Ajker Patrika

ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব

কৃষ্ণ কর্মকার, বাউফল
আপডেট : ১৭ নভেম্বর ২০২১, ১২: ৩৬
ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব

অগ্রহায়ণের প্রথম দিন থেকেই পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কৃষকের ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে নবান্ন উৎসব। মাটি ও গোবর গুলিয়ে কিষানিরা বাড়ির উঠান ও ধানের গোলা লেপে পরিপাটি করেছেন। ধান কেটে আনা হবে বাড়ির আঙিনায়। ব্যস্ত কৃষক পরিবারের সদস্যেরা। নতুন ধানের আঁটি উঠানে আসার পরই তা মাড়াই করে রোদে শুকানো হয। তারপর চালকলে দিয়ে আতপ চাল আনা হয় । পরে ওই আতপ চাল ঢেঁকি বা জাঁতায় পিষে গুঁড়ি করবেন কিষানিরা। সন্ধ্যা হলেই কিষানিরা চালের গুঁড়ি নিয়ে রান্না ঘরে বসে পড়বেন নানা পিঠা পায়েস তৈরিতে।

দিনভর গতর খাঁটিয়ে কৃষক বসে যাবেন বৈঠকখানা অথবা ওঠোনের এক কোণে। চলবে জারি শারি গান। ভেতর থেকে ততক্ষণ বাতাসে পিঠা পায়েসের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়বে। বাড়ির ছোট ছেলেমেয়েরা পিঠাপুলির স্বাদ উপভোগ করবে। কিষানিরা গুনগুন করে গান গাইবেন। অগ্রহায়ণ এলেই এ যেন উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষক পরিবারের এটাই নবান্নের চিত্র।

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ধান কাটার উৎসব চলছে। কৃষক-কৃষাণী বসে নেই কেউ। পিঠা-পায়েসসহ নবান্নের আয়োজনে কেউবা ধান কাটছেন, কেউ করছেন মাড়াই। গৃহবধূরা ধান সিদ্ধ করে আতপ চাল ঢেঁকি কিংবা জাঁতায় গুঁড়ি করছেন।

নাজিরপুর ইউনিয়নের ধানদী গ্রামে আয়েশা আক্তার ঢেঁকিতে নতুন ধানের চাল থেকে গুঁড়ি করছিলেন। জিজ্ঞেস করতেই বলেন, ‘নতুন ধানের নতুন চাল। নবান্নের দিনে পিঠা পায়েস খাব।’

চরকান্দা গ্রামের কৃষক বাদল মিয়া বলেন, ‘একই দিনে গ্রামের সবাই মিলে নবান্ন উৎসবের আয়োজনে খুব মজা হয়। নবান্নের দিনে নতুন ধানের পিঠা-পায়েসসহ ভালো খাবারের আয়োজন হয়।’

উপজেলার প্রবীণ সাংস্কৃতিক কর্মী অমল সাহা বলেন, ‘এই নবান্নের উৎসব শুধু কৃষক পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। প্রতিটা ঘরে ঘরেই নবান্নের উৎসব হতো। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নবান্ন উৎসব উদ্‌যাপন করত। এখন আর উপজেলার সংগঠনগুলো এ উৎসব করে না। তবে কৃষক পরিবারগুলো চিরাচরিত সে নিয়মেই উৎসব মুখর পরিবেশে নবান্ন উৎসব উদ্‌যাপন করেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত