Ajker Patrika

শার্ট দেখে ছেলেকে শনাক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ১৪
শার্ট দেখে ছেলেকে শনাক্ত

শরীর পচে যাওয়ায় মুখ দেখে চেনার উপায় ছিল। তাই গায়ের শার্ট দেখেই ছেলে কামাল উদ্দিনকে শনাক্ত করেন বাবা আলী কাউসার। তিন দিন আগে চট্টগ্রাম নগরীর চশমা খালে তলিয়ে যায় কামাল। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে মির্জাখাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা। মরদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থলে দ্রুত ছুটে যান তার বাবা আলী কাউসার। শার্ট দেখে ছেলেকে শনাক্ত করেন তিনি।

আলী কাউসার বলেন, ‘তার (কামাল) চোখ-বের হয়ে মুখের যা অবস্থা হয়েছে দেখে চেনার উপায় নেই। এটাই আমার ছেলে। আমি তাকে যে শার্ট পরিয়ে দিয়েছি, এটা তার গায়ে আছে।’

কাউসার আরও বলেন, ‘সোমবার বিকেলে খালে তলিয়ে যাওয়ার পর আমি অনেক খুঁজেছি। কিন্তু তাকে পাইনি। আজ ছেলেকে পেয়েছি। মৃত হলেও তো পেয়েছি, এটাই আমার কাছে অনেক বড় বিষয়।’

এর আগে গত সোমবার বিকেলে বোতল কুড়াতে গিয়ে চশমা খালে নিখোঁজ হয় কামাল উদ্দিন। খবর পেয়ে ওই দিন বিকেলে তার বাবা ঘটনাস্থলে খোঁজাখুঁজি করেন। সন্ধ্যা পর্যন্ত খুঁজে তাকে না পেয়ে পরে পুলিশকে জানানো হলেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পরে খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। প্রথম দিন তাকে না পেয়ে গত বুধবার আবারও অভিযান চালান তাঁরা। তবে এদিনও খোঁজ মেলেনি কামালের। গতকাল দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নগরীর মুরাদপুর এলাকার এন মোহাম্মদ কনভেনশন সেন্টারের পেছনে মির্জাখাল থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তিন দিন ধরে খালে থাকায় তার মরদেহ পচে যায়।

ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আনিসুর রহমান বলেন, ‘তৃতীয় দিনের অভিযান শুরুর পর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের সময় ওই শিশুর মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়। মরদেহ পচে ভেসে উঠলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মুরাদপুর এলাকার এন মোহাম্মদ কনভেনশন সেন্টারের পেছনে মির্জাখাল থেকে উদ্ধার করে। এরপর ছেলেটির বাবা, ভাই ঘটনাস্থলে এসে তাকে শনাক্ত করে। এরপর আমরা মরদেহ পাঁচলাইশ থানা-পুলিশের নিকট হস্তান্তর করি। পরে পুলিশ তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়। বর্তমানে মরদেহ চমেক হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।’

দুই ভাইয়ের মধ্যে ছোট কামাল থাকত ষোলোশহর আইডব্লিউ কলোনি এলাকায় বাবার সঙ্গে। ঘটনার পর তার সঙ্গে আড্ডা দেওয়া সমবয়সী কয়েক শিশু জানায়, রাকিব নামের আরেক শিশুর সঙ্গে সোমবার দুপুরে ষোলোশহর এলাকায় খালে বোতল কুড়াতে নামে কামাল। সেখান থেকে বোতল কুড়াতে কুড়াতে ষোলোশহর রেলওয়ে স্টেশন এলাকার দিকে যায়। ষোলোশহর অ্যাডমিন রিসোর্টের সামনে তারা দুজনই খালে জমে থাকা ময়লার স্তূপের নিচে তলিয়ে যায়। রাকিব খালের প্রতিরোধ দেওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে উঠে আসতে পারলেও কামাল উদ্দিন উঠতে পারেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ