Ajker Patrika

বারহাট্টায় দুর্ভোগে ১০ গ্রামের ৩৫ হাজার মানুষ

কৌশিক হাসান মামুন, বারহাট্টা (নেত্রকোনা)
আপডেট : ০৮ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ৩৭
বারহাট্টায় দুর্ভোগে ১০ গ্রামের ৩৫ হাজার মানুষ

নেত্রকোনার বারহাট্টায় একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগে ১০ গ্রামের ৩৫ হাজার মানুষ। সেতু না থাকায় কংশ নদের ওপর সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন সেখানকার হাজারো মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। চলাচলে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষেরা।

উপজেলা প্রশাসন বলছে, সেতুটি না থাকায় স্বাভাবিকভাবেই লোকজন যাতায়াতে কষ্ট করছেন। আমি বিষয়টি দ্রুত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।

জানা গেছে, উপজেলার আসমা ইউনিয়নের গুমুরিয়া, কান্দাপাড়া, লাউফা, প্রেমনগর, নোঁয়াপাড়া, শ্রীরামপুরসহ ১০টি গ্রামের মানুষ উপজেলা সদরে যাওয়ার জন্য শুকনো মৌসুমে কংশ নদের ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করেন। আর বর্ষাকালে নদে অনেক স্রোত থাকায় সাঁকো দিয়ে চলাচল করা সম্ভব হয় না। তাই এলাকাবাসী তখন চাঁদা তুলে একটি নৌকা ও মাঝি ঠিক করে কংশ নদ পার হন। স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছরেও এখানে নির্মিত হয়নি সেতু। এত বছর ধরে মানুষ শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো ও বর্ষাকালে নৌকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। বাঁশের সাঁকো দুর্বল হয়ে গেলে গ্রামের মানুষজন নিজ উদ্যোগে এটি সংস্কার করেন।

আসমা ইউনিয়নের মানুষ কংশ নদের এই সাঁকো দিয়ে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলাচল করেন। শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যেতে প্রতিদিন এই সাঁকো পার হতে হয়। তাই অনেক সময় সাঁকো পার হতে গিয়ে অনেকেই পানিতে পড়ে ভিজে ওই দিন স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

তা ছাড়া গ্রামের কৃষিপণ্য বারহাট্টা উপজেলা সদরে আনতে বিকল্প পথ ব্যবহার করতে হচ্ছে। যে কারণে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। না হলে বাধ্য হয়ে বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়েই বিভিন্ন পণ্য পারাপার করতে হচ্ছে।

গুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শাহজাহান জানান, এই সাঁকোর ওপর দিয়ে একা একা পার হতেই অনেক কষ্ট। ফসলি বোঝা নিয়ে পারাপার হওয়া তো প্রায় অসম্ভব। তাই আমরা বিভিন্ন পণ্য বিক্রির জন্য অনেকটা রাস্তা ঘুরে যাই। যে কারণে পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যায়। তাই আমরা দ্রুত বারহাট্টা গরুহাট্টা সংলগ্ন গুদারাঘাটে বাঁশের সাঁকোর স্থানে একটি সেতুই চাই।

মাদ্রাসা শিক্ষক ও উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী মহসিন খান বলেন, আমরা প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ একটি সেতুর জন্য কষ্ট করছি। আমাদের কষ্ট দেখার কেউ নেই।

গুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দারা গুদারাঘাটে সেতুর দাবিতে গণস্বাক্ষর দিয়ে একটি আবেদন অনেক আগেই বিভিন্ন জায়গায় জমা দিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। নির্বাচনের সময় আসলে বিভিন্ন প্রার্থী এসে প্রতিশ্রুতি দেন সেতু নির্মাণের। কিন্তু নির্বাচনের পর আর তাঁদের খোঁজ থাকে না। সেতু নির্মাণ তো দূরের কথা সাঁকো সংস্কার বা নির্মাণের জন্য কিছু অর্থ চাইলেও তাঁদের থেকে পাওয়া যায় না। তাই আমাদের এলাকাবাসীর দাবি জনস্বার্থে বারহাট্টা গুরহাট্টা সংলগ্ন গুদারাঘাটে একটি সেতু নির্মাণ হোক।

আসমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম চন্দু জানান, চেয়ারম্যান হিসাবে আমি নতুন দায়িত্ব নিয়েছি। তবে একটা বিশাল জনগোষ্ঠীর কষ্ট কমানোর জন্য ওপর মহলে এ বিষয়ে দ্রুত কথা বলব। গরুহাট্টা গুদারাঘাটে একটি সেতু যাতে হয় সে বিষয়ে আমার সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।

বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস. এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, বারহাট্টা উপজেলা সদরের গরুহাট্টা সংলগ্ন গুদারাঘাটের এক পাশে বারহাট্টা সদর ইউনিয়ন ও অপর পাশে আসমা ইউনিয়ন। যেহেতু এখনো সেতু হয়নি তাই স্বাভাবিক ভাবেই লোকজন যাতায়াতে কষ্ট করছেন। আমি বিষয়টি দ্রুত আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবগত করব।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত