Ajker Patrika

মানিকগঞ্জ-৩: স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আসনে তৎপর দুই দল

মঞ্জুর রহমান, মানিকগঞ্জ ও মো. লুৎফর রহমান, সাটুরিয়া
Thumbnail image

নির্বাচনের অন্তত সাত মাস বাকি থাকতেই নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে মানিকগঞ্জ-৩ আসনে। বর্তমান সংসদ সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদ মালেকের সমর্থকেরা বড় বড় শোডাউন করে সরকারের ১৫ বছরের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরছেন। তবে মনোনয়ন চাইতে তৎপর দলটির আরও কয়েকজন নেতা। অপরদিকে আসনের ভোটের মাঠ মানিকগঞ্জ সদর ও সাটুরিয়া উপজেলায় বেশ গোছানো মনে হচ্ছে বিএনপিকে। একসময় নিজেদের দখলে থাকা আসনটি ফিরে পেতে বেশ কৌশলী দলটির নেতারা। বসে নেই জাতীয় পার্টিও (জাপা)।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ছাড়াও এ আসন থেকে এবার মনোনয়ন চাইতে পারেন জেলা কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাদরুল ইসলাম খান বাবলু, সাবেক শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটু ও সাবেক সদস্য যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ড. রফিকুল ইসলাম। তবে জাহিদ মালেক ছাড়া অন্যদের দেখা নেই মাঠে।

নির্বাচনে গেলে বিএনপি থেকে মনোনয়নের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত হারুনার রশিদ খান মুন্নুর মেয়ে, মুন্নু গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতা। এ ছাড়া আলোচনায় আছেন জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জামিলুর রশিদ খান, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা।

প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বঙ্গবন্ধু সরকারের সাবেক সংসদ সদস্য, বর্তমানে গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সিনিয়র সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম খান কামাল এ আসন থেকে মনোনয়ন চাইতে পারেন। জাপা থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. জহিরুল আলম রুবেল মনোনয়ন চাইবেন।

নির্বাচন সামনে রেখে এরই মধ্যে সাটুরিয়া উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন, মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা ও মানিকগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। তবে স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, কোথাও ভোটের মাধ্যমে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বানানো হয়নি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক উপস্থিত থেকে তাঁর নিজস্ব ব্যক্তিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেছেন।

এ ব্যাপারে জাহিদ মালেকের ঘনিষ্ঠ আফসার উদ্দীন সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় কাজ শেষ করে যখন সুযোগ পান তখন মানিকগঞ্জের নিজ বাড়িতে ছুটে এসে জেলা এবং উপজেলায় দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন। ১৫ বছরে রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, জুডিশিয়াল ভবন, মেডিকেল কলেজ, হাসপাতালসহ যেসব দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছেন, সেই হিসেবে সদর ও সাটুরিয়ায় জাহিদ মালেকের বিকল্প নেই।

জাহিদ মালেক বাদে বাকি যাঁরা মনোনয়ন চাইবেন বলে আলোচনায় আছেন, এ ব্যাপারে তাঁদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এই আসনে স্বাধীনতার পর বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা মোট ছয়বার জয়লাভ করেন। এবার কমিটি হওয়ার কারণে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাঙাভাব বিরাজ করছে। তবে সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে মাঠে দাঁড়াতে পারছেন না তাঁরা। পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ভয়ে জেলা শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে আফরোজা খান রিতার রাজনৈতিক কার্যালয়ে কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। তিনি বিভিন্ন সভাসহ দলীয় কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নির্বাচনী কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। নানা প্রতিকূলতার মাঝেও তিনি দলের নেতা-কর্মীদের একত্র করে মাঠ গরম রাখার চেষ্টা করছেন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর বলেন, ‘নেতা-কর্মীরা ফ্যাসিবাদী অবৈধ সরকারকে হঠাতে রাজপথে আন্দোলনসহ নির্বাচনের জন্য সব সময় প্রস্তুত। যেকোনো সময় নির্বাচন হলে আমরা মানিকগঞ্জের তিনটি আসনে বিপুল ভোটে বিজয়ী হব।’

আসনের একাধিক ভোটার ও বিভিন্ন দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবার কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে চান ভোটাররা। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোন্দল রয়েছে। কোন্দল কাটিয়ে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে নির্বাচনে জয়লাভের লক্ষ্যে তৎপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিএনপি নির্বাচনে গেলে ভোটের ফল তাঁদের পক্ষে যেতে পারে বলেও মনে করছেন অনেক ভোটার। আর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা দাবি করছেন, দলে কোন্দল নেই। সব ঠিকঠাক আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত