Ajker Patrika

হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ মে ২০২২, ১৪: ০০
হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হঠাৎ করে বেড়েছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে শয্যাসংকট হওয়ায় আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালের মেঝেতেই চিকিৎসাসেবা দিতে হচ্ছে। গত রোববার দুপুর ১২টা থেকে গতকাল সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৫০ জন রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে নারী-শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যাই বেশি।

হাসপাতালের তথ্যমতে, গত ১২ এপ্রিল থেকে গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত ৯০ জন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১২ শিশু রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকেরা বলছেন, মার্চ-এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া অতিরিক্ত গরমের ফলে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত রোগ দেখা দেয়। এ কারণে বাড়ে ডায়রিয়ার প্রকোপ। এ সময় শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। ঋতুভিত্তিক আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণ ছাড়াও খাবারের সঙ্গে পেটে জীবাণু প্রবেশ করায় দীর্ঘ সময় ধরে ডায়রিয়া প্রভাব ফেলছে। এসব রোগী পরিপূর্ণ সুস্থ হতে সময় লাগছে দুই থেকে পাঁচ দিনের মতো।
পাঁচ বছর বয়সী শিশু রুদ্রকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকা সেলিনা আক্তার বলেন, তাঁর ছেলে ঈদের পর থেকেই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। গ্রাম্য চিকিৎসায় উন্নতি না হওয়ায় শনিবার দিবাগত রাতে তাঁরা ছেলেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। কিন্তু হাসপাতালে শয্যা সংকট হওয়ায় প্রসূতি বিভাগের মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকেরা নিয়মিত চিকিৎসা দিলেও ছেলের অবস্থা আগের চেয়ে খারাপ হচ্ছে।

ডায়রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী রিতা খাতুন বলে, রাতের খাবার খাওয়ার পর থেকে পাতলা পায়খানা ও একাধিকবার বমি হয়েছে। বাধ্য হয়ে গতকাল সকালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু ডায়রিয়ার রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় শয্যা পায়নি সে। তাই বাধ্য হয়ে মেঝেতেই চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে।

শয্যা না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নেওয়া আফরোজার (৭) মা ঝরনা বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁর সন্তানের ডায়রিয়া হওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তিনি। শয্যা না পেয়ে মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসা করাচ্ছেন তিনি। এখানে ফ্যানের কোনো ব্যবস্থা নেই। গরমের কারণে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভ্যাপসা গরমে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। কিন্তু সন্তানের চিকিৎসার জন্য গরমের মধ্য হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মুজাহিদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, অতিরিক্ত গরমে বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে।  বিশেষ করে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই বেশি। অতিরিক্ত রোগীর কারণে ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে বেশ কয়েক দিন ধরে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। তবুও সাধ্যমতো চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত