Ajker Patrika

কবি পরিচয় দিতে লজ্জা!

সম্পাদকীয়
আপডেট : ১০ আগস্ট ২০২৩, ০৯: ০৪
Thumbnail image

বলা হয়ে থাকে বক্তৃতার প্রথম বাক্যটি বলা সবচেয়ে কঠিন। সে ক্ষেত্রে এটাই বলার যে প্রথম বাক্যটি ইতিমধ্যেই আমি পেছনে ফেলে এলাম। কিন্তু আমার ধারণা, এর পরে যেসব বাক্য আমায় বলতে হবে, তৃতীয়, ষষ্ঠ, দশম এবং তারপর আরও একদম শেষ লাইন পর্যন্ত—সেগুলো তৈরি করাও খুব সহজ কাজ নয়। কারণ, আমি কবিতা নিয়ে কথা বলব। এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত প্রায় কোনো কথাই বলিনি আমি। যেটুকু যা বলেছি, সব সময়ই আশঙ্কা হয়েছে যে কিছুই যেন ভালো করে বলা হচ্ছে না। সে কারণেই আজ আমার বক্তৃতাকে দীর্ঘায়িত করব না, সংক্ষেপে সারব। কারণ, কম ডোজ সেবন করলে যদি ভ্রান্তি ও বিচ্যুতি সহনীয় হয়!

সমসাময়িক কবিরা সব সময়ই একটা আশঙ্কা এবং সন্দেহে ভোগেন, এমনকি বিশেষ করে নিজেদের নিয়েও। প্রকাশ্যে নিজেদের কবি পরিচয় দেন খুবই আলগোছে, যেন তাঁরা এই পরিচয়ে কিছুটা লজ্জিতই। আজকের এই ঢঙ্কানিনাদের সময়ে নিজের অন্তর্নিহিত গুণকে স্বীকৃতি দেওয়ার থেকে নিজের ভুলগুলো খুব রংচঙে মোড়কে সামনে নিয়ে আসা বরং তুলনায় অনেক সহজ। কারণ প্রতিভা লুকিয়ে থাকে এতটাই গভীরে যে আপনি নিজেই তার ওপর আস্থা রাখতে পারেন না সব সময়। যখন কোনো অপরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ হচ্ছে, কথায় কথায় তাঁরা নিজেদের পেশার কথা উল্লেখ করে ফেলছেন। কবিরা সাধারণত নিজেদের লেখক বলেই চেপে যান। অথবা লেখালেখির পাশাপাশি তাঁরা যে পেশায় যুক্ত তার উল্লেখ করেন। আমলা এমনকি বাসযাত্রীরাও সচকিত হয়ে ওঠেন এবং খানিকটা সতর্কও হয়ে যান কবি-সঙ্গে! আমার ধারণা, দার্শনিকদেরও এমন প্রতিক্রিয়ার সামনে পড়তে হয়। তবুও বলব, তাঁরা কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন। তাঁরা নিজেদের জাহির করতে পারেন শিক্ষাজগতের ডাকসাইটে কিছু পদ বা প্রাপ্ত উপাধি দিয়ে। দর্শনের অধ্যাপক—শুনতেও তো যথেষ্ট সম্মানজনক, তাই না! কিন্তু কবিতার কোনো অধ্যাপক নেই।  

উইস্লাওয়া সিমবোরস্কা ১৯৯৬ সালে সাহিত্যে নোবেল  পুরস্কার লাভ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত