Ajker Patrika

‘ভাতা কি বাজান মরণের পরে পামু’

অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২১, ১২: ৫০
‘ভাতা কি বাজান মরণের পরে পামু’

কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামের দেওঘর ইউনিয়নের সাভিয়ানগর গ্রামের মৃত আমর উদ্দিনের স্ত্রী কমলা বেগম। তিনি এক ছেলে ও দুই মেয়ের মা। বড় মেয়ে ও নাতনির স্বামী মারা গেছে। ছোট মেয়ে কোনো রকম চলে। কমলার ভরণ-পোষণ করেন না ছেলেও। পাননি বয়স্ক বা বিধবা ভাতা। জোটেনি গৃহহীন কমলার ভাগ্যে সরকারি ঘর।

গত সোমবার দুপুরে উপজেলার আখড়া বাজারে বিভিন্ন দোকান ঘুরে ভিক্ষা করতে দেখা যায় কমলা বেগমকে। বয়সের ভারে নুব্জ্য দেহে লাঠিতে ভর দিয়ে কোনো রকম চলছেন। ‘এই শরীর নিয়ে, এ বয়সে ভিক্ষা করেন কেন’, জিজ্ঞেস করতেই, তিনি বলতে শুরু করেন জীবনের নানা কথা।

কমলা বেগম বলেন, ‘স্বামী নাই। ঘর নাই। পরের বাড়িতে থাকতে দিচ্ছে। সারা দিন গাঁওগিরামে হাত পাইত্তা (ভিক্ষা) যা পাই, তাই দিয়া কোনো রকমে চলি। সরকার কতজনরে কত কিছু দিল। আমারে না দিল ঘর, না দিল বাড়ি। ও বাজান, আর কত বয়স হইলে বয়স্ক ভাতা পামু? বয়স্ক ভাতা কি বাজান মরণের পরে পামু?’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৫ বছর আগে এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে মারা যান ভূমিহীন আমর উদ্দিন। সেই সময় থেকে স্থানীয় আবু তাহের পাঠানের পরিত্যক্ত বাড়িতে আশ্রয় নেন কমলা বেগম। সেখানেই তিনি এখন বসবাস করেন। সারা দিন হাটবাজার ও গ্রামে ঘুরে ভিক্ষা করেন।

আবু তাহের পাঠান বলেন, ‘অসহায় এই নারীর ভাগ্যে বয়স্ক ভাতা জোটেনি। এমন অসহায় মানুষকে অগ্রাধিকারে সরকারি সহায়তা দেওয়া দরকার।’

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. নাফিজুল হক শাওনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘এবার অষ্টগ্রামে শতভাগ ভাতা দেওয়ার জন্য কাজ করছি। তিনি যদি আবেদন করে থাকেন, বয়স ও দারিদ্র্য বিবেচনায় অগ্রাধিকার পাবেন। পরে আবার সুযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত