Ajker Patrika

বাড়তি বিলের বিড়ম্বনা

সম্পাদকীয়
বাড়তি বিলের বিড়ম্বনা

একসময় বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিল নিয়ে সারা দেশের গ্রাহকদের অভিযোগ ছিল। সর্বশেষ করোনার সময়ও এ অবস্থা তৈরি হয়েছিল। সে সময় গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে চারটি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির প্রায় ৩০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছিল বিদ্যুৎ বিভাগ গঠিত টাস্কফোর্স। এতেও যে অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি, তারই প্রমাণ মেলে রোববার আজকের পত্রিকায় প্রি-পেইড মিটারের বাড়তি বিল নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ থেকে।

সরকার ডিজিটাল থেকে এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছে। এর অংশ হিসেবে বিদ্যুতের মিটারের পরিবর্তে পোস্ট ও প্রি-পেইড মিটার বসানো হচ্ছে। বর্তমানে সারা দেশে ছয়টি কোম্পানির আওতায় ৪ কোটি ৭১ লাখ গ্রাহক রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫২ লাখ গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু গ্রাহকেরা বাড়তি বিলের বিড়ম্বনা থেকে রেহাই পাচ্ছে না। আগে বিদ্যুৎ বিভাগের অসাধু কর্মকর্তারা কাগজের বিল দিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করত আর এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে নগদে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে, মানে রিচার্জ করার সময়ই বাড়তি টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। তাহলে ডিজিটাল করার কী দরকার ছিল? গ্রাহকদের ভোগান্তি থেকে রেহাই দিতে প্রি-পেইড মিটার বসানো হচ্ছে, কিন্তু এটাও গ্রাহকদের মুক্তি দিচ্ছে না। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও কথা হচ্ছে, কিন্তু নিস্তার মিলছে না।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) নির্দেশনা অনুযায়ী, গ্রাহককে ৩০ টাকা ডিমান্ড চার্জ, মোট বিলের ৫ শতাংশ বিলম্ব বিলের জরিমানা এবং ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। কিন্তু ৬টি কোম্পানি এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে ইচ্ছামতো টাকা কেটে নিচ্ছে। জরুরি ব্যালেন্স হিসেবে ২০০ টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও, পরবর্তী সময়ে রিচার্জের সময় এই টাকার সুদ হিসাবে ৫০ টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। আবার মিটারের লক খুলতেও অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এমনিতেই দেশে মূল্যস্ফীতির কারণে মধ্যবিত্তসহ সাধারণ মানুষের অবস্থা কাহিল। এ অবস্থায় বিদ্যুতের বাড়তি বিলের বোঝা তাদের জীবনকে আরও অসহনীয় করে তুলেছে। আবার বছর বছর বিদ্যুতের মূল্যও বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সরকারের সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে গিয়ে ঘাটতি মেটাতে গ্রাহকদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা তুলে নিচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।

বিদ্যুতের বাড়তি বিলের চাপ নিয়ে হয়রানি এবং প্রতিকার না পাওয়ার হতাশা থেকে অনেক গ্রাহকই অভিযোগ করে না। এই সুযোগে বাড়তি বিল নিয়ে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে গ্রাহকদের কাছ থেকে। এটা যে কাঠামোগত দুর্নীতি, তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। মূলত বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে গ্রাহকদের বাড়তি টাকা কেটে নিচ্ছে, সে অভিযোগ মিথ্যা নয়। এই কোম্পানিগুলোর তদারকি করার দায়িত্ব হলো বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু তাদের কোনো ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ চোখে পড়ছে না। জনস্বার্থে কাঠামোগত এই দুর্নীতির পথ বন্ধ করার বিষয়ে সরকার কি ‘স্পিকটি নট’ থাকবে?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নয়াদিল্লিতে নতুন হাইকমিশনার রিয়াজ হামিদুল্লাহ, ৩ মাস সময় নিল ভারত

খেজুরে অতি মুনাফা, হতাশ ক্রেতা

চাপে পড়ে ৫টি বাস রিকুইজিশন দিয়েছেন পিরোজপুরের ডিসি, সরকারের হস্তক্ষেপ নেই: প্রেস সচিব

কলাবাগানে সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলের মরদেহ উদ্ধার

রাতে স্বামীর জন্মদিন উদ্‌যাপন, সকালে নদীতে মিলল নববধূর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত