Ajker Patrika

সন্দেহের বশে গৃহকর্মীকে খুন করেন গৃহকর্ত্রী

শেকৃবি প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ০৯: ৩৫
সন্দেহের বশে গৃহকর্মীকে খুন  করেন গৃহকর্ত্রী

দেড় বছর আগে জীবিকার সন্ধানে স্বামীসহ দিনাজপুর থেকে ঢাকায় আসেন পারভীন ওরফে ফেন্সি আরা। স্বামী মোমিনুল রিকশা চালাতেন। এতে সংসার চলত না। তাই অভাবের সংসারে স্বাচ্ছন্দ্য ফেরাতে স্ত্রী ফেন্সি গুলশানের নিকেতনের হাসান-সামিনা দম্পতির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেন। ওই বাসায় কাজ নেওয়ার পর থেকে মোমিনুল তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পেতেন না। এদিকে হাসানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক সন্দেহে ফেন্সির সঙ্গে প্রায়ই গৃহকর্ত্রীর ঝগড়া হতো। গত বুধবার ঝগড়ার একপর্যায়ে ওই গৃহকর্মীকে হত্যা করেন স্ত্রী সামিনা।

এমন অভিযোগে সৈয়দ জসীমুল হাসান ও সৈয়দা সামিনা হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত প্রাইভেট কার, একটি লাঠি ও বিছানার চাদর ঘটনাস্থল থেকে জব্দ করেছে পিবিআই। গতকাল রোববার পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তরের বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এসব কথা জানান।

জাহাঙ্গীর আলম জানান, গত বৃহস্পতিবার দিয়াবাড়ীর ঝাউবন এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে তুরাগ থানা-পুলিশ। এই সংবাদের ভিত্তিতে পিবিআইয়ের ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদারের নির্দেশনায় ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম পুলিশ পরিদর্শক (বি) মোহাম্মদ তরিকুল ইসলামের নেতৃত্বে মরদেহ শনাক্তের জন্য একটি জরুরি টিম পাঠান। পিবিআই তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অজ্ঞাতনামা নারীর নাম-পরিচয় শনাক্ত করে। নিহতের নাম পারভীন ওরফে ফেন্সি আরা। তিনি গুলশান নিকেতনের ৬ নম্বর সড়কের ১৫ নম্বর বাড়ির এ-১/ ফ্ল্যাটে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। তাঁর বাড়ি দিনাজপুরের চিরিরবন্দর আলোকডিহি সরকারপাড়া। বাবার নাম রমজান আলী। লাশ শনাক্তের পর পিবিআইয়ের তদন্ত দল গ্রামের বাড়িতে স্বামী মোমিনুলসহ অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিচয় নিশ্চিত হয়।

এদিকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গৃহকর্তা সৈয়দ জসীমুল হাসান জানান, ১ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে অবৈধ সম্পর্কের সন্দেহ ও ঝগড়াঝাটির একপর্যায়ে তাঁর স্ত্রী সৈয়দা সামিনা হাসান ফেন্সিকে লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করেন। এতে তাৎক্ষণিকভাবে জ্ঞান হারান ফেন্সি, বাঁচাতে গিয়ে বুকে চাপ দিলে বুকের হাড় ভেঙে যায় ও মৃত্যু হয়। এরপর গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী পরামর্শ করে লাশ গোপনের উদ্দেশ্যে ড্রাইভার রমজান আলীর (৪১) সহায়তায় প্রাইভেট কারে করে তুরাগের দিয়াবাড়ী এলাকায় ঝাউবনে ফেলে আসেন।

ঘটনা তদন্তকালে আরও জানা যায়, ফেন্সি ওই বাসায় কাজ নেওয়ার পর থেকে স্বামী মোমিনুল তাঁর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারতেন না। এতে তিনি গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর তিনি ওই বাসায় গিয়ে একদিন তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে আসেন। গত অক্টোবরে তিনি তাঁর গ্রামের বাড়ি চলে যান।

এই ঘটনায় স্বামী মোমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে গত শনিবার তুরাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত