Ajker Patrika

নদীগর্ভে বিলীন ২০ বাড়িঘর

গঙ্গাচড়া প্রতিনিধি
আপডেট : ২০ জুন ২০২২, ১৫: ০৪
Thumbnail image

তিস্তা নদীতে আবারও পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তা গতকাল রোববার বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গঙ্গাচড়া উপজেলায় তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে আছে। নদীর ভাঙনে ২০টি বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন হুমকিতে থাকা একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

বর্তমানে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। আমন বীজতলা, বিভিন্ন সবজি ও ফসলের খেত এবং পুকুর তলিয়ে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে ডালিয়া পয়েন্টে গতকাল সকাল ৬টায় তিস্তার পানির উচ্চতা ছিল ৫২ দশমিক ৭৪ মিটার।

বন্যার ফলে উপজেলার নোহালী ইউনিয়নের চর নোহালী ও বাগডহরা গ্রামের ১৫০, আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান হাজাপাড়া ও ব্যাঙপাড়া এলাকায় প্রায় ৫০ এবং কোলকোন্দ ইউনিয়নের মটুকপুর, উত্তর চিলাখাল, মধ্য চিলাখাল, বিনবিনা, খলাইর চর, শখের বাজার, আবুলিয়া, সাউদপাড়া ও আলেকিশামত গ্রামে প্রায় ৩৫০টি পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

একই অবস্থায় আছে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের বাগেরহাট আশ্রয়ণ প্রকল্প, চব্বিশসাল, পূর্ব ইচলি, পশ্চিম ইচলি ও জয়রামওঝা গ্রামের ২৫০, গজঘণ্টা ইউনিয়নের চর ছালাপাক, মহিষাশুর, কালির চর ও রমাকান্ত গ্রামের প্রায় ১৫০ এবং মর্নেয়া ইউনিয়নের আলালের চর, নীলারপাড়, তালপট্টির চর, হাজীরপাড়া নরসিংহ, চর মর্নেয়ার শতাধিক পরিবার।

ভুক্তভোগী অলিকান্ত বলেন, ‘সরকার হামাক খালি ত্রাণ দেয়, হামরা তো ত্রাণ চাই না। এলাকাত একটা স্থায়ী বাঁধ চাই। যাতে আর বন্যা ও ভাঙন হামাকগুলাক নিঃস্ব না করে। তোমরা ত্রাণের কতা না নেকি বাঁধ চাই কতা নেকেন।’

চর বিনবিনা গ্রামের মশিউর রহমান জানান, তাঁদের যদি সরকার মহিপুর থেকে বিনবিনা বাজার পর্যন্ত একটা স্থায়ী বাঁধ বানিয়ে দেয় তাহলে আর নদী ভাঙন ও বন্যায় কষ্ট করতে হবে না।

লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লা আল হাদী জানান, ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার প্রবল ভাঙনে শংকরদহ গ্রামে ২০টি পরিবারের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে লক্ষ্মীটারী শংকরদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙন হুমকিতে রয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বলেন, রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, বন্যার ফলে কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে আসতে পারেনি। বিদ্যালয়টি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলামকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর একটি আবেদন করার জন্য। সেই সঙ্গে বিদ্যালয়ে পাঠদান সাময়িকভাবে বন্ধ রাখারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

ইউএনও এরশাদ উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বন্যার্ত পরিবারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়েছি এবং সার্বক্ষণিক তাঁদের খোঁজখবর নিচ্ছি। সরকারিভাবে তাঁদের শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। আজও (রোববার) লক্ষ্মীটারী ও কোলকোন্দ ইউনিয়নে বন্যার্তদের মধ্যে নৌকাযোগে শুকনো খাবার ও শিশু খাদ্য সরবরাহ করা হয়েছে।’

ইউএনও চরাঞ্চলে বাঁধ নির্মাণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, ‘চরাঞ্চলের মানুষের স্থায়ীভাবে বন্যা ও নদীভাঙন লাঘবে বাঁধ নির্মাণের কথা ভাবছি। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। আগামী শুকনো মৌসুমে এ বাঁধ নির্মাণ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত