স্বপ্না রেজা

আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস শিশু ও তরুণ সমাজের একটা অংশ যেমন পূর্ণাঙ্গভাবে জানে না, জানতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ঠিক তেমনি জানতে পারে না বাংলা ও বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের আদি উপান্ত।
দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা যেনতেনভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনেকের মতে, শিক্ষা কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনা মোটেও সুরক্ষিত নয়। দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতির অস্তিত্ব রক্ষায় এবং সুস্থ জাতি গঠনে বর্তমান প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রচণ্ড উদাসীনতা আর অবহেলায় রয়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। নেই শিক্ষার প্রতি দায়িত্বশীলদের কড়া নজর। তাই দেশের আর সবকিছু সুরক্ষিত হলেও শিক্ষা কার্যক্রম সুরক্ষিত হতে পারছে না কোনোভাবেই। একটার পর একটা অঘটন ঘটে যাচ্ছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগও যেন কোথাও নেই। নীতিনির্ধারকদের টনক নড়ছে না। কখনো নড়েছে বলেও মনে হয় না। তাঁরা দুঃখ প্রকাশ করেই দায়মুক্ত হচ্ছেন বলে অনেকে মনে করছেন। সম্প্রতি এর আরও একটি নমুনা দেখা গেল চলমান উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বাংলা প্রশ্নপত্রের একটি প্রশ্নে। বিধি লঙ্ঘন করে যেখানে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়া হয়েছে, যেখানে রাষ্ট্র সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে, ঠিক এমন একটি অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রমের প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানির মানে কী দাঁড়ায় এবং সংশ্লিষ্টরা তা বোঝেন কি না, সে বিষয়ে ভয়াবহ সংশয় দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ মনে করছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরে সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রবেশ ঘটেছে, সেটা নিশ্চিত। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের একটি অনুষ্ঠান শেষে সংবাদকর্মীরা এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন।
বলতে দ্বিধা নেই, তাঁর এই ‘দুঃখজনক’ কথায় অবাক হইনি, বরং হতাশ হয়েছি। কেন তিনি এমন একটি বিষয়কে ‘দুঃখজনক’ বলবেন? বরং তিনি যদি বলতেন, এটা তাঁর মন্ত্রণালয়ের এক বড় লজ্জাজনক ঘটনা, তাহলে তাতে আশ্বস্ত হতাম এই ভেবে যে বোধোদয়ের পথে তিনি সবাইকে নিয়ে পা বাড়িয়েছেন এবং সত্য অনুধাবন করছেন। দীপু মনি যখন শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন, তখন অনেক খুশি হয়েছিলাম। প্রায় বিপর্যস্ত শিক্ষাব্যবস্থাকে তিনি আদর্শের জায়গায় নিয়ে যাবেন, সংবিধানসম্মতভাবে চলমান রাখবেন—এমনটাই প্রত্যাশা ছিল। পাঠ্যপুস্তক একসময় হেফাজতিকরণ করা হলো বলে যখন অভিযোগ উঠল, তখন তেমনভাবে সোচ্চার হতে দেখা গেল না কাউকে। নীরবতা ছিল চারপাশে। এই নীরবতার নেপথ্যে অনেকেই রাজনৈতিক স্বার্থের গন্ধ খুঁজে পেলেন। সেটা কিন্তু অশনিসংকেত ছিল, বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, কৃষ্টির বিরুদ্ধে এবং সর্বোপরি যা ছিল সংবিধানের পরিপন্থী। তার পরের ঘটনা কমবেশি সবাই জানেন। সবকিছুর পর ভরসা রেখেছিলাম, অন্তত দীপু মনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের চেতনাকে শিক্ষার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি করবেন। আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস শিশু ও তরুণ সমাজের একটা অংশ যেমন পূর্ণাঙ্গভাবে জানে না, জানতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ঠিক তেমনি জানতে পারে না বাংলা ও বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের আদি উপান্ত।
সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নেপথ্যে যা ছিল অন্যতম একটি কারণ। অথচ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যার পর সাম্প্রদায়িক মনোভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করে এবং সেটা পাকিস্তান শাসনামলের আদলে। সংখ্যালঘুদের ওপর আঘাত, নিপীড়ন, মৌলবাদ, ফতোয়াবাজসহ নানান ধরনের ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানবিরোধী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সেটা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে। কৃষ্টি ও সংস্কৃতিতে লাগে পরিবর্তনের হাওয়া। পোশাক-আশাক, চিন্তা-চেতনায় পড়ে মরচে। এসবের বড় দৃষ্টান্ত হলো নিরাপত্তার দোহাইতে পয়লা বৈশাখ, বিজয় উৎসব উদ্যাপনে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া ও বিধিনিষেধ আরোপ করা। বাংলা ও বাঙালির বড় উৎসব পয়লা বৈশাখ, যা সব ধর্মের নাগরিকগণ উদ্যাপন করে থাকে সম্মিলিতভাবে। এই উৎসবকে টার্গেট করে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা। আর এদের হাত থেকে রক্ষার অজুহাতে দায়িত্বশীলরা উৎসবকে সংকুচিত করে ধারা জারি করে বসে। যেমন—উৎসবের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া, কী করা যাবে আর কী করা যাবে না, তা প্রচার করা। সাম্প্রদায়িক শক্তি এভাবেই ক্রমশ বিস্তার লাভ করে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাঠ্যপুস্তক সব ছাপিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তির উপস্থিতি এখন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে। সচেতন নাগরিক সমাজ ও রাষ্ট্রপক্ষ কী টের পাচ্ছে না উইপোকার মতো সাম্প্রদায়িক শক্তি কীভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রে অবস্থান করে বিপন্ন করতে বসেছে জাতিসত্তাকে?
যাই হোক, দুর্ভেদ্য প্রশ্নপত্র প্রক্রিয়ায় সাম্প্রদায়িক শক্তির এমন আগ্রাসন ও প্রবেশ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। মনে অনেক সংশয় ও ভয় দেখা দিয়েছে। কারা প্রশ্নপত্র, কারিকুলাম, পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেন এবং কাদের রেফারেন্স ও সহায়তায় এরা নিয়োগপ্রাপ্ত হন, তা কঠোরভাবে দেখা এবং তা প্রকাশ্যে আনার দাবি উঠেছে। শিক্ষার চাইতে মূল্যবান সম্পদ কিংবা অস্ত্র আর কী হতে পারে, যা দেশকে সমৃদ্ধ ও সুরক্ষিত করতে পারে? একটি রাষ্ট্রে শিক্ষার বিকল্প নেই। একজন ব্যক্তির মূল্যবোধ, মনোভাব কিংবা দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে তা নির্ধারণ করে সেই রাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা। সঠিক শিক্ষা যদি ব্যক্তি না পায়, তাহলে তার অর্জিত শিক্ষা দিয়ে রাষ্ট্রের কোনো কল্যাণ কিংবা উন্নয়ন, এমনকি প্রকৃত নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় না। উপরন্তু, রাষ্ট্রে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদ্ভব হয় এবং ষড়যন্ত্রকারীদের উত্থান ঘটে। অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের পাশাপাশি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানির সুযোগ কী করে হয়, তা বোধগম্য নয়। কী জবাব দেবেন সংশ্লিষ্টরা, তা তাঁরাই জানেন। তবে এটা দৃশ্যমান হয়েছে যে শিক্ষা চরমভাবে অরক্ষিত ও অবহেলিত।
মাত্র কিছুদিন আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে পরীক্ষা চলাকালীন কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হলো। এমন সিদ্ধান্তে মনে হলো যেন কোচিং সেন্টারই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। শিক্ষা বোর্ড থেকে কী করে প্রশ্নপত্র কোচিং সেন্টারে পৌঁছায়, তার কোনো দায় বা জবাবদিহি কিন্তু কোথাও দেখা গেল না। কেউ দিলেনও না। প্রশ্নপত্র ফাঁসে দেখা যায় কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীরাও জড়িত থাকে। কিন্তু কী করে দুর্ভেদ্য শিক্ষা বোর্ডের ভেতর থেকে প্রশ্নপত্র বের হয়ে আসে, এসব সংরক্ষণের দায়-দায়িত্ব কাদের? কখনো তাদের চিহ্নিত করা হয় বলে মনে পড়ে না। ধরা খান তাঁরাই, যাঁরা মাঠে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন।
যখন লেখাটা লিখছি, তখন আন্তশিক্ষা বোর্ড থেকে বলা হলো, প্রশ্নকারী শিক্ষক ও সমন্বয়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশ্ন হলো, বিষয়টি কি শুধু শিক্ষক ও সমন্বয়কারী পর্যন্তই চূড়ান্ত হয়? সমন্বয়কারী তাঁর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন কি না, সেটা দেখার দায়িত্ব কার? নাকি সমন্বয়কারীর মাথার ওপর কেউ থাকেন না, শুধু আকাশই থাকে? যাই হোক, শিক্ষাই রাষ্ট্রের মেগা কর্মসূচি হওয়া উচিত এবং তা সংবিধানসম্মতভাবে। এই সত্য উপলব্ধির ঘাটতি কিন্তু বড় ঘাটতি এবং চরম ব্যর্থতা। মনে রাখতে হবে, উপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা এবং তার সুরক্ষাই রাষ্ট্রের বড় নিরাপত্তা।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক

আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস শিশু ও তরুণ সমাজের একটা অংশ যেমন পূর্ণাঙ্গভাবে জানে না, জানতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ঠিক তেমনি জানতে পারে না বাংলা ও বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের আদি উপান্ত।
দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা যেনতেনভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনেকের মতে, শিক্ষা কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনা মোটেও সুরক্ষিত নয়। দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতির অস্তিত্ব রক্ষায় এবং সুস্থ জাতি গঠনে বর্তমান প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রচণ্ড উদাসীনতা আর অবহেলায় রয়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। নেই শিক্ষার প্রতি দায়িত্বশীলদের কড়া নজর। তাই দেশের আর সবকিছু সুরক্ষিত হলেও শিক্ষা কার্যক্রম সুরক্ষিত হতে পারছে না কোনোভাবেই। একটার পর একটা অঘটন ঘটে যাচ্ছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগও যেন কোথাও নেই। নীতিনির্ধারকদের টনক নড়ছে না। কখনো নড়েছে বলেও মনে হয় না। তাঁরা দুঃখ প্রকাশ করেই দায়মুক্ত হচ্ছেন বলে অনেকে মনে করছেন। সম্প্রতি এর আরও একটি নমুনা দেখা গেল চলমান উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বাংলা প্রশ্নপত্রের একটি প্রশ্নে। বিধি লঙ্ঘন করে যেখানে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়া হয়েছে, যেখানে রাষ্ট্র সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে, ঠিক এমন একটি অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রমের প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানির মানে কী দাঁড়ায় এবং সংশ্লিষ্টরা তা বোঝেন কি না, সে বিষয়ে ভয়াবহ সংশয় দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ মনে করছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরে সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রবেশ ঘটেছে, সেটা নিশ্চিত। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের একটি অনুষ্ঠান শেষে সংবাদকর্মীরা এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন।
বলতে দ্বিধা নেই, তাঁর এই ‘দুঃখজনক’ কথায় অবাক হইনি, বরং হতাশ হয়েছি। কেন তিনি এমন একটি বিষয়কে ‘দুঃখজনক’ বলবেন? বরং তিনি যদি বলতেন, এটা তাঁর মন্ত্রণালয়ের এক বড় লজ্জাজনক ঘটনা, তাহলে তাতে আশ্বস্ত হতাম এই ভেবে যে বোধোদয়ের পথে তিনি সবাইকে নিয়ে পা বাড়িয়েছেন এবং সত্য অনুধাবন করছেন। দীপু মনি যখন শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন, তখন অনেক খুশি হয়েছিলাম। প্রায় বিপর্যস্ত শিক্ষাব্যবস্থাকে তিনি আদর্শের জায়গায় নিয়ে যাবেন, সংবিধানসম্মতভাবে চলমান রাখবেন—এমনটাই প্রত্যাশা ছিল। পাঠ্যপুস্তক একসময় হেফাজতিকরণ করা হলো বলে যখন অভিযোগ উঠল, তখন তেমনভাবে সোচ্চার হতে দেখা গেল না কাউকে। নীরবতা ছিল চারপাশে। এই নীরবতার নেপথ্যে অনেকেই রাজনৈতিক স্বার্থের গন্ধ খুঁজে পেলেন। সেটা কিন্তু অশনিসংকেত ছিল, বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, কৃষ্টির বিরুদ্ধে এবং সর্বোপরি যা ছিল সংবিধানের পরিপন্থী। তার পরের ঘটনা কমবেশি সবাই জানেন। সবকিছুর পর ভরসা রেখেছিলাম, অন্তত দীপু মনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের চেতনাকে শিক্ষার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি করবেন। আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস শিশু ও তরুণ সমাজের একটা অংশ যেমন পূর্ণাঙ্গভাবে জানে না, জানতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ঠিক তেমনি জানতে পারে না বাংলা ও বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের আদি উপান্ত।
সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নেপথ্যে যা ছিল অন্যতম একটি কারণ। অথচ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যার পর সাম্প্রদায়িক মনোভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করে এবং সেটা পাকিস্তান শাসনামলের আদলে। সংখ্যালঘুদের ওপর আঘাত, নিপীড়ন, মৌলবাদ, ফতোয়াবাজসহ নানান ধরনের ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানবিরোধী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সেটা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে। কৃষ্টি ও সংস্কৃতিতে লাগে পরিবর্তনের হাওয়া। পোশাক-আশাক, চিন্তা-চেতনায় পড়ে মরচে। এসবের বড় দৃষ্টান্ত হলো নিরাপত্তার দোহাইতে পয়লা বৈশাখ, বিজয় উৎসব উদ্যাপনে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া ও বিধিনিষেধ আরোপ করা। বাংলা ও বাঙালির বড় উৎসব পয়লা বৈশাখ, যা সব ধর্মের নাগরিকগণ উদ্যাপন করে থাকে সম্মিলিতভাবে। এই উৎসবকে টার্গেট করে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা। আর এদের হাত থেকে রক্ষার অজুহাতে দায়িত্বশীলরা উৎসবকে সংকুচিত করে ধারা জারি করে বসে। যেমন—উৎসবের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া, কী করা যাবে আর কী করা যাবে না, তা প্রচার করা। সাম্প্রদায়িক শক্তি এভাবেই ক্রমশ বিস্তার লাভ করে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাঠ্যপুস্তক সব ছাপিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তির উপস্থিতি এখন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে। সচেতন নাগরিক সমাজ ও রাষ্ট্রপক্ষ কী টের পাচ্ছে না উইপোকার মতো সাম্প্রদায়িক শক্তি কীভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রে অবস্থান করে বিপন্ন করতে বসেছে জাতিসত্তাকে?
যাই হোক, দুর্ভেদ্য প্রশ্নপত্র প্রক্রিয়ায় সাম্প্রদায়িক শক্তির এমন আগ্রাসন ও প্রবেশ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। মনে অনেক সংশয় ও ভয় দেখা দিয়েছে। কারা প্রশ্নপত্র, কারিকুলাম, পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেন এবং কাদের রেফারেন্স ও সহায়তায় এরা নিয়োগপ্রাপ্ত হন, তা কঠোরভাবে দেখা এবং তা প্রকাশ্যে আনার দাবি উঠেছে। শিক্ষার চাইতে মূল্যবান সম্পদ কিংবা অস্ত্র আর কী হতে পারে, যা দেশকে সমৃদ্ধ ও সুরক্ষিত করতে পারে? একটি রাষ্ট্রে শিক্ষার বিকল্প নেই। একজন ব্যক্তির মূল্যবোধ, মনোভাব কিংবা দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে তা নির্ধারণ করে সেই রাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা। সঠিক শিক্ষা যদি ব্যক্তি না পায়, তাহলে তার অর্জিত শিক্ষা দিয়ে রাষ্ট্রের কোনো কল্যাণ কিংবা উন্নয়ন, এমনকি প্রকৃত নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় না। উপরন্তু, রাষ্ট্রে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদ্ভব হয় এবং ষড়যন্ত্রকারীদের উত্থান ঘটে। অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের পাশাপাশি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানির সুযোগ কী করে হয়, তা বোধগম্য নয়। কী জবাব দেবেন সংশ্লিষ্টরা, তা তাঁরাই জানেন। তবে এটা দৃশ্যমান হয়েছে যে শিক্ষা চরমভাবে অরক্ষিত ও অবহেলিত।
মাত্র কিছুদিন আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে পরীক্ষা চলাকালীন কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হলো। এমন সিদ্ধান্তে মনে হলো যেন কোচিং সেন্টারই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। শিক্ষা বোর্ড থেকে কী করে প্রশ্নপত্র কোচিং সেন্টারে পৌঁছায়, তার কোনো দায় বা জবাবদিহি কিন্তু কোথাও দেখা গেল না। কেউ দিলেনও না। প্রশ্নপত্র ফাঁসে দেখা যায় কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীরাও জড়িত থাকে। কিন্তু কী করে দুর্ভেদ্য শিক্ষা বোর্ডের ভেতর থেকে প্রশ্নপত্র বের হয়ে আসে, এসব সংরক্ষণের দায়-দায়িত্ব কাদের? কখনো তাদের চিহ্নিত করা হয় বলে মনে পড়ে না। ধরা খান তাঁরাই, যাঁরা মাঠে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন।
যখন লেখাটা লিখছি, তখন আন্তশিক্ষা বোর্ড থেকে বলা হলো, প্রশ্নকারী শিক্ষক ও সমন্বয়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশ্ন হলো, বিষয়টি কি শুধু শিক্ষক ও সমন্বয়কারী পর্যন্তই চূড়ান্ত হয়? সমন্বয়কারী তাঁর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন কি না, সেটা দেখার দায়িত্ব কার? নাকি সমন্বয়কারীর মাথার ওপর কেউ থাকেন না, শুধু আকাশই থাকে? যাই হোক, শিক্ষাই রাষ্ট্রের মেগা কর্মসূচি হওয়া উচিত এবং তা সংবিধানসম্মতভাবে। এই সত্য উপলব্ধির ঘাটতি কিন্তু বড় ঘাটতি এবং চরম ব্যর্থতা। মনে রাখতে হবে, উপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা এবং তার সুরক্ষাই রাষ্ট্রের বড় নিরাপত্তা।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক
স্বপ্না রেজা

আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস শিশু ও তরুণ সমাজের একটা অংশ যেমন পূর্ণাঙ্গভাবে জানে না, জানতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ঠিক তেমনি জানতে পারে না বাংলা ও বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের আদি উপান্ত।
দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা যেনতেনভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনেকের মতে, শিক্ষা কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনা মোটেও সুরক্ষিত নয়। দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতির অস্তিত্ব রক্ষায় এবং সুস্থ জাতি গঠনে বর্তমান প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রচণ্ড উদাসীনতা আর অবহেলায় রয়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। নেই শিক্ষার প্রতি দায়িত্বশীলদের কড়া নজর। তাই দেশের আর সবকিছু সুরক্ষিত হলেও শিক্ষা কার্যক্রম সুরক্ষিত হতে পারছে না কোনোভাবেই। একটার পর একটা অঘটন ঘটে যাচ্ছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগও যেন কোথাও নেই। নীতিনির্ধারকদের টনক নড়ছে না। কখনো নড়েছে বলেও মনে হয় না। তাঁরা দুঃখ প্রকাশ করেই দায়মুক্ত হচ্ছেন বলে অনেকে মনে করছেন। সম্প্রতি এর আরও একটি নমুনা দেখা গেল চলমান উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বাংলা প্রশ্নপত্রের একটি প্রশ্নে। বিধি লঙ্ঘন করে যেখানে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়া হয়েছে, যেখানে রাষ্ট্র সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে, ঠিক এমন একটি অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রমের প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানির মানে কী দাঁড়ায় এবং সংশ্লিষ্টরা তা বোঝেন কি না, সে বিষয়ে ভয়াবহ সংশয় দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ মনে করছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরে সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রবেশ ঘটেছে, সেটা নিশ্চিত। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের একটি অনুষ্ঠান শেষে সংবাদকর্মীরা এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন।
বলতে দ্বিধা নেই, তাঁর এই ‘দুঃখজনক’ কথায় অবাক হইনি, বরং হতাশ হয়েছি। কেন তিনি এমন একটি বিষয়কে ‘দুঃখজনক’ বলবেন? বরং তিনি যদি বলতেন, এটা তাঁর মন্ত্রণালয়ের এক বড় লজ্জাজনক ঘটনা, তাহলে তাতে আশ্বস্ত হতাম এই ভেবে যে বোধোদয়ের পথে তিনি সবাইকে নিয়ে পা বাড়িয়েছেন এবং সত্য অনুধাবন করছেন। দীপু মনি যখন শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন, তখন অনেক খুশি হয়েছিলাম। প্রায় বিপর্যস্ত শিক্ষাব্যবস্থাকে তিনি আদর্শের জায়গায় নিয়ে যাবেন, সংবিধানসম্মতভাবে চলমান রাখবেন—এমনটাই প্রত্যাশা ছিল। পাঠ্যপুস্তক একসময় হেফাজতিকরণ করা হলো বলে যখন অভিযোগ উঠল, তখন তেমনভাবে সোচ্চার হতে দেখা গেল না কাউকে। নীরবতা ছিল চারপাশে। এই নীরবতার নেপথ্যে অনেকেই রাজনৈতিক স্বার্থের গন্ধ খুঁজে পেলেন। সেটা কিন্তু অশনিসংকেত ছিল, বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, কৃষ্টির বিরুদ্ধে এবং সর্বোপরি যা ছিল সংবিধানের পরিপন্থী। তার পরের ঘটনা কমবেশি সবাই জানেন। সবকিছুর পর ভরসা রেখেছিলাম, অন্তত দীপু মনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের চেতনাকে শিক্ষার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি করবেন। আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস শিশু ও তরুণ সমাজের একটা অংশ যেমন পূর্ণাঙ্গভাবে জানে না, জানতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ঠিক তেমনি জানতে পারে না বাংলা ও বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের আদি উপান্ত।
সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নেপথ্যে যা ছিল অন্যতম একটি কারণ। অথচ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যার পর সাম্প্রদায়িক মনোভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করে এবং সেটা পাকিস্তান শাসনামলের আদলে। সংখ্যালঘুদের ওপর আঘাত, নিপীড়ন, মৌলবাদ, ফতোয়াবাজসহ নানান ধরনের ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানবিরোধী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সেটা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে। কৃষ্টি ও সংস্কৃতিতে লাগে পরিবর্তনের হাওয়া। পোশাক-আশাক, চিন্তা-চেতনায় পড়ে মরচে। এসবের বড় দৃষ্টান্ত হলো নিরাপত্তার দোহাইতে পয়লা বৈশাখ, বিজয় উৎসব উদ্যাপনে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া ও বিধিনিষেধ আরোপ করা। বাংলা ও বাঙালির বড় উৎসব পয়লা বৈশাখ, যা সব ধর্মের নাগরিকগণ উদ্যাপন করে থাকে সম্মিলিতভাবে। এই উৎসবকে টার্গেট করে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা। আর এদের হাত থেকে রক্ষার অজুহাতে দায়িত্বশীলরা উৎসবকে সংকুচিত করে ধারা জারি করে বসে। যেমন—উৎসবের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া, কী করা যাবে আর কী করা যাবে না, তা প্রচার করা। সাম্প্রদায়িক শক্তি এভাবেই ক্রমশ বিস্তার লাভ করে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাঠ্যপুস্তক সব ছাপিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তির উপস্থিতি এখন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে। সচেতন নাগরিক সমাজ ও রাষ্ট্রপক্ষ কী টের পাচ্ছে না উইপোকার মতো সাম্প্রদায়িক শক্তি কীভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রে অবস্থান করে বিপন্ন করতে বসেছে জাতিসত্তাকে?
যাই হোক, দুর্ভেদ্য প্রশ্নপত্র প্রক্রিয়ায় সাম্প্রদায়িক শক্তির এমন আগ্রাসন ও প্রবেশ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। মনে অনেক সংশয় ও ভয় দেখা দিয়েছে। কারা প্রশ্নপত্র, কারিকুলাম, পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেন এবং কাদের রেফারেন্স ও সহায়তায় এরা নিয়োগপ্রাপ্ত হন, তা কঠোরভাবে দেখা এবং তা প্রকাশ্যে আনার দাবি উঠেছে। শিক্ষার চাইতে মূল্যবান সম্পদ কিংবা অস্ত্র আর কী হতে পারে, যা দেশকে সমৃদ্ধ ও সুরক্ষিত করতে পারে? একটি রাষ্ট্রে শিক্ষার বিকল্প নেই। একজন ব্যক্তির মূল্যবোধ, মনোভাব কিংবা দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে তা নির্ধারণ করে সেই রাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা। সঠিক শিক্ষা যদি ব্যক্তি না পায়, তাহলে তার অর্জিত শিক্ষা দিয়ে রাষ্ট্রের কোনো কল্যাণ কিংবা উন্নয়ন, এমনকি প্রকৃত নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় না। উপরন্তু, রাষ্ট্রে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদ্ভব হয় এবং ষড়যন্ত্রকারীদের উত্থান ঘটে। অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের পাশাপাশি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানির সুযোগ কী করে হয়, তা বোধগম্য নয়। কী জবাব দেবেন সংশ্লিষ্টরা, তা তাঁরাই জানেন। তবে এটা দৃশ্যমান হয়েছে যে শিক্ষা চরমভাবে অরক্ষিত ও অবহেলিত।
মাত্র কিছুদিন আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে পরীক্ষা চলাকালীন কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হলো। এমন সিদ্ধান্তে মনে হলো যেন কোচিং সেন্টারই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। শিক্ষা বোর্ড থেকে কী করে প্রশ্নপত্র কোচিং সেন্টারে পৌঁছায়, তার কোনো দায় বা জবাবদিহি কিন্তু কোথাও দেখা গেল না। কেউ দিলেনও না। প্রশ্নপত্র ফাঁসে দেখা যায় কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীরাও জড়িত থাকে। কিন্তু কী করে দুর্ভেদ্য শিক্ষা বোর্ডের ভেতর থেকে প্রশ্নপত্র বের হয়ে আসে, এসব সংরক্ষণের দায়-দায়িত্ব কাদের? কখনো তাদের চিহ্নিত করা হয় বলে মনে পড়ে না। ধরা খান তাঁরাই, যাঁরা মাঠে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন।
যখন লেখাটা লিখছি, তখন আন্তশিক্ষা বোর্ড থেকে বলা হলো, প্রশ্নকারী শিক্ষক ও সমন্বয়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশ্ন হলো, বিষয়টি কি শুধু শিক্ষক ও সমন্বয়কারী পর্যন্তই চূড়ান্ত হয়? সমন্বয়কারী তাঁর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন কি না, সেটা দেখার দায়িত্ব কার? নাকি সমন্বয়কারীর মাথার ওপর কেউ থাকেন না, শুধু আকাশই থাকে? যাই হোক, শিক্ষাই রাষ্ট্রের মেগা কর্মসূচি হওয়া উচিত এবং তা সংবিধানসম্মতভাবে। এই সত্য উপলব্ধির ঘাটতি কিন্তু বড় ঘাটতি এবং চরম ব্যর্থতা। মনে রাখতে হবে, উপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা এবং তার সুরক্ষাই রাষ্ট্রের বড় নিরাপত্তা।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক

আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস শিশু ও তরুণ সমাজের একটা অংশ যেমন পূর্ণাঙ্গভাবে জানে না, জানতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ঠিক তেমনি জানতে পারে না বাংলা ও বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের আদি উপান্ত।
দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা যেনতেনভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অনেকের মতে, শিক্ষা কার্যক্রম ও ব্যবস্থাপনা মোটেও সুরক্ষিত নয়। দেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতির অস্তিত্ব রক্ষায় এবং সুস্থ জাতি গঠনে বর্তমান প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। প্রচণ্ড উদাসীনতা আর অবহেলায় রয়েছে শিক্ষাব্যবস্থা। নেই শিক্ষার প্রতি দায়িত্বশীলদের কড়া নজর। তাই দেশের আর সবকিছু সুরক্ষিত হলেও শিক্ষা কার্যক্রম সুরক্ষিত হতে পারছে না কোনোভাবেই। একটার পর একটা অঘটন ঘটে যাচ্ছে দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগও যেন কোথাও নেই। নীতিনির্ধারকদের টনক নড়ছে না। কখনো নড়েছে বলেও মনে হয় না। তাঁরা দুঃখ প্রকাশ করেই দায়মুক্ত হচ্ছেন বলে অনেকে মনে করছেন। সম্প্রতি এর আরও একটি নমুনা দেখা গেল চলমান উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বাংলা প্রশ্নপত্রের একটি প্রশ্নে। বিধি লঙ্ঘন করে যেখানে সাম্প্রদায়িক উসকানি দেওয়া হয়েছে, যেখানে রাষ্ট্র সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে বলে প্রচার করা হচ্ছে, ঠিক এমন একটি অবস্থায় শিক্ষা কার্যক্রমের প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানির মানে কী দাঁড়ায় এবং সংশ্লিষ্টরা তা বোঝেন কি না, সে বিষয়ে ভয়াবহ সংশয় দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ মনে করছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের ভেতরে সাম্প্রদায়িক শক্তির প্রবেশ ঘটেছে, সেটা নিশ্চিত। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের একটি অনুষ্ঠান শেষে সংবাদকর্মীরা এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন।
বলতে দ্বিধা নেই, তাঁর এই ‘দুঃখজনক’ কথায় অবাক হইনি, বরং হতাশ হয়েছি। কেন তিনি এমন একটি বিষয়কে ‘দুঃখজনক’ বলবেন? বরং তিনি যদি বলতেন, এটা তাঁর মন্ত্রণালয়ের এক বড় লজ্জাজনক ঘটনা, তাহলে তাতে আশ্বস্ত হতাম এই ভেবে যে বোধোদয়ের পথে তিনি সবাইকে নিয়ে পা বাড়িয়েছেন এবং সত্য অনুধাবন করছেন। দীপু মনি যখন শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন, তখন অনেক খুশি হয়েছিলাম। প্রায় বিপর্যস্ত শিক্ষাব্যবস্থাকে তিনি আদর্শের জায়গায় নিয়ে যাবেন, সংবিধানসম্মতভাবে চলমান রাখবেন—এমনটাই প্রত্যাশা ছিল। পাঠ্যপুস্তক একসময় হেফাজতিকরণ করা হলো বলে যখন অভিযোগ উঠল, তখন তেমনভাবে সোচ্চার হতে দেখা গেল না কাউকে। নীরবতা ছিল চারপাশে। এই নীরবতার নেপথ্যে অনেকেই রাজনৈতিক স্বার্থের গন্ধ খুঁজে পেলেন। সেটা কিন্তু অশনিসংকেত ছিল, বাংলা ও বাঙালি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, কৃষ্টির বিরুদ্ধে এবং সর্বোপরি যা ছিল সংবিধানের পরিপন্থী। তার পরের ঘটনা কমবেশি সবাই জানেন। সবকিছুর পর ভরসা রেখেছিলাম, অন্তত দীপু মনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের চেতনাকে শিক্ষার মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি করবেন। আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস শিশু ও তরুণ সমাজের একটা অংশ যেমন পূর্ণাঙ্গভাবে জানে না, জানতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ঠিক তেমনি জানতে পারে না বাংলা ও বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের আদি উপান্ত।
সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নেপথ্যে যা ছিল অন্যতম একটি কারণ। অথচ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যার পর সাম্প্রদায়িক মনোভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করে এবং সেটা পাকিস্তান শাসনামলের আদলে। সংখ্যালঘুদের ওপর আঘাত, নিপীড়ন, মৌলবাদ, ফতোয়াবাজসহ নানান ধরনের ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানবিরোধী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সেটা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে। কৃষ্টি ও সংস্কৃতিতে লাগে পরিবর্তনের হাওয়া। পোশাক-আশাক, চিন্তা-চেতনায় পড়ে মরচে। এসবের বড় দৃষ্টান্ত হলো নিরাপত্তার দোহাইতে পয়লা বৈশাখ, বিজয় উৎসব উদ্যাপনে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া ও বিধিনিষেধ আরোপ করা। বাংলা ও বাঙালির বড় উৎসব পয়লা বৈশাখ, যা সব ধর্মের নাগরিকগণ উদ্যাপন করে থাকে সম্মিলিতভাবে। এই উৎসবকে টার্গেট করে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা। আর এদের হাত থেকে রক্ষার অজুহাতে দায়িত্বশীলরা উৎসবকে সংকুচিত করে ধারা জারি করে বসে। যেমন—উৎসবের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া, কী করা যাবে আর কী করা যাবে না, তা প্রচার করা। সাম্প্রদায়িক শক্তি এভাবেই ক্রমশ বিস্তার লাভ করে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পাঠ্যপুস্তক সব ছাপিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তির উপস্থিতি এখন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে। সচেতন নাগরিক সমাজ ও রাষ্ট্রপক্ষ কী টের পাচ্ছে না উইপোকার মতো সাম্প্রদায়িক শক্তি কীভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রে অবস্থান করে বিপন্ন করতে বসেছে জাতিসত্তাকে?
যাই হোক, দুর্ভেদ্য প্রশ্নপত্র প্রক্রিয়ায় সাম্প্রদায়িক শক্তির এমন আগ্রাসন ও প্রবেশ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। মনে অনেক সংশয় ও ভয় দেখা দিয়েছে। কারা প্রশ্নপত্র, কারিকুলাম, পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু নির্ধারণ করেন এবং কাদের রেফারেন্স ও সহায়তায় এরা নিয়োগপ্রাপ্ত হন, তা কঠোরভাবে দেখা এবং তা প্রকাশ্যে আনার দাবি উঠেছে। শিক্ষার চাইতে মূল্যবান সম্পদ কিংবা অস্ত্র আর কী হতে পারে, যা দেশকে সমৃদ্ধ ও সুরক্ষিত করতে পারে? একটি রাষ্ট্রে শিক্ষার বিকল্প নেই। একজন ব্যক্তির মূল্যবোধ, মনোভাব কিংবা দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে তা নির্ধারণ করে সেই রাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা। সঠিক শিক্ষা যদি ব্যক্তি না পায়, তাহলে তার অর্জিত শিক্ষা দিয়ে রাষ্ট্রের কোনো কল্যাণ কিংবা উন্নয়ন, এমনকি প্রকৃত নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় না। উপরন্তু, রাষ্ট্রে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির উদ্ভব হয় এবং ষড়যন্ত্রকারীদের উত্থান ঘটে। অসাম্প্রদায়িক মনোভাবের পাশাপাশি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানির সুযোগ কী করে হয়, তা বোধগম্য নয়। কী জবাব দেবেন সংশ্লিষ্টরা, তা তাঁরাই জানেন। তবে এটা দৃশ্যমান হয়েছে যে শিক্ষা চরমভাবে অরক্ষিত ও অবহেলিত।
মাত্র কিছুদিন আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে পরীক্ষা চলাকালীন কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হলো। এমন সিদ্ধান্তে মনে হলো যেন কোচিং সেন্টারই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে। শিক্ষা বোর্ড থেকে কী করে প্রশ্নপত্র কোচিং সেন্টারে পৌঁছায়, তার কোনো দায় বা জবাবদিহি কিন্তু কোথাও দেখা গেল না। কেউ দিলেনও না। প্রশ্নপত্র ফাঁসে দেখা যায় কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীরাও জড়িত থাকে। কিন্তু কী করে দুর্ভেদ্য শিক্ষা বোর্ডের ভেতর থেকে প্রশ্নপত্র বের হয়ে আসে, এসব সংরক্ষণের দায়-দায়িত্ব কাদের? কখনো তাদের চিহ্নিত করা হয় বলে মনে পড়ে না। ধরা খান তাঁরাই, যাঁরা মাঠে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেন।
যখন লেখাটা লিখছি, তখন আন্তশিক্ষা বোর্ড থেকে বলা হলো, প্রশ্নকারী শিক্ষক ও সমন্বয়কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশ্ন হলো, বিষয়টি কি শুধু শিক্ষক ও সমন্বয়কারী পর্যন্তই চূড়ান্ত হয়? সমন্বয়কারী তাঁর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন কি না, সেটা দেখার দায়িত্ব কার? নাকি সমন্বয়কারীর মাথার ওপর কেউ থাকেন না, শুধু আকাশই থাকে? যাই হোক, শিক্ষাই রাষ্ট্রের মেগা কর্মসূচি হওয়া উচিত এবং তা সংবিধানসম্মতভাবে। এই সত্য উপলব্ধির ঘাটতি কিন্তু বড় ঘাটতি এবং চরম ব্যর্থতা। মনে রাখতে হবে, উপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা এবং তার সুরক্ষাই রাষ্ট্রের বড় নিরাপত্তা।
লেখক: কথাসাহিত্যিক ও কলাম লেখক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস শিশু ও তরুণ সমাজের একটা অংশ যেমন পূর্ণাঙ্গভাবে জানে না, জানতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ঠিক তেমনি জানতে পারে না বাংলা ও বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের আদি উপান্ত।
১১ নভেম্বর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস শিশু ও তরুণ সমাজের একটা অংশ যেমন পূর্ণাঙ্গভাবে জানে না, জানতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ঠিক তেমনি জানতে পারে না বাংলা ও বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের আদি উপান্ত।
১১ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস শিশু ও তরুণ সমাজের একটা অংশ যেমন পূর্ণাঙ্গভাবে জানে না, জানতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ঠিক তেমনি জানতে পারে না বাংলা ও বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের আদি উপান্ত।
১১ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আমাদের দেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস শিশু ও তরুণ সমাজের একটা অংশ যেমন পূর্ণাঙ্গভাবে জানে না, জানতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ঠিক তেমনি জানতে পারে না বাংলা ও বাঙালি কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের আদি উপান্ত।
১১ নভেম্বর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫