Ajker Patrika

ঘরে-বাইরে মশার রাজত্ব

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ১৮ জুন ২০২২, ১৪: ৫৬
ঘরে-বাইরে মশার রাজত্ব

টাঙ্গাইলে সম্প্রতি মশার উপদ্রব বেড়েছে। বিশেষ করে পৌর এলাকাতে মশার উপদ্রবে টেকা দায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মশা নিধনে পৌর কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাঁদের। আগে শুধু রাতেই মশার উৎপাত ছিল। এখন দিনের বেলাতেও মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ জনজীবন। মশার উপদ্রবে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে।

সংশ্লিষ্টদের দাবি—পরিষ্কার না করায় পৌর এলাকার অধিকাংশ খাল ও ড্রেন এখন মশার প্রজনস্থলে পরিণত হয়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পৌরসভাবাসীর।

পৌরসভার বাসিন্দাদের অভিযোগ, জলাশয়সহ মশার প্রজননের জায়গাগুলো নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না রাখায় মশার উৎপাত নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বদ্ধ জলাশয়, কাভার্ড ড্রেন, বক্স-কালভার্ট, প্লাস্টিক বর্জ্য ও ডাবের খোসায় জমে থাকা পানিতে মশার বংশ বিস্তার ঘটছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ—বাসাবাড়ি, অফিস, বাজার, উন্মুক্ত স্থান, সড়ক, পার্ক, খেলার মাঠ, সর্বত্রই এখন মশার রাজত্ব। মশার কামড় থেকে মানুষের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নেবে—এ প্রত্যাশা পৌরবাসীর।

সরেজমিন দেখা গেছে, পৌরশহরের বেবিট্যাক্সি স্ট্যান্ড, রাবনা বাইপাসের ময়লার ভাগাড়। এই ময়লার ভাগাড় থেকেও মশা বংশ বিস্তার করছে বলে মনে করছেন অনেকেই। এ ছাড়া যত্রতত্র আবর্জনার স্তূপ, ড্রেনের পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং মশা নিধন কার্যক্রম নিয়মিত না থাকায় মশার উপদ্রব বাড়ছে বলেও মনে করছে সচেতন নাগরিক সমাজ।

পৌরশহরের কাগমারা এলাকার আব্দুর রৌফ খান বলেন, ‘মশার যন্ত্রণায় খুব বিপদে আছি। স্প্রে বা কয়েল—মশা মারতে কাজে আসছে না কোনো কিছুই। শীতের শেষ থেকে মশা বেড়েছে। সন্ধ্যা নামলেই উৎপাত যেন আরও বেড়ে যায়। কয়েল না জ্বালিয়ে বা মশারি ছাড়া টেকাই দায় হয়ে পড়েছে। দ্রুত মশার যন্ত্রণা থেকে রেহাই পেতে চাই।’

পশ্চিম আকুরটাকুর এলাকার আব্দুর বারী বলেন, বাসার সামনে একটি খাল রয়েছে। সেই খাল পরিষ্কার না করায় সেখানে মশা বংশ বিস্তার করে। যে কারণে আমাদের এখানে অনেক মশা। মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। পৌরসভা থেকে স্প্রে করা হয় না। হাসান ইউসুফ তালুকদার নামের একজন বলেন, মশার জ্বালায় নামাজ পড়তেও এখন সমস্যা হয়। নামাজের সময় মশার কামড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে সমস্যা হচ্ছে।

এ বিষয়ে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (ইএসআরএম) বিভাগের অধ্যাপক ড. এ এস এম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘শহরে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা এবং নির্মাণসামগ্রী রাস্তার পাশেই ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া টাঙ্গাইলে বেশকিছু পুকুর রয়েছে, সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়। পুকুরগুলো পরিষ্কার না করায় সেখান থেকে মশার বংশবিস্তার ঘটছে। শহরের ড্রেনগুলোতে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেও নিয়মিত মশার বংশবিস্তার ঘটছে। টাঙ্গাইল শহরে মশানিধনের জন্য তেমন কোনো কর্মসূচি দেখা যায় না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত শহরের ড্রেনগুলো এবং যেসব পুকুরে ময়লা ফেলা হয়, সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা।’

জানতে চাইলে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র এস এম সিরাজুল হক আলমগীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, পৌর এলাকার ১৮টি ওয়ার্ডে মশা নিধনের জন্য স্প্রে করা হচ্ছে। একই সঙ্গে যেসব খাল ও ড্রেনে মশা বংশ বিস্তার করে, সেখানে বিশেষভাবে পরিষ্কার করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি মশার এ উপদ্রব দ্রুতই কমে যাবে। একই সঙ্গে পৌরবাসীকে নিজেদের বাসাবাড়ির আশপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার অনুরোধ করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত