মুফতি আবু আবদুল্লাহ আহমদ
শেখার অদম্য আগ্রহ: আয়েশা আবদুর রহমানের জন্ম মিসরের দামিয়াত শহরে, ১৯১৩ সালের ১৮ নভেম্বর। বাবা শায়খ মুহাম্মদ ইবনে আলি আবদুর রহমান আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিপ্রাপ্ত শীর্ষ আলিম—দামিয়াতের একটি মাদ্রাসায় পড়াতেন। ৭ বছর বয়সেই আয়েশা গ্রামের মক্তবে পবিত্র কোরআন হিফজ করেন। এরপর স্কুলে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা থাকলেও পারিবারিক রক্ষণশীলতায় তা বাধাগ্রস্ত হয়। তবে শেখার অদম্য আগ্রহ তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বাড়িতেই পড়ালেখা চালিয়ে যান এবং পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রাখেন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ চুকিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পাড়ি জমান। বাবার রক্ষণশীল অবস্থানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই মায়ের অকুণ্ঠ সমর্থন নিয়ে তিনি নিজের যাত্রা অব্যাহত রাখেন। ১৯৩৯ সালে আরবি সাহিত্যে স্নাতক এবং ১৯৪১ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। এরপর ১৯৫০ সালে বিশ্বখ্যাত আরবি সাহিত্যিক ড. তহা হোসাইনের তত্ত্বাবধানে ডক্টরেট সম্পন্ন করেন।
শেখানোর নেশা: শেখার পর্ব শেষ করে আয়েশা আবদুর রহমান নিজের জ্ঞান মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্রত গ্রহণ করেন। মরক্কোর প্রাচীন বিদ্যাপীঠ আল-কারাভিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ অনুষদে তাফসির ও ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে ২০ বছর অধ্যাপনা করেন তিনি। মিসরের আইনে শামস বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবেও দীর্ঘদিন পাঠদান করেন। এ ছাড়া ১৯৬৭ সালে উম্মু দারমান বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯৬৮ সালে আল-খর্তুম ও আলজেরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯৭২ সালে বৈরুত বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯৮১ সালে আল-ইমারাত বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৩ সালে রিয়াদের মহিলা কলেজে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে অধ্যাপনা করেন।
লেখালেখির ভুবন: কৈশোর থেকেই আয়েশা আবদুর রহমান লেখালেখি শুরু করেন। লেখালেখিতে তিনি ‘বিনতুশ-শাতি’ তথা ‘নদীতীরের কন্যা’ ছদ্মনাম গ্রহণ করেন। ১৮ বছর বয়সে ‘আন নাহদাতুন নিসায়িয়্যাহ’ ম্যাগাজিনে তাঁর প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। এর দুই বছর পর তিনি আল-আহরাম পত্রিকায় নিয়মিত লিখতে শুরু করেন। খ্যাতিমান কবি ও সাহিত্যিক মে জিয়াদের পর তিনিই দ্বিতীয় নারী, যাঁর লেখা মিসরের সেরা পত্রিকা আল-আহরাম প্রকাশ করে। এরপর থেকে প্রতি সপ্তাহে তাঁর দীর্ঘ প্রবন্ধ ছাপা হতো আল-আহরামে। তখন থেকে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি লিখে গেছেন। আল-আহরামে তাঁর সর্বশেষ লেখাটি ছাপা হয় ১৯৯৮ সালের ২৬ নভেম্বর, মৃত্যুর মাত্র কয়েক দিন আগে। তিনি অধিকাংশ সময় কোরআনের তাফসির, ইসলামের বিরুদ্ধে উত্থাপিত আপত্তির খণ্ডন, নারীশিক্ষার গুরুত্ব, ইসলামে নারীর অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে লিখতেন। পত্রিকায় লেখালেখির পাশাপাশি একাধিক বইও লেখেন তিনি। তাঁর রচিত বইগুলোর মধ্যে ‘আত-তাফসিরুল বায়ানি লিল কোরআনিল কারিম’, ‘আল-কোরআন ওয়া-কাদায়াল ইনসান’, ‘তারাজুমু সাইয়িদাতি বাইতিন নুবুওয়াহ’, ‘বানাতুন নবি’, ‘আদাউল বশর’, ‘আরদুল মুজিজাত’ ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
সম্মাননা-স্বীকৃতি: সাহিত্য ও ইসলামি গবেষণায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আয়েশা আবদুর রহমান অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। তার মধ্যে ১৯৭৮ সালে মিসরের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার এবং ১৯৯৪ সালে মুসলিম বিশ্বের নোবেলখ্যাত ‘কিং ফয়সাল অ্যাওয়ার্ড’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ব্যক্তিগত জীবনে আয়েশা আবদুর রহমান তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদ ওস্তাদ আমিন আল-খাওলিকে বিয়ে করেন। তাঁদের সংসারে তিনটি ছেলে জন্ম নেয়। ক্ষণজন্মা এ মহীয়সী ১ ডিসেম্বর ১৯৯৮ সালে পৃথিবীর কর্মমুখর বর্ণাঢ্য জীবনের ইতি টেনে পরপারে পাড়ি জমান।
আয়েশা আবদুর রহমান গত শতকের শ্রেষ্ঠ নারী ইসলামি চিন্তাবিদ। তাঁর চিন্তা-চেতনা, রচনাকর্ম ও সৃষ্টিশীলতা মুসলিম নারীদের যুগে যুগে প্রেরণা জোগাবে।
শেখার অদম্য আগ্রহ: আয়েশা আবদুর রহমানের জন্ম মিসরের দামিয়াত শহরে, ১৯১৩ সালের ১৮ নভেম্বর। বাবা শায়খ মুহাম্মদ ইবনে আলি আবদুর রহমান আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিপ্রাপ্ত শীর্ষ আলিম—দামিয়াতের একটি মাদ্রাসায় পড়াতেন। ৭ বছর বয়সেই আয়েশা গ্রামের মক্তবে পবিত্র কোরআন হিফজ করেন। এরপর স্কুলে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা থাকলেও পারিবারিক রক্ষণশীলতায় তা বাধাগ্রস্ত হয়। তবে শেখার অদম্য আগ্রহ তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। বাড়িতেই পড়ালেখা চালিয়ে যান এবং পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রাখেন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ চুকিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পাড়ি জমান। বাবার রক্ষণশীল অবস্থানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই মায়ের অকুণ্ঠ সমর্থন নিয়ে তিনি নিজের যাত্রা অব্যাহত রাখেন। ১৯৩৯ সালে আরবি সাহিত্যে স্নাতক এবং ১৯৪১ সালে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। এরপর ১৯৫০ সালে বিশ্বখ্যাত আরবি সাহিত্যিক ড. তহা হোসাইনের তত্ত্বাবধানে ডক্টরেট সম্পন্ন করেন।
শেখানোর নেশা: শেখার পর্ব শেষ করে আয়েশা আবদুর রহমান নিজের জ্ঞান মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্রত গ্রহণ করেন। মরক্কোর প্রাচীন বিদ্যাপীঠ আল-কারাভিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়াহ অনুষদে তাফসির ও ইসলামিক স্টাডিজ বিষয়ে ২০ বছর অধ্যাপনা করেন তিনি। মিসরের আইনে শামস বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি ভাষা ও সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবেও দীর্ঘদিন পাঠদান করেন। এ ছাড়া ১৯৬৭ সালে উম্মু দারমান বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯৬৮ সালে আল-খর্তুম ও আলজেরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯৭২ সালে বৈরুত বিশ্ববিদ্যালয়ে, ১৯৮১ সালে আল-ইমারাত বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৩ সালে রিয়াদের মহিলা কলেজে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে অধ্যাপনা করেন।
লেখালেখির ভুবন: কৈশোর থেকেই আয়েশা আবদুর রহমান লেখালেখি শুরু করেন। লেখালেখিতে তিনি ‘বিনতুশ-শাতি’ তথা ‘নদীতীরের কন্যা’ ছদ্মনাম গ্রহণ করেন। ১৮ বছর বয়সে ‘আন নাহদাতুন নিসায়িয়্যাহ’ ম্যাগাজিনে তাঁর প্রথম লেখা প্রকাশিত হয়। এর দুই বছর পর তিনি আল-আহরাম পত্রিকায় নিয়মিত লিখতে শুরু করেন। খ্যাতিমান কবি ও সাহিত্যিক মে জিয়াদের পর তিনিই দ্বিতীয় নারী, যাঁর লেখা মিসরের সেরা পত্রিকা আল-আহরাম প্রকাশ করে। এরপর থেকে প্রতি সপ্তাহে তাঁর দীর্ঘ প্রবন্ধ ছাপা হতো আল-আহরামে। তখন থেকে জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি লিখে গেছেন। আল-আহরামে তাঁর সর্বশেষ লেখাটি ছাপা হয় ১৯৯৮ সালের ২৬ নভেম্বর, মৃত্যুর মাত্র কয়েক দিন আগে। তিনি অধিকাংশ সময় কোরআনের তাফসির, ইসলামের বিরুদ্ধে উত্থাপিত আপত্তির খণ্ডন, নারীশিক্ষার গুরুত্ব, ইসলামে নারীর অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে লিখতেন। পত্রিকায় লেখালেখির পাশাপাশি একাধিক বইও লেখেন তিনি। তাঁর রচিত বইগুলোর মধ্যে ‘আত-তাফসিরুল বায়ানি লিল কোরআনিল কারিম’, ‘আল-কোরআন ওয়া-কাদায়াল ইনসান’, ‘তারাজুমু সাইয়িদাতি বাইতিন নুবুওয়াহ’, ‘বানাতুন নবি’, ‘আদাউল বশর’, ‘আরদুল মুজিজাত’ ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
সম্মাননা-স্বীকৃতি: সাহিত্য ও ইসলামি গবেষণায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে আয়েশা আবদুর রহমান অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেন। তার মধ্যে ১৯৭৮ সালে মিসরের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার এবং ১৯৯৪ সালে মুসলিম বিশ্বের নোবেলখ্যাত ‘কিং ফয়সাল অ্যাওয়ার্ড’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ব্যক্তিগত জীবনে আয়েশা আবদুর রহমান তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদ ওস্তাদ আমিন আল-খাওলিকে বিয়ে করেন। তাঁদের সংসারে তিনটি ছেলে জন্ম নেয়। ক্ষণজন্মা এ মহীয়সী ১ ডিসেম্বর ১৯৯৮ সালে পৃথিবীর কর্মমুখর বর্ণাঢ্য জীবনের ইতি টেনে পরপারে পাড়ি জমান।
আয়েশা আবদুর রহমান গত শতকের শ্রেষ্ঠ নারী ইসলামি চিন্তাবিদ। তাঁর চিন্তা-চেতনা, রচনাকর্ম ও সৃষ্টিশীলতা মুসলিম নারীদের যুগে যুগে প্রেরণা জোগাবে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
৩ দিন আগেবিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪