Ajker Patrika

পানির নিচে ১০ হাজার বিঘার বোরো চারা

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ০৭
পানির নিচে ১০ হাজার বিঘার বোরো চারা

নওগাঁয় কিছুদিন আগেও বিলমান্দার চারদিকে ছিল চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ। এ ফসলে স্বপ্ন দেখছিলেন আশপাশের কয়েকটি গ্রামের কৃষক। কিন্তু সম্প্রতি হওয়া বৃষ্টিতে কৃষকের স্বপ্ন শেষ হয়েছে। বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় অন্তত পাঁচ হাজার বিঘা জমির বোরো ধান। সেসব জমির ওপর দিয়ে এখন চলছে নৌকা। এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন মাঠের নিচু এলাকায় একইভাবে তলিয়ে গেছে আরও পাঁচ হাজার বিঘা জমির ধান।

কৃষকদের অভিযোগ, পার্শ্ববর্তী নিয়ামতপুর উপজেলার ১৮টি খাল সংযোগ করে দেওয়া হয়েছে বিলমান্দাতে। একটু বৃষ্টি হলেই এসব খাল দিয়ে পানি অনায়াসে চলে আসে মান্দার বিলে। আর এতেই তলিয়ে যায় বিলের বোরো আবাদ।

কৃষকেরা বলছেন, বিলমান্দার ভেতর দিয়ে বয়ে চলেছে শিবনদ। কিন্তু নদটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। নদের বুকেও চাষ হয় বোরো ধানের। এটি খনন করা হলে বৃষ্টির পানি অনায়াসে নেমে যাবে নিচের দিকে। তা হলে একমাত্র ফসল নিয়ে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না তাঁদের।

সরেজমিনে জানা গেছে, মান্দার বিলে নিয়ামতপুর উপজেলার দারাজপুর ও বিলজাওন এবং মান্দা উপজেলার পরানপুর, চেরাগপুর, ছুটিপুর, কোঁচড়া, বাদলঘাটা, বিলমান্দা, হলুদঘর, দাওয়াইল, সগুনিয়া, শ্রীকলা, গাগড়া, চাকদহসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকেরা বোরো ধানের চাষ করেছিলেন। ধানে এরই মধ্যে সার ও কীটনাশক প্রয়োগসহ যাবতীয় কাজ শেষ করা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে মুহূর্তেই তাঁদের সেই স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে। এ ছাড়া ঘোনা, কুরকুচি, বিলহিলনা, বিলউথরাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় মাঠে নিচু জমির জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।

কোঁচড়া গ্রামের কৃষক সানোয়ার হোসেন বলেন, এবারে বিলে সাড়ে ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেন তিনি। জমিতে এরই মধ্যে সার-কীটনাশক দেওয়ার কাজ শেষ করেছেন। হালচাষ থেকে এ পর্যন্ত তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে তাঁর সব শেষ হয়ে গেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কৃষকদের অভিযোগ, নিয়ামতপুর উপজেলার হরিপুর, বেনিপুর, শিশা, দরগাপাড়াসহ এ উপজেলার ১৮টি খাল সংস্কার করে পানিপ্রবাহ বাড়ানো হয়েছে। এ সব খালের সংযোগ করে দেওয়া হয়েছে বিলমান্দায়। একটু বৃষ্টি হলেই বরেন্দ্র অঞ্চলের পানি এসব খাল দিয়ে বিলমান্দায় অনায়াসে চলে আসে। তলিয়ে যায় বিলমান্দায় রোপণ করা ফসল। বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টিতে সৃষ্টি হয় বন্যার। এবারের বৃষ্টিতে এ বিলে কৃষকদের অন্তত ৫ হাজার বিঘা জমির বোরো ধান তলিয়ে গেছে।

তাঁদের দাবি, কালামারা সেতু থেকে চৌবাড়িয়া সেতু পর্যন্ত শিবনদ খনন করা হলে বৃষ্টির পানি অনায়াসে নেমে যাবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শায়লা শারমিন বলেন, হঠাৎ বৃষ্টির কারণে বিলমান্দা ও ছাতড়ার বিলে ১১৫ হেক্টর জমির বোরো ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিচু এলাকার কিছু মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব রিপোর্ট পাঠানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত