মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। কেন হারিয়েছেন, তার বিশদ বিবরণ দেওয়ার আর বেশি প্রয়োজন নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমসমূহে ডা. মুরাদ হাসানের অপকীর্তি ব্যাপক প্রচার ও ভাইরাল হয়েছে। মুরাদ হাসান রুচিবোধ, সৌজন্যতাবোধ, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নেওয়া শপথের অঙ্গীকার এবং স্বাভাবিক শিষ্টাচার চরমভাবে ভঙ্গ করেছেন। একজন উচ্চশিক্ষিত ডাক্তার হওয়া সত্ত্বেও তাঁর আচরণ, চিন্তার মান ও ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকা কিংবা পাত্তা না দেওয়ার বিষয়টি যেকোনো সাধারণ মানের একজন মানুষের কাছেও বেশ হতবাক হওয়ার মতো মনে হতে পারে। অথচ মুরাদ হাসান সেটিও পাত্তা দেননি। তিনি একজন প্রতিমন্ত্রী, এটিও ভুলে গেছেন। ঔদ্ধত্য ও সীমালঙ্ঘন সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা নিজের মধ্যে ছিল না। সে কারণে তিনি একের পর এক অঘটন ঘটিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর এসব ঘটনা ও কথাবার্তা ভাইরাল হতে পারে, বড় ধরনের সমালোচনার জন্ম দিতে পারে, সেই বোধও মনে হয় তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন। এটি যদি কোনো কম শিক্ষিত মানুষের দ্বারা সংঘটিত হতো, তাহলে একধরনের প্রবোধ দেওয়া যেত। কিন্তু উচ্চশিক্ষিত একজন ডাক্তার, রাজনৈতিক কর্মী ও নেতা থেকে প্রতিমন্ত্রীর পদে উত্তরণের পথ অতিক্রম করা মানুষ কীভাবে নিজেকে এতটা কুরুচিপূর্ণ মানুষের জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছে, সেটি ভাবতেও বেশ অবাক হতে হয়। সাধারণত মেধাবী ছেলেমেয়েরাই তো ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পান। তিনিও নিশ্চয়ই মেধাগুণে ডাক্তার হয়েছিলেন। রাজনীতিতেও তিনি দুই দশকের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন পদ-পদবি পেয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর পিতাও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। তবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়াকালে তিনি ছাত্রদলে যোগ দিলেন, পদ-পদবিও লাভ করেছিলেন। সেখান থেকে ছাত্রলীগে যোগদান এবং সভাপতির পদ অলংকৃত করার পর তাঁর রাজনীতির বাঁক পরিবর্তন হলো। ২০০৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে, পরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে ‘বদলি’ হলেন। এখন জানা যাচ্ছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাঁকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কারণে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নেওয়া হয়েছিল। নীতিনির্ধারকেরা যদি তখনই তাঁর কর্মের অগ্রপশ্চাৎ ভেবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন, তাহলে ডা. মুরাদ হাসানের ব্যক্তিগত এমন আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটার কিংবা প্রচার হওয়ার সুযোগ পেত না। ডা. মুরাদ হাসান নৈতিক স্খলনের যেসব ঘটনা ঘটিয়েছেন, সেগুলোও হয়তো ঘটানোর সাহস পেতেন না, যদি তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদে আসীন না থাকতেন। ব্যক্তিগত পর্যায়ে তিনি যদি কিছু ঘটিয়েও থাকতেন, তাহলে সেটির প্রচার ও দায় সরকার ও আওয়ামী লীগের ওপর এভাবে বর্তাত না। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বসে তিনি পদের মর্যাদাবোধ সম্পর্কে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। সে কারণে তিনি একের পর এক কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, যেগুলো ক্ষমতার অপব্যবহার, সীমালঙ্ঘন এবং নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ হিসেবে দুনিয়াজোড়া বিবেচিত।
প্রশ্ন হচ্ছে, তাঁর এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, রুচিবোধহীন কথাবার্তা, অশালীন ভাষার প্রয়োগ, নারীর প্রতি বিদ্বেষ ও বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি পোষণকারী ‘পুরুষত্বের’ প্রকাশ ঘটানোর পর তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলো কেন? লক্ষণ দেখামাত্রই তো সংগঠন ও মন্ত্রিপরিষদ থেকে হয় তাঁকে সতর্ক করে দেওয়া, নতুবা মাত্রা বিবেচনায় তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। তাহলে ডা. মুরাদ হাসানের ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় সরকার কিংবা আওয়ামী লীগের ওপর পড়ার সুযোগ পেত না। প্রায় তিন বছর যাবৎ তিনি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। চলচ্চিত্র জগতের একজন নায়িকার সঙ্গে তাঁর কুরুচিপূর্ণ ফোনালাপ ঘটেছে দুই বছর আগে। ফোনালাপটি এত দিন পরে কেন ভাইরাল হলো? তখনই তো নীতিনির্ধারণী মহলের দৃষ্টিতে নেওয়া যেত। কেন নেওয়া হলো না, কারা নিল না, না নেওয়ার পরিণতিটা আরও কত ভয়ংকর হলো, সেটি এখন বুঝেও তো তেমন কোনো লাভ নেই, ক্ষতি যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। ডা. মুরাদ হাসান অপকর্মের রাশ বৃদ্ধি ঘটিয়েছিলেন, নিজেকে তিনি বেসামাল পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর এই বেসামাল হওয়াটা কি স্বাভাবিক নিয়মে ঘটেছে, নাকি সরকার ও আওয়ামী লীগকে সমালোচিত করার কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে করা হয়েছিল, সেটি আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। তবে নীতিনির্ধারকেরা মুরাদ হাসানের সবকিছু রাজনৈতিক ডায়াগনোসিস করে সত্যটা যাচাই করে দেখতে পারেন। ভাগ্য ভালো, মুরাদ হাসানের বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেন। মুরাদ হাসান মুহূর্তের মধ্যেই পর্বতের শিখর থেকে মাটিতে কুপোকাত হলেন। তাঁর আর মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ানোর শারীরিক ক্ষমতা থাকবে বলে মনে হয় না। ইতিমধ্যে তাঁকে জামালপুর আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে এটি উত্থাপিত হবে, সেখান থেকে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল হলে সংসদ সদস্যপদও তাঁকে হারাতে হবে। এখন তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের মামলা হলে তাঁকে জেলেও যেতে হতে পারে। মাত্র তিন-চার দিনের ব্যবধানে একজন দাম্ভিক অবিমৃশ্যকারী ব্যক্তির জীবনে কত বড় ধস নামতে পারে, সেটির সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছেন ডা. মুরাদ হাসান। এর অল্প কিছুদিন আগেই গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ব্যাপারেও তা-ই ঘটেছে। রাজশাহীর কাটাখালীর পৌর মেয়র আব্বাস আলীর জীবনেও তা-ই হয়েছে। রাজনীতির উচ্চশিখরে ওঠা মানে সবকিছুকে অবজ্ঞা ও অবহেলা করে পথচলা নয়, বরং যত উচ্চে ওঠা, তত পিচ্ছিল পথ অতিক্রমের সচেতনতা থাকতে হয়। এতে সামান্যতম অসচেতনতাই যে পদস্খলনের দুর্ঘটনা ঘটায়। তাতে অপমৃত্যু অবধারিতভাবেই ঘটে।
সব সময় বলতে শুনি যে, নীতিনির্ধারণী মহলের কাছে সব নেতা-কর্মীরই রাজনৈতিক আমলনামা জমা আছে। এই আমলনামা কতটা সঠিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়, সেটি নিয়ে বোধ হয় এখন যাচাই-বাছাই করা দরকার হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ যেহেতু টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় রয়েছে, তাই দলের অভ্যন্তরে অনেকেই রাজনীতির অনুশীলন না নিয়েই পদ-পদবি লাভ করেছেন। অনেকেই ব্যক্তিস্বার্থে পদ-পদবির অপব্যবহার করছেন। এটি গণমাধ্যমে নানাভাবে প্রচারিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে দলীয় রাজনীতিচর্চার চেয়ে ব্যক্তিগত ক্ষমতা, পদ-পদবি, অর্থ ও বিত্তে লাভবান হওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রবল হয়ে উঠেছে। সে কারণে বেশির ভাগ উপজেলা ও জেলা কমিটিতে চলছে বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতার গ্রুপিং। অভিযোগ আছে, নানা ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার, পদ-পদবি লাভের বাণিজ্যও এখন বেশ আলোচিত বিষয়। যে ইউপি নির্বাচন এখন চলছে, তার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের আমলনামা নিয়েও পত্রপত্রিকায় অনেক অভিযোগ, দুর্নীতি এমনকি মামলার আসামির মনোনয়ন লাভের সংবাদও প্রচারিত হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, অর্থ ও চাল আত্মসাৎ, চাঁদাবাজি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, দুস্থ ভাতার কার্ড নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, মারপিট, হুমকি, জখম ইত্যাদির মামলা ও অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর তাঁরা কীভাবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন লাভ করেন? উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের নেতারা কীভাবে এসব নাম কেন্দ্রে পাঠান? কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী প্রেরিত এসব প্রার্থীর রাজনৈতিক আমলনামা কতটা যাচাই-বাছাই করেন, খোঁজখবর রাখেন, সেটি এখন মস্ত বড় প্রশ্ন। তাহলে বোঝা যাচ্ছে, আমলনামার যে ডেটাবেইস, তাতে বোধ হয় বড় ধরনের ফাঁকফোকর রয়ে গেছে। কারা এসব তথ্য দিচ্ছেন, কীভাবে দিচ্ছেন, সেটিও বোধ হয় যাচাই-বাছাই করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এখনো গণমাধ্যমে বেশ কয়েকজন এমপি নানা ধরনের দুর্নীতির খবরে আলোচিত হচ্ছেন। সেগুলো সম্পর্কে বোধ হয় নীরবতা পালন নয়, বরং দল ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার অনুসন্ধান সম্পন্ন করে সিদ্ধান্ত দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য শুধু আওয়ামী লীগের মুরাদ হাসান দিয়েছেন তা নয়, বিএনপির নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা মুরাদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। বিএনপি মুরাদকে সমালোচনা করে থেমে থাকলে আলালের অপরাধের দায় মুছে যাবে না, বরং প্রমাণিত হবে তাদের কুরুচিপূর্ণ নারীবিদ্বেষী মনোভাব। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বেও এসব আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ মুরাদকে শাস্তির মুখোমুখি করেছে। বিএনপি কী করবে?

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। কেন হারিয়েছেন, তার বিশদ বিবরণ দেওয়ার আর বেশি প্রয়োজন নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমসমূহে ডা. মুরাদ হাসানের অপকীর্তি ব্যাপক প্রচার ও ভাইরাল হয়েছে। মুরাদ হাসান রুচিবোধ, সৌজন্যতাবোধ, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নেওয়া শপথের অঙ্গীকার এবং স্বাভাবিক শিষ্টাচার চরমভাবে ভঙ্গ করেছেন। একজন উচ্চশিক্ষিত ডাক্তার হওয়া সত্ত্বেও তাঁর আচরণ, চিন্তার মান ও ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকা কিংবা পাত্তা না দেওয়ার বিষয়টি যেকোনো সাধারণ মানের একজন মানুষের কাছেও বেশ হতবাক হওয়ার মতো মনে হতে পারে। অথচ মুরাদ হাসান সেটিও পাত্তা দেননি। তিনি একজন প্রতিমন্ত্রী, এটিও ভুলে গেছেন। ঔদ্ধত্য ও সীমালঙ্ঘন সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা নিজের মধ্যে ছিল না। সে কারণে তিনি একের পর এক অঘটন ঘটিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর এসব ঘটনা ও কথাবার্তা ভাইরাল হতে পারে, বড় ধরনের সমালোচনার জন্ম দিতে পারে, সেই বোধও মনে হয় তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন। এটি যদি কোনো কম শিক্ষিত মানুষের দ্বারা সংঘটিত হতো, তাহলে একধরনের প্রবোধ দেওয়া যেত। কিন্তু উচ্চশিক্ষিত একজন ডাক্তার, রাজনৈতিক কর্মী ও নেতা থেকে প্রতিমন্ত্রীর পদে উত্তরণের পথ অতিক্রম করা মানুষ কীভাবে নিজেকে এতটা কুরুচিপূর্ণ মানুষের জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছে, সেটি ভাবতেও বেশ অবাক হতে হয়। সাধারণত মেধাবী ছেলেমেয়েরাই তো ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পান। তিনিও নিশ্চয়ই মেধাগুণে ডাক্তার হয়েছিলেন। রাজনীতিতেও তিনি দুই দশকের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন পদ-পদবি পেয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর পিতাও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। তবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়াকালে তিনি ছাত্রদলে যোগ দিলেন, পদ-পদবিও লাভ করেছিলেন। সেখান থেকে ছাত্রলীগে যোগদান এবং সভাপতির পদ অলংকৃত করার পর তাঁর রাজনীতির বাঁক পরিবর্তন হলো। ২০০৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে, পরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে ‘বদলি’ হলেন। এখন জানা যাচ্ছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাঁকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কারণে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নেওয়া হয়েছিল। নীতিনির্ধারকেরা যদি তখনই তাঁর কর্মের অগ্রপশ্চাৎ ভেবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন, তাহলে ডা. মুরাদ হাসানের ব্যক্তিগত এমন আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটার কিংবা প্রচার হওয়ার সুযোগ পেত না। ডা. মুরাদ হাসান নৈতিক স্খলনের যেসব ঘটনা ঘটিয়েছেন, সেগুলোও হয়তো ঘটানোর সাহস পেতেন না, যদি তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদে আসীন না থাকতেন। ব্যক্তিগত পর্যায়ে তিনি যদি কিছু ঘটিয়েও থাকতেন, তাহলে সেটির প্রচার ও দায় সরকার ও আওয়ামী লীগের ওপর এভাবে বর্তাত না। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বসে তিনি পদের মর্যাদাবোধ সম্পর্কে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। সে কারণে তিনি একের পর এক কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, যেগুলো ক্ষমতার অপব্যবহার, সীমালঙ্ঘন এবং নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ হিসেবে দুনিয়াজোড়া বিবেচিত।
প্রশ্ন হচ্ছে, তাঁর এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, রুচিবোধহীন কথাবার্তা, অশালীন ভাষার প্রয়োগ, নারীর প্রতি বিদ্বেষ ও বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি পোষণকারী ‘পুরুষত্বের’ প্রকাশ ঘটানোর পর তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলো কেন? লক্ষণ দেখামাত্রই তো সংগঠন ও মন্ত্রিপরিষদ থেকে হয় তাঁকে সতর্ক করে দেওয়া, নতুবা মাত্রা বিবেচনায় তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। তাহলে ডা. মুরাদ হাসানের ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় সরকার কিংবা আওয়ামী লীগের ওপর পড়ার সুযোগ পেত না। প্রায় তিন বছর যাবৎ তিনি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। চলচ্চিত্র জগতের একজন নায়িকার সঙ্গে তাঁর কুরুচিপূর্ণ ফোনালাপ ঘটেছে দুই বছর আগে। ফোনালাপটি এত দিন পরে কেন ভাইরাল হলো? তখনই তো নীতিনির্ধারণী মহলের দৃষ্টিতে নেওয়া যেত। কেন নেওয়া হলো না, কারা নিল না, না নেওয়ার পরিণতিটা আরও কত ভয়ংকর হলো, সেটি এখন বুঝেও তো তেমন কোনো লাভ নেই, ক্ষতি যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। ডা. মুরাদ হাসান অপকর্মের রাশ বৃদ্ধি ঘটিয়েছিলেন, নিজেকে তিনি বেসামাল পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর এই বেসামাল হওয়াটা কি স্বাভাবিক নিয়মে ঘটেছে, নাকি সরকার ও আওয়ামী লীগকে সমালোচিত করার কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে করা হয়েছিল, সেটি আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। তবে নীতিনির্ধারকেরা মুরাদ হাসানের সবকিছু রাজনৈতিক ডায়াগনোসিস করে সত্যটা যাচাই করে দেখতে পারেন। ভাগ্য ভালো, মুরাদ হাসানের বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেন। মুরাদ হাসান মুহূর্তের মধ্যেই পর্বতের শিখর থেকে মাটিতে কুপোকাত হলেন। তাঁর আর মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ানোর শারীরিক ক্ষমতা থাকবে বলে মনে হয় না। ইতিমধ্যে তাঁকে জামালপুর আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে এটি উত্থাপিত হবে, সেখান থেকে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল হলে সংসদ সদস্যপদও তাঁকে হারাতে হবে। এখন তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের মামলা হলে তাঁকে জেলেও যেতে হতে পারে। মাত্র তিন-চার দিনের ব্যবধানে একজন দাম্ভিক অবিমৃশ্যকারী ব্যক্তির জীবনে কত বড় ধস নামতে পারে, সেটির সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছেন ডা. মুরাদ হাসান। এর অল্প কিছুদিন আগেই গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ব্যাপারেও তা-ই ঘটেছে। রাজশাহীর কাটাখালীর পৌর মেয়র আব্বাস আলীর জীবনেও তা-ই হয়েছে। রাজনীতির উচ্চশিখরে ওঠা মানে সবকিছুকে অবজ্ঞা ও অবহেলা করে পথচলা নয়, বরং যত উচ্চে ওঠা, তত পিচ্ছিল পথ অতিক্রমের সচেতনতা থাকতে হয়। এতে সামান্যতম অসচেতনতাই যে পদস্খলনের দুর্ঘটনা ঘটায়। তাতে অপমৃত্যু অবধারিতভাবেই ঘটে।
সব সময় বলতে শুনি যে, নীতিনির্ধারণী মহলের কাছে সব নেতা-কর্মীরই রাজনৈতিক আমলনামা জমা আছে। এই আমলনামা কতটা সঠিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়, সেটি নিয়ে বোধ হয় এখন যাচাই-বাছাই করা দরকার হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ যেহেতু টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় রয়েছে, তাই দলের অভ্যন্তরে অনেকেই রাজনীতির অনুশীলন না নিয়েই পদ-পদবি লাভ করেছেন। অনেকেই ব্যক্তিস্বার্থে পদ-পদবির অপব্যবহার করছেন। এটি গণমাধ্যমে নানাভাবে প্রচারিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে দলীয় রাজনীতিচর্চার চেয়ে ব্যক্তিগত ক্ষমতা, পদ-পদবি, অর্থ ও বিত্তে লাভবান হওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রবল হয়ে উঠেছে। সে কারণে বেশির ভাগ উপজেলা ও জেলা কমিটিতে চলছে বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতার গ্রুপিং। অভিযোগ আছে, নানা ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার, পদ-পদবি লাভের বাণিজ্যও এখন বেশ আলোচিত বিষয়। যে ইউপি নির্বাচন এখন চলছে, তার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের আমলনামা নিয়েও পত্রপত্রিকায় অনেক অভিযোগ, দুর্নীতি এমনকি মামলার আসামির মনোনয়ন লাভের সংবাদও প্রচারিত হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, অর্থ ও চাল আত্মসাৎ, চাঁদাবাজি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, দুস্থ ভাতার কার্ড নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, মারপিট, হুমকি, জখম ইত্যাদির মামলা ও অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর তাঁরা কীভাবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন লাভ করেন? উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের নেতারা কীভাবে এসব নাম কেন্দ্রে পাঠান? কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী প্রেরিত এসব প্রার্থীর রাজনৈতিক আমলনামা কতটা যাচাই-বাছাই করেন, খোঁজখবর রাখেন, সেটি এখন মস্ত বড় প্রশ্ন। তাহলে বোঝা যাচ্ছে, আমলনামার যে ডেটাবেইস, তাতে বোধ হয় বড় ধরনের ফাঁকফোকর রয়ে গেছে। কারা এসব তথ্য দিচ্ছেন, কীভাবে দিচ্ছেন, সেটিও বোধ হয় যাচাই-বাছাই করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এখনো গণমাধ্যমে বেশ কয়েকজন এমপি নানা ধরনের দুর্নীতির খবরে আলোচিত হচ্ছেন। সেগুলো সম্পর্কে বোধ হয় নীরবতা পালন নয়, বরং দল ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার অনুসন্ধান সম্পন্ন করে সিদ্ধান্ত দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য শুধু আওয়ামী লীগের মুরাদ হাসান দিয়েছেন তা নয়, বিএনপির নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা মুরাদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। বিএনপি মুরাদকে সমালোচনা করে থেমে থাকলে আলালের অপরাধের দায় মুছে যাবে না, বরং প্রমাণিত হবে তাদের কুরুচিপূর্ণ নারীবিদ্বেষী মনোভাব। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বেও এসব আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ মুরাদকে শাস্তির মুখোমুখি করেছে। বিএনপি কী করবে?
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। কেন হারিয়েছেন, তার বিশদ বিবরণ দেওয়ার আর বেশি প্রয়োজন নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমসমূহে ডা. মুরাদ হাসানের অপকীর্তি ব্যাপক প্রচার ও ভাইরাল হয়েছে। মুরাদ হাসান রুচিবোধ, সৌজন্যতাবোধ, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নেওয়া শপথের অঙ্গীকার এবং স্বাভাবিক শিষ্টাচার চরমভাবে ভঙ্গ করেছেন। একজন উচ্চশিক্ষিত ডাক্তার হওয়া সত্ত্বেও তাঁর আচরণ, চিন্তার মান ও ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকা কিংবা পাত্তা না দেওয়ার বিষয়টি যেকোনো সাধারণ মানের একজন মানুষের কাছেও বেশ হতবাক হওয়ার মতো মনে হতে পারে। অথচ মুরাদ হাসান সেটিও পাত্তা দেননি। তিনি একজন প্রতিমন্ত্রী, এটিও ভুলে গেছেন। ঔদ্ধত্য ও সীমালঙ্ঘন সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা নিজের মধ্যে ছিল না। সে কারণে তিনি একের পর এক অঘটন ঘটিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর এসব ঘটনা ও কথাবার্তা ভাইরাল হতে পারে, বড় ধরনের সমালোচনার জন্ম দিতে পারে, সেই বোধও মনে হয় তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন। এটি যদি কোনো কম শিক্ষিত মানুষের দ্বারা সংঘটিত হতো, তাহলে একধরনের প্রবোধ দেওয়া যেত। কিন্তু উচ্চশিক্ষিত একজন ডাক্তার, রাজনৈতিক কর্মী ও নেতা থেকে প্রতিমন্ত্রীর পদে উত্তরণের পথ অতিক্রম করা মানুষ কীভাবে নিজেকে এতটা কুরুচিপূর্ণ মানুষের জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছে, সেটি ভাবতেও বেশ অবাক হতে হয়। সাধারণত মেধাবী ছেলেমেয়েরাই তো ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পান। তিনিও নিশ্চয়ই মেধাগুণে ডাক্তার হয়েছিলেন। রাজনীতিতেও তিনি দুই দশকের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন পদ-পদবি পেয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর পিতাও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। তবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়াকালে তিনি ছাত্রদলে যোগ দিলেন, পদ-পদবিও লাভ করেছিলেন। সেখান থেকে ছাত্রলীগে যোগদান এবং সভাপতির পদ অলংকৃত করার পর তাঁর রাজনীতির বাঁক পরিবর্তন হলো। ২০০৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে, পরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে ‘বদলি’ হলেন। এখন জানা যাচ্ছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাঁকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কারণে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নেওয়া হয়েছিল। নীতিনির্ধারকেরা যদি তখনই তাঁর কর্মের অগ্রপশ্চাৎ ভেবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন, তাহলে ডা. মুরাদ হাসানের ব্যক্তিগত এমন আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটার কিংবা প্রচার হওয়ার সুযোগ পেত না। ডা. মুরাদ হাসান নৈতিক স্খলনের যেসব ঘটনা ঘটিয়েছেন, সেগুলোও হয়তো ঘটানোর সাহস পেতেন না, যদি তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদে আসীন না থাকতেন। ব্যক্তিগত পর্যায়ে তিনি যদি কিছু ঘটিয়েও থাকতেন, তাহলে সেটির প্রচার ও দায় সরকার ও আওয়ামী লীগের ওপর এভাবে বর্তাত না। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বসে তিনি পদের মর্যাদাবোধ সম্পর্কে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। সে কারণে তিনি একের পর এক কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, যেগুলো ক্ষমতার অপব্যবহার, সীমালঙ্ঘন এবং নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ হিসেবে দুনিয়াজোড়া বিবেচিত।
প্রশ্ন হচ্ছে, তাঁর এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, রুচিবোধহীন কথাবার্তা, অশালীন ভাষার প্রয়োগ, নারীর প্রতি বিদ্বেষ ও বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি পোষণকারী ‘পুরুষত্বের’ প্রকাশ ঘটানোর পর তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলো কেন? লক্ষণ দেখামাত্রই তো সংগঠন ও মন্ত্রিপরিষদ থেকে হয় তাঁকে সতর্ক করে দেওয়া, নতুবা মাত্রা বিবেচনায় তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। তাহলে ডা. মুরাদ হাসানের ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় সরকার কিংবা আওয়ামী লীগের ওপর পড়ার সুযোগ পেত না। প্রায় তিন বছর যাবৎ তিনি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। চলচ্চিত্র জগতের একজন নায়িকার সঙ্গে তাঁর কুরুচিপূর্ণ ফোনালাপ ঘটেছে দুই বছর আগে। ফোনালাপটি এত দিন পরে কেন ভাইরাল হলো? তখনই তো নীতিনির্ধারণী মহলের দৃষ্টিতে নেওয়া যেত। কেন নেওয়া হলো না, কারা নিল না, না নেওয়ার পরিণতিটা আরও কত ভয়ংকর হলো, সেটি এখন বুঝেও তো তেমন কোনো লাভ নেই, ক্ষতি যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। ডা. মুরাদ হাসান অপকর্মের রাশ বৃদ্ধি ঘটিয়েছিলেন, নিজেকে তিনি বেসামাল পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর এই বেসামাল হওয়াটা কি স্বাভাবিক নিয়মে ঘটেছে, নাকি সরকার ও আওয়ামী লীগকে সমালোচিত করার কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে করা হয়েছিল, সেটি আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। তবে নীতিনির্ধারকেরা মুরাদ হাসানের সবকিছু রাজনৈতিক ডায়াগনোসিস করে সত্যটা যাচাই করে দেখতে পারেন। ভাগ্য ভালো, মুরাদ হাসানের বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেন। মুরাদ হাসান মুহূর্তের মধ্যেই পর্বতের শিখর থেকে মাটিতে কুপোকাত হলেন। তাঁর আর মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ানোর শারীরিক ক্ষমতা থাকবে বলে মনে হয় না। ইতিমধ্যে তাঁকে জামালপুর আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে এটি উত্থাপিত হবে, সেখান থেকে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল হলে সংসদ সদস্যপদও তাঁকে হারাতে হবে। এখন তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের মামলা হলে তাঁকে জেলেও যেতে হতে পারে। মাত্র তিন-চার দিনের ব্যবধানে একজন দাম্ভিক অবিমৃশ্যকারী ব্যক্তির জীবনে কত বড় ধস নামতে পারে, সেটির সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছেন ডা. মুরাদ হাসান। এর অল্প কিছুদিন আগেই গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ব্যাপারেও তা-ই ঘটেছে। রাজশাহীর কাটাখালীর পৌর মেয়র আব্বাস আলীর জীবনেও তা-ই হয়েছে। রাজনীতির উচ্চশিখরে ওঠা মানে সবকিছুকে অবজ্ঞা ও অবহেলা করে পথচলা নয়, বরং যত উচ্চে ওঠা, তত পিচ্ছিল পথ অতিক্রমের সচেতনতা থাকতে হয়। এতে সামান্যতম অসচেতনতাই যে পদস্খলনের দুর্ঘটনা ঘটায়। তাতে অপমৃত্যু অবধারিতভাবেই ঘটে।
সব সময় বলতে শুনি যে, নীতিনির্ধারণী মহলের কাছে সব নেতা-কর্মীরই রাজনৈতিক আমলনামা জমা আছে। এই আমলনামা কতটা সঠিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়, সেটি নিয়ে বোধ হয় এখন যাচাই-বাছাই করা দরকার হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ যেহেতু টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় রয়েছে, তাই দলের অভ্যন্তরে অনেকেই রাজনীতির অনুশীলন না নিয়েই পদ-পদবি লাভ করেছেন। অনেকেই ব্যক্তিস্বার্থে পদ-পদবির অপব্যবহার করছেন। এটি গণমাধ্যমে নানাভাবে প্রচারিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে দলীয় রাজনীতিচর্চার চেয়ে ব্যক্তিগত ক্ষমতা, পদ-পদবি, অর্থ ও বিত্তে লাভবান হওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রবল হয়ে উঠেছে। সে কারণে বেশির ভাগ উপজেলা ও জেলা কমিটিতে চলছে বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতার গ্রুপিং। অভিযোগ আছে, নানা ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার, পদ-পদবি লাভের বাণিজ্যও এখন বেশ আলোচিত বিষয়। যে ইউপি নির্বাচন এখন চলছে, তার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের আমলনামা নিয়েও পত্রপত্রিকায় অনেক অভিযোগ, দুর্নীতি এমনকি মামলার আসামির মনোনয়ন লাভের সংবাদও প্রচারিত হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, অর্থ ও চাল আত্মসাৎ, চাঁদাবাজি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, দুস্থ ভাতার কার্ড নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, মারপিট, হুমকি, জখম ইত্যাদির মামলা ও অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর তাঁরা কীভাবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন লাভ করেন? উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের নেতারা কীভাবে এসব নাম কেন্দ্রে পাঠান? কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী প্রেরিত এসব প্রার্থীর রাজনৈতিক আমলনামা কতটা যাচাই-বাছাই করেন, খোঁজখবর রাখেন, সেটি এখন মস্ত বড় প্রশ্ন। তাহলে বোঝা যাচ্ছে, আমলনামার যে ডেটাবেইস, তাতে বোধ হয় বড় ধরনের ফাঁকফোকর রয়ে গেছে। কারা এসব তথ্য দিচ্ছেন, কীভাবে দিচ্ছেন, সেটিও বোধ হয় যাচাই-বাছাই করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এখনো গণমাধ্যমে বেশ কয়েকজন এমপি নানা ধরনের দুর্নীতির খবরে আলোচিত হচ্ছেন। সেগুলো সম্পর্কে বোধ হয় নীরবতা পালন নয়, বরং দল ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার অনুসন্ধান সম্পন্ন করে সিদ্ধান্ত দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য শুধু আওয়ামী লীগের মুরাদ হাসান দিয়েছেন তা নয়, বিএনপির নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা মুরাদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। বিএনপি মুরাদকে সমালোচনা করে থেমে থাকলে আলালের অপরাধের দায় মুছে যাবে না, বরং প্রমাণিত হবে তাদের কুরুচিপূর্ণ নারীবিদ্বেষী মনোভাব। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বেও এসব আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ মুরাদকে শাস্তির মুখোমুখি করেছে। বিএনপি কী করবে?

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। কেন হারিয়েছেন, তার বিশদ বিবরণ দেওয়ার আর বেশি প্রয়োজন নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমসমূহে ডা. মুরাদ হাসানের অপকীর্তি ব্যাপক প্রচার ও ভাইরাল হয়েছে। মুরাদ হাসান রুচিবোধ, সৌজন্যতাবোধ, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নেওয়া শপথের অঙ্গীকার এবং স্বাভাবিক শিষ্টাচার চরমভাবে ভঙ্গ করেছেন। একজন উচ্চশিক্ষিত ডাক্তার হওয়া সত্ত্বেও তাঁর আচরণ, চিন্তার মান ও ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকা কিংবা পাত্তা না দেওয়ার বিষয়টি যেকোনো সাধারণ মানের একজন মানুষের কাছেও বেশ হতবাক হওয়ার মতো মনে হতে পারে। অথচ মুরাদ হাসান সেটিও পাত্তা দেননি। তিনি একজন প্রতিমন্ত্রী, এটিও ভুলে গেছেন। ঔদ্ধত্য ও সীমালঙ্ঘন সম্পর্কে তাঁর কোনো ধারণা নিজের মধ্যে ছিল না। সে কারণে তিনি একের পর এক অঘটন ঘটিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর এসব ঘটনা ও কথাবার্তা ভাইরাল হতে পারে, বড় ধরনের সমালোচনার জন্ম দিতে পারে, সেই বোধও মনে হয় তিনি হারিয়ে ফেলেছিলেন। এটি যদি কোনো কম শিক্ষিত মানুষের দ্বারা সংঘটিত হতো, তাহলে একধরনের প্রবোধ দেওয়া যেত। কিন্তু উচ্চশিক্ষিত একজন ডাক্তার, রাজনৈতিক কর্মী ও নেতা থেকে প্রতিমন্ত্রীর পদে উত্তরণের পথ অতিক্রম করা মানুষ কীভাবে নিজেকে এতটা কুরুচিপূর্ণ মানুষের জায়গায় নিয়ে যেতে পেরেছে, সেটি ভাবতেও বেশ অবাক হতে হয়। সাধারণত মেধাবী ছেলেমেয়েরাই তো ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পান। তিনিও নিশ্চয়ই মেধাগুণে ডাক্তার হয়েছিলেন। রাজনীতিতেও তিনি দুই দশকের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন পদ-পদবি পেয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর পিতাও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন। তবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পড়াকালে তিনি ছাত্রদলে যোগ দিলেন, পদ-পদবিও লাভ করেছিলেন। সেখান থেকে ছাত্রলীগে যোগদান এবং সভাপতির পদ অলংকৃত করার পর তাঁর রাজনীতির বাঁক পরিবর্তন হলো। ২০০৮ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে, পরে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে ‘বদলি’ হলেন। এখন জানা যাচ্ছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে তাঁকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কারণে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে নেওয়া হয়েছিল। নীতিনির্ধারকেরা যদি তখনই তাঁর কর্মের অগ্রপশ্চাৎ ভেবে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন, তাহলে ডা. মুরাদ হাসানের ব্যক্তিগত এমন আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটার কিংবা প্রচার হওয়ার সুযোগ পেত না। ডা. মুরাদ হাসান নৈতিক স্খলনের যেসব ঘটনা ঘটিয়েছেন, সেগুলোও হয়তো ঘটানোর সাহস পেতেন না, যদি তিনি প্রতিমন্ত্রীর পদে আসীন না থাকতেন। ব্যক্তিগত পর্যায়ে তিনি যদি কিছু ঘটিয়েও থাকতেন, তাহলে সেটির প্রচার ও দায় সরকার ও আওয়ামী লীগের ওপর এভাবে বর্তাত না। কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বসে তিনি পদের মর্যাদাবোধ সম্পর্কে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। সে কারণে তিনি একের পর এক কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন, যেগুলো ক্ষমতার অপব্যবহার, সীমালঙ্ঘন এবং নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধ হিসেবে দুনিয়াজোড়া বিবেচিত।
প্রশ্ন হচ্ছে, তাঁর এমন উচ্ছৃঙ্খল আচরণ, রুচিবোধহীন কথাবার্তা, অশালীন ভাষার প্রয়োগ, নারীর প্রতি বিদ্বেষ ও বিকৃত দৃষ্টিভঙ্গি পোষণকারী ‘পুরুষত্বের’ প্রকাশ ঘটানোর পর তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলো কেন? লক্ষণ দেখামাত্রই তো সংগঠন ও মন্ত্রিপরিষদ থেকে হয় তাঁকে সতর্ক করে দেওয়া, নতুবা মাত্রা বিবেচনায় তখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। তাহলে ডা. মুরাদ হাসানের ব্যক্তিগত অপকর্মের দায় সরকার কিংবা আওয়ামী লীগের ওপর পড়ার সুযোগ পেত না। প্রায় তিন বছর যাবৎ তিনি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। চলচ্চিত্র জগতের একজন নায়িকার সঙ্গে তাঁর কুরুচিপূর্ণ ফোনালাপ ঘটেছে দুই বছর আগে। ফোনালাপটি এত দিন পরে কেন ভাইরাল হলো? তখনই তো নীতিনির্ধারণী মহলের দৃষ্টিতে নেওয়া যেত। কেন নেওয়া হলো না, কারা নিল না, না নেওয়ার পরিণতিটা আরও কত ভয়ংকর হলো, সেটি এখন বুঝেও তো তেমন কোনো লাভ নেই, ক্ষতি যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। ডা. মুরাদ হাসান অপকর্মের রাশ বৃদ্ধি ঘটিয়েছিলেন, নিজেকে তিনি বেসামাল পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর এই বেসামাল হওয়াটা কি স্বাভাবিক নিয়মে ঘটেছে, নাকি সরকার ও আওয়ামী লীগকে সমালোচিত করার কোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে করা হয়েছিল, সেটি আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। তবে নীতিনির্ধারকেরা মুরাদ হাসানের সবকিছু রাজনৈতিক ডায়াগনোসিস করে সত্যটা যাচাই করে দেখতে পারেন। ভাগ্য ভালো, মুরাদ হাসানের বিষয়টি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেন। মুরাদ হাসান মুহূর্তের মধ্যেই পর্বতের শিখর থেকে মাটিতে কুপোকাত হলেন। তাঁর আর মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ানোর শারীরিক ক্ষমতা থাকবে বলে মনে হয় না। ইতিমধ্যে তাঁকে জামালপুর আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটিতে এটি উত্থাপিত হবে, সেখান থেকে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ বাতিল হলে সংসদ সদস্যপদও তাঁকে হারাতে হবে। এখন তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের মামলা হলে তাঁকে জেলেও যেতে হতে পারে। মাত্র তিন-চার দিনের ব্যবধানে একজন দাম্ভিক অবিমৃশ্যকারী ব্যক্তির জীবনে কত বড় ধস নামতে পারে, সেটির সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছেন ডা. মুরাদ হাসান। এর অল্প কিছুদিন আগেই গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ব্যাপারেও তা-ই ঘটেছে। রাজশাহীর কাটাখালীর পৌর মেয়র আব্বাস আলীর জীবনেও তা-ই হয়েছে। রাজনীতির উচ্চশিখরে ওঠা মানে সবকিছুকে অবজ্ঞা ও অবহেলা করে পথচলা নয়, বরং যত উচ্চে ওঠা, তত পিচ্ছিল পথ অতিক্রমের সচেতনতা থাকতে হয়। এতে সামান্যতম অসচেতনতাই যে পদস্খলনের দুর্ঘটনা ঘটায়। তাতে অপমৃত্যু অবধারিতভাবেই ঘটে।
সব সময় বলতে শুনি যে, নীতিনির্ধারণী মহলের কাছে সব নেতা-কর্মীরই রাজনৈতিক আমলনামা জমা আছে। এই আমলনামা কতটা সঠিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়, সেটি নিয়ে বোধ হয় এখন যাচাই-বাছাই করা দরকার হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ যেহেতু টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় রয়েছে, তাই দলের অভ্যন্তরে অনেকেই রাজনীতির অনুশীলন না নিয়েই পদ-পদবি লাভ করেছেন। অনেকেই ব্যক্তিস্বার্থে পদ-পদবির অপব্যবহার করছেন। এটি গণমাধ্যমে নানাভাবে প্রচারিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে দলীয় রাজনীতিচর্চার চেয়ে ব্যক্তিগত ক্ষমতা, পদ-পদবি, অর্থ ও বিত্তে লাভবান হওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রবল হয়ে উঠেছে। সে কারণে বেশির ভাগ উপজেলা ও জেলা কমিটিতে চলছে বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতার গ্রুপিং। অভিযোগ আছে, নানা ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার, পদ-পদবি লাভের বাণিজ্যও এখন বেশ আলোচিত বিষয়। যে ইউপি নির্বাচন এখন চলছে, তার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের আমলনামা নিয়েও পত্রপত্রিকায় অনেক অভিযোগ, দুর্নীতি এমনকি মামলার আসামির মনোনয়ন লাভের সংবাদও প্রচারিত হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, অর্থ ও চাল আত্মসাৎ, চাঁদাবাজি, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, দুস্থ ভাতার কার্ড নিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতি, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, মারপিট, হুমকি, জখম ইত্যাদির মামলা ও অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর তাঁরা কীভাবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন লাভ করেন? উপজেলা ও জেলা পর্যায়ের নেতারা কীভাবে এসব নাম কেন্দ্রে পাঠান? কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলী প্রেরিত এসব প্রার্থীর রাজনৈতিক আমলনামা কতটা যাচাই-বাছাই করেন, খোঁজখবর রাখেন, সেটি এখন মস্ত বড় প্রশ্ন। তাহলে বোঝা যাচ্ছে, আমলনামার যে ডেটাবেইস, তাতে বোধ হয় বড় ধরনের ফাঁকফোকর রয়ে গেছে। কারা এসব তথ্য দিচ্ছেন, কীভাবে দিচ্ছেন, সেটিও বোধ হয় যাচাই-বাছাই করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। এখনো গণমাধ্যমে বেশ কয়েকজন এমপি নানা ধরনের দুর্নীতির খবরে আলোচিত হচ্ছেন। সেগুলো সম্পর্কে বোধ হয় নীরবতা পালন নয়, বরং দল ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থার অনুসন্ধান সম্পন্ন করে সিদ্ধান্ত দেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য শুধু আওয়ামী লীগের মুরাদ হাসান দিয়েছেন তা নয়, বিএনপির নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা মুরাদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। বিএনপি মুরাদকে সমালোচনা করে থেমে থাকলে আলালের অপরাধের দায় মুছে যাবে না, বরং প্রমাণিত হবে তাদের কুরুচিপূর্ণ নারীবিদ্বেষী মনোভাব। বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বেও এসব আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ মুরাদকে শাস্তির মুখোমুখি করেছে। বিএনপি কী করবে?

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। কেন হারিয়েছেন, তার বিশদ বিবরণ দেওয়ার আর বেশি প্রয়োজন নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমসমূহে ডা. মুরাদ হাসানের অপকীর্তি ব্যাপক প্রচার ও ভাইরাল হয়েছে।
১০ ডিসেম্বর ২০২১
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। কেন হারিয়েছেন, তার বিশদ বিবরণ দেওয়ার আর বেশি প্রয়োজন নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমসমূহে ডা. মুরাদ হাসানের অপকীর্তি ব্যাপক প্রচার ও ভাইরাল হয়েছে।
১০ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। কেন হারিয়েছেন, তার বিশদ বিবরণ দেওয়ার আর বেশি প্রয়োজন নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমসমূহে ডা. মুরাদ হাসানের অপকীর্তি ব্যাপক প্রচার ও ভাইরাল হয়েছে।
১০ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। কেন হারিয়েছেন, তার বিশদ বিবরণ দেওয়ার আর বেশি প্রয়োজন নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমসমূহে ডা. মুরাদ হাসানের অপকীর্তি ব্যাপক প্রচার ও ভাইরাল হয়েছে।
১০ ডিসেম্বর ২০২১
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫