Ajker Patrika

হঠাৎ ঝড়ে সব শেষ, ঠাঁই খোলা আকাশের নিচে

এম কে দোলন বিশ্বাস, ইসলামপুর
Thumbnail image

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলায় গত মঙ্গলবার রাতের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া বাড়িঘরের বাসিন্দারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কারও বাড়িঘর মাটির সঙ্গে মিশে গেছে, কারও বা সামান্য অবশিষ্ট রয়েছে। সবাই খোলা আকাশের নিচে পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও হঠাৎ ঝড়ে নিয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এসব মানুষ।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বয়ে যাওয়া ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়েছে অন্তত দুই হাজার ঘরবাড়ি। এ সময় শিশুসহ আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। উপড়ে পড়েছে গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি। ঝড়ে ধান, ভুট্টাসহ উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ শাখা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বসতবাড়িসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছেন পৌরসভা ও ইসলামপুর ইউনিয়নের বাসিন্দারা।

গতকাল গিয়ে দেখা গেছে, ঝড়ের তাণ্ডব। ঝড়ে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি অনেকের মাথা গোঁজার ঠাঁই পর্যন্তও নেই। কারও কারও বসতঘর ঝড়ে অন্যত্র উড়ে গেছে। এখনো ঘরের চালের টিন খুঁজে পাননি অনেকেই। ফলে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তাঁরা। অনেকেই ঘরের ওপর পড়ে যাওয়া গাছ অপসারণ করছেন। কেউ আবার ঘরের উড়ে যাওয়া টিনের চাল মেরামত করছেন, আবার কেউ কেউ ভাঙা ঘরের আসবাব গোচাচ্ছেন।

চরপুটিমারীর শেখপাড়া শেখ রাসেল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়ারপাড়া ইউনিয়নের হাড়গিলা উচ্চবিদ্যালয় এবং চিনাডুলীর ঢেংগারগড় নুরল হুদা আলিম মাদ্রাসার ঘর বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। গাছগাছালি উপড়ে পড়ে খুঁটি ও তার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ

নাপিতেরচর বলিদাপাড়া গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলাম কালা মানিক বলেন, ‘ঝড়ে মুহূর্তের মধ্যেই আমার দুটি ঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। ঘরের চালে গাছ ও বাঁশের ঝাড় উপড়ে পড়ায় অল্পের জন্য বেঁচে গেছি।’

গঙ্গাপাড়া গ্রামের মিজান মিয়া বলেন, ‘আমার দোচালা টিনের ঘর উড়ে গেছে। এখনো ঘরের চাল খোঁজ পাইনি। খুবই মানবেতর জীবনযাপন করলেও আমাদের কেউ খোঁজখবর নিতে আসেনি।’

চিনাডুলী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজখবর নিচ্ছি। শত শত পরিবারের বসতবাড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। নিম্ন আয়ের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। অনেকেই খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করছেন।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও দুর্যোগ ত্রাণ কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু বলেন, কালবৈশাখীতে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। সরকারিভাবে বরাদ্দের আবেদন করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মু. তানভীর হাসান রুমান বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। খোঁজখবর নিচ্ছি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের। সরকারি বরাদ্দ পেলেই সাহায্য করা হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত