Ajker Patrika

বট-পাকুড়ের বিয়েতে হাজারো অতিথি

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ০৯
বট-পাকুড়ের বিয়েতে হাজারো অতিথি

সানাইয়ের সুর আর ঢাকের শব্দে মুখরিত চারপাশ। মাঝে মাঝে উলুধ্বনি। একদল নারী নেচেই যাচ্ছেন। এর ফাঁকে ফাঁকে চলছে বিয়ের নানা আনুষ্ঠানিকতা। কোনো মানুষের নয়, বিয়ে হলো বট আর পাকুড়গাছের। গতকাল শনিবার রীতিমতো ‘মহা আয়োজনে’ এই বিয়ে হয়েছে রাজশাহীর নগরের খড়খড়ির শ্রীশ্রী গোপালদেব ঠাকুর মন্দিরে।

১১৩ বছরের পুরোনো এ মন্দির প্রাঙ্গণে ১৭ বছর আগে পাশাপাশি লাগানো হয়েছিল গাছ দুটি। হিন্দুশাস্ত্রমতে, পাশাপাশি বট-পাকুড়গাছ থাকলে তাদের বিয়ে দিতে হয়। এই রীতি মেনেই শনিবার ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া হলো গাছ দুটির। বটকে বর, পাকুড়কে কনে ধরে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের আগে বটের নাম রাখা হয় ‘বিজয়’। আর কনে পাকুড়ের নাম ‘বনলতা’।

বিয়ের জন্য মন্দিরে প্রবেশের পথেই বানানো হয় গেট। সাজিয়ে তোলা হয় বট-পাকুড়সহ গোটা মন্দির প্রাঙ্গণ। পাশেই প্যান্ডেল বানিয়ে চলে অতিথিদের খাওয়া-দাওয়া। নিমন্ত্রণ পেয়েছিলেন এক হাজারের বেশি মানুষ। তাঁদের জন্য রান্না করা হয় পোলাও, সবজিঘণ্ট আর পায়েস। পাতে দেওয়া হয়েছিল জলপাইয়ের আচার এবং কিছু পাঁপড়ও।

বর-কনের পাশে ছাদনাতলা সাজানোর পর দুপুর ১২টায় সেখানে নারায়ণ পূজার মধ্য দিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। দুপুরে দল বেঁধে নারীরা পুকুরে গিয়ে গঙ্গাপূজা সেরে আসেন। জল দিয়ে ভরে আনেন ঘটি। সবাই মিলে পালের বাড়ি থেকে আনেন হাঁড়ি। বিকেল ৪টা থেকে ছাদনাতলায় মঙ্গলঘট বসিয়ে শুরু হয় বিয়ের নিবেদন। কিছুক্ষণ পরই একদল নারী আসেন বরযাত্রী হয়ে। গেটে বাতাসা খাইয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয় তাঁদের। বাদ্য-বাজনা আরও বেড়ে যায়। এবার নেচে ওঠেন সব বয়সী মানুষই। বর-কনের চারপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকেন অতিথিরা। পুরোহিত পুলক আচার্য শুরু করেন বিয়ের মূল আনুষ্ঠানিকতা। ঠিক গোধূলিলগ্নে মন্ত্র পড়ে বিয়ে সম্পন্ন করেন পুরোহিত।

এই বিয়েতে বটের বাবা-মা হয়েছিলেন বিধান চন্দ্র সরকার ও আরতি রানী সরকার দম্পতি। বিশ্বজিৎ সরকার ও কণিকা রানী সরকার দম্পতি হন পাকুড়ের বাবা-মা।

কনের মা কণিকা বলেন, ‘বাস্তবে আমি দুই ছেলের মা। ১০ দিন আগে পাকুড়ের মা হই। মেয়ের বিয়েও দিলাম। এ অনুভূতি অন্য রকম। মেয়ের বিয়ে দিলে যেমন আনন্দ লাগে, আজ আমার তেমনই লাগছে।’

মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব সরকার বলেন, ‘হিন্দুশাস্ত্রে আছে, বট-পাকুড় একসঙ্গে থাকলে তাদের বিয়ে দিতে হয়। সে জন্যই এ আয়োজন। হিন্দুশাস্ত্রমতেই বিয়ে সম্পন্ন হলো। বট-পাকুড় এখন যুগ যুগ ধরে এভাবে পাশাপাশি থাকবে– এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনাল চালুতে বাধা, রাজস্ব ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েন

বৈপ্লবিক পরিবর্তন করার সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেছে

ব্যাংকের চাকরি যায় জাল সনদে, একই নথি দিয়ে বাগালেন স্কুল সভাপতির পদ

ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে এবি ব্যাংক

রাশিয়া খুবই বড় শক্তি, চুক্তি ছাড়া ইউক্রেনের কোনো গতি নেই: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত