অরুণ কর্মকার

আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম, অর্থাৎ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যে পরিচালিত গণসংগ্রাম এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি ও অংশ নিয়েছি, তারা খুব ভালোভাবেই জানি যে বাংলাদেশের ডিএনএতে গণতন্ত্র ছিল। একই সঙ্গে আমরা অনেকেই এ কথাও মানি যে স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই একটি প্রবল প্রতিকূল রাজনৈতিক উপদ্রব সৃষ্টির মাধ্যমে সেই ডিএনএ প্রতিস্থাপন করে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে শুরু হওয়া আমাদের অভিযাত্রা এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে সেই ডিএনএর অস্তিত্ব নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে।
ডিএনএ হলো একটি নিউক্লিক অ্যাসিড, যা জীবদেহের (আমাদের এই নিবন্ধের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের) গঠন ও কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জিনগত নির্দেশ ধারণ করে।জীবজগতে কারও শরীরে ডিএনএ প্রতিস্থাপন কিংবা বদলে দেওয়া অসম্ভব। তবে কোনো রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তা হতে পারে। যদি তা হয়, তাহলে সেই রাষ্ট্রের চরিত্র বৈশিষ্ট্য নীতি আদর্শ এবং অভীষ্ট পরিবর্তিত হয়ে যায়। বাংলাদেশের অভিযাত্রায় পরিবর্তনের প্রবণতা ও অব্যাহত ধারা লক্ষ করলেই আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে খুব দক্ষ হাতে সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের ডিএনএ প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। এ বিষয়ে সবিস্তার আলোচনার আগে বলে নেওয়া দরকার যে ডিএনএর প্রসঙ্গটি উঠল কেন?
প্রসঙ্গটি এসেছে সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি বক্তব্যের সূত্র ধরে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ডিএনএতে গণতন্ত্র রয়েছে।’ ওই সংবাদ সম্মেলনে ভারতের গণতন্ত্রের প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত দুই দেশই গণতান্ত্রিক।’
ভারতের ডিএনএতে যে গণতন্ত্র আছে তা প্রশ্নহীন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীন ভারত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইতিহাসেও এর সমর্থন পাওয়া যায়। কিন্তু গণতন্ত্রের সেই ধারা এখনো অব্যাহত আছে কি না, নাকি সেই ডিএনএতেও পরিবর্তন ঘটে গেছে, সে প্রশ্ন প্রবলভাবেই উঠেছে। সে করণেই নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘন, ধর্মীয় সংখ্যালঘু নিপীড়ন, সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ ও সার্বিকভাবে গণতন্ত্রের নিম্নগামিতা নিয়ে ৭৫ জন কংগ্রেস সদস্যের চিঠি,
নাগরিক সমাজ ও সংবাদমাধ্যমের চাপ সবই ছিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর।
কিন্তু ডিএনএতে গণতন্ত্র থাকার সুবাদে তার কোনো কিছুই ভারত ও নরেন্দ্র মোদির জন্য সামান্যতম বিঘ্ন হতে পারেনি। কারণ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কিংবা স্বার্থের বিষয়টি তেমন নয়। কাজেই বাংলাদেশের ডিএনএতে গণতন্ত্র থাকলেও সেটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কোনো বিবেচনার বিষয় নয়। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের অবস্থানও ভারতের মতো
শক্তিশালী নয়। হওয়ার কথাও না।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিএনএতে যে গণতন্ত্র রয়েছে তাকে কি ভারতের ডিএনএর মতো নির্ভেজাল বা প্রশ্নহীন বলা যায়! বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের অভিযাত্রা তো ভারত কিংবা বাংলাদেশের মতো গণতান্ত্রিক পন্থায় শুরু হয়নি; বরং শুরু হয়েছিল গণহত্যা, লুণ্ঠন, জবরদস্তির পথ ধরে। ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে ওই অঞ্চলের স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করা হয়েছিল। সেখানেই শেষ নয়। আফ্রিকা থেকে অসংখ্য মানুষ ধরে এনে দাস হিসেবে কাজে লাগানো, গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন থেকে আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদ বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের ডিএনএতেই আছে। এসবের অনেক পরেও, গত শতাব্দীর মধ্যভাগে পৃথিবীর অনেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে হত্যা, অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকার পরিবর্তন এবং গণতন্ত্রের স্থলে স্বেচ্ছাচারী-স্বৈরাচারী সরকার প্রতিষ্ঠা এবং তাঁদের অব্যাহতভাবে সমর্থন জুগিয়ে যাওয়ার মতো কুকর্মও যুক্তরাষ্ট্রের ডিএনএতে বিদ্যমান। সেই ডিএনএতে গণতন্ত্র কোথায়!
অন্যদিকে বাংলাদেশের ইতিহাস কী বলে? এ দেশটি প্রতিষ্ঠার জন্য যে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এ দেশের মানুষ করেছে তার সবই ছিল গণতান্ত্রিক পন্থায় জনগণসম্পৃক্ত গণ-আন্দোলন। ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে বর্তমান বাংলাদেশ ভূখণ্ডের মানুষ সংগ্রাম শুরু করেছিল। ১৯৫২ সালে তার ব্যাপ্তি আরও বিস্তৃত হয়।
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার মিছিলে যখন গুলি করে হত্যা করার ঘটনা ঘটে, তখনো এবং তার পরবর্তী পর্যায়ের আন্দোলনও গণতান্ত্রিকই ছিল।আসলে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিচালিত আন্দোলন-সংগ্রামের তালিকা অনেক দীর্ঘ। ভাষা আন্দোলনের পর ‘৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনও ছিল আন্দোলনেরই অংশ। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৬ সালের ছয় দফার আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং আইউব খানের সামরিক সরকারের পতন, সেই পথ ধরে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন। এসব আন্দোলনের প্রতিটি পর্যায়ে জনগণের অংশগ্রহণ ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। মাঝখানে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র নামে একটি মিথ্যা মামলা করে এ দেশের গণমানুষের আন্দোলনে ষড়যন্ত্রের কালিমা লেপনের যে কূটচাল চেলেছিল তা-ও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে যায় গণ-আন্দোলনের ফলেই। অবশেষে মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র সেই যুদ্ধও ছিল এ দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা একটি জনযুদ্ধ। এই প্রক্রিয়ায় যে দেশটি প্রতিষ্ঠিত, সে দেশের ডিএনএতে গণতন্ত্র ছাড়া আর কীই-বা থাকতে পারে?
বাংলাদেশের ডিএনএতে গণতন্ত্র ছাড়া ছিলও না কিছু। কিন্তু স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পরেই এক অবাঞ্ছিত রাজনৈতিক উপদ্রব সৃষ্টি করে বাংলাদেশের সেই নির্ভেজাল ডিএনএ প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল। সেই প্রক্রিয়ায় অবিমৃশ্যকারী রাজনৈতিক শক্তি যেমন ছিল, তেমনি তাঁদের সঙ্গে সুযোগ সন্ধানী হিসেবে যুক্ত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত পাকিস্তানের এ দেশীয় দোসর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। যুক্ত হয়েছিল হঠকারী বামধারার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বহুধাবিভক্ত উপদলগুলো যারা সব পরিস্থিতিতে সশস্ত্র সংগ্রামে বিশ্বাসী ছিল। এদের সম্মিলিত শক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ও বিরোধিতা করেছে। ফলে এই ধারার ব্যাপ্তি সারা দেশে বিস্তার লাভ করে এবং বাংলাদেশের ডিএনএ বদলে দেয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার করার পর যে সামরিক শাসনের ধারা এ দেশে চালু হয় তা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ডিএনএকে প্রায় অপসৃত করে ফেলে। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মূলত সেই ধারাই চলে। এর মধ্যেও এ দেশের মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। চেষ্টা করেছে দেশের মূল ডিএনএ ফিরিয়ে আনার। মানুষের সেই সংগ্রামে যে গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী বিশ্ব মোড়লদের সমর্থন পাওয়া গেছে তা নয়; বরং গণতন্ত্র হত্যাকারীরাই তাদের সমর্থন ও সহযোগিতা বেশি পেয়েছে।
১৯৯০ সালের পর দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল যে দেশে গণতন্ত্রের হারিয়ে যাওয়া ডিএনএ আবার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু রাজনৈতিক বৈরিতা, প্রতিপক্ষকে নিঃশেষ করে ফেলার দস্যু মনোবৃত্তি তা অসম্ভব করে তুলেছে। এ জন্যই আমরা অনেকে এখন বাংলাদেশের ডিএনএতে গণতন্ত্রের অস্তিত্বের বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করছি।
কিন্তু আমরা নিশ্চিত যে গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী কোনো বিশ্ব মোড়লের চাপে কিংবা প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশের সেই ডিএনএ ফিরে আসবে না। রাজনীতির মাঠে, জনগণের জীবনে তো নয়ই। তারা চাপ, প্রেসক্রিপশন এবং আরও অনেক কিছু দিতে পারে। আবার নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য দরকার হলে বাংলাদেশের ডিএনএতে যে গণতন্ত্র ছিল তাকেও বড় করে দেখিয়ে দিতে পারে। আবার গণতন্ত্রের কথা ভুলেও যেতে পারে। আমরা জানি, গণতন্ত্র যদি প্রতিষ্ঠা করতে হয়, বাংলাদেশের আদি ডিএনএতে যে গণতন্ত্র ছিল তাকে যদি ফিরিয়ে আনতে হয়, তাহলে একমাত্র দরকার দেশের রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সম্মিলিত প্রয়াস। সেটাই হওয়া উচিত আমাদের একমাত্র পথ।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম, অর্থাৎ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যে পরিচালিত গণসংগ্রাম এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি ও অংশ নিয়েছি, তারা খুব ভালোভাবেই জানি যে বাংলাদেশের ডিএনএতে গণতন্ত্র ছিল। একই সঙ্গে আমরা অনেকেই এ কথাও মানি যে স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই একটি প্রবল প্রতিকূল রাজনৈতিক উপদ্রব সৃষ্টির মাধ্যমে সেই ডিএনএ প্রতিস্থাপন করে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে শুরু হওয়া আমাদের অভিযাত্রা এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে তাতে সেই ডিএনএর অস্তিত্ব নিয়েই সংশয় দেখা দিয়েছে।
ডিএনএ হলো একটি নিউক্লিক অ্যাসিড, যা জীবদেহের (আমাদের এই নিবন্ধের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের) গঠন ও কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণের জিনগত নির্দেশ ধারণ করে।জীবজগতে কারও শরীরে ডিএনএ প্রতিস্থাপন কিংবা বদলে দেওয়া অসম্ভব। তবে কোনো রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে তা হতে পারে। যদি তা হয়, তাহলে সেই রাষ্ট্রের চরিত্র বৈশিষ্ট্য নীতি আদর্শ এবং অভীষ্ট পরিবর্তিত হয়ে যায়। বাংলাদেশের অভিযাত্রায় পরিবর্তনের প্রবণতা ও অব্যাহত ধারা লক্ষ করলেই আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে খুব দক্ষ হাতে সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের ডিএনএ প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। এ বিষয়ে সবিস্তার আলোচনার আগে বলে নেওয়া দরকার যে ডিএনএর প্রসঙ্গটি উঠল কেন?
প্রসঙ্গটি এসেছে সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি বক্তব্যের সূত্র ধরে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ডিএনএতে গণতন্ত্র রয়েছে।’ ওই সংবাদ সম্মেলনে ভারতের গণতন্ত্রের প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত দুই দেশই গণতান্ত্রিক।’
ভারতের ডিএনএতে যে গণতন্ত্র আছে তা প্রশ্নহীন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীন ভারত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইতিহাসেও এর সমর্থন পাওয়া যায়। কিন্তু গণতন্ত্রের সেই ধারা এখনো অব্যাহত আছে কি না, নাকি সেই ডিএনএতেও পরিবর্তন ঘটে গেছে, সে প্রশ্ন প্রবলভাবেই উঠেছে। সে করণেই নরেন্দ্র মোদির সফরকে কেন্দ্র করে ভারতে মানবাধিকার লঙ্ঘন, ধর্মীয় সংখ্যালঘু নিপীড়ন, সংবাদপত্রের কণ্ঠরোধ ও সার্বিকভাবে গণতন্ত্রের নিম্নগামিতা নিয়ে ৭৫ জন কংগ্রেস সদস্যের চিঠি,
নাগরিক সমাজ ও সংবাদমাধ্যমের চাপ সবই ছিল প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ওপর।
কিন্তু ডিএনএতে গণতন্ত্র থাকার সুবাদে তার কোনো কিছুই ভারত ও নরেন্দ্র মোদির জন্য সামান্যতম বিঘ্ন হতে পারেনি। কারণ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কিংবা স্বার্থের বিষয়টি তেমন নয়। কাজেই বাংলাদেশের ডিএনএতে গণতন্ত্র থাকলেও সেটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কোনো বিবেচনার বিষয় নয়। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের অবস্থানও ভারতের মতো
শক্তিশালী নয়। হওয়ার কথাও না।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিএনএতে যে গণতন্ত্র রয়েছে তাকে কি ভারতের ডিএনএর মতো নির্ভেজাল বা প্রশ্নহীন বলা যায়! বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের অভিযাত্রা তো ভারত কিংবা বাংলাদেশের মতো গণতান্ত্রিক পন্থায় শুরু হয়নি; বরং শুরু হয়েছিল গণহত্যা, লুণ্ঠন, জবরদস্তির পথ ধরে। ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে ওই অঞ্চলের স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দিয়ে বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করা হয়েছিল। সেখানেই শেষ নয়। আফ্রিকা থেকে অসংখ্য মানুষ ধরে এনে দাস হিসেবে কাজে লাগানো, গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন থেকে আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে উচ্ছেদ বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের ডিএনএতেই আছে। এসবের অনেক পরেও, গত শতাব্দীর মধ্যভাগে পৃথিবীর অনেক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে হত্যা, অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকার পরিবর্তন এবং গণতন্ত্রের স্থলে স্বেচ্ছাচারী-স্বৈরাচারী সরকার প্রতিষ্ঠা এবং তাঁদের অব্যাহতভাবে সমর্থন জুগিয়ে যাওয়ার মতো কুকর্মও যুক্তরাষ্ট্রের ডিএনএতে বিদ্যমান। সেই ডিএনএতে গণতন্ত্র কোথায়!
অন্যদিকে বাংলাদেশের ইতিহাস কী বলে? এ দেশটি প্রতিষ্ঠার জন্য যে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম এ দেশের মানুষ করেছে তার সবই ছিল গণতান্ত্রিক পন্থায় জনগণসম্পৃক্ত গণ-আন্দোলন। ১৯৪৮ সালে রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে বর্তমান বাংলাদেশ ভূখণ্ডের মানুষ সংগ্রাম শুরু করেছিল। ১৯৫২ সালে তার ব্যাপ্তি আরও বিস্তৃত হয়।
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার মিছিলে যখন গুলি করে হত্যা করার ঘটনা ঘটে, তখনো এবং তার পরবর্তী পর্যায়ের আন্দোলনও গণতান্ত্রিকই ছিল।আসলে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিচালিত আন্দোলন-সংগ্রামের তালিকা অনেক দীর্ঘ। ভাষা আন্দোলনের পর ‘৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনও ছিল আন্দোলনেরই অংশ। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ‘৬৬ সালের ছয় দফার আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান এবং আইউব খানের সামরিক সরকারের পতন, সেই পথ ধরে ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন। এসব আন্দোলনের প্রতিটি পর্যায়ে জনগণের অংশগ্রহণ ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। মাঝখানে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র নামে একটি মিথ্যা মামলা করে এ দেশের গণমানুষের আন্দোলনে ষড়যন্ত্রের কালিমা লেপনের যে কূটচাল চেলেছিল তা-ও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে যায় গণ-আন্দোলনের ফলেই। অবশেষে মুক্তিযুদ্ধ। সশস্ত্র সেই যুদ্ধও ছিল এ দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে গড়ে ওঠা একটি জনযুদ্ধ। এই প্রক্রিয়ায় যে দেশটি প্রতিষ্ঠিত, সে দেশের ডিএনএতে গণতন্ত্র ছাড়া আর কীই-বা থাকতে পারে?
বাংলাদেশের ডিএনএতে গণতন্ত্র ছাড়া ছিলও না কিছু। কিন্তু স্বাধীনতা লাভের অব্যবহিত পরেই এক অবাঞ্ছিত রাজনৈতিক উপদ্রব সৃষ্টি করে বাংলাদেশের সেই নির্ভেজাল ডিএনএ প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল। সেই প্রক্রিয়ায় অবিমৃশ্যকারী রাজনৈতিক শক্তি যেমন ছিল, তেমনি তাঁদের সঙ্গে সুযোগ সন্ধানী হিসেবে যুক্ত হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত পাকিস্তানের এ দেশীয় দোসর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। যুক্ত হয়েছিল হঠকারী বামধারার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বহুধাবিভক্ত উপদলগুলো যারা সব পরিস্থিতিতে সশস্ত্র সংগ্রামে বিশ্বাসী ছিল। এদের সম্মিলিত শক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়ও বিরোধিতা করেছে। ফলে এই ধারার ব্যাপ্তি সারা দেশে বিস্তার লাভ করে এবং বাংলাদেশের ডিএনএ বদলে দেয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার করার পর যে সামরিক শাসনের ধারা এ দেশে চালু হয় তা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ডিএনএকে প্রায় অপসৃত করে ফেলে। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত মূলত সেই ধারাই চলে। এর মধ্যেও এ দেশের মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। চেষ্টা করেছে দেশের মূল ডিএনএ ফিরিয়ে আনার। মানুষের সেই সংগ্রামে যে গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী বিশ্ব মোড়লদের সমর্থন পাওয়া গেছে তা নয়; বরং গণতন্ত্র হত্যাকারীরাই তাদের সমর্থন ও সহযোগিতা বেশি পেয়েছে।
১৯৯০ সালের পর দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল যে দেশে গণতন্ত্রের হারিয়ে যাওয়া ডিএনএ আবার প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু রাজনৈতিক বৈরিতা, প্রতিপক্ষকে নিঃশেষ করে ফেলার দস্যু মনোবৃত্তি তা অসম্ভব করে তুলেছে। এ জন্যই আমরা অনেকে এখন বাংলাদেশের ডিএনএতে গণতন্ত্রের অস্তিত্বের বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করছি।
কিন্তু আমরা নিশ্চিত যে গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী কোনো বিশ্ব মোড়লের চাপে কিংবা প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশের সেই ডিএনএ ফিরে আসবে না। রাজনীতির মাঠে, জনগণের জীবনে তো নয়ই। তারা চাপ, প্রেসক্রিপশন এবং আরও অনেক কিছু দিতে পারে। আবার নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য দরকার হলে বাংলাদেশের ডিএনএতে যে গণতন্ত্র ছিল তাকেও বড় করে দেখিয়ে দিতে পারে। আবার গণতন্ত্রের কথা ভুলেও যেতে পারে। আমরা জানি, গণতন্ত্র যদি প্রতিষ্ঠা করতে হয়, বাংলাদেশের আদি ডিএনএতে যে গণতন্ত্র ছিল তাকে যদি ফিরিয়ে আনতে হয়, তাহলে একমাত্র দরকার দেশের রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সম্মিলিত প্রয়াস। সেটাই হওয়া উচিত আমাদের একমাত্র পথ।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম, অর্থাৎ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যে পরিচালিত গণসংগ্রাম এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি ও অংশ নিয়েছি, তারা খুব ভালোভাবেই জানি যে বাংলাদেশের ডিএনএতে গণতন্ত্র ছিল।
০৮ জুলাই ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম, অর্থাৎ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যে পরিচালিত গণসংগ্রাম এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি ও অংশ নিয়েছি, তারা খুব ভালোভাবেই জানি যে বাংলাদেশের ডিএনএতে গণতন্ত্র ছিল।
০৮ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম, অর্থাৎ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যে পরিচালিত গণসংগ্রাম এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি ও অংশ নিয়েছি, তারা খুব ভালোভাবেই জানি যে বাংলাদেশের ডিএনএতে গণতন্ত্র ছিল।
০৮ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম, অর্থাৎ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সুদূরপ্রসারী লক্ষ্যে পরিচালিত গণসংগ্রাম এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি ও অংশ নিয়েছি, তারা খুব ভালোভাবেই জানি যে বাংলাদেশের ডিএনএতে গণতন্ত্র ছিল।
০৮ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫