রুশা চৌধুরী
‘পাখিকে শেখানোর কায়দাটা পাখির চেয়ে এত বেশি বড় যে, পাখিটাকে দেখাই যায় না; রাজা বুঝিলেন, আয়োজনের ত্রুটি নাই। খাঁচায় দানা নাই, পানি নাই; কেবল রাশি রাশি পুঁথি হইতে পাতা ছিঁড়িয়া কলমের ডগা দিয়া পাখির মুখের মধ্যে ঠাসা হইতেছে।’
রবীন্দ্রনাথের ‘তোতাকাহিনী’র পাখিটা ধীরে ধীরে আধমরা হয়, তারপর একসময় মারা যায়। আর আমরা যারা একদা গল্পটি পড়েছিলাম অথবা যারা পড়িনি, তাদের জীবনটা কী দাঁড়াল? আমাদের মা-বাবা তাঁদের সামর্থ্যের বাইরে গিয়েও চেষ্টা করে গেছেন আমাদের পড়াশোনা করিয়ে ঝকঝকে ভবিষ্যৎ তৈরি করার। ফলাফলে তৃপ্ত ছিলেন কি তাঁরা? এটুকু শান্তি হয়তো ছিল—তাঁরা তাঁদের ‘তোতা’দের শিক্ষিত করেছিলেন।
মাত্র ৫০ বছর বয়সের এক তরুণ দেশের মাঝবয়সী নাগরিক হিসেবে আমরা মা-বাবার হাত ছেড়ে এখন নিজেদের জীবনে প্রবেশ করেছি। কী করলাম আমরা? যদি সত্যি বলি—আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য শিক্ষা-সুযোগ-সুবিধার নামে এক একটা ‘সোনার খাঁচা’ বানিয়েছি। সেই খাঁচার পরিচর্যায় মুখে ফেনা তুলতে তুলতে অন্য অনেক দায়িত্ব ভুলে গিয়েছি আমরা।
আমাদের প্রতিবেশীরা দূরে সরে গেছে, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দূরত্ব, ভাই-বোনে দেখা-সাক্ষাৎ কম, কেউ দেশ ছেড়ে গেছে, কেউ দেশকে রসাতলে পাঠাচ্ছি, কেউ কেউ হাল ধরার চেষ্টা করছে। মূল সুরটা এই, আমরা আমাদের সন্তান-ঘর-বাড়ি-স্ট্যাটাসে বাঁধা পড়ে একদম লেজেগোবরে অবস্থায় আছি।
একটি দেশের মধ্যবিত্ত নাগরিকেরাই যদি সেই দেশের আসল চেহারার ধারক হয়, তবে আজ আমাদের তৈরি সোনার খাঁচা থেকে বের হওয়া পাখিদের কেমন দশা? কেমন হবে আর বছরখানেক পরে তাঁদের হাল?
রবিঠাকুরের গল্পের ‘তোতা’টা মারা গিয়েছিল! কিন্তু আমরা সঞ্জীবনী পান করেছি, তাই আমাদের গড় আয়ু বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে শিক্ষার হার। যেকোনো উপায়ে বাড়াতে হচ্ছে আয়-রোজগার। আর বোনাস হিসেবে বাড়ছে ‘স্বার্থপরতা’, যা সংক্রমণ করেছে আমাদের সন্তানদের।
কী ছিল না আমাদের? কোথায় ছিল ফাঁকি? কেন আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নেই? কেন ওদের বন্ধুত্বের আনন্দ কম? কেন একাকিত্ব আর ডিপ্রেশন ওদের সঙ্গী? খাঁচার বাইরে বড় হয়েও আমরা এক-একজন সোনার খাঁচার কারিগর হলাম! আর সোনার খাঁচা থেকে বেরিয়ে আমাদের সন্তানেরা কিসের কারিগর হবে?
মাঝেমধ্যেই বিটকেলে মন এমন আহাম্মকি করে। এমন সব প্রশ্ন করে, যার না আছে মানে, না আছে উত্তর! সেই যে গানটা—
‘জানি না ফুরাবে কবে বৃথা প্রশ্নের হয়রানি,
উত্তর আসবে না’
আসলেই উত্তর আসবে না, আর আজকাল হয়রান হওয়ারও সময় কম। তবু বুকের মাঝে সেই অচিন তোতা পাখিটা ডানা ঝাপটায়...নিজে হেরে গিয়েছিল, তাই মানুষকে হেরে যেতে দেখলে পাখিটার আজও খুব কষ্ট লাগে।
লেখক: রুশা চৌধুরী, আবৃত্তিশিল্পী
‘পাখিকে শেখানোর কায়দাটা পাখির চেয়ে এত বেশি বড় যে, পাখিটাকে দেখাই যায় না; রাজা বুঝিলেন, আয়োজনের ত্রুটি নাই। খাঁচায় দানা নাই, পানি নাই; কেবল রাশি রাশি পুঁথি হইতে পাতা ছিঁড়িয়া কলমের ডগা দিয়া পাখির মুখের মধ্যে ঠাসা হইতেছে।’
রবীন্দ্রনাথের ‘তোতাকাহিনী’র পাখিটা ধীরে ধীরে আধমরা হয়, তারপর একসময় মারা যায়। আর আমরা যারা একদা গল্পটি পড়েছিলাম অথবা যারা পড়িনি, তাদের জীবনটা কী দাঁড়াল? আমাদের মা-বাবা তাঁদের সামর্থ্যের বাইরে গিয়েও চেষ্টা করে গেছেন আমাদের পড়াশোনা করিয়ে ঝকঝকে ভবিষ্যৎ তৈরি করার। ফলাফলে তৃপ্ত ছিলেন কি তাঁরা? এটুকু শান্তি হয়তো ছিল—তাঁরা তাঁদের ‘তোতা’দের শিক্ষিত করেছিলেন।
মাত্র ৫০ বছর বয়সের এক তরুণ দেশের মাঝবয়সী নাগরিক হিসেবে আমরা মা-বাবার হাত ছেড়ে এখন নিজেদের জীবনে প্রবেশ করেছি। কী করলাম আমরা? যদি সত্যি বলি—আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য শিক্ষা-সুযোগ-সুবিধার নামে এক একটা ‘সোনার খাঁচা’ বানিয়েছি। সেই খাঁচার পরিচর্যায় মুখে ফেনা তুলতে তুলতে অন্য অনেক দায়িত্ব ভুলে গিয়েছি আমরা।
আমাদের প্রতিবেশীরা দূরে সরে গেছে, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দূরত্ব, ভাই-বোনে দেখা-সাক্ষাৎ কম, কেউ দেশ ছেড়ে গেছে, কেউ দেশকে রসাতলে পাঠাচ্ছি, কেউ কেউ হাল ধরার চেষ্টা করছে। মূল সুরটা এই, আমরা আমাদের সন্তান-ঘর-বাড়ি-স্ট্যাটাসে বাঁধা পড়ে একদম লেজেগোবরে অবস্থায় আছি।
একটি দেশের মধ্যবিত্ত নাগরিকেরাই যদি সেই দেশের আসল চেহারার ধারক হয়, তবে আজ আমাদের তৈরি সোনার খাঁচা থেকে বের হওয়া পাখিদের কেমন দশা? কেমন হবে আর বছরখানেক পরে তাঁদের হাল?
রবিঠাকুরের গল্পের ‘তোতা’টা মারা গিয়েছিল! কিন্তু আমরা সঞ্জীবনী পান করেছি, তাই আমাদের গড় আয়ু বেড়েছে। সঙ্গে বেড়েছে শিক্ষার হার। যেকোনো উপায়ে বাড়াতে হচ্ছে আয়-রোজগার। আর বোনাস হিসেবে বাড়ছে ‘স্বার্থপরতা’, যা সংক্রমণ করেছে আমাদের সন্তানদের।
কী ছিল না আমাদের? কোথায় ছিল ফাঁকি? কেন আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নেই? কেন ওদের বন্ধুত্বের আনন্দ কম? কেন একাকিত্ব আর ডিপ্রেশন ওদের সঙ্গী? খাঁচার বাইরে বড় হয়েও আমরা এক-একজন সোনার খাঁচার কারিগর হলাম! আর সোনার খাঁচা থেকে বেরিয়ে আমাদের সন্তানেরা কিসের কারিগর হবে?
মাঝেমধ্যেই বিটকেলে মন এমন আহাম্মকি করে। এমন সব প্রশ্ন করে, যার না আছে মানে, না আছে উত্তর! সেই যে গানটা—
‘জানি না ফুরাবে কবে বৃথা প্রশ্নের হয়রানি,
উত্তর আসবে না’
আসলেই উত্তর আসবে না, আর আজকাল হয়রান হওয়ারও সময় কম। তবু বুকের মাঝে সেই অচিন তোতা পাখিটা ডানা ঝাপটায়...নিজে হেরে গিয়েছিল, তাই মানুষকে হেরে যেতে দেখলে পাখিটার আজও খুব কষ্ট লাগে।
লেখক: রুশা চৌধুরী, আবৃত্তিশিল্পী
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ দিন আগেআধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫