Ajker Patrika

অস্তিত্বসংকটে শিবসা নদী

বাবুল আক্তার, পাইকগাছা
Thumbnail image

এক সময়ের প্রমত্তা শিবসা নদী ভরাট হয়ে এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। ৮৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ নদীর ৩০ কিলোমিটারই ভরাট হয়ে গেছে। তীব্র নাব্য সংকটে এ নদীতে এখন আর নৌকা দেখা যায় না। মানুষ দুর্গম এলাকায় নৌকার পরিবর্তে এখন হেঁটে বা বাইসাইকেলে চলাচল করেন।

জানা গেছে, খুলনার পাইকগাছার অন্তত তিন লাখ মানুষ শিবসা নদীর দুই পাড়ে বসবাস করছেন। ফসলি জমি ছাড়া নদীর তলদেশে পলি পড়ে উঁচু হওয়ায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। নদী খননের জন্য নেই কোনো উদ্যোগও। খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই নদীটি খননের দাবি জানিয়েছেন উপজেলাবাসী।

পাইকগাছা পৌরসভা ছাড়াও উপজেলার গদাইপুর, লতা, সোলাদানা, দেলুটি, লস্কর ও গড়ুইখালী ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে শিবসা নদী। ৮৫ কিলোমিটার শিবসা নদীর প্রায় ৩০ কিলোমিটার ভরাট হয়ে গেছে। অনেকে নদীর জায়গায় বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করছেন। যে কারণে দিন দিন নদীর জায়গা কমছে। নদীর তলদেশে পলি পড়ে উঁচু হয়েও ভরাট হচ্ছে। এ ছাড়া নদীর জমি দখল করে চিংড়ি ঘের করেছে অনেক প্রভাবশালীরা।

এলাকার সামসুর মাঝি জানান, ৪০ বছর ধরে খুলনা থেকে নৌকায় করে মালামাল নিয়ে নৌপথে পাইকগাছা পৌরসভা বাজারে নিয়ে আসছি। নদীর অনেক স্থানে ভরাট হওয়ায় এখন আর নৌকা চলে না। জোয়ারের সময় নৌকা চললেও ভাটায় তা আটকে যায়। নৌপথ বন্ধ হওয়ায় নদীকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষতি হচ্ছে।

পৌর সদরের পাইকারি মুদিদোকানি উত্তম সাধু বলেন, পাইকগাছার ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে এ নদীর অবদান অনেক। এই নদী দিয়ে কম খরচে মালামাল আনা-নেওয়া হতো। কিন্তু নদী ভরাট হওয়ার কারণে ট্রাকে করে মালামাল আনতে হয়। এতে মালের বহন খরচ বেশি হচ্ছে।

ব্যবসায়ী কামরুল ও জগন্নাথ দেবনাথ জানান, গত ১০ বছরে নদীটি ভরাট হয়ে গেছে। নৌপথ দিয়ে মালামাল সরবরাহ করতে না পারায় এখন পৌরসভা, গড়ুইখালী ও নতুনবাজার পাইকারি হাট প্রায় বন্ধের পথে।

লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কে এম আরিফুজ্জামান তুহিন বলেন, নদী খননের জন্য দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। কিন্তু কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী পরিচালক রাজু আহম্মেদ জানান, নদী খনন না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা সমাধানের উপায় নেই। খননের জন্য জরিপ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, পৌরসভার শিববাটি হতে হাড়িয়া পর্যন্ত সাত কিলোমিটার নদী খননের জন্য প্রকল্প দিয়েছি, যা আগামী শুষ্ক মৌসুমে খনন কাজ শুরু হওয়ার আশা করছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত