Ajker Patrika

গ্রামে ফেরাদের জন্য জামানতবিহীন ঋণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২২, ০৮: ২৯
গ্রামে ফেরাদের জন্য জামানতবিহীন ঋণ

করোনাকালে কর্মহীন হয়ে গ্রামে ফিরেছেন এমন জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ৫০০ কোটি টাকার জামানতবিহীন ঋণ বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যেসব শহুরে চাকরিজীবী, শ্রমজীবী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অতিমারিকালে উপার্জনের পথ হারিয়ে গ্রামে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদের ‘ঘরেফেরা’ পুনঃ অর্থায়ন স্কিমের আওতায় ৬ শতাংশ হারে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করা হবে। এ ঋণের বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দশমিক পাঁচ শতাংশ গ্যারান্টি প্রদান করবে।

এ ঋণ কর্মসূচির আওতায় নারীদের মধ্যে ১০ শতাংশ ঋণ বিতরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর এ গৃহীত ঋণ কোনোভাবেই গ্রাহকের পুরোনো ঋণ সমন্বয়ের জন্য ব্যবহার করতে নিষেধ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ঋণগ্রহীতা খেলাপি না হলে ঋণ পরিশোধের পর পুনরায় নতুন ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন– এমন সুযোগ রাখা হয়েছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণের চাহিদা পর্যবেক্ষণ করে তহবিলের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা থেকে প্রয়োজনমতো বৃদ্ধি করার কথাও জানিয়েছে।

গতকাল এ ঋণসংক্রান্ত নির্দেশনা দেশের সব তফসিলি ব্যাংকের নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগ একটি প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনা মহামারির সময় অনেক মানুষ আয়ের উৎস হারিয়েছেন। অনেকে গ্রামে ফিরেছেন। তাঁদের আয়ের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্যমুক্ত করার জন্য ৫০০ কোটি টাকার তহবিল প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই টাকার পরিমাণ চাহিদানুযায়ী বাড়তে পারে। অর্থ কোনো বিষয় নয়, মূল লক্ষ্য হচ্ছে ঘরেফেরা মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।’

এ ঋণের মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হলেও গ্রাহকেরা ঋণ পরিশোধে বাড়তি সময় উপভোগ করতে পারবেন। তবে বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকসমূহ তিন মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ দুই বছর সময় পাবে। আর ঋণের পরিমাণ ২ লাখের বেশি এবং ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ তিন বছর।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রজ্ঞাপনে ঋণের খাত হিসেবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি যানবাহন, ক্ষুদ্র প্রকৌশল শিল্প, মৎস্য চাষ, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি পালন, তথ্যপ্রযুক্তি সেবাকেন্দ্র, বসতঘর নির্মাণ ও সংস্কার, সবজি ও ফলের বাগান, কৃষি যন্ত্রপাতি ও ফসল বিপণন, ধান ভাঙানো যন্ত্র, চিড়া ও মুড়ি প্রক্রিয়াকরণ, নৌকা তৈরি, মৌমাছি পালন, সেলাই মেশিন ক্রয়, কৃত্রিম গয়না তৈরি ও মোমবাতি প্রস্তুতকরণ ইত্যাদি উল্লেখ করেছে।

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ঋণ স্কিমের আওতায় বিতরণকৃত প্রতিটি ঋণ ও বিনিয়োগের জন্য পৃথক হিসাব সংরক্ষণ করতে নির্দেশ প্রদান করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকসমূহ নিজস্ব নেটওয়ার্ক তথা শাখা, উপশাখা, এজেন্ট, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ ও আদায় করতে পারবে। এমনকি প্রয়োজনবোধে আউটসোর্সিং মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ মঞ্জুরির জন্য সহায়তা গ্রহণ করতে পারবে। তবে এ ঋণ প্রদান কার্যক্রমে এনজিও, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান বা অনুরূপ অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে ফ্যাসিলিটেটর এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি সাপেক্ষে আগ্রহী বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকসমূহও উক্ত ঋণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারবে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিনা জামানতে ঋণ বিতরণের এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ভালো। তবে এ ঋণ বিতরণ করার ক্ষেত্রে নানা জটিলতা রয়েছে। মূল সমস্যা হলো, ব্যাংকগুলো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা পর্যায়ে ঋণ দিতে কম আগ্রহ দেখায়। কারণ, এ ঋণ মনিটরিং এবং আদায় করা কঠিন এবং তুলনামূলক ব্যয়সাপেক্ষ। তবে গ্যারান্টির আওতায় আসায় কিছুটা আগ্রহ বাড়তে পারে। কিন্তু শতভাগ বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আ.লীগের এমপি শাম্মীর বাসায় ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি ও ভাগ-বাঁটোয়ারার বিবরণ দিলেন রিয়াদ

কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা: কে এই ফ্লাইট এক্সপার্ট এমডি সালমান, বাবার হাত ধরে যাঁর উত্থান

গঙ্গাচড়ায় হিন্দুপল্লিতে হামলাকারীদের উসকানি, স্থানীয় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জে হর্টিকালচারের উপপরিচালকের বিরুদ্ধে ‘সমকামিতার’ অভিযোগ, মামলা বাবুর্চির

অতিরিক্ত ফি দাবি করায় বিমানবন্দর স্টাফের চোয়াল ভেঙে দিলেন যাত্রী

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত