Ajker Patrika

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ অস্থিরতা

বরিশাল প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ এপ্রিল ২০২২, ১০: ৫৩
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে হঠাৎ অস্থিরতা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) শিক্ষক কর্তৃক এক শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতের অভিযোগকে কেন্দ্র করে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। গত সোমবার ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ছাত্র এ বি এম মুশফিকুর রহমান শ্রেণিকক্ষের সামনে হইচই করায় আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রভাত হালদার তাঁকে শার্টের কলার ধরে টানাহেঁচড়া করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল ওই ছাত্র উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকুল আরেফিনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

এদিকে শিক্ষক সুপ্রভাত হালদারকে অপবাদ দেওয়ার অভিযোগ তুলে তাঁর বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ গতকাল দুপুরে ববি ক্যাম্পাসের সামনে মহাসড়কে মানববন্ধন করার চেষ্টা করলে কর্তৃপক্ষ সরিয়ে নেয়। এ ঘটনার উপাচার্যের নেতৃত্বে কর্তৃপক্ষ সমঝোতার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনকে এ বিষয়ে জানতে ফোন দেওয়া হলে ধরেননি।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মুশফিকুর রহমান একাডেমিক ভবনের চারতলা থেকে নিচতলায় যাচ্ছিলেন। সহকারী অধ্যাপক সুপ্রভাত হালদার ডাক দিলে শুনতে না পেয়ে হেঁটে যান মুশফিকুর। এতে সুপ্রভাত ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর শার্টের কলার ধরে টানাহেঁচড়া শুরু করেন। একপর্যায়ে নিজের কক্ষে নিয়ে লাঞ্ছিত করেন ও শার্ট ছিঁড়ে ফেলেন।

মুশফিকুর রহমান জানান, শিক্ষক সুপ্রভাত হালদার তাঁর কক্ষে নিয়ে গালাগালি করেন এবং একাডেমিক ক্যারিয়ার ধ্বংসের হুমকি দেন। উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করবেন বলে জানিয়েছেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, তাঁরা কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কর্মসূচি থেকে সরে এসেছেন। মুশফিক একটি দলের প্রভাব খাটিয়ে ক্যাম্পাসে নানা অপকর্মে মামলার আসামিও হয়েছেন।

শিক্ষক সুপ্রভাতকে অসম্মান করা প্রসঙ্গে মুশফিক বলেন, এসব আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছড়াচ্ছেন। তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত, তবে মামলার বিষয়টি সত্য নয়।

সহকারী অধ্যাপক সুপ্রভাত হালদার বলেন, যেহেতু তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তিনি এখনো পাননি, তাই কিছু বলতে চান না। উপাচার্যের দপ্তরে মঙ্গলবার ওই ছাত্রের সঙ্গে সমঝোতা করানোর বিষয়ে বলেন, এ ঘটনাও সত্য নয়।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম বলেন, মুশফিকসহ একদল শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষের সামনে হইচই করছিল। এ সময় সহকারী অধ্যাপক সুপ্রভাত হালদার বেরিয়ে এসে বকাবকি করেন। ওই শিক্ষক মুশফিককে ডাক দিলেও সে না শোনায় শিক্ষক তার হাত ধরেন। একপর্যায়ে বোধহয় ছাত্রের কলার ধরে তার বিভাগে নিয়ে যান।

প্রক্টর বলেন, মুশফিককে বোঝানো হলেও তিনি উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এ সময় তাঁরা সমঝোতার চেষ্টা করেও পারেননি। ওই ছাত্র সমঝোতায় আসতে চায় না। উপাচার্যের কার্যালয়ে তখন আইন বিভাগ এবং ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষকেরাও ছিলেন। এ ঘটনায় আইন বিভাগসহ ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শিক্ষককে অসম্মান করার অভিযোগ এনে মানববন্ধন করার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে সরিয়ে নিয়েছি।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল বাতেন চৌধুরী বলেন, ছাত্র-শিক্ষকের মধ্যে সোহর্দপূর্ণ সম্পর্ক থাকা উচিত। যে শিক্ষককে নিয়ে কথা উঠেছে, তিনি ভালো মানুষ। তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠার কথা নয়। শিক্ষার্থীর অভিযোগ সঠিক কি না তা নিশ্চয় কর্তৃপক্ষ যাচাই করে ব্যবস্থা নেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত