বিধান রিবেরু

না গিলে যদি কেবল খাওয়া যেত, তাতেও বোধ হয় আমাদের উদর ও দেহ কিছুটা রক্ষা পেত। তবে সেটা শুধু সুকুমার রায়ের ছড়াতেই সম্ভব: খাচ্ছি কিন্তু গিলছি না। বাস্তবতা হলো, না খেতে চাইলেও আমাদের প্রতিনিয়ত গিলতে হয় বিষ। ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা কয়েক বছর ধরে কমলা ঘর থেকে লাল ঘরেই ওঠানামা করছে; অর্থাৎ ‘ভীষণ খারাপ’ থেকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ মাত্রার দূষণে আমরা বড় হচ্ছি, বুড়ো হচ্ছি এবং একটা সময় পর মারা যাচ্ছি। দেহের ভেতর খারাপ বাতাস ঢোকা তো আছেই, আর আছে অস্বাস্থ্যকর খাবার ভক্ষণ। পুরোনো আমলের গ্রিসে একটি কথা চালু ছিল: এমন খাবার খাও যেন তা ওষুধের কাজ করে, এমন ওষুধ খাও যা পেটের ক্ষুধা মেটায়। ঘুরেফিরে কথা একটাই, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং প্রকৃতিতে শাকসবজি-ফলমূলের ভেতরেই শারীরিক অসুখ-বিসুখের নিদান দেওয়া রয়েছে। আমরা আসলে বেমালুম যে মানুষ এই প্রকৃতিরই অংশ এবং বানর বা ভালুকদের কোনো বদ্যি নেই, নেই কোনো হাসপাতাল, তারা প্রকৃতিতে দিব্যি বেঁচেবর্তে আছে। ইদানীং তারা সংকটে রয়েছে মানুষের জন্যই, কারণ মানুষ নিজেদের সভ্য আখ্যা দিয়ে গোটা দুনিয়াকেই ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমাজন জঙ্গল উজাড় করে সেখানে গবাদিপশুর খামার বানাচ্ছে। আমিষের চাহিদা মেটানোর নাম করে মানুষের জীবনকে ফেলে দিচ্ছে আরও ঝুঁকিতে।
আদতে আমরা যা খাই, বাজারের শাকসবজি থেকে শুরু করে পুকুরের মাছ কিংবা কসাইখানা ও খামার থেকে আসা মাংস-ডিম, সেগুলো কি আমাদের শরীরের জন্য ভালো? শাকসবজি ফলাতে যে ধরনের কীটনাশক ও সার ব্যবহার করা হয়, ফল পাকাতে যে ওষুধ দেওয়া হয় এবং আমিষের চাহিদা মেটাতে যে ধরনের খাবার মাছ-গবাদিপশু-হাঁস-মুরগিকে খাওয়ানো হয়, সেগুলোর ভেতর থাকা ক্ষতিকর উপাদান আমাদের শরীরে ঢুকছে প্রতিনিয়ত এবং এসব নিয়ে আমাদের ভ্রুক্ষেপ নেই, আমরা চিন্তিতও নই। এর বড় কারণ বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম খাদ্যসামগ্রী কিনতেই লোকে হিমশিম খাচ্ছে। মূল্যস্ফীতিতে কারও সর্বনাশ, কেউ আঙুল ফুলে কলাগাছ। এমন বাস্তবতায় ভালো খাবারের দাম তো আকাশচুম্বী, যা শুধু পাওয়া যায় পাঁচতারকা হোটেলে আর তাদের খদ্দের হতে পারে সে রকম লোকেদের বাড়িতে। তাই লোকে অস্বাস্থ্যকর খাবারই গিলছে শুধু বেঁচে থাকার তাগিদে। ঢাকায় তো মাছ আর মাংস নয়, ইদানীং মাছের কাঁটা আর মাংসের হাড় বিক্রি হয়। গরিব মানুষ দুধের সাধ ঘোলে মেটাচ্ছে সেসব কিনে। কী করুণ দশা আমাদের, অথচ আমরা দিনরাত উন্নয়নের নামতা মুখস্থ করছি।
ওদিকে মাছ-মাংসের বাইরে গিয়ে, উন্নত বিশ্বে এখন মানুষ ঝুঁকে পড়ছে উদ্ভিজ্জ খাদ্যের দিকে। তারা ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিচ্ছে পশুপাখির খামার। প্রোটিনের চাহিদা মাশরুমের কাছ থেকে মেটানো যায়, এমনকি মাংসাশী জিহ্বার জন্যও সেখানে উদ্ভিজ্জ উপাদান থেকে তৈরি হচ্ছে হ্যাম, সসেজ, বেকন প্রভৃতি, শুনলে অবাক হবেন—ডিম পর্যন্ত! বিশ্বাস না হলে দেখে নিতে পারেন ‘ইউ আর হোয়াট ইউ ইট: আ টুইন এক্সপেরিমেন্ট’ প্রামাণ্যচিত্রটি। নানা প্রকার উদ্ভিদ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ডিম, যা স্বাদ ও গুণে মুরগির পেটের ডিমের চেয়ে কম নয়! তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে আমাদেরও উচিত উদ্ভিজ্জ খাদ্যের ওপর নির্ভরতা বাড়ানো, এতে করে পশুপাখির ওপর চাপ কমবে, আর পশুপাখি কম খেলে পরিবেশের ওপর থেকে চাপ কমবে। অধিক খামার মানে অধিক কার্বন ডাই-অক্সাইড। অর্থনৈতিকভাবেও আমরা কিছুটা বেঁচে যাব। কারণ যে হারে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে, সেই হারে তো ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে না। শাকসবজি ফলানোর মতো যথেষ্ট জমিজমা এখনো আমাদের রয়েছে। যদিও কৃষিজমি রক্ষার্থে আমাদের পদক্ষেপ অত জোরালো নয়, শিগগিরই সেটা জোরালো করা উচিত। ইদানীং তো ছাদবাগানের সুফল পেয়েছেন অনেকে। কাজেই জমিতে কিংবা ছাদে যদি শাকসবজির চাষাবাদ বাড়ানো যায়, তাতে অনেক দিক দিয়েই আমরা রেহাই পাব বলে আমার বিশ্বাস। স্ট্যানফোর্ডভিত্তিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সর্বভুক, তাদের তুলনায় যারা নিরামিষভোজী, তাদের কালানুক্রমিক বয়সের বিবেচনায় শারীরিক বয়স কম, অর্থাৎ তাদের শরীরে বয়সের ছাপ সেভাবে পড়ে না। এই নিরীক্ষাটিই দেখানো হয়েছে ‘ইউ আর হোয়াট ইউ ইট’ প্রামাণ্যচিত্রে।
বিষয়টি আসলে জটিল কিছু নয়, আমিষের জন্য যে মাছ ও মাংস খাচ্ছি, সেসব খাবার হজমে আমাদের শরীরকে অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় করতে হয়, এর পাশাপাশি আমিষের হাত ধরে নানা প্রকার জীবাণুও শরীরে প্রবেশ করে, সেসবের সঙ্গেও লড়াই করতে হয় শরীরকে। অন্যদিকে, প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠা শাকসবজি আমাদের শরীরে কাজ করে ওষুধের মতো। শুধু প্রাচীন গ্রিসের লোকজনই যে বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছে, তা-ই নয়, এই ভারত উপমহাদেশের মুনি-ঋষি-সাধুরাও বিষয়টি জানতেন। সম্প্রতি সোমব্রত সরকারের ‘সাধুর হেঁশেল’ পড়লাম।
কিছু কথা পাঠকের পাতে তুলে দেওয়ার লোভ সংবরণ করতে পারছি না। সোমব্রত লিখেছেন: ‘সাধু বললেন, শাক হলো লোকঔষধি। আগে গায়ে যখন চুককানি হতো, ঠাকুরমা হেলেঞ্চা ভাজা করে দিতেন। চোখের রোগে হেলেঞ্চা পাতার রস খুব উপকারী। জ্যোতি বাড়ে চোখের।...বেথুয়া শাক বেটে রস করে খেলে অর্শ রোগে উপকার পাওয়া যায়।...পাটপাতা শুকিয়ে রাখতেন ঠাকুরমা একটা ধামার মধ্যে করে। শুক্তো রান্না করলে শুকনো পাটপাতা তিনি তার মধ্যে দিয়ে দিতেন। বলতেন, খাও, গ্যাস অম্বল হবে না পেটে।...পুঁইপাতার রস খেলে দীর্ঘকালীন অনিদ্রা রোগ সারে।’
এ তো কেবল শাক থেকে প্রাপ্ত ঔষধি গুণের বিবরণ। এমন করে দেখলে প্রকৃতিতে থাকা প্রতিটি শাকসবজি ও ফলফলাদিই আসলে শরীরকে সুরক্ষা ও আরোগ্য দিতে বেশ কার্যকারী। প্রাচীন আয়ুর্বেদচর্চা সেই কথাই বলে। তো আমরা সেসব ভুলেটুলে এখন বড় বড় ওষুধ কারখানা বানিয়েছি। করপোরেট বাণিজ্য। খাদ্যাভ্যাস পাল্টে যদি লোকে সুস্থ থাকে, নীরোগ থাকে, তাহলে তো এসব পুঁজিপতির লোকসান। তারা ওষুধ বিক্রি করবে কার কাছে? নিশ্চয়ই বনের বানর ও ভালুকের কাছে নয়। যদিও তাদের পেটও খারাপ হয়, বদহজম হয়। তাদের তো আর বড়ি কিনে খাওয়ার সুযোগ নেই। মুখপোড়া বানর নাকি পেট খারাপ হলে কাঠকয়লা খায়। আর তাতেই সেরে যায় পীড়া। সাপের কামড় খেলে, বেজি নাকি বিষ নামায় ঘৃতকুমারীগাছের পাতা চিবিয়ে। ইংরেজিতে বললে অনেকেই চিনবেন ঘৃতকুমারী কি—অ্যালোভেরা। ভেষজ চিকিৎসায় এই ঘৃতকুমারীর ব্যবহার হয় খ্রিষ্টপূর্ব যুগ থেকেই। অথচ আজ এর দেখা মেলে হাতে গোনা কয়েকজন ফেরিওয়ালার কাছে। তাও এটি ব্যবহার হয় শুধু রূপচর্চার উপাদান হিসেবে। আমরা সত্যি অদ্ভুত!
আজকাল তো বোতলজাত পানি খাওয়ারও জো নেই। মাইক্রোপ্লাস্টিক, অর্থাৎ প্লাস্টিকের অতিক্ষুদ্র কণা আমাদের পেটে গিয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে পুরো শরীরে। আর এর খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে নানাবিধ অসুখ-বিসুখের মাধ্যমে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও আমরা ফেলে দিচ্ছি ঝুঁকির ভেতর। অথচ উন্নত বিশ্বে কলতলার পানি পান করা যায় নির্দ্বিধায়। আমরা পানির কর পরিশোধ করেও পাই না জীবাণুমুক্ত সুপেয় পানি। দেশের নাগরিক যে পয়সা দেওয়ার পরও প্রাপ্য জিনিসটি পাচ্ছে না, তাতে দেনেওলাদের যেমন লজ্জা নেই, ভোক্তা শ্রেণিরও কোনো সচেতনতা নেই। বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গায় একই দশা। পয়সা ঠিকই দিচ্ছেন, কিন্তু সেবা বা পণ্য পাবেন তলানির কাছাকাছি।
বসবাসের অযোগ্য এক শহর ঢাকা, যেখানে আবার জীবনযাত্রায় ব্যয় টরন্টো কিংবা মন্ট্রিল শহরের মতো, সেই শহরে দিনকে দিন মানুষের ভিড় বাড়ছে। ভারী ভারী নির্মাণকাজ চলছে। এরই ভেতর আমাদের বেঁচে থাকতে হবে, বিশেষ করে যারা দুনিয়ার অন্যত্র দ্বিতীয় আবাসের ব্যবস্থা করিনি। তো এই সংগ্রামী বেঁচে থাকার একটি কৌশলী পদক্ষেপ হতে পারে আমাদের খাদ্যাভ্যাস পাল্টে ফেলা। জীবনযাত্রায় শরীরচর্চা যুক্ত করা। তাতে যদি কিছুটা নিস্তার মেলে।
বিধান রিবেরু, চলচ্চিত্র সমালোচক

না গিলে যদি কেবল খাওয়া যেত, তাতেও বোধ হয় আমাদের উদর ও দেহ কিছুটা রক্ষা পেত। তবে সেটা শুধু সুকুমার রায়ের ছড়াতেই সম্ভব: খাচ্ছি কিন্তু গিলছি না। বাস্তবতা হলো, না খেতে চাইলেও আমাদের প্রতিনিয়ত গিলতে হয় বিষ। ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা কয়েক বছর ধরে কমলা ঘর থেকে লাল ঘরেই ওঠানামা করছে; অর্থাৎ ‘ভীষণ খারাপ’ থেকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ মাত্রার দূষণে আমরা বড় হচ্ছি, বুড়ো হচ্ছি এবং একটা সময় পর মারা যাচ্ছি। দেহের ভেতর খারাপ বাতাস ঢোকা তো আছেই, আর আছে অস্বাস্থ্যকর খাবার ভক্ষণ। পুরোনো আমলের গ্রিসে একটি কথা চালু ছিল: এমন খাবার খাও যেন তা ওষুধের কাজ করে, এমন ওষুধ খাও যা পেটের ক্ষুধা মেটায়। ঘুরেফিরে কথা একটাই, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং প্রকৃতিতে শাকসবজি-ফলমূলের ভেতরেই শারীরিক অসুখ-বিসুখের নিদান দেওয়া রয়েছে। আমরা আসলে বেমালুম যে মানুষ এই প্রকৃতিরই অংশ এবং বানর বা ভালুকদের কোনো বদ্যি নেই, নেই কোনো হাসপাতাল, তারা প্রকৃতিতে দিব্যি বেঁচেবর্তে আছে। ইদানীং তারা সংকটে রয়েছে মানুষের জন্যই, কারণ মানুষ নিজেদের সভ্য আখ্যা দিয়ে গোটা দুনিয়াকেই ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমাজন জঙ্গল উজাড় করে সেখানে গবাদিপশুর খামার বানাচ্ছে। আমিষের চাহিদা মেটানোর নাম করে মানুষের জীবনকে ফেলে দিচ্ছে আরও ঝুঁকিতে।
আদতে আমরা যা খাই, বাজারের শাকসবজি থেকে শুরু করে পুকুরের মাছ কিংবা কসাইখানা ও খামার থেকে আসা মাংস-ডিম, সেগুলো কি আমাদের শরীরের জন্য ভালো? শাকসবজি ফলাতে যে ধরনের কীটনাশক ও সার ব্যবহার করা হয়, ফল পাকাতে যে ওষুধ দেওয়া হয় এবং আমিষের চাহিদা মেটাতে যে ধরনের খাবার মাছ-গবাদিপশু-হাঁস-মুরগিকে খাওয়ানো হয়, সেগুলোর ভেতর থাকা ক্ষতিকর উপাদান আমাদের শরীরে ঢুকছে প্রতিনিয়ত এবং এসব নিয়ে আমাদের ভ্রুক্ষেপ নেই, আমরা চিন্তিতও নই। এর বড় কারণ বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম খাদ্যসামগ্রী কিনতেই লোকে হিমশিম খাচ্ছে। মূল্যস্ফীতিতে কারও সর্বনাশ, কেউ আঙুল ফুলে কলাগাছ। এমন বাস্তবতায় ভালো খাবারের দাম তো আকাশচুম্বী, যা শুধু পাওয়া যায় পাঁচতারকা হোটেলে আর তাদের খদ্দের হতে পারে সে রকম লোকেদের বাড়িতে। তাই লোকে অস্বাস্থ্যকর খাবারই গিলছে শুধু বেঁচে থাকার তাগিদে। ঢাকায় তো মাছ আর মাংস নয়, ইদানীং মাছের কাঁটা আর মাংসের হাড় বিক্রি হয়। গরিব মানুষ দুধের সাধ ঘোলে মেটাচ্ছে সেসব কিনে। কী করুণ দশা আমাদের, অথচ আমরা দিনরাত উন্নয়নের নামতা মুখস্থ করছি।
ওদিকে মাছ-মাংসের বাইরে গিয়ে, উন্নত বিশ্বে এখন মানুষ ঝুঁকে পড়ছে উদ্ভিজ্জ খাদ্যের দিকে। তারা ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিচ্ছে পশুপাখির খামার। প্রোটিনের চাহিদা মাশরুমের কাছ থেকে মেটানো যায়, এমনকি মাংসাশী জিহ্বার জন্যও সেখানে উদ্ভিজ্জ উপাদান থেকে তৈরি হচ্ছে হ্যাম, সসেজ, বেকন প্রভৃতি, শুনলে অবাক হবেন—ডিম পর্যন্ত! বিশ্বাস না হলে দেখে নিতে পারেন ‘ইউ আর হোয়াট ইউ ইট: আ টুইন এক্সপেরিমেন্ট’ প্রামাণ্যচিত্রটি। নানা প্রকার উদ্ভিদ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ডিম, যা স্বাদ ও গুণে মুরগির পেটের ডিমের চেয়ে কম নয়! তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে আমাদেরও উচিত উদ্ভিজ্জ খাদ্যের ওপর নির্ভরতা বাড়ানো, এতে করে পশুপাখির ওপর চাপ কমবে, আর পশুপাখি কম খেলে পরিবেশের ওপর থেকে চাপ কমবে। অধিক খামার মানে অধিক কার্বন ডাই-অক্সাইড। অর্থনৈতিকভাবেও আমরা কিছুটা বেঁচে যাব। কারণ যে হারে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে, সেই হারে তো ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে না। শাকসবজি ফলানোর মতো যথেষ্ট জমিজমা এখনো আমাদের রয়েছে। যদিও কৃষিজমি রক্ষার্থে আমাদের পদক্ষেপ অত জোরালো নয়, শিগগিরই সেটা জোরালো করা উচিত। ইদানীং তো ছাদবাগানের সুফল পেয়েছেন অনেকে। কাজেই জমিতে কিংবা ছাদে যদি শাকসবজির চাষাবাদ বাড়ানো যায়, তাতে অনেক দিক দিয়েই আমরা রেহাই পাব বলে আমার বিশ্বাস। স্ট্যানফোর্ডভিত্তিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সর্বভুক, তাদের তুলনায় যারা নিরামিষভোজী, তাদের কালানুক্রমিক বয়সের বিবেচনায় শারীরিক বয়স কম, অর্থাৎ তাদের শরীরে বয়সের ছাপ সেভাবে পড়ে না। এই নিরীক্ষাটিই দেখানো হয়েছে ‘ইউ আর হোয়াট ইউ ইট’ প্রামাণ্যচিত্রে।
বিষয়টি আসলে জটিল কিছু নয়, আমিষের জন্য যে মাছ ও মাংস খাচ্ছি, সেসব খাবার হজমে আমাদের শরীরকে অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় করতে হয়, এর পাশাপাশি আমিষের হাত ধরে নানা প্রকার জীবাণুও শরীরে প্রবেশ করে, সেসবের সঙ্গেও লড়াই করতে হয় শরীরকে। অন্যদিকে, প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠা শাকসবজি আমাদের শরীরে কাজ করে ওষুধের মতো। শুধু প্রাচীন গ্রিসের লোকজনই যে বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছে, তা-ই নয়, এই ভারত উপমহাদেশের মুনি-ঋষি-সাধুরাও বিষয়টি জানতেন। সম্প্রতি সোমব্রত সরকারের ‘সাধুর হেঁশেল’ পড়লাম।
কিছু কথা পাঠকের পাতে তুলে দেওয়ার লোভ সংবরণ করতে পারছি না। সোমব্রত লিখেছেন: ‘সাধু বললেন, শাক হলো লোকঔষধি। আগে গায়ে যখন চুককানি হতো, ঠাকুরমা হেলেঞ্চা ভাজা করে দিতেন। চোখের রোগে হেলেঞ্চা পাতার রস খুব উপকারী। জ্যোতি বাড়ে চোখের।...বেথুয়া শাক বেটে রস করে খেলে অর্শ রোগে উপকার পাওয়া যায়।...পাটপাতা শুকিয়ে রাখতেন ঠাকুরমা একটা ধামার মধ্যে করে। শুক্তো রান্না করলে শুকনো পাটপাতা তিনি তার মধ্যে দিয়ে দিতেন। বলতেন, খাও, গ্যাস অম্বল হবে না পেটে।...পুঁইপাতার রস খেলে দীর্ঘকালীন অনিদ্রা রোগ সারে।’
এ তো কেবল শাক থেকে প্রাপ্ত ঔষধি গুণের বিবরণ। এমন করে দেখলে প্রকৃতিতে থাকা প্রতিটি শাকসবজি ও ফলফলাদিই আসলে শরীরকে সুরক্ষা ও আরোগ্য দিতে বেশ কার্যকারী। প্রাচীন আয়ুর্বেদচর্চা সেই কথাই বলে। তো আমরা সেসব ভুলেটুলে এখন বড় বড় ওষুধ কারখানা বানিয়েছি। করপোরেট বাণিজ্য। খাদ্যাভ্যাস পাল্টে যদি লোকে সুস্থ থাকে, নীরোগ থাকে, তাহলে তো এসব পুঁজিপতির লোকসান। তারা ওষুধ বিক্রি করবে কার কাছে? নিশ্চয়ই বনের বানর ও ভালুকের কাছে নয়। যদিও তাদের পেটও খারাপ হয়, বদহজম হয়। তাদের তো আর বড়ি কিনে খাওয়ার সুযোগ নেই। মুখপোড়া বানর নাকি পেট খারাপ হলে কাঠকয়লা খায়। আর তাতেই সেরে যায় পীড়া। সাপের কামড় খেলে, বেজি নাকি বিষ নামায় ঘৃতকুমারীগাছের পাতা চিবিয়ে। ইংরেজিতে বললে অনেকেই চিনবেন ঘৃতকুমারী কি—অ্যালোভেরা। ভেষজ চিকিৎসায় এই ঘৃতকুমারীর ব্যবহার হয় খ্রিষ্টপূর্ব যুগ থেকেই। অথচ আজ এর দেখা মেলে হাতে গোনা কয়েকজন ফেরিওয়ালার কাছে। তাও এটি ব্যবহার হয় শুধু রূপচর্চার উপাদান হিসেবে। আমরা সত্যি অদ্ভুত!
আজকাল তো বোতলজাত পানি খাওয়ারও জো নেই। মাইক্রোপ্লাস্টিক, অর্থাৎ প্লাস্টিকের অতিক্ষুদ্র কণা আমাদের পেটে গিয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে পুরো শরীরে। আর এর খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে নানাবিধ অসুখ-বিসুখের মাধ্যমে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও আমরা ফেলে দিচ্ছি ঝুঁকির ভেতর। অথচ উন্নত বিশ্বে কলতলার পানি পান করা যায় নির্দ্বিধায়। আমরা পানির কর পরিশোধ করেও পাই না জীবাণুমুক্ত সুপেয় পানি। দেশের নাগরিক যে পয়সা দেওয়ার পরও প্রাপ্য জিনিসটি পাচ্ছে না, তাতে দেনেওলাদের যেমন লজ্জা নেই, ভোক্তা শ্রেণিরও কোনো সচেতনতা নেই। বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গায় একই দশা। পয়সা ঠিকই দিচ্ছেন, কিন্তু সেবা বা পণ্য পাবেন তলানির কাছাকাছি।
বসবাসের অযোগ্য এক শহর ঢাকা, যেখানে আবার জীবনযাত্রায় ব্যয় টরন্টো কিংবা মন্ট্রিল শহরের মতো, সেই শহরে দিনকে দিন মানুষের ভিড় বাড়ছে। ভারী ভারী নির্মাণকাজ চলছে। এরই ভেতর আমাদের বেঁচে থাকতে হবে, বিশেষ করে যারা দুনিয়ার অন্যত্র দ্বিতীয় আবাসের ব্যবস্থা করিনি। তো এই সংগ্রামী বেঁচে থাকার একটি কৌশলী পদক্ষেপ হতে পারে আমাদের খাদ্যাভ্যাস পাল্টে ফেলা। জীবনযাত্রায় শরীরচর্চা যুক্ত করা। তাতে যদি কিছুটা নিস্তার মেলে।
বিধান রিবেরু, চলচ্চিত্র সমালোচক
বিধান রিবেরু

না গিলে যদি কেবল খাওয়া যেত, তাতেও বোধ হয় আমাদের উদর ও দেহ কিছুটা রক্ষা পেত। তবে সেটা শুধু সুকুমার রায়ের ছড়াতেই সম্ভব: খাচ্ছি কিন্তু গিলছি না। বাস্তবতা হলো, না খেতে চাইলেও আমাদের প্রতিনিয়ত গিলতে হয় বিষ। ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা কয়েক বছর ধরে কমলা ঘর থেকে লাল ঘরেই ওঠানামা করছে; অর্থাৎ ‘ভীষণ খারাপ’ থেকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ মাত্রার দূষণে আমরা বড় হচ্ছি, বুড়ো হচ্ছি এবং একটা সময় পর মারা যাচ্ছি। দেহের ভেতর খারাপ বাতাস ঢোকা তো আছেই, আর আছে অস্বাস্থ্যকর খাবার ভক্ষণ। পুরোনো আমলের গ্রিসে একটি কথা চালু ছিল: এমন খাবার খাও যেন তা ওষুধের কাজ করে, এমন ওষুধ খাও যা পেটের ক্ষুধা মেটায়। ঘুরেফিরে কথা একটাই, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং প্রকৃতিতে শাকসবজি-ফলমূলের ভেতরেই শারীরিক অসুখ-বিসুখের নিদান দেওয়া রয়েছে। আমরা আসলে বেমালুম যে মানুষ এই প্রকৃতিরই অংশ এবং বানর বা ভালুকদের কোনো বদ্যি নেই, নেই কোনো হাসপাতাল, তারা প্রকৃতিতে দিব্যি বেঁচেবর্তে আছে। ইদানীং তারা সংকটে রয়েছে মানুষের জন্যই, কারণ মানুষ নিজেদের সভ্য আখ্যা দিয়ে গোটা দুনিয়াকেই ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমাজন জঙ্গল উজাড় করে সেখানে গবাদিপশুর খামার বানাচ্ছে। আমিষের চাহিদা মেটানোর নাম করে মানুষের জীবনকে ফেলে দিচ্ছে আরও ঝুঁকিতে।
আদতে আমরা যা খাই, বাজারের শাকসবজি থেকে শুরু করে পুকুরের মাছ কিংবা কসাইখানা ও খামার থেকে আসা মাংস-ডিম, সেগুলো কি আমাদের শরীরের জন্য ভালো? শাকসবজি ফলাতে যে ধরনের কীটনাশক ও সার ব্যবহার করা হয়, ফল পাকাতে যে ওষুধ দেওয়া হয় এবং আমিষের চাহিদা মেটাতে যে ধরনের খাবার মাছ-গবাদিপশু-হাঁস-মুরগিকে খাওয়ানো হয়, সেগুলোর ভেতর থাকা ক্ষতিকর উপাদান আমাদের শরীরে ঢুকছে প্রতিনিয়ত এবং এসব নিয়ে আমাদের ভ্রুক্ষেপ নেই, আমরা চিন্তিতও নই। এর বড় কারণ বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম খাদ্যসামগ্রী কিনতেই লোকে হিমশিম খাচ্ছে। মূল্যস্ফীতিতে কারও সর্বনাশ, কেউ আঙুল ফুলে কলাগাছ। এমন বাস্তবতায় ভালো খাবারের দাম তো আকাশচুম্বী, যা শুধু পাওয়া যায় পাঁচতারকা হোটেলে আর তাদের খদ্দের হতে পারে সে রকম লোকেদের বাড়িতে। তাই লোকে অস্বাস্থ্যকর খাবারই গিলছে শুধু বেঁচে থাকার তাগিদে। ঢাকায় তো মাছ আর মাংস নয়, ইদানীং মাছের কাঁটা আর মাংসের হাড় বিক্রি হয়। গরিব মানুষ দুধের সাধ ঘোলে মেটাচ্ছে সেসব কিনে। কী করুণ দশা আমাদের, অথচ আমরা দিনরাত উন্নয়নের নামতা মুখস্থ করছি।
ওদিকে মাছ-মাংসের বাইরে গিয়ে, উন্নত বিশ্বে এখন মানুষ ঝুঁকে পড়ছে উদ্ভিজ্জ খাদ্যের দিকে। তারা ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিচ্ছে পশুপাখির খামার। প্রোটিনের চাহিদা মাশরুমের কাছ থেকে মেটানো যায়, এমনকি মাংসাশী জিহ্বার জন্যও সেখানে উদ্ভিজ্জ উপাদান থেকে তৈরি হচ্ছে হ্যাম, সসেজ, বেকন প্রভৃতি, শুনলে অবাক হবেন—ডিম পর্যন্ত! বিশ্বাস না হলে দেখে নিতে পারেন ‘ইউ আর হোয়াট ইউ ইট: আ টুইন এক্সপেরিমেন্ট’ প্রামাণ্যচিত্রটি। নানা প্রকার উদ্ভিদ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ডিম, যা স্বাদ ও গুণে মুরগির পেটের ডিমের চেয়ে কম নয়! তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে আমাদেরও উচিত উদ্ভিজ্জ খাদ্যের ওপর নির্ভরতা বাড়ানো, এতে করে পশুপাখির ওপর চাপ কমবে, আর পশুপাখি কম খেলে পরিবেশের ওপর থেকে চাপ কমবে। অধিক খামার মানে অধিক কার্বন ডাই-অক্সাইড। অর্থনৈতিকভাবেও আমরা কিছুটা বেঁচে যাব। কারণ যে হারে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে, সেই হারে তো ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে না। শাকসবজি ফলানোর মতো যথেষ্ট জমিজমা এখনো আমাদের রয়েছে। যদিও কৃষিজমি রক্ষার্থে আমাদের পদক্ষেপ অত জোরালো নয়, শিগগিরই সেটা জোরালো করা উচিত। ইদানীং তো ছাদবাগানের সুফল পেয়েছেন অনেকে। কাজেই জমিতে কিংবা ছাদে যদি শাকসবজির চাষাবাদ বাড়ানো যায়, তাতে অনেক দিক দিয়েই আমরা রেহাই পাব বলে আমার বিশ্বাস। স্ট্যানফোর্ডভিত্তিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সর্বভুক, তাদের তুলনায় যারা নিরামিষভোজী, তাদের কালানুক্রমিক বয়সের বিবেচনায় শারীরিক বয়স কম, অর্থাৎ তাদের শরীরে বয়সের ছাপ সেভাবে পড়ে না। এই নিরীক্ষাটিই দেখানো হয়েছে ‘ইউ আর হোয়াট ইউ ইট’ প্রামাণ্যচিত্রে।
বিষয়টি আসলে জটিল কিছু নয়, আমিষের জন্য যে মাছ ও মাংস খাচ্ছি, সেসব খাবার হজমে আমাদের শরীরকে অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় করতে হয়, এর পাশাপাশি আমিষের হাত ধরে নানা প্রকার জীবাণুও শরীরে প্রবেশ করে, সেসবের সঙ্গেও লড়াই করতে হয় শরীরকে। অন্যদিকে, প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠা শাকসবজি আমাদের শরীরে কাজ করে ওষুধের মতো। শুধু প্রাচীন গ্রিসের লোকজনই যে বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছে, তা-ই নয়, এই ভারত উপমহাদেশের মুনি-ঋষি-সাধুরাও বিষয়টি জানতেন। সম্প্রতি সোমব্রত সরকারের ‘সাধুর হেঁশেল’ পড়লাম।
কিছু কথা পাঠকের পাতে তুলে দেওয়ার লোভ সংবরণ করতে পারছি না। সোমব্রত লিখেছেন: ‘সাধু বললেন, শাক হলো লোকঔষধি। আগে গায়ে যখন চুককানি হতো, ঠাকুরমা হেলেঞ্চা ভাজা করে দিতেন। চোখের রোগে হেলেঞ্চা পাতার রস খুব উপকারী। জ্যোতি বাড়ে চোখের।...বেথুয়া শাক বেটে রস করে খেলে অর্শ রোগে উপকার পাওয়া যায়।...পাটপাতা শুকিয়ে রাখতেন ঠাকুরমা একটা ধামার মধ্যে করে। শুক্তো রান্না করলে শুকনো পাটপাতা তিনি তার মধ্যে দিয়ে দিতেন। বলতেন, খাও, গ্যাস অম্বল হবে না পেটে।...পুঁইপাতার রস খেলে দীর্ঘকালীন অনিদ্রা রোগ সারে।’
এ তো কেবল শাক থেকে প্রাপ্ত ঔষধি গুণের বিবরণ। এমন করে দেখলে প্রকৃতিতে থাকা প্রতিটি শাকসবজি ও ফলফলাদিই আসলে শরীরকে সুরক্ষা ও আরোগ্য দিতে বেশ কার্যকারী। প্রাচীন আয়ুর্বেদচর্চা সেই কথাই বলে। তো আমরা সেসব ভুলেটুলে এখন বড় বড় ওষুধ কারখানা বানিয়েছি। করপোরেট বাণিজ্য। খাদ্যাভ্যাস পাল্টে যদি লোকে সুস্থ থাকে, নীরোগ থাকে, তাহলে তো এসব পুঁজিপতির লোকসান। তারা ওষুধ বিক্রি করবে কার কাছে? নিশ্চয়ই বনের বানর ও ভালুকের কাছে নয়। যদিও তাদের পেটও খারাপ হয়, বদহজম হয়। তাদের তো আর বড়ি কিনে খাওয়ার সুযোগ নেই। মুখপোড়া বানর নাকি পেট খারাপ হলে কাঠকয়লা খায়। আর তাতেই সেরে যায় পীড়া। সাপের কামড় খেলে, বেজি নাকি বিষ নামায় ঘৃতকুমারীগাছের পাতা চিবিয়ে। ইংরেজিতে বললে অনেকেই চিনবেন ঘৃতকুমারী কি—অ্যালোভেরা। ভেষজ চিকিৎসায় এই ঘৃতকুমারীর ব্যবহার হয় খ্রিষ্টপূর্ব যুগ থেকেই। অথচ আজ এর দেখা মেলে হাতে গোনা কয়েকজন ফেরিওয়ালার কাছে। তাও এটি ব্যবহার হয় শুধু রূপচর্চার উপাদান হিসেবে। আমরা সত্যি অদ্ভুত!
আজকাল তো বোতলজাত পানি খাওয়ারও জো নেই। মাইক্রোপ্লাস্টিক, অর্থাৎ প্লাস্টিকের অতিক্ষুদ্র কণা আমাদের পেটে গিয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে পুরো শরীরে। আর এর খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে নানাবিধ অসুখ-বিসুখের মাধ্যমে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও আমরা ফেলে দিচ্ছি ঝুঁকির ভেতর। অথচ উন্নত বিশ্বে কলতলার পানি পান করা যায় নির্দ্বিধায়। আমরা পানির কর পরিশোধ করেও পাই না জীবাণুমুক্ত সুপেয় পানি। দেশের নাগরিক যে পয়সা দেওয়ার পরও প্রাপ্য জিনিসটি পাচ্ছে না, তাতে দেনেওলাদের যেমন লজ্জা নেই, ভোক্তা শ্রেণিরও কোনো সচেতনতা নেই। বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গায় একই দশা। পয়সা ঠিকই দিচ্ছেন, কিন্তু সেবা বা পণ্য পাবেন তলানির কাছাকাছি।
বসবাসের অযোগ্য এক শহর ঢাকা, যেখানে আবার জীবনযাত্রায় ব্যয় টরন্টো কিংবা মন্ট্রিল শহরের মতো, সেই শহরে দিনকে দিন মানুষের ভিড় বাড়ছে। ভারী ভারী নির্মাণকাজ চলছে। এরই ভেতর আমাদের বেঁচে থাকতে হবে, বিশেষ করে যারা দুনিয়ার অন্যত্র দ্বিতীয় আবাসের ব্যবস্থা করিনি। তো এই সংগ্রামী বেঁচে থাকার একটি কৌশলী পদক্ষেপ হতে পারে আমাদের খাদ্যাভ্যাস পাল্টে ফেলা। জীবনযাত্রায় শরীরচর্চা যুক্ত করা। তাতে যদি কিছুটা নিস্তার মেলে।
বিধান রিবেরু, চলচ্চিত্র সমালোচক

না গিলে যদি কেবল খাওয়া যেত, তাতেও বোধ হয় আমাদের উদর ও দেহ কিছুটা রক্ষা পেত। তবে সেটা শুধু সুকুমার রায়ের ছড়াতেই সম্ভব: খাচ্ছি কিন্তু গিলছি না। বাস্তবতা হলো, না খেতে চাইলেও আমাদের প্রতিনিয়ত গিলতে হয় বিষ। ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা কয়েক বছর ধরে কমলা ঘর থেকে লাল ঘরেই ওঠানামা করছে; অর্থাৎ ‘ভীষণ খারাপ’ থেকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ মাত্রার দূষণে আমরা বড় হচ্ছি, বুড়ো হচ্ছি এবং একটা সময় পর মারা যাচ্ছি। দেহের ভেতর খারাপ বাতাস ঢোকা তো আছেই, আর আছে অস্বাস্থ্যকর খাবার ভক্ষণ। পুরোনো আমলের গ্রিসে একটি কথা চালু ছিল: এমন খাবার খাও যেন তা ওষুধের কাজ করে, এমন ওষুধ খাও যা পেটের ক্ষুধা মেটায়। ঘুরেফিরে কথা একটাই, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং প্রকৃতিতে শাকসবজি-ফলমূলের ভেতরেই শারীরিক অসুখ-বিসুখের নিদান দেওয়া রয়েছে। আমরা আসলে বেমালুম যে মানুষ এই প্রকৃতিরই অংশ এবং বানর বা ভালুকদের কোনো বদ্যি নেই, নেই কোনো হাসপাতাল, তারা প্রকৃতিতে দিব্যি বেঁচেবর্তে আছে। ইদানীং তারা সংকটে রয়েছে মানুষের জন্যই, কারণ মানুষ নিজেদের সভ্য আখ্যা দিয়ে গোটা দুনিয়াকেই ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমাজন জঙ্গল উজাড় করে সেখানে গবাদিপশুর খামার বানাচ্ছে। আমিষের চাহিদা মেটানোর নাম করে মানুষের জীবনকে ফেলে দিচ্ছে আরও ঝুঁকিতে।
আদতে আমরা যা খাই, বাজারের শাকসবজি থেকে শুরু করে পুকুরের মাছ কিংবা কসাইখানা ও খামার থেকে আসা মাংস-ডিম, সেগুলো কি আমাদের শরীরের জন্য ভালো? শাকসবজি ফলাতে যে ধরনের কীটনাশক ও সার ব্যবহার করা হয়, ফল পাকাতে যে ওষুধ দেওয়া হয় এবং আমিষের চাহিদা মেটাতে যে ধরনের খাবার মাছ-গবাদিপশু-হাঁস-মুরগিকে খাওয়ানো হয়, সেগুলোর ভেতর থাকা ক্ষতিকর উপাদান আমাদের শরীরে ঢুকছে প্রতিনিয়ত এবং এসব নিয়ে আমাদের ভ্রুক্ষেপ নেই, আমরা চিন্তিতও নই। এর বড় কারণ বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম খাদ্যসামগ্রী কিনতেই লোকে হিমশিম খাচ্ছে। মূল্যস্ফীতিতে কারও সর্বনাশ, কেউ আঙুল ফুলে কলাগাছ। এমন বাস্তবতায় ভালো খাবারের দাম তো আকাশচুম্বী, যা শুধু পাওয়া যায় পাঁচতারকা হোটেলে আর তাদের খদ্দের হতে পারে সে রকম লোকেদের বাড়িতে। তাই লোকে অস্বাস্থ্যকর খাবারই গিলছে শুধু বেঁচে থাকার তাগিদে। ঢাকায় তো মাছ আর মাংস নয়, ইদানীং মাছের কাঁটা আর মাংসের হাড় বিক্রি হয়। গরিব মানুষ দুধের সাধ ঘোলে মেটাচ্ছে সেসব কিনে। কী করুণ দশা আমাদের, অথচ আমরা দিনরাত উন্নয়নের নামতা মুখস্থ করছি।
ওদিকে মাছ-মাংসের বাইরে গিয়ে, উন্নত বিশ্বে এখন মানুষ ঝুঁকে পড়ছে উদ্ভিজ্জ খাদ্যের দিকে। তারা ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিচ্ছে পশুপাখির খামার। প্রোটিনের চাহিদা মাশরুমের কাছ থেকে মেটানো যায়, এমনকি মাংসাশী জিহ্বার জন্যও সেখানে উদ্ভিজ্জ উপাদান থেকে তৈরি হচ্ছে হ্যাম, সসেজ, বেকন প্রভৃতি, শুনলে অবাক হবেন—ডিম পর্যন্ত! বিশ্বাস না হলে দেখে নিতে পারেন ‘ইউ আর হোয়াট ইউ ইট: আ টুইন এক্সপেরিমেন্ট’ প্রামাণ্যচিত্রটি। নানা প্রকার উদ্ভিদ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ডিম, যা স্বাদ ও গুণে মুরগির পেটের ডিমের চেয়ে কম নয়! তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে আমাদেরও উচিত উদ্ভিজ্জ খাদ্যের ওপর নির্ভরতা বাড়ানো, এতে করে পশুপাখির ওপর চাপ কমবে, আর পশুপাখি কম খেলে পরিবেশের ওপর থেকে চাপ কমবে। অধিক খামার মানে অধিক কার্বন ডাই-অক্সাইড। অর্থনৈতিকভাবেও আমরা কিছুটা বেঁচে যাব। কারণ যে হারে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে, সেই হারে তো ক্রয়ক্ষমতা বাড়ছে না। শাকসবজি ফলানোর মতো যথেষ্ট জমিজমা এখনো আমাদের রয়েছে। যদিও কৃষিজমি রক্ষার্থে আমাদের পদক্ষেপ অত জোরালো নয়, শিগগিরই সেটা জোরালো করা উচিত। ইদানীং তো ছাদবাগানের সুফল পেয়েছেন অনেকে। কাজেই জমিতে কিংবা ছাদে যদি শাকসবজির চাষাবাদ বাড়ানো যায়, তাতে অনেক দিক দিয়েই আমরা রেহাই পাব বলে আমার বিশ্বাস। স্ট্যানফোর্ডভিত্তিক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সর্বভুক, তাদের তুলনায় যারা নিরামিষভোজী, তাদের কালানুক্রমিক বয়সের বিবেচনায় শারীরিক বয়স কম, অর্থাৎ তাদের শরীরে বয়সের ছাপ সেভাবে পড়ে না। এই নিরীক্ষাটিই দেখানো হয়েছে ‘ইউ আর হোয়াট ইউ ইট’ প্রামাণ্যচিত্রে।
বিষয়টি আসলে জটিল কিছু নয়, আমিষের জন্য যে মাছ ও মাংস খাচ্ছি, সেসব খাবার হজমে আমাদের শরীরকে অতিরিক্ত শক্তি ব্যয় করতে হয়, এর পাশাপাশি আমিষের হাত ধরে নানা প্রকার জীবাণুও শরীরে প্রবেশ করে, সেসবের সঙ্গেও লড়াই করতে হয় শরীরকে। অন্যদিকে, প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠা শাকসবজি আমাদের শরীরে কাজ করে ওষুধের মতো। শুধু প্রাচীন গ্রিসের লোকজনই যে বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছে, তা-ই নয়, এই ভারত উপমহাদেশের মুনি-ঋষি-সাধুরাও বিষয়টি জানতেন। সম্প্রতি সোমব্রত সরকারের ‘সাধুর হেঁশেল’ পড়লাম।
কিছু কথা পাঠকের পাতে তুলে দেওয়ার লোভ সংবরণ করতে পারছি না। সোমব্রত লিখেছেন: ‘সাধু বললেন, শাক হলো লোকঔষধি। আগে গায়ে যখন চুককানি হতো, ঠাকুরমা হেলেঞ্চা ভাজা করে দিতেন। চোখের রোগে হেলেঞ্চা পাতার রস খুব উপকারী। জ্যোতি বাড়ে চোখের।...বেথুয়া শাক বেটে রস করে খেলে অর্শ রোগে উপকার পাওয়া যায়।...পাটপাতা শুকিয়ে রাখতেন ঠাকুরমা একটা ধামার মধ্যে করে। শুক্তো রান্না করলে শুকনো পাটপাতা তিনি তার মধ্যে দিয়ে দিতেন। বলতেন, খাও, গ্যাস অম্বল হবে না পেটে।...পুঁইপাতার রস খেলে দীর্ঘকালীন অনিদ্রা রোগ সারে।’
এ তো কেবল শাক থেকে প্রাপ্ত ঔষধি গুণের বিবরণ। এমন করে দেখলে প্রকৃতিতে থাকা প্রতিটি শাকসবজি ও ফলফলাদিই আসলে শরীরকে সুরক্ষা ও আরোগ্য দিতে বেশ কার্যকারী। প্রাচীন আয়ুর্বেদচর্চা সেই কথাই বলে। তো আমরা সেসব ভুলেটুলে এখন বড় বড় ওষুধ কারখানা বানিয়েছি। করপোরেট বাণিজ্য। খাদ্যাভ্যাস পাল্টে যদি লোকে সুস্থ থাকে, নীরোগ থাকে, তাহলে তো এসব পুঁজিপতির লোকসান। তারা ওষুধ বিক্রি করবে কার কাছে? নিশ্চয়ই বনের বানর ও ভালুকের কাছে নয়। যদিও তাদের পেটও খারাপ হয়, বদহজম হয়। তাদের তো আর বড়ি কিনে খাওয়ার সুযোগ নেই। মুখপোড়া বানর নাকি পেট খারাপ হলে কাঠকয়লা খায়। আর তাতেই সেরে যায় পীড়া। সাপের কামড় খেলে, বেজি নাকি বিষ নামায় ঘৃতকুমারীগাছের পাতা চিবিয়ে। ইংরেজিতে বললে অনেকেই চিনবেন ঘৃতকুমারী কি—অ্যালোভেরা। ভেষজ চিকিৎসায় এই ঘৃতকুমারীর ব্যবহার হয় খ্রিষ্টপূর্ব যুগ থেকেই। অথচ আজ এর দেখা মেলে হাতে গোনা কয়েকজন ফেরিওয়ালার কাছে। তাও এটি ব্যবহার হয় শুধু রূপচর্চার উপাদান হিসেবে। আমরা সত্যি অদ্ভুত!
আজকাল তো বোতলজাত পানি খাওয়ারও জো নেই। মাইক্রোপ্লাস্টিক, অর্থাৎ প্লাস্টিকের অতিক্ষুদ্র কণা আমাদের পেটে গিয়ে ছড়িয়ে যাচ্ছে পুরো শরীরে। আর এর খেসারত আমাদের দিতে হচ্ছে নানাবিধ অসুখ-বিসুখের মাধ্যমে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও আমরা ফেলে দিচ্ছি ঝুঁকির ভেতর। অথচ উন্নত বিশ্বে কলতলার পানি পান করা যায় নির্দ্বিধায়। আমরা পানির কর পরিশোধ করেও পাই না জীবাণুমুক্ত সুপেয় পানি। দেশের নাগরিক যে পয়সা দেওয়ার পরও প্রাপ্য জিনিসটি পাচ্ছে না, তাতে দেনেওলাদের যেমন লজ্জা নেই, ভোক্তা শ্রেণিরও কোনো সচেতনতা নেই। বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গায় একই দশা। পয়সা ঠিকই দিচ্ছেন, কিন্তু সেবা বা পণ্য পাবেন তলানির কাছাকাছি।
বসবাসের অযোগ্য এক শহর ঢাকা, যেখানে আবার জীবনযাত্রায় ব্যয় টরন্টো কিংবা মন্ট্রিল শহরের মতো, সেই শহরে দিনকে দিন মানুষের ভিড় বাড়ছে। ভারী ভারী নির্মাণকাজ চলছে। এরই ভেতর আমাদের বেঁচে থাকতে হবে, বিশেষ করে যারা দুনিয়ার অন্যত্র দ্বিতীয় আবাসের ব্যবস্থা করিনি। তো এই সংগ্রামী বেঁচে থাকার একটি কৌশলী পদক্ষেপ হতে পারে আমাদের খাদ্যাভ্যাস পাল্টে ফেলা। জীবনযাত্রায় শরীরচর্চা যুক্ত করা। তাতে যদি কিছুটা নিস্তার মেলে।
বিধান রিবেরু, চলচ্চিত্র সমালোচক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

না গিলে যদি কেবল খাওয়া যেত, তাতেও বোধ হয় আমাদের উদর ও দেহ কিছুটা রক্ষা পেত। তবে সেটা শুধু সুকুমার রায়ের ছড়াতেই সম্ভব: খাচ্ছি কিন্তু গিলছি না। বাস্তবতা হলো, না খেতে চাইলেও আমাদের প্রতিনিয়ত গিলতে হয় বিষ। ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা কয়েক বছর ধরে কমলা ঘর থেকে লাল ঘরেই ওঠানামা করছে; অর্থাৎ ‘ভীষণ খারাপ’
১৮ জানুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

না গিলে যদি কেবল খাওয়া যেত, তাতেও বোধ হয় আমাদের উদর ও দেহ কিছুটা রক্ষা পেত। তবে সেটা শুধু সুকুমার রায়ের ছড়াতেই সম্ভব: খাচ্ছি কিন্তু গিলছি না। বাস্তবতা হলো, না খেতে চাইলেও আমাদের প্রতিনিয়ত গিলতে হয় বিষ। ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা কয়েক বছর ধরে কমলা ঘর থেকে লাল ঘরেই ওঠানামা করছে; অর্থাৎ ‘ভীষণ খারাপ’
১৮ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

না গিলে যদি কেবল খাওয়া যেত, তাতেও বোধ হয় আমাদের উদর ও দেহ কিছুটা রক্ষা পেত। তবে সেটা শুধু সুকুমার রায়ের ছড়াতেই সম্ভব: খাচ্ছি কিন্তু গিলছি না। বাস্তবতা হলো, না খেতে চাইলেও আমাদের প্রতিনিয়ত গিলতে হয় বিষ। ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা কয়েক বছর ধরে কমলা ঘর থেকে লাল ঘরেই ওঠানামা করছে; অর্থাৎ ‘ভীষণ খারাপ’
১৮ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

না গিলে যদি কেবল খাওয়া যেত, তাতেও বোধ হয় আমাদের উদর ও দেহ কিছুটা রক্ষা পেত। তবে সেটা শুধু সুকুমার রায়ের ছড়াতেই সম্ভব: খাচ্ছি কিন্তু গিলছি না। বাস্তবতা হলো, না খেতে চাইলেও আমাদের প্রতিনিয়ত গিলতে হয় বিষ। ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা কয়েক বছর ধরে কমলা ঘর থেকে লাল ঘরেই ওঠানামা করছে; অর্থাৎ ‘ভীষণ খারাপ’
১৮ জানুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫