Ajker Patrika

কারাবাস নয়, তাঁকে লাগাতে হবে গাছ

বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ০৯: ১৯
কারাবাস নয়, তাঁকে লাগাতে হবে গাছ

২৮ বছরের তরুণী তিনি। পেশায় একজন চা-শ্রমিক। গত বছরের মার্চ মাসে ৯ লিটার চোলাই মদসহ গ্রেপ্তার হন তরুণী। এ ঘটনায় মামলায় জেল খেটেছেন প্রায় দুই মাস। মামলার অভিযোগ গঠনকালে আদালতের কাছে দোষ স্বীকার করেন। রায়ে আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেন। কিন্তু এ জন্য তাঁকে কারাগারে নয়, গাছ লাগানোসহ পাঁচটি শর্তে স্বজনদের সঙ্গে নিজের বাড়িতে থাকার রায় দিয়েছেন আদালত।

গত মঙ্গলবার বিকেলে ব্যতিক্রমী এই রায় ঘোষণা করেছেন বড়লেখা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের হাকিম মোহাম্মদ জিয়াউল হক। দা প্রবেশন আব অফেন্ডার্স অরডিন্যান্স-১৯৬০-এর ৫ ধারা অনুযায়ী তাঁকে ১ বছরের জন্য প্রবেশন কর্মকর্তার (বড়লেখা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা) তত্ত্বাবধান থাকতে হবে।

তিনি উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের পাথারিয়া চা-বাগানের (দলছড়ি) বাসিন্দা।

রায়ে আদালত যেসব শর্ত পালনের কথা উল্লেখ করছেন সেগুলো হলো- তিনি এক বছর প্রবেশন কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে থাকবেন। এই সময়ের মধ্যে কোনো অপরাধ করবেন না, শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন, সদাচরণ করবেন এবং আদালত তলব করলে হাজির হবেন। রায়ের এক মাসের মধ্যে চা-বাগানের ব্যবস্থাপকের নির্দেশিত স্থানে সাতটি অর্জুন, সাতটি নিম ও সাতটি বাসক পাতার চারা রোপণ করবেন এবং তা দেখাশোনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবেন।

নির্দিষ্ট সময়ে তাকে প্রবেশন কর্মকর্তা তলব করলে হাজির থাকবেন। কোনো শর্ত লঙ্ঘন করলে প্রবেশন বাতিল এবং দা প্রবেশন আব অফেন্ডার্স অরডিন্যান্স আইন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বড়লেখা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) গোপাল চন্দ্র দত্ত বুধবার দুপুরে বলেন, ‘বড়লেখায় এই প্রথম এ রকম ব্যতিক্রমী রায় হয়েছে। আদালতের এই রায়ের একটা ইতিবাচক দিক আছে। এতে আসামিরা সংশোধনের সুযোগ ও সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবনে ফেরার একটা পথ পাবে।’

আসামি পক্ষের আইনজীবী মো. হারুন অর রশীদ বলেন, ‘আসামি একজন চা-শ্রমিক। তাদের একটি অনুষ্ঠানের জন্য নিজের ঘরে মদ তৈরি করেছিল। এটা প্রথমবার। অভিযোগ গঠনকালে আদালতের কাছে সরল মনে দোষ স্বীকার করেছেন তিনি। এতে আদালত ব্যতিক্রমী রায় দিয়েছেন। এই রায় একটা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

আদালতের রায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘রায়ের কপি হাতে আসেনি এখনো। কপি পেলে আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত