Ajker Patrika

কানাডাগামী ৪২ যাত্রীকে আটকে দিল বিমান

কানাডাগামী ৪২ যাত্রীকে আটকে দিল বিমান

ভ্রমণ-সংক্রান্ত নথিতে অসঙ্গতি থাকায় কানাডাগামী ৪২ যাত্রীর একটি গ্রুপকে উড়োজাহাজে উঠতে দেয়নি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ। ১০ নভেম্বর রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ ঘটনা ঘটে।

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, এই যাত্রীরা একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে ১০ নভেম্বর সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কানাডা যাওয়ার উদ্দেশে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করেন। সিলেট থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের কানেকটিং ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে ট্রানজিট পয়েন্টে টরন্টোগামী ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষা করছিলেন যাত্রীরা।

তাঁদের দেখে বিমানের পাসপোর্ট চেকিং ইউনিটের সদস্যদের সন্দেহ হয়। বিমানের কর্মকর্তারা তাঁদের আমন্ত্রণপত্র ও হোটেল বুকিং অনুসন্ধান করে দেখতে পান, ওই যাত্রীদের সবাই একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে কানাডা যাচ্ছেন। আর হোটেল বুকিংয়ের পরিবর্তে তাঁরা কিছু বাড়িভাড়ার কাগজপত্র দেখান। বিমান কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজন জানান, তাঁরা যেহেতু একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন, তাই একত্রে থাকার জন্য তাঁরা বাসাভাড়া নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় বিমানের কর্মকর্তারা তাঁদের ভিসা যাচাইয়ের জন্য সিঙ্গাপুর ও দিল্লিতে কানাডার ভিসা অফিসে ই-মেইল পাঠান। পাশাপাশি যাত্রীদের জানানো হয়, কানাডা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করার পর তাঁদের ফ্লাইটে ওঠানো হবে। যদিও শেষ পর্যন্ত ওই ৪২ যাত্রীকে অফলোড (উড়তে না দিয়ে ফেরত পাঠানো) করে বিমান কর্তৃপক্ষ।

এ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাগজপত্রে অসঙ্গতি মনে হওয়ায় বিমানের পক্ষ থেকে কানাডা কর্তৃপক্ষের কাছে ই-মেইল করা হয়। পরবর্তী সময়ে কানাডার দিল্লি ভিসা কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে, ওই যাত্রীরা প্রতারণা করে ভিসা করেছেন। এটি জানার পর যাত্রীদের জানানো হয় কাগজপত্রে অসঙ্গতি আছে, সে কারণে আপনাদের আমরা নিতে পারছি না।’ তিনি বলেন, ‘এটি যদি আমরা বুঝতে না পারতাম তাহলে বড় ধরনের জরিমানার মুখে পড়তে হতো। একই সঙ্গে দেশের সুনামও ক্ষুণ্ন হতো।’

প্রসঙ্গত, টরন্টো পৌঁছানোর পর যদি এই যাত্রীরা ইমিগ্রেশনে আটকে যেতেন, তাহলে প্রতি যাত্রীর জন্য বিমানকে ১৮০০ ডলার জরিমানা পরিশোধ করতে হতো। পাশাপাশি ভবিষ্যতে ফ্লাইট বাড়ানোর বিষয়টিও হুমকিতে পড়ত।

জানা গেছে, অফলোড করা ৪২ যাত্রী যে বিয়ের আমন্ত্রণ দেখিয়ে ভিসা নিয়েছিলেন, সেই একই বিয়ের আমন্ত্রণে অক্টোবরের মাঝামাঝি ২৫ এবং শেষ সপ্তাহে ৮ জন কানাডায় গিয়েছিলেন। সর্বশেষ ১০ নভেম্বর ওই ৪২ জন কানাডা যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন। সহজে ইমিগ্রেশন পার হতে তাঁরা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সিলেট-ঢাকা-টরন্টো ফ্লাইটের টিকিট কাটেন। যথারীতি তাঁরা সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করে কানেকটিং ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের ওসি সহকারী পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওই যাত্রীরা সিলেট থেকে ইমিগ্রেশন শেষ করে ঢাকায় এসেছিলেন। এখান থেকে কানাডায় যাওয়ার কথা ছিল। সঠিক ভিসা নিশ্চিত হওয়ার পরই ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁদের বাকি কাজ সম্পন্ন করে বিমানে পাঠায়। বিমান তাঁদের ফেরত পাঠায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত