Ajker Patrika

বরেন্দ্রর সেচ পাইপ উপড়ে কৃষিজমিতে পুকুর খনন

দুর্গাপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৮ মে ২০২২, ১৬: ৩১
বরেন্দ্রর সেচ পাইপ উপড়ে  কৃষিজমিতে পুকুর খনন

দুর্গাপুর উপজেলায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সেচ পাইপ উপড়ে ফেলে তিন ফসলি জমিতে চলছে পুকুর খনন। উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে উপজেলার কিমসমত গনকৈড় ইউনিয়নের রাতুগ্রাম-সুজানগর বড় বিলে প্রায় ৩০ বিঘা জমিতে চলছে এই পুকুর খনন। সেচ পাইপ উপড়ে ফেলায় ওই এলাকার কৃষিজমিতে সেচ নিয়ে কৃষকেরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, উপজেলার রাতুগ্রাম-সুজানগর বড় বিলে প্রায় ৩০ বিঘা কৃষিজমিতে পুকুর খনন করছেন হান্নান নামের এক ব্যক্তি। পুকুর খননের দায়িত্ব নিয়েছেন খননযন্ত্রের মালিক মাহাবুর রহমান। ওই স্থানে পুকুর খনন করতে গিয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ১৫-২০টি সেচ পাইপ উপড়ে ফেলা হয়েছে। এখনো মাটির নিচে আছে আরও কয়েক শ ফুট পাইপ। ওই পাইপও তুলে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে।

পুকুরের চারপাশে রয়েছে শত শত বিঘা ফসলি জমি। পাইপ উপড়ে ফেলায় আশপাশের কৃষিজমি সেচ নিয়ে হুমকির মুখে পড়েছে। মাহাবুর নিয়মের তোয়াক্কা না করে সরকারি সম্পত্তি বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সেচ পাইপ উপড়ে ভেঙেচুরে ফেলছেন।

স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, এসব সেচ পাইপ কৃষকদের সেচ সুবিধার জন্য মাটির নিচ দিয়ে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ স্থাপন করে। কৃষকেরা বছরের পর বছর ধরে এ পাইপের সাহায্যে জমিতে পানি সেচ দিয়ে আসছেন। এখন পুকুর খননের ফলে সরকারি এই সম্পত্তি উপড়ে ফেলা হচ্ছে। ফলে এই এলাকার শত শত কৃষক সেচ নিয়ে বিপাকে পড়বেন। কিন্তু প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।

মাহাবুর অবৈধভাবে উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করে পুকুর খনন করছেন। সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ এ ব্যাপারে খোঁজ নেননি। 
পুকুর খননকারী মাহাবুর রহমান বলেন, ‘ওপরে কথা বলেই পুকুর খনন করছি। কারও কোনো অভিযোগ নাই।’ বরেন্দ্রর সেচ পাইপ উপড়ে ফেলা বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা সরকারি সম্পত্তি।

‘পুকুর খননের জন্য এটা মাটির নিচ থেকে তুলে রাখা হচ্ছে। আমার নিজখরচে সেগুলো অন্য কোনো জায়গায় বসিয়ে দিব।’
দুর্গাপুর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশল মো. আজমল হক বলেন, ‘কৃষিজমিতে পুকুর খনন অবৈধ। এ নিয়ে আমরা ওপরে অভিযোগ দিচ্ছি, আপনার (সাংবাদিকেরা) নিউজ করছেন।

এতে কোনো কাজ হচ্ছে কি? পুকুর তো আর খনন বন্ধ হচ্ছে না। ওই স্থানে লোক পাঠানো হয়েছে। ক্ষতি কতটা, তা জানার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, ‘ওই বিলে পুকুর খনন হচ্ছে কি না, আমার জানা নেই। এ বিষয়ে কেউ আমার কাছে অভিযোগ দেননি।’ 
রাজশাহী জেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক  মো. আব্দুর রশীদ বলেন, ‘বরেন্দ্রের ড্রেন সরকারি সম্পত্তি। কেউ এটা ক্ষতিগ্রস্ত বা উপড়ে ফেলতে পারে না। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত