Ajker Patrika

মুখোমুখি কলি-নিপুণ ও মিশা-ডিপজল পরিষদ

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

আজ বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বিবার্ষিক নির্বাচন। এফডিসিতে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে এবারের নির্বাচন। কয়েক বছর ধরে সিনেমার চেয়েও আলোচিত-সমালোচিত শিল্পী সমিতির নির্বাচন। রোজা ও ঈদের কারণে এবার প্রচারণায় বেশি সময় পাননি প্রার্থীরা। ঈদের ছুটি শেষ না-হতেই প্রার্থী ও সমর্থকদের পদচারণে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) তৈরি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। পুরো এফডিসিই ছেয়ে গেছে পোস্টার আর তারকাপ্রার্থীদের বড় বড় ছবিতে। ২০২৪-২৬ মেয়াদের শিল্পী সমিতির নির্বাচনে দুটি প্যানেল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট ৪৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। একটি কলি-নিপুণ পরিষদ, অন্যটি মিশা-ডিপজল পরিষদ। সভাপতি পদে লড়ছেন মাহমুদ কলি ও মিশা সওদাগর। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে নিপুণ আক্তারের বিপরীতে আছেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল। নির্বাচনে জয় নিয়ে আশাবাদী দু্ই প্যানেলের নেতারা। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন ছয়জন। 

টার্গেট নতুন ভোটার 
এবার নির্বাচনে ৫৭১ জন ভোটারের মধ্যে নতুন ভোটার ৫০ জন। এ ছাড়া গত নির্বাচনের পর ১০৩ জন ভোটাধিকার ফিরে পেয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, নতুন ও ফিরে পাওয়া মিলে মোট ১৫৩ জনের ভোট এবারের নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে। তাই নতুন ভোটারদের ওপর জোর দিচ্ছেন প্রার্থীরা। 

টাকা লেনদেনের অভিযোগ
নিজের পদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত মেয়াদের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছিলেন, শিল্পী সমিতির নির্বাচনে টাকা লেনদেন হয়। সব পক্ষ থেকে টাকা নেন ভোটাররা। তাঁর মন্তব্যের কারণেই আলোচনায় আসে টাকা লেনদেনের বিষয়টি। গতবার একই অভিযোগে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরেও প্রার্থিতা বাতিল হয়েছিল জায়েদ খানের। এবারও ভোটের জন্য টাকা লেনদেন করছেন বলে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন দুই প্যানেলের সদস্যরা। 

ডিপজলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
শেষ মুহূর্তে এসে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মনোয়ার হোসেন ডিপজলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছেন কলি-নিপুণ পরিষদের কার্যকরী সদস্য পদপ্রার্থী সাদিয়া মির্জা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু। তিনি জানান, ডিপজলের বিরুদ্ধে ভোটারকে টাকা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রমাণস্বরূপ কমিশন বরাবর পেনড্রাইভে করে ভিডিও দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে চিঠি দিয়ে ছয় ঘণ্টার মধ্যে ডিপজলকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। সঠিক সময়ে উত্তর না পেলে সংবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

ভ্রাম্যমাণ আদালত
নির্বাচনে অনিয়ম রোধে এবার থাকছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভোট গ্রহণের সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘এর আগে আমরা দেখেছি, ভোট গ্রহণ শেষে অনেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ করেন। নির্বাচনে যেন অনিয়ম না হয় সে লক্ষ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

শিল্পীদের দলবদল 
এবারের নির্বাচনের অন্যতম আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে শিল্পীদের দলবদল। গতবার নিপুণের সঙ্গে একই প্যানেলে নির্বাচন করা ডিএ তায়েব, শাহনূর, নানা শাহ দল ছেড়েছেন। তাঁরা যোগ দিয়েছেন মিশা-ডিপজল প্যানেলে। নিপুণের প্যানেলের সহসাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করে আগেই সরে দাঁড়িয়েছেন সাইমন সাদিক। তিনি এবার নির্বাচন না করার সিদ্ধান্তে নিয়েছেন। অন্যদিকে মিশার প্যানেল থেকে বের হয়ে নিপুণের প্যানেলে যোগ দিয়েছেন চিত্রনায়িকা অঞ্জনা।

মাহমুদ কলি-নিপুণ পরিষদ
মাহমুদ কলি (সভাপতি), নিপুণ আক্তার (সাধারণ সম্পাদক), ড্যানি সিডাক ও অমিত হাসান (সহসভাপতি), বাপ্পি চৌধুরী (সহসাধারণ সম্পাদক), অঞ্জনা রহমান (সাংগঠনিক সম্পাদক), মারুফ আকিব (আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক), কাবিলা (দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক), মামনুন হাসান ইমন (সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক), আজাদ খান (কোষাধ্যক্ষ)।

কার্যকরী পরিষদের সদস্য: সুজাতা আজিম, নাদের চৌধুরী, পীরজাদা হারুন, পলি, জেসমিন আক্তার, তানভীর তনু, মো. সাইফুল, সাদিয়া মির্জা, সনি রহমান, হেলেনা জাহাঙ্গীর, সাইফ খান।

মিশা-ডিপজল পরিষদ 
মিশা সওদাগর (সভাপতি), মনোয়ার হোসেন ডিপজল (সাধারণ সম্পাদক), মাসুম পারভেজ রবেল ও ডি এ তায়েব (সহসভাপতি), আরমান (সহসাধারণ সম্পাদক), জয় চৌধুরী (সাংগঠনিক সম্পাদক), আলেকজান্ডার বো (আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক), জ্যাকি আলমগীর (দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক), ডন (সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক), কমল (কোষাধ্যক্ষ)।

কার্যকরী পরিষদের সদস্য: সুচরিতা, রোজিনা, আলীরাজ, সুব্রত, দিলারা ইয়াসমিন, শাহনূর, নানা শাহ, রত্না কবির, চুন্নু, সাঞ্জু জন, ফিরোজ মিয়া।

শিল্পীদের সুনাম পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করব
—মাহমুদ কলি, সভাপতি প্রার্থী 
দেশের মানুষের কাছে চলচ্চিত্রের মানুষের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। চেষ্টা করব সেই সুনাম পুনরুদ্ধারের। সবার সঙ্গে কথা বলছি, পুরো প্যানেলের জন্য ভোট চাইছি। আশা করছি আমাদের জয় হবে। তবে দিন শেষে আমরা সবাই এক। সবাই চলচ্চিত্র শিল্পী। যে-ই জিতুক, অভিনন্দন জানাব।

মিশা সওদাগর ও ডিপজলশিল্পীদের সর্বোচ্চ স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করব
—মিশা সওদাগর, সভাপতি প্রার্থী
শিল্পীদের প্রাপ্য সম্মান দিয়েই তাঁদের সর্বোচ্চ স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করব। আর নির্বাচন একটা প্রতিযোগিতা। স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে আমরা ৪৮ জনের মতো দাঁড়িয়েছি। ২১ জন নির্বাচিত হবে। আমি আমার প্যানেল নিয়ে শতভাগ আশাবাদী।

ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি বাঁচাতে নির্বাচনে এসেছি
—ডিপজল, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী 
নির্বাচনে যেতেই হবে কিংবা জিততে হবে—এ মনমানসিকতা আমার নেই। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিটা ধ্বংসের পথে। ইন্ডাস্ট্রি বাঁচাতে নির্বাচনে এসেছি। গত দুই বছর যারা কাজ করেছে, ফিল্মের ভালো কিছু করতে পারেনি। সবাইকে নিয়ে শিল্পীদের ভালো করতে চাই।

তথ্য প্রতিমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে কাজ করব
—নিপুণ আক্তার, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী
করোনার পরপর আমাদের কমিটি নির্বাচিত হয়েছিল। সেখান থেকে সমিতিটা কিন্তু চালিয়ে নিয়েছি। চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করেছি। সম্প্রতি তথ্য প্রতিমন্ত্রী এসেছিলেন এফডিসিতে। বলেছেন, আগামী দুই বছরের মধ্যে এফডিসির চেহারা পাল্টে দেবেন। আমরা ওনার হাতকে শক্তিশালী করতে চাই। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত