনুদাননির্ভর, ঋণনির্ভর নয় এবং
৪. জলবায়ু পরিবর্তনে অতি বিপদাপন্ন দেশগুলোকে রক্ষায় বিশেষ সহায়তা দিতে হবে।
কপ২৮ সম্মেলনে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনায় বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছেন। এসব দাবির মধ্যেই স্পষ্ট করা হয়েছে কপ২৮ সম্মেলন থেকে বাংলাদেশের প্রত্যাশা।
দাবিগুলো ছিল: ১. প্যারিস চুক্তির ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সীমাবদ্ধ রাখতে ২০৩০ সালের জন্য কার্বন নিঃসারণ হ্রাসের প্রতিশ্রুতির উচ্চাকাঙ্ক্ষা সাত গুণ বেশি হওয়া দরকার। এ বিষয়ে প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তির লক্ষ্য পূরণের দিকে সম্মিলিতভাবে কোথায় কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে এবং কোথায় হয়নি, তা খতিয়ে দেখতে হবে। কার্যক্রমের অগ্রগতির মূল্যায়নসহ ভবিষ্যতের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও বৈশ্বিক মজুত থেকে সুনির্দিষ্ট মাইলফলকসহ স্পষ্ট পদক্ষেপ দেখতে চায় বাংলাদেশ; ২. প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশকে উন্নত দেশগুলোর প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করতে হবে। সবুজ জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ), স্বল্পোন্নত দেশের তহবিল (এলডিসিএফ), অভিযোজন তহবিল (এএফ) এবং জিইএফ ট্রাস্ট তহবিলকে পর্যাপ্ত অর্থসংস্থান দিয়ে শক্তিশালী করতে হবে এবং সেই তহবিলের প্রবেশাধিকার দ্রুত ও সহজ করতে হবে; ৩. প্যারিস চুক্তির সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেখে অভিযোজন ও প্রশমন এবং অনুদানভিত্তিক অর্থায়নের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ ৫০: ৫০ বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের প্রস্তাব হলো, এনএপি বা জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অভিযোজন তহবিল দ্বিগুণ করা দরকার। কপ-২৬ সম্মেলনে ২০১৯-২০১৫ সময়ের জন্য উন্নত দেশগুলোকে যে ‘কল টু ডাবল অ্যাডাপটেশন ফাইন্যান্স’-এর পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছিল, তার অধীনে পর্যাপ্ত অর্থসহায়তা প্রদান করতে হবে। কপ২৮ সম্মেলনে নেতারা অভিযোজন তহবিলের জন্য ১৬৯ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৩০০ মিলিয়ন ডলারের প্রায় অর্ধেক।
সম্মেলনের প্রথম দিনেই ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিলের বিষয়টি দীর্ঘ আলোচনা ও প্রতীক্ষার পর অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হয়েছে। এই তহবিলে সংযুক্ত আরব আমিরাত ১০০ মিলিয়ন ডলার, জার্মানি ১০০ মিলিয়ন ডলার, ব্রিটেন ৫১ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্র ১৭.৫ মিলিয়ন ডলার ও জাপান ১০ মিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সম্মেলনের প্রথম পাঁচ দিনে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ৮৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বছরে বাংলাদেশের ক্ষতি ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের জন্য ৪০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে এডিবি।
এই বরাদ্দ সবুজ জলবায়ু তহবিলে থাকবে। তবে খুশির খবর শোনালেও এই অর্থের কতটুকু অনুদান আর কতটুকু ঋণ হিসেবে আসবে, তা পরিষ্কার নয়। এমনকি দেশভিত্তিক চাহিদার তুলনায় তা কতটুকু পর্যাপ্ত, সেই বিভাজনও স্পষ্ট নয়। জলবায়ু তহবিলের নামে অনেক ঋণ আসছে, তা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ঋণের ফাঁদ তৈরি করছে কি? যদি বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে ঋণ গ্রহণ নিয়ে জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনের কাজগুলো করতে হয়, তাহলে তা বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া রয়েছে এসব অর্থপ্রাপ্তির অনিশচয়তাও। কেননা, আগের প্রতিশ্রুত অর্থের সবটুকুই এখনো বাংলাদেশ পায়নি। তাই এবারের প্রতিশ্রুত অর্থের কতটুকু পাওয়া যাবে, সেই অনিশ্চয়তাও রয়েছে। কেননা, যারা যতটুকু অর্থসহায়তার আশ্বাস দেয়, তারাই সে কথা পরে রাখে না। সম্মেলন শেষে চলেছে এ নিয়ে দরকষাকষি এবং কোন খাতে কতটুকু অর্থ ব্যয় করতে হবে তার আলোচনা। প্রতিটি দেশেরই এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্টি পরিকল্পনা রয়েছে বা থাকে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নে এই অর্থ খরচ করা হয়। কাজেই অনিশ্চয়তা থাকলে সেই সব কাজের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয় না।
প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন ও কপ২৮ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি কাঠামোগত আইনি ব্যবস্থা থাকা দরকার। অনেক চুক্তিতে অনেক দেশ সই করে, কিন্তু বাস্তবে তা মানার ব্যাপারে তাদের সেরূপ কোনো গরজ দেখা যায় না। মানলে ভালো, কিন্তু না মানলে তার কারণে যেসব ক্ষতি হয়, সেই সব ক্ষতিপূরণ কীভাবে হবে বা আদৌ সেই ক্ষতি পোষানোর কোনো সুযোগ আছে কি না, যারা চুক্তি ভঙ্গ করল তাদের তাতে কী হবে, সেই সব বিষয়ে কোনো স্পষ্ট উল্লেখ চুক্তিতে থাকে না। তাই এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও ক্ষতিসাধনকারী উভয়েরই ভূমিকার একটি আইনগত বিষয়ের বাধ্যবাধকতা থাকা দরকার। জাতিসংঘ এ বিষয়ে না ভাবলে আর ভাববে কে? কে কাকে সাজা দেবে আর ক্ষতি সহায়তা দেবে?
তবে সব প্রত্যাশা ছাপিয়ে বাংলাদেশের জন্য এই সম্মেলন থেকে জলবায়ু অভিযোজন তহবিলের আশ্বাস ছাড়াও অর্জিত হয়েছে আরও একটি অনন্য সাফল্য। জলবায়ুসংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অটল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন, সে জন্য তাঁকে প্রদান করা হয়েছে ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘জিসিএ লোকাল অ্যাডাপ্টেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড’। জলবায়ু অভিযোজন কৌশল নিয়ে বাংলাদেশে যত কাজ হয়েছে, অন্য দেশে সে রকম হয়নি। এসব অর্জন আমাদের আনন্দিত ও উৎসাহিত করে। দিন শেষে আমরা দেখতে চাই, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন হ্রাসের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা অর্জিত হয়েছে।

এ বছরের ৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন ‘কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস ২৮’ সংক্ষেপে ‘কপ২৮’। সম্মেলনে এবার অংশ নিয়েছেন ১৯৮টি দেশের শীর্ষ নেতারাসহ প্রায় ৭০ হাজার অংশগ্রহণকারী, যার মধ্যে ১৪০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরাও রয়েছেন। অতীতের যেকোনো সময়ে অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনের চেয়ে এটি বড় সম্মেলন। তাই এই সম্মেলন ঘিরে সারা বিশ্বের নেতাদের কাছে বিশ্বের মানুষের ছিল অনেক প্রত্যাশা। বাংলাদেশের মানুষেরও প্রত্যাশা—বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অত্যন্ত বিপন্ন ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে সপ্তম অবস্থানে থাকায় এই সম্মেলনে এ দেশের প্রতিনিধিরা কার্যকর ভূমিকা পালন করে এ দেশসহ সারা পৃথিবীর জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন, জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল ও প্রযুক্তি সহায়তাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করবেন।
সম্মেলনে যাওয়ার আগে ঢাকায় ৩১টি সংগঠন যৌথভাবে ‘কপ২৮ জলবায়ু সম্মেলন: সরকার ও নাগরিক সমাজের অভিমত’ শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে। সেই সেমিনারে পূর্বের জলবায়ু সম্মেলনে প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হার প্রাক্শিল্পযুগের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘটা ক্ষয়ক্ষতি বা লস অ্যান্ড ড্যামেজের জন্য পৃথক তহবিল গঠনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ধনী দেশগুলোর সম্মত হওয়া। জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দলের কাছে বক্তারা কয়েকটি সুপারিশ তুলে ধরেন।
সুপারিশগুলো ছিল:
১. কার্বন নিঃসারণকারী বড় দেশগুলোকে ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য নিঃসারণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করতে হবে এবং সে বিষয়ে তাদের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে;
২. একটি আলাদা লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিল গঠন করতে হবে;
৩. জলবায়ু অর্থায়নের একটি নতুন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, যা হবে অনুদাননির্ভর, ঋণনির্ভর নয় এবং
৪. জলবায়ু পরিবর্তনে অতি বিপদাপন্ন দেশগুলোকে রক্ষায় বিশেষ সহায়তা দিতে হবে।
কপ২৮ সম্মেলনে মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনায় বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছেন। এসব দাবির মধ্যেই স্পষ্ট করা হয়েছে কপ২৮ সম্মেলন থেকে বাংলাদেশের প্রত্যাশা।
দাবিগুলো ছিল: ১. প্যারিস চুক্তির ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সীমাবদ্ধ রাখতে ২০৩০ সালের জন্য কার্বন নিঃসারণ হ্রাসের প্রতিশ্রুতির উচ্চাকাঙ্ক্ষা সাত গুণ বেশি হওয়া দরকার। এ বিষয়ে প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তির লক্ষ্য পূরণের দিকে সম্মিলিতভাবে কোথায় কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে এবং কোথায় হয়নি, তা খতিয়ে দেখতে হবে। কার্যক্রমের অগ্রগতির মূল্যায়নসহ ভবিষ্যতের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও বৈশ্বিক মজুত থেকে সুনির্দিষ্ট মাইলফলকসহ স্পষ্ট পদক্ষেপ দেখতে চায় বাংলাদেশ; ২. প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাংলাদেশকে উন্নত দেশগুলোর প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করতে হবে। সবুজ জলবায়ু তহবিল (জিসিএফ), স্বল্পোন্নত দেশের তহবিল (এলডিসিএফ), অভিযোজন তহবিল (এএফ) এবং জিইএফ ট্রাস্ট তহবিলকে পর্যাপ্ত অর্থসংস্থান দিয়ে শক্তিশালী করতে হবে এবং সেই তহবিলের প্রবেশাধিকার দ্রুত ও সহজ করতে হবে; ৩. প্যারিস চুক্তির সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেখে অভিযোজন ও প্রশমন এবং অনুদানভিত্তিক অর্থায়নের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ ৫০: ৫০ বরাদ্দের ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশের প্রস্তাব হলো, এনএপি বা জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অভিযোজন তহবিল দ্বিগুণ করা দরকার। কপ-২৬ সম্মেলনে ২০১৯-২০১৫ সময়ের জন্য উন্নত দেশগুলোকে যে ‘কল টু ডাবল অ্যাডাপটেশন ফাইন্যান্স’-এর পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছিল, তার অধীনে পর্যাপ্ত অর্থসহায়তা প্রদান করতে হবে। কপ২৮ সম্মেলনে নেতারা অভিযোজন তহবিলের জন্য ১৬৯ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা ৩০০ মিলিয়ন ডলারের প্রায় অর্ধেক।
সম্মেলনের প্রথম দিনেই ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ’ তহবিলের বিষয়টি দীর্ঘ আলোচনা ও প্রতীক্ষার পর অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হয়েছে। এই তহবিলে সংযুক্ত আরব আমিরাত ১০০ মিলিয়ন ডলার, জার্মানি ১০০ মিলিয়ন ডলার, ব্রিটেন ৫১ মিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্র ১৭.৫ মিলিয়ন ডলার ও জাপান ১০ মিলিয়ন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সম্মেলনের প্রথম পাঁচ দিনে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ৮৩ বিলিয়ন ডলারের বেশি বরাদ্দের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বছরে বাংলাদেশের ক্ষতি ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের জন্য ৪০ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে এডিবি।
এই বরাদ্দ সবুজ জলবায়ু তহবিলে থাকবে। তবে খুশির খবর শোনালেও এই অর্থের কতটুকু অনুদান আর কতটুকু ঋণ হিসেবে আসবে, তা পরিষ্কার নয়। এমনকি দেশভিত্তিক চাহিদার তুলনায় তা কতটুকু পর্যাপ্ত, সেই বিভাজনও স্পষ্ট নয়। জলবায়ু তহবিলের নামে অনেক ঋণ আসছে, তা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ঋণের ফাঁদ তৈরি করছে কি? যদি বাংলাদেশের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে ঋণ গ্রহণ নিয়ে জলবায়ু অভিযোজন ও প্রশমনের কাজগুলো করতে হয়, তাহলে তা বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এ ছাড়া রয়েছে এসব অর্থপ্রাপ্তির অনিশচয়তাও। কেননা, আগের প্রতিশ্রুত অর্থের সবটুকুই এখনো বাংলাদেশ পায়নি। তাই এবারের প্রতিশ্রুত অর্থের কতটুকু পাওয়া যাবে, সেই অনিশ্চয়তাও রয়েছে। কেননা, যারা যতটুকু অর্থসহায়তার আশ্বাস দেয়, তারাই সে কথা পরে রাখে না। সম্মেলন শেষে চলেছে এ নিয়ে দরকষাকষি এবং কোন খাতে কতটুকু অর্থ ব্যয় করতে হবে তার আলোচনা। প্রতিটি দেশেরই এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্টি পরিকল্পনা রয়েছে বা থাকে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা বাস্তবায়নে এই অর্থ খরচ করা হয়। কাজেই অনিশ্চয়তা থাকলে সেই সব কাজের সুষ্ঠু বাস্তবায়ন ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয় না।
প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন ও কপ২৮ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে একটি কাঠামোগত আইনি ব্যবস্থা থাকা দরকার। অনেক চুক্তিতে অনেক দেশ সই করে, কিন্তু বাস্তবে তা মানার ব্যাপারে তাদের সেরূপ কোনো গরজ দেখা যায় না। মানলে ভালো, কিন্তু না মানলে তার কারণে যেসব ক্ষতি হয়, সেই সব ক্ষতিপূরণ কীভাবে হবে বা আদৌ সেই ক্ষতি পোষানোর কোনো সুযোগ আছে কি না, যারা চুক্তি ভঙ্গ করল তাদের তাতে কী হবে, সেই সব বিষয়ে কোনো স্পষ্ট উল্লেখ চুক্তিতে থাকে না। তাই এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও ক্ষতিসাধনকারী উভয়েরই ভূমিকার একটি আইনগত বিষয়ের বাধ্যবাধকতা থাকা দরকার। জাতিসংঘ এ বিষয়ে না ভাবলে আর ভাববে কে? কে কাকে সাজা দেবে আর ক্ষতি সহায়তা দেবে?
তবে সব প্রত্যাশা ছাপিয়ে বাংলাদেশের জন্য এই সম্মেলন থেকে জলবায়ু অভিযোজন তহবিলের আশ্বাস ছাড়াও অর্জিত হয়েছে আরও একটি অনন্য সাফল্য। জলবায়ুসংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অটল প্রতিশ্রুতি প্রদর্শন করেছেন, সে জন্য তাঁকে প্রদান করা হয়েছে ‘ক্লাইমেট মোবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘জিসিএ লোকাল অ্যাডাপ্টেশন চ্যাম্পিয়নস অ্যাওয়ার্ড’। জলবায়ু অভিযোজন কৌশল নিয়ে বাংলাদেশে যত কাজ হয়েছে, অন্য দেশে সে রকম হয়নি। এসব অর্জন আমাদের আনন্দিত ও উৎসাহিত করে। দিন শেষে আমরা দেখতে চাই, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন হ্রাসের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা অর্জিত হয়েছে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

যারা যতটুকু অর্থসহায়তার আশ্বাস দেয়, তারাই সে কথা পরে রাখে না। সম্মেলন শেষে চলেছে এ নিয়ে দরকষাকষি এবং কোন খাতে কতটুকু অর্থ ব্যয় করতে হবে তার আলোচনা। প্রতিটি দেশেরই এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্টি পরিকল্পনা রয়েছে বা থাকে।
১৫ ডিসেম্বর ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

যারা যতটুকু অর্থসহায়তার আশ্বাস দেয়, তারাই সে কথা পরে রাখে না। সম্মেলন শেষে চলেছে এ নিয়ে দরকষাকষি এবং কোন খাতে কতটুকু অর্থ ব্যয় করতে হবে তার আলোচনা। প্রতিটি দেশেরই এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্টি পরিকল্পনা রয়েছে বা থাকে।
১৫ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

যারা যতটুকু অর্থসহায়তার আশ্বাস দেয়, তারাই সে কথা পরে রাখে না। সম্মেলন শেষে চলেছে এ নিয়ে দরকষাকষি এবং কোন খাতে কতটুকু অর্থ ব্যয় করতে হবে তার আলোচনা। প্রতিটি দেশেরই এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্টি পরিকল্পনা রয়েছে বা থাকে।
১৫ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

যারা যতটুকু অর্থসহায়তার আশ্বাস দেয়, তারাই সে কথা পরে রাখে না। সম্মেলন শেষে চলেছে এ নিয়ে দরকষাকষি এবং কোন খাতে কতটুকু অর্থ ব্যয় করতে হবে তার আলোচনা। প্রতিটি দেশেরই এ বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্টি পরিকল্পনা রয়েছে বা থাকে।
১৫ ডিসেম্বর ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫