Ajker Patrika

দুই বছর ‘শীতনিদ্রায়’ হকি লিগ

নাজিম আল শমষের, ঢাকা
দুই বছর ‘শীতনিদ্রায়’ হকি লিগ

দিনের হিসাবে ৭৪০ দিন। এক খেলোয়াড়ের দাবি, তিন বছর প্রিমিয়ার হকি লিগ মাঠে নেই। এ শীতের মৌসুমে হকির সঙ্গে ‘শীতনিদ্রা’ শব্দটাই যেন বেশি উপযুক্ত! 

২০২১ সালের ২৭ নভেম্বর মেরিনার্স ইয়াংসের শ্রেষ্ঠত্বে শেষ হয়েছিল প্রিমিয়ার হকি লিগের ১৩তম আসর। ১৪তম পর্ব গত দুই বছরে আর শুরুই হলো না। গত বছর লিগ না হলেও মাঠে ছিল ফ্র্যাঞ্চাইজি হকি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। আশার আলো জাগিয়ে সেই ফ্র্যাঞ্চাইজি হকি টুর্নামেন্টেরও হদিস নেই। হকি লিগ আর ফ্র্যাঞ্চাইজি হকি টুর্নামেন্ট সমান্তরালে এগোবে, এমন আশায় ছিলেন যাঁরা, সেই খেলোয়াড়েরা ২০২৩ সালে কোনো টুর্নামেন্টেই খেলতে পারলেন না। 

কেন এই বছর কোনো ঘরোয়া টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে পারল না হকি ফেডারেশন—এ নিয়ে বিভিন্ন যুক্তি আর দাবি সামনে আনছেন ফেডারেশন আর ক্লাবের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এসবের মধ্যে সবার সামনে আসে গত ফেব্রুয়ারিতে এ কে এম মমিনুল হক সাঈদের সাধারণ সম্পাদকের পদ ফিরে পাওয়ার বিষয়টি। দীর্ঘ সময় দেশের বাইরে থাকা আলোচিত-সমালোচিত সাঈদ পদ ফিরে পেয়েই শুরু করেন ফেডারেশনে নির্বাচনী প্রক্রিয়া। জুনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাঈদ পরিষদই নির্বাচিত হয়েছে। নির্বাচনের মাঝে অনূর্ধ্ব-২১ এশিয়া কাপে অংশ নেয় বাংলাদেশের যুবারা। এশিয়া কাপের পর শুরু হয় এশিয়ান গেমসের জন্য জাতীয় দলের ক্যাম্প। 

৮ অক্টোবর এশিয়ান গেমস শেষ হওয়ার পরও এই বছর লিগ আয়োজনের জন্য তিন মাস সময় পেয়েছে ফেডারেশন। এই সময়ে কেন লিগ মাঠে গড়াল না? এ প্রশ্নে দোষ ক্লাবগুলোর ঘাড়ে চাপালেন লিগ কমিটির সাধারণ সম্পাদক খাজা তাহের লতিফ মুন্না  বললেন, ‘নভেম্বরে আমাদের সব হওয়ার কথা ছিল। বাইলজ থেকে শুরু করে সভাও হওয়ার কথা ছিল। সাঈদ ভাই সবাইকে রাজি করিয়েছিলেন। কিন্তু সভা পড়ে গেল অবরোধের সময়। ক্লাবের পক্ষ থেকে বলা হলো, নির্বাচনের সময় খেলোয়াড় পাওয়া কঠিন হবে। নির্বাচনের পরেই লিগ শুরু হোক।’ 

মোহামেডান হকি দলের ম্যানেজার আরিফুল হক প্রিন্স কাউকেই দোষারোপ করতে চান না। লিগ না হওয়ার পেছনে জাতীয় দলের সাবেক এ তারকার যুক্তি, ‘ফেডারেশনে সম্পাদক ছিল না। আবার দুটি দল দেশের বাইরে ছিল। কোনো কিছুই সময়ের মধ্যে হয়নি। এখানে আসলে কারও দোষ নেই।’ 

ফেডারেশন কিংবা ক্লাব দায় নিতে না চাইলেও এক খেলোয়াড়ের দাবি, দোষ দুই পক্ষেরই। তাদের দোষারোপের এ খেলায় ক্ষতিগ্রস্ত মাঠের খেলোয়াড়েরা। বেশির ভাগ খেলোয়াড় আন্তবাহিনী দলগুলোর সঙ্গে চুক্তিতে থাকায় পারিশ্রমিক আর অনুশীলনের সুযোগ অবশ্য পাচ্ছেন, বিপাকে পড়েছেন চুক্তির বাইরে থাকা খেলোয়াড়েরা। লিগ নিয়ে জোরালো দাবি তোলারও শক্তি ও সাহস কোনোটিই নেই তাঁদের।

২০২১ সালে অনুষ্ঠিত লিগের আগে প্রায় চার বছর মাঠের বাইরে ছিলেন পেশাদার হকি খেলোয়াড়েরা। খেলা না থাকায় এখন রাঙামাটি ঘুরছেন সবশেষ লিগে আবাহনীর হয়ে খেলা ফরোয়ার্ড পুস্কর খিসা মিমো। তিনি বললেন, ‘যারা চাকরি করে তারা নির্দিষ্ট পারিশ্রমিক পায়। আমরা যারা চুক্তির বাইরে আছি, তারা কোনোরকমে টিকে থাকছি। ক্লাবগুলো নির্বাচনের দোহাই দিচ্ছে কিন্তু তারা তো আর রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত না। এই সময় ফুটবল চলছে, ক্রিকেট চলছে শুধু হকিরই কিছু নেই।’ 

আন্তঃবাহিনী দলে যাঁরা আছেন, তাঁরাও যে খুব স্বস্তিতে আছেন তেমনটাও নয়। জাতীয় দলের অধিনায়ক ও নৌবাহিনীর হয়ে খেলা খোরশেদুর রহমান বললেন, ‘প্রতিবছর লিগ না হলে খেলোয়াড় উঠে আসবে না। উঠতি খেলোয়াড় কেন হকি খেলতে চাইবে? এখানে টাকা তো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। লিগ না হলে সেই টাকাটা আসবে কোথা থেকে?’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চকরিয়া থানার ওসিকে প্রত্যাহারের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

হোয়াইট হাউসে মধ্যাহ্নভোজের আগেই বের হয়ে যেতে বলা হয় জেলেনস্কিকে

‘আমাদের অনুমতি ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করলে থানা ঘেরাও করব’, সরকারি কর্মকর্তার বক্তব্য ভাইরাল

সিরিয়ায় রাশিয়ার ঘাঁটি রাখতে যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের তদবির

এনসিপির কর্মীদের ঢাকায় আনতে সরকারের বাস রিকুইজিশন, সমালোচনার ঝড়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত