Ajker Patrika

হার না মানা শওকত

কালিয়াকৈর প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৪: ২০
হার না মানা শওকত

কালিয়াকৈর উপজেলার ভানেরটেকি গ্রামের মো. শাহজাহান মিয়ার ছেলে মো. শওকত হোসেন (৪২)। একসময় পেশায় ছিলেন গাড়িচালক। এক দুর্ঘটনায় দুই পা হারান। তার পর থেকে শুরু হয় সংগ্রামের জীবন। পঙ্গুত্ব নিয়েও থেমে নেই শওকত। অন্যের ওপর ভরসা না করে চা বিক্রি করে সংসার চালান।

কালিয়াকৈর বাসস্ট্যান্ডে সুস্বাদু চা বিক্রেতা হিসেবে পরিচিত শওকত। তাঁর রয়েছে ব্যাপক সুনাম। তাঁর চা খেতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসেন। সবার কাছে খুবই আদরের তিনি।

জানা যায়, দুই পা হারানো শওকত হোসেনের কোনো জমিজমা নেই। বর্তমানে তিনি ভাড়া থাকেন। এক মেয়ে, এক ছেলে, স্ত্রীসহ চারজনের সংসার। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী তিনি। একসময় অন্য সবার মতো সেও হাঁটাচলা করতেন। পেশায় চালক ছিলেন। গাড়ি চালিয়ে সচ্ছল জীবন যাপন করতেন। কিন্তু ২০০১ সালে বৈদ্যুতিক শকে তিনি গুরুতর আহত হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর দুই পা কেটে ফেলতে হয়। এর পর থেকে জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। কী করবে ভেবে না পেয়ে সবার পরামর্শে কালিয়াকৈর বাসস্ট্যান্ডে ২০০২ সালে চায়ের দোকান দেন। এ দোকানের আয় দিয়ে কোনো রকম চলছে তাঁর। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালাতে খুবই কষ্ট হয়। তিনি আরেকটু ভালো থাকার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন।

বর্তমানে শওকত চা বিক্রেতা হিসেবে নিজেকে একজন কর্মমুখী মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। প্রতিনিয়ত জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করেই চলছেন। তিনি বলেন, ‘আমার সংসার চালাতে খুবই কষ্ট হয়। চা বিক্রি করে যা আয় হয় তাতে কোনো রকম সংসার চলে। সরকার এবং সমাজের বিত্তবানেরা আমার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলে তাঁদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকতাম।’

গাজীপুর পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান বলেন, ‘শওকত পঙ্গু হয়েও নিজের কর্মদক্ষতায় পুরো সংসারের খরচ বহন করতে উদ্যোগী হয়েছেন—এটা সমাজের জন্য গৌরবের। শওকতকে দেখে আরও অনেক মানুষ স্বাবলম্বী হতে উৎসাহ পাবেন। শওকত যখন দুর্ঘটনার শিকার হন, তখন আমি তাকে ব্যক্তি উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা করি এবং পরে তাঁর দোকান করার জন্য ব্যক্তিগতভাবে আর্থিক সহযোগিতা করি। আমার অনুরোধ সমাজের বিত্তবানেরা যদি শওকতের মতো শারীরিক প্রতিবন্ধীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন তাহলে তাদের জীবনসংগ্রাম অনেক সহজ হবে।’

কালিয়াকৈর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘শওকত হোসেনের মতো শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় সমাজসেবা কার্যালয় দায়বদ্ধ। উনি সহযোগিতার আবেদন করলে আমরা অবশ্যই তাঁর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব।’

কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বলেন, ‘শওকত হোসেন সহযোগিতার আবেদন করলে আমাদের উপজেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে অবশ্যই সহযোগিতা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

মির্জা ফখরুলের কাছে অভিযোগ, ১৬ দিনের মাথায় ঠাকুরগাঁও থানার ওসি বদলি

এক ফ্যাসিস্ট নেত্রীর পাল্লায় পড়ে পুলিশ খারাপ হয়েছিল: এসপি

বিএনপি নেতা নাছিরের দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ দুই সৎভাইয়ের বিরুদ্ধে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত