রাহুল শর্মা, ঢাকা
রাজধানীর মগবাজারের মীরবাগ। সেখানে রমনা রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব শুধু সাইনবোর্ডে। বিদ্যালয়ের জন্য কেনা পাঁচ কাঠা জমিতে গড়ে উঠেছে পুরোদস্তুর কাঁচাবাজার। বিদ্যালয়ের বেদখল জমিতে থাকা সেমিপাকা দোকানগুলো থেকে ভাড়া তুলছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
কেবল মীরবাগের এই বিদ্যালয়ের নয়, রাজধানীর আরও ২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়ে গেছে। বেদখল জমির পরিমাণ ১৭ বিঘার বেশি। ১৬টি বিদ্যালয়ের জমি দখল করেছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ৫টির জমিতে পানির পাম্প করেছে ঢাকা ওয়াসা। বাকি জমি গেছে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, বস্তি, দোকান এবং ধর্মীয় স্থাপনায়। এ ছাড়া দুটি বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে মামলা চলছে। একটির জমির নামজারি নিয়ে জটিলতা রয়েছে।
আজকের পত্রিকার অনুসন্ধান এবং ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই চিত্র। জমি উদ্ধারে পদক্ষেপ নিতে গত জুনের মাঝামাঝি প্রতিবেদনটি ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মমতাজ বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধারে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট থানার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) প্রতিবেদন পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিধি অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা মহানগরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে মোট ৩৪২টি। এগুলো ১২টি শিক্ষা থানার অধীনে পরিচালিত হয়। বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী রয়েছে দেড় লাখের বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি সাতটি বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়েছে ডেমরা শিক্ষা থানায়। মতিঝিলে ছয়টি, মিরপুরে পাঁচটি, কোতোয়ালিতে চারটি, সূত্রাপুরে চারটি, মোহাম্মদপুরে তিনটি, রমনার একটি, তেজগাঁওয়ে একটি, ধানমন্ডিতে একটি এবং লালবাগ শিক্ষা থানার একটি বিদ্যালয়ের জমি দখল হয়ে গেছে।
নথিপত্র বলছে, ২০১৪ সালে ২৮টি বিদ্যালয়ের বেদখল হওয়া জমির পরিমাণ ছিল ২৪০ দশমিক ৯৫ শতাংশ বা সাড়ে ৭ বিঘা। বেদখল জমি উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে ওই বছর ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়। এরপর কিছু জমি উদ্ধার হলেও একপর্যায়ে উদ্ধার থেমে যায়।
পরে অন্যান্য বিদ্যালয়ের জমিও দখল হতে থাকে। ২০২৩ সালে জমি বেদখল হওয়া বিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০টি এবং বেদখল জমির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭২ দশমিক ১৫ শতাংশ বা ১৭ বিঘার বেশি। অর্থাৎ মাত্র ৯ বছরে বেদখল হওয়া জমির পরিমাণ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা মহানগরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দখল হওয়া জমি উদ্ধারে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অগ্রগতি প্রতি মাসে পর্যালোচনা ও মনিটরিংয়ের জন্য বিষয়টি মাসিক সমন্বয় সভার অ্যাজেন্ডাভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর আশা, শিগগির এর সুফল মিলবে।
২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৬টি বিদ্যালয়ের জমি ভোগদখল করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ৫টি জমিতে বসানো হয়েছে ঢাকা ওয়াসার পানির পাম্প।
শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসাও। সরকারি প্রতিষ্ঠানই যদি দখল করে, তাহলে তো লুটেরা গোষ্ঠী সাহস পাবেই। তিনি অবিলম্বে দখলদারদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবং বেদখল হওয়া জমি উদ্ধার করে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
২০২৩ সালের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি জমি দখল হয়েছে ডেমরার ধার্মিকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের, ৬৯ শতাংশ। ওই জমিতে থাকা বিশাল পুকুরটি দখল করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এ থানা এলাকার আরও ছয়টি বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়েছে।
মগবাজারের মীরবাগের রমনা রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরো পাঁচ কাঠা জমিতেই এখন কাঁচাবাজার। ২০০৪ সালে বিদ্যালয় করার জন্য এই জমি কেনা হয়েছিল। সরেজমিনে দেখা যায়, সাইনবোর্ড ছাড়া বিদ্যালয়ের কোনো অবকাঠামো নেই। ওই জায়গায় সেমিপাকা কয়েকটি দোকান। স্থানীয় লোকজন জানান, দীর্ঘ দিন খালি পড়ে থাকায় এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সেখানে কাঁচাবাজার গড়ে তুলেছেন। দোকানগুলো থেকে দিনে ৫ হাজার টাকার বেশি ভাড়া তুলছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে রমনা থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. শাহানাজ বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জায়গাটি উদ্ধার করে সরকারি বিদ্যালয় স্থাপন, অবকাঠামো উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দন প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তিনটি ভবন। তবে প্রধান ফটক একটাই। ভবনগুলোর একটিতে লেখা মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয়, আরেকটি ভবনে বসেন থানা শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আরেকটি ভবনে মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরজাহান হামিদা বলেন, ‘আমাদের জমি দখল করে মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয় করা হয়েছে। জমি উদ্ধারে উচ্চ আদালতে মামলা চলছে।’ তবে মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি শাহ ইস্কান্দার আলী রাজু বলেন, ‘২০০২ সালে তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাস আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকের মাধ্যমে আমাদের জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। জমি দখলের অভিযোগ সত্য নয়। বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে। এর বেশি বলা সম্ভব নয়।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী, খিলগাঁও স্টাফ কোয়ার্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সামনের অংশে খিলগাঁও গভ. স্টাফ কোয়ার্টার হাইস্কুল এবং পেছনের অংশে রয়েছে কয়েকটি টিনের ছাপরা। প্রাথমিক বিদ্যালয়টির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের জমি দখল করেই হাইস্কুল ও ছাপরাগুলো তোলা হয়েছে। ছাপরাগুলো তুলে দখলে রেখেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি। বেদখল জমি উদ্ধারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, তেজগাঁও থানার বিকে আফতাব মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১ শতাংশ জমিতে বসবাস করছে একটি পরিবার। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
প্রতিবেদন বলছে, খিলগাঁওয়ের আইডিয়াল মুসলিম বালক-বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ওয়াসার পানির পাম্প বসানো হয়েছে। মাঠের অভাবে খেলতে না পারায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ওয়াসার পানির পাম্পে জায়গা বেদখল হয়েছে সুরিটোলা মডেল, মাতুয়াইল ২ নম্বর, সারুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ধানমন্ডি ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগরের বেশ কিছু সরকারি বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়ে গেছে। জমিগুলো উদ্ধারে উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি, শিগগির বেশ কিছু জমি উদ্ধার সম্ভব হবে।
রাজধানীর মগবাজারের মীরবাগ। সেখানে রমনা রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব শুধু সাইনবোর্ডে। বিদ্যালয়ের জন্য কেনা পাঁচ কাঠা জমিতে গড়ে উঠেছে পুরোদস্তুর কাঁচাবাজার। বিদ্যালয়ের বেদখল জমিতে থাকা সেমিপাকা দোকানগুলো থেকে ভাড়া তুলছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
কেবল মীরবাগের এই বিদ্যালয়ের নয়, রাজধানীর আরও ২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়ে গেছে। বেদখল জমির পরিমাণ ১৭ বিঘার বেশি। ১৬টি বিদ্যালয়ের জমি দখল করেছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ৫টির জমিতে পানির পাম্প করেছে ঢাকা ওয়াসা। বাকি জমি গেছে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, বস্তি, দোকান এবং ধর্মীয় স্থাপনায়। এ ছাড়া দুটি বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে মামলা চলছে। একটির জমির নামজারি নিয়ে জটিলতা রয়েছে।
আজকের পত্রিকার অনুসন্ধান এবং ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই চিত্র। জমি উদ্ধারে পদক্ষেপ নিতে গত জুনের মাঝামাঝি প্রতিবেদনটি ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মমতাজ বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধারে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট থানার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) প্রতিবেদন পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিধি অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা মহানগরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে মোট ৩৪২টি। এগুলো ১২টি শিক্ষা থানার অধীনে পরিচালিত হয়। বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী রয়েছে দেড় লাখের বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি সাতটি বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়েছে ডেমরা শিক্ষা থানায়। মতিঝিলে ছয়টি, মিরপুরে পাঁচটি, কোতোয়ালিতে চারটি, সূত্রাপুরে চারটি, মোহাম্মদপুরে তিনটি, রমনার একটি, তেজগাঁওয়ে একটি, ধানমন্ডিতে একটি এবং লালবাগ শিক্ষা থানার একটি বিদ্যালয়ের জমি দখল হয়ে গেছে।
নথিপত্র বলছে, ২০১৪ সালে ২৮টি বিদ্যালয়ের বেদখল হওয়া জমির পরিমাণ ছিল ২৪০ দশমিক ৯৫ শতাংশ বা সাড়ে ৭ বিঘা। বেদখল জমি উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে ওই বছর ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়। এরপর কিছু জমি উদ্ধার হলেও একপর্যায়ে উদ্ধার থেমে যায়।
পরে অন্যান্য বিদ্যালয়ের জমিও দখল হতে থাকে। ২০২৩ সালে জমি বেদখল হওয়া বিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০টি এবং বেদখল জমির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭২ দশমিক ১৫ শতাংশ বা ১৭ বিঘার বেশি। অর্থাৎ মাত্র ৯ বছরে বেদখল হওয়া জমির পরিমাণ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা মহানগরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দখল হওয়া জমি উদ্ধারে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অগ্রগতি প্রতি মাসে পর্যালোচনা ও মনিটরিংয়ের জন্য বিষয়টি মাসিক সমন্বয় সভার অ্যাজেন্ডাভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর আশা, শিগগির এর সুফল মিলবে।
২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৬টি বিদ্যালয়ের জমি ভোগদখল করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ৫টি জমিতে বসানো হয়েছে ঢাকা ওয়াসার পানির পাম্প।
শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসাও। সরকারি প্রতিষ্ঠানই যদি দখল করে, তাহলে তো লুটেরা গোষ্ঠী সাহস পাবেই। তিনি অবিলম্বে দখলদারদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবং বেদখল হওয়া জমি উদ্ধার করে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
২০২৩ সালের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি জমি দখল হয়েছে ডেমরার ধার্মিকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের, ৬৯ শতাংশ। ওই জমিতে থাকা বিশাল পুকুরটি দখল করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এ থানা এলাকার আরও ছয়টি বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়েছে।
মগবাজারের মীরবাগের রমনা রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরো পাঁচ কাঠা জমিতেই এখন কাঁচাবাজার। ২০০৪ সালে বিদ্যালয় করার জন্য এই জমি কেনা হয়েছিল। সরেজমিনে দেখা যায়, সাইনবোর্ড ছাড়া বিদ্যালয়ের কোনো অবকাঠামো নেই। ওই জায়গায় সেমিপাকা কয়েকটি দোকান। স্থানীয় লোকজন জানান, দীর্ঘ দিন খালি পড়ে থাকায় এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সেখানে কাঁচাবাজার গড়ে তুলেছেন। দোকানগুলো থেকে দিনে ৫ হাজার টাকার বেশি ভাড়া তুলছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে রমনা থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. শাহানাজ বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জায়গাটি উদ্ধার করে সরকারি বিদ্যালয় স্থাপন, অবকাঠামো উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দন প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তিনটি ভবন। তবে প্রধান ফটক একটাই। ভবনগুলোর একটিতে লেখা মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয়, আরেকটি ভবনে বসেন থানা শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আরেকটি ভবনে মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরজাহান হামিদা বলেন, ‘আমাদের জমি দখল করে মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয় করা হয়েছে। জমি উদ্ধারে উচ্চ আদালতে মামলা চলছে।’ তবে মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি শাহ ইস্কান্দার আলী রাজু বলেন, ‘২০০২ সালে তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাস আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকের মাধ্যমে আমাদের জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। জমি দখলের অভিযোগ সত্য নয়। বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে। এর বেশি বলা সম্ভব নয়।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী, খিলগাঁও স্টাফ কোয়ার্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সামনের অংশে খিলগাঁও গভ. স্টাফ কোয়ার্টার হাইস্কুল এবং পেছনের অংশে রয়েছে কয়েকটি টিনের ছাপরা। প্রাথমিক বিদ্যালয়টির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের জমি দখল করেই হাইস্কুল ও ছাপরাগুলো তোলা হয়েছে। ছাপরাগুলো তুলে দখলে রেখেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি। বেদখল জমি উদ্ধারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, তেজগাঁও থানার বিকে আফতাব মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১ শতাংশ জমিতে বসবাস করছে একটি পরিবার। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
প্রতিবেদন বলছে, খিলগাঁওয়ের আইডিয়াল মুসলিম বালক-বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ওয়াসার পানির পাম্প বসানো হয়েছে। মাঠের অভাবে খেলতে না পারায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ওয়াসার পানির পাম্পে জায়গা বেদখল হয়েছে সুরিটোলা মডেল, মাতুয়াইল ২ নম্বর, সারুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ধানমন্ডি ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগরের বেশ কিছু সরকারি বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়ে গেছে। জমিগুলো উদ্ধারে উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি, শিগগির বেশ কিছু জমি উদ্ধার সম্ভব হবে।
রাহুল শর্মা, ঢাকা
রাজধানীর মগবাজারের মীরবাগ। সেখানে রমনা রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব শুধু সাইনবোর্ডে। বিদ্যালয়ের জন্য কেনা পাঁচ কাঠা জমিতে গড়ে উঠেছে পুরোদস্তুর কাঁচাবাজার। বিদ্যালয়ের বেদখল জমিতে থাকা সেমিপাকা দোকানগুলো থেকে ভাড়া তুলছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
কেবল মীরবাগের এই বিদ্যালয়ের নয়, রাজধানীর আরও ২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়ে গেছে। বেদখল জমির পরিমাণ ১৭ বিঘার বেশি। ১৬টি বিদ্যালয়ের জমি দখল করেছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ৫টির জমিতে পানির পাম্প করেছে ঢাকা ওয়াসা। বাকি জমি গেছে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, বস্তি, দোকান এবং ধর্মীয় স্থাপনায়। এ ছাড়া দুটি বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে মামলা চলছে। একটির জমির নামজারি নিয়ে জটিলতা রয়েছে।
আজকের পত্রিকার অনুসন্ধান এবং ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই চিত্র। জমি উদ্ধারে পদক্ষেপ নিতে গত জুনের মাঝামাঝি প্রতিবেদনটি ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মমতাজ বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধারে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট থানার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) প্রতিবেদন পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিধি অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা মহানগরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে মোট ৩৪২টি। এগুলো ১২টি শিক্ষা থানার অধীনে পরিচালিত হয়। বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী রয়েছে দেড় লাখের বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি সাতটি বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়েছে ডেমরা শিক্ষা থানায়। মতিঝিলে ছয়টি, মিরপুরে পাঁচটি, কোতোয়ালিতে চারটি, সূত্রাপুরে চারটি, মোহাম্মদপুরে তিনটি, রমনার একটি, তেজগাঁওয়ে একটি, ধানমন্ডিতে একটি এবং লালবাগ শিক্ষা থানার একটি বিদ্যালয়ের জমি দখল হয়ে গেছে।
নথিপত্র বলছে, ২০১৪ সালে ২৮টি বিদ্যালয়ের বেদখল হওয়া জমির পরিমাণ ছিল ২৪০ দশমিক ৯৫ শতাংশ বা সাড়ে ৭ বিঘা। বেদখল জমি উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে ওই বছর ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়। এরপর কিছু জমি উদ্ধার হলেও একপর্যায়ে উদ্ধার থেমে যায়।
পরে অন্যান্য বিদ্যালয়ের জমিও দখল হতে থাকে। ২০২৩ সালে জমি বেদখল হওয়া বিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০টি এবং বেদখল জমির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭২ দশমিক ১৫ শতাংশ বা ১৭ বিঘার বেশি। অর্থাৎ মাত্র ৯ বছরে বেদখল হওয়া জমির পরিমাণ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা মহানগরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দখল হওয়া জমি উদ্ধারে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অগ্রগতি প্রতি মাসে পর্যালোচনা ও মনিটরিংয়ের জন্য বিষয়টি মাসিক সমন্বয় সভার অ্যাজেন্ডাভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর আশা, শিগগির এর সুফল মিলবে।
২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৬টি বিদ্যালয়ের জমি ভোগদখল করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ৫টি জমিতে বসানো হয়েছে ঢাকা ওয়াসার পানির পাম্প।
শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসাও। সরকারি প্রতিষ্ঠানই যদি দখল করে, তাহলে তো লুটেরা গোষ্ঠী সাহস পাবেই। তিনি অবিলম্বে দখলদারদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবং বেদখল হওয়া জমি উদ্ধার করে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
২০২৩ সালের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি জমি দখল হয়েছে ডেমরার ধার্মিকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের, ৬৯ শতাংশ। ওই জমিতে থাকা বিশাল পুকুরটি দখল করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এ থানা এলাকার আরও ছয়টি বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়েছে।
মগবাজারের মীরবাগের রমনা রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরো পাঁচ কাঠা জমিতেই এখন কাঁচাবাজার। ২০০৪ সালে বিদ্যালয় করার জন্য এই জমি কেনা হয়েছিল। সরেজমিনে দেখা যায়, সাইনবোর্ড ছাড়া বিদ্যালয়ের কোনো অবকাঠামো নেই। ওই জায়গায় সেমিপাকা কয়েকটি দোকান। স্থানীয় লোকজন জানান, দীর্ঘ দিন খালি পড়ে থাকায় এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সেখানে কাঁচাবাজার গড়ে তুলেছেন। দোকানগুলো থেকে দিনে ৫ হাজার টাকার বেশি ভাড়া তুলছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে রমনা থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. শাহানাজ বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জায়গাটি উদ্ধার করে সরকারি বিদ্যালয় স্থাপন, অবকাঠামো উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দন প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তিনটি ভবন। তবে প্রধান ফটক একটাই। ভবনগুলোর একটিতে লেখা মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয়, আরেকটি ভবনে বসেন থানা শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আরেকটি ভবনে মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরজাহান হামিদা বলেন, ‘আমাদের জমি দখল করে মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয় করা হয়েছে। জমি উদ্ধারে উচ্চ আদালতে মামলা চলছে।’ তবে মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি শাহ ইস্কান্দার আলী রাজু বলেন, ‘২০০২ সালে তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাস আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকের মাধ্যমে আমাদের জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। জমি দখলের অভিযোগ সত্য নয়। বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে। এর বেশি বলা সম্ভব নয়।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী, খিলগাঁও স্টাফ কোয়ার্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সামনের অংশে খিলগাঁও গভ. স্টাফ কোয়ার্টার হাইস্কুল এবং পেছনের অংশে রয়েছে কয়েকটি টিনের ছাপরা। প্রাথমিক বিদ্যালয়টির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের জমি দখল করেই হাইস্কুল ও ছাপরাগুলো তোলা হয়েছে। ছাপরাগুলো তুলে দখলে রেখেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি। বেদখল জমি উদ্ধারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, তেজগাঁও থানার বিকে আফতাব মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১ শতাংশ জমিতে বসবাস করছে একটি পরিবার। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
প্রতিবেদন বলছে, খিলগাঁওয়ের আইডিয়াল মুসলিম বালক-বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ওয়াসার পানির পাম্প বসানো হয়েছে। মাঠের অভাবে খেলতে না পারায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ওয়াসার পানির পাম্পে জায়গা বেদখল হয়েছে সুরিটোলা মডেল, মাতুয়াইল ২ নম্বর, সারুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ধানমন্ডি ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগরের বেশ কিছু সরকারি বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়ে গেছে। জমিগুলো উদ্ধারে উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি, শিগগির বেশ কিছু জমি উদ্ধার সম্ভব হবে।
রাজধানীর মগবাজারের মীরবাগ। সেখানে রমনা রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব শুধু সাইনবোর্ডে। বিদ্যালয়ের জন্য কেনা পাঁচ কাঠা জমিতে গড়ে উঠেছে পুরোদস্তুর কাঁচাবাজার। বিদ্যালয়ের বেদখল জমিতে থাকা সেমিপাকা দোকানগুলো থেকে ভাড়া তুলছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
কেবল মীরবাগের এই বিদ্যালয়ের নয়, রাজধানীর আরও ২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়ে গেছে। বেদখল জমির পরিমাণ ১৭ বিঘার বেশি। ১৬টি বিদ্যালয়ের জমি দখল করেছেন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ৫টির জমিতে পানির পাম্প করেছে ঢাকা ওয়াসা। বাকি জমি গেছে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজার, বস্তি, দোকান এবং ধর্মীয় স্থাপনায়। এ ছাড়া দুটি বিদ্যালয়ের জমি নিয়ে মামলা চলছে। একটির জমির নামজারি নিয়ে জটিলতা রয়েছে।
আজকের পত্রিকার অনুসন্ধান এবং ঢাকা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই চিত্র। জমি উদ্ধারে পদক্ষেপ নিতে গত জুনের মাঝামাঝি প্রতিবেদনটি ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
জানতে চাইলে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মমতাজ বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধারে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট থানার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) প্রতিবেদন পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিধি অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা মহানগরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে মোট ৩৪২টি। এগুলো ১২টি শিক্ষা থানার অধীনে পরিচালিত হয়। বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী রয়েছে দেড় লাখের বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি সাতটি বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়েছে ডেমরা শিক্ষা থানায়। মতিঝিলে ছয়টি, মিরপুরে পাঁচটি, কোতোয়ালিতে চারটি, সূত্রাপুরে চারটি, মোহাম্মদপুরে তিনটি, রমনার একটি, তেজগাঁওয়ে একটি, ধানমন্ডিতে একটি এবং লালবাগ শিক্ষা থানার একটি বিদ্যালয়ের জমি দখল হয়ে গেছে।
নথিপত্র বলছে, ২০১৪ সালে ২৮টি বিদ্যালয়ের বেদখল হওয়া জমির পরিমাণ ছিল ২৪০ দশমিক ৯৫ শতাংশ বা সাড়ে ৭ বিঘা। বেদখল জমি উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে ওই বছর ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়। এরপর কিছু জমি উদ্ধার হলেও একপর্যায়ে উদ্ধার থেমে যায়।
পরে অন্যান্য বিদ্যালয়ের জমিও দখল হতে থাকে। ২০২৩ সালে জমি বেদখল হওয়া বিদ্যালয়ের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০টি এবং বেদখল জমির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭২ দশমিক ১৫ শতাংশ বা ১৭ বিঘার বেশি। অর্থাৎ মাত্র ৯ বছরে বেদখল হওয়া জমির পরিমাণ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঢাকা মহানগরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দখল হওয়া জমি উদ্ধারে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অগ্রগতি প্রতি মাসে পর্যালোচনা ও মনিটরিংয়ের জন্য বিষয়টি মাসিক সমন্বয় সভার অ্যাজেন্ডাভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর আশা, শিগগির এর সুফল মিলবে।
২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৬টি বিদ্যালয়ের জমি ভোগদখল করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। ৫টি জমিতে বসানো হয়েছে ঢাকা ওয়াসার পানির পাম্প।
শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসাও। সরকারি প্রতিষ্ঠানই যদি দখল করে, তাহলে তো লুটেরা গোষ্ঠী সাহস পাবেই। তিনি অবিলম্বে দখলদারদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবং বেদখল হওয়া জমি উদ্ধার করে স্কুল কর্তৃপক্ষকে ফিরিয়ে দিতে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
২০২৩ সালের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি জমি দখল হয়েছে ডেমরার ধার্মিকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের, ৬৯ শতাংশ। ওই জমিতে থাকা বিশাল পুকুরটি দখল করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এ থানা এলাকার আরও ছয়টি বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়েছে।
মগবাজারের মীরবাগের রমনা রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরো পাঁচ কাঠা জমিতেই এখন কাঁচাবাজার। ২০০৪ সালে বিদ্যালয় করার জন্য এই জমি কেনা হয়েছিল। সরেজমিনে দেখা যায়, সাইনবোর্ড ছাড়া বিদ্যালয়ের কোনো অবকাঠামো নেই। ওই জায়গায় সেমিপাকা কয়েকটি দোকান। স্থানীয় লোকজন জানান, দীর্ঘ দিন খালি পড়ে থাকায় এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সেখানে কাঁচাবাজার গড়ে তুলেছেন। দোকানগুলো থেকে দিনে ৫ হাজার টাকার বেশি ভাড়া তুলছেন তাঁরা।
এ বিষয়ে রমনা থানা শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. শাহানাজ বেগম আজকের পত্রিকাকে বলেন, জায়গাটি উদ্ধার করে সরকারি বিদ্যালয় স্থাপন, অবকাঠামো উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দন প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তিনটি ভবন। তবে প্রধান ফটক একটাই। ভবনগুলোর একটিতে লেখা মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয়, আরেকটি ভবনে বসেন থানা শিক্ষা কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আরেকটি ভবনে মতিঝিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরজাহান হামিদা বলেন, ‘আমাদের জমি দখল করে মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয় করা হয়েছে। জমি উদ্ধারে উচ্চ আদালতে মামলা চলছে।’ তবে মতিঝিল কলোনি উচ্চবিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির সভাপতি শাহ ইস্কান্দার আলী রাজু বলেন, ‘২০০২ সালে তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাস আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকের মাধ্যমে আমাদের জমি বরাদ্দ দিয়েছেন। জমি দখলের অভিযোগ সত্য নয়। বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে। এর বেশি বলা সম্ভব নয়।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী, খিলগাঁও স্টাফ কোয়ার্টার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের সামনের অংশে খিলগাঁও গভ. স্টাফ কোয়ার্টার হাইস্কুল এবং পেছনের অংশে রয়েছে কয়েকটি টিনের ছাপরা। প্রাথমিক বিদ্যালয়টির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের জমি দখল করেই হাইস্কুল ও ছাপরাগুলো তোলা হয়েছে। ছাপরাগুলো তুলে দখলে রেখেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী এক ব্যক্তি। বেদখল জমি উদ্ধারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, তেজগাঁও থানার বিকে আফতাব মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১১ শতাংশ জমিতে বসবাস করছে একটি পরিবার। তবে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।
প্রতিবেদন বলছে, খিলগাঁওয়ের আইডিয়াল মুসলিম বালক-বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে ওয়াসার পানির পাম্প বসানো হয়েছে। মাঠের অভাবে খেলতে না পারায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। ওয়াসার পানির পাম্পে জায়গা বেদখল হয়েছে সুরিটোলা মডেল, মাতুয়াইল ২ নম্বর, সারুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ধানমন্ডি ১ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঢাকা মহানগরের বেশ কিছু সরকারি বিদ্যালয়ের জমি বেদখল হয়ে গেছে। জমিগুলো উদ্ধারে উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করছি, শিগগির বেশ কিছু জমি উদ্ধার সম্ভব হবে।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
রাজধানীর মগবাজারের মীরবাগ। সেখানে রমনা রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব শুধু সাইনবোর্ডে। বিদ্যালয়ের জন্য কেনা পাঁচ কাঠা জমিতে গড়ে উঠেছে পুরোদস্তুর কাঁচাবাজার। বিদ্যালয়ের বেদখল জমিতে থাকা সেমিপাকা দোকানগুলো থেকে ভাড়া তুলছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
০৩ আগস্ট ২০২৩‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
রাজধানীর মগবাজারের মীরবাগ। সেখানে রমনা রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব শুধু সাইনবোর্ডে। বিদ্যালয়ের জন্য কেনা পাঁচ কাঠা জমিতে গড়ে উঠেছে পুরোদস্তুর কাঁচাবাজার। বিদ্যালয়ের বেদখল জমিতে থাকা সেমিপাকা দোকানগুলো থেকে ভাড়া তুলছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
০৩ আগস্ট ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
রাজধানীর মগবাজারের মীরবাগ। সেখানে রমনা রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব শুধু সাইনবোর্ডে। বিদ্যালয়ের জন্য কেনা পাঁচ কাঠা জমিতে গড়ে উঠেছে পুরোদস্তুর কাঁচাবাজার। বিদ্যালয়ের বেদখল জমিতে থাকা সেমিপাকা দোকানগুলো থেকে ভাড়া তুলছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
০৩ আগস্ট ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
রাজধানীর মগবাজারের মীরবাগ। সেখানে রমনা রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব শুধু সাইনবোর্ডে। বিদ্যালয়ের জন্য কেনা পাঁচ কাঠা জমিতে গড়ে উঠেছে পুরোদস্তুর কাঁচাবাজার। বিদ্যালয়ের বেদখল জমিতে থাকা সেমিপাকা দোকানগুলো থেকে ভাড়া তুলছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
০৩ আগস্ট ২০২৩গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫