Ajker Patrika

ভাইরাল ভিডিওতে নজরে চার কিশোরকে নির্যাতন

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ জুন ২০২২, ১৫: ২৬
Thumbnail image

বগুড়ার শেরপুরে মাদ্রাসার চার শিক্ষার্থীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। ৬ জুন উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। তবে নির্যাতনের বিষয়ে ওই চার শিক্ষার্থী পরিবারের সদস্যদের কিছু জানায়নি। পরে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাদের অভিভাবকেরা বিষয়টি জানতে পারেন। এ ঘটনায় ১০ জুন থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়।

ভিডিওতে দেখা যায়, মাঠে চার শিক্ষার্থী বসে আছে। তাদের ঘিরে আছে কয়েকজন। তাদের কেউ লাঠি দিয়ে আঘাত করছে, কেউ পা দিয়ে লাথি মারছে।

নির্যাতনের শিকার চারজনই সুঘাট ইউনিয়নের দড়িহাসড়া দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। তারা হলো দড়িহাসড়া সুজাব আলী শেখের ছেলে বাবু শেখ (১৩), একই গ্রামের সোহরাব মণ্ডলের ছেলে হাবিবুর রহমান (১৫), সদরহাসড়া গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে মো. সজিব (১৫) ও খিদিরহাসড়া গ্রামের ফরিদ উদ্দিনের ছেলে মো. অভি (১৪)।

চার শিক্ষার্থীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ৫ জুন রাতে হলদিবাড়ি গ্রামে বার্ষিক ওরস অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে পার্শ্ববর্তী ছোনকা ও হলদিবাড়ি গ্রামের দুপক্ষের কয়েক যুবকের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁদের সন্তানদের নির্যাতন করা হয়।

নির্যাতনের শিকার ছাত্রদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, ৬ জুন তাঁদের সন্তানদের কাউকে বাড়ি থেকে; আবার কাউকে মাদ্রাসা থেকে ডেকে নেওয়া হয়। এরপর তাদের হলদিবাড়ি গ্রামের এক মাঠে নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্যাতন করা হয়। কিন্তু চারজন বাড়ি ফিরে নির্যাতনের বিষয়ে কিছু জানায়নি। সে জন্য অভিভাবকেরা প্রথমে বুঝতে পারেননি। সন্তানদের অসুস্থতা স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তাঁরা বিষয়টি জানতে পারেন।

নির্যাতনের শিকার বাবু শেখের চাচা তোজাম্মেল শেখ বলেন, ‘গত শুক্রবার সকালে ভিডিওটি আমার নজরে আসে। সেখানে আমার ভাতিজাকে দেখি। পরে তাকে জিজ্ঞেস করলে সে ঘটনা খুলে বলে। সে রাতেই নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’ ভিডিওতে ইটালি গ্রামের শাহাদত হোসেন, ছোনকার সাদেকুল ও কামরুল ইসলাম, হলদিবাড়ি গ্রামের মো. রাব্বিকে নির্যাতন করতে দেখা গেছে বলে তিনি জানান।

এদিকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, শাহাদত হোসেন নিজেকে সুঘাট ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জিন্নাহর ভাগনে পরিচয় দিয়েছেন। গত রোববার মোবাইল ফোনে বলেন, শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা হয়নি। তা শাসন ছিল।

জানতে চাইলে সুঘাট আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জিন্নাহ বলেন, ‘আমি ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। শাহাদত হোসেন আমার দূরসম্পর্কের ভাগনে। তবে নির্যাতিতদের পক্ষ থেকে যেকোনো সহযোগিতা চাইলে দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, নির্যাতনের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সত্যতা পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত